alt

উপ-সম্পাদকীয়

রম্যগদ্য : এ-পাস, না ও-পাস?

জাঁ-নেসার ওসমান

: শনিবার, ২৪ আগস্ট ২০২৪

কি রে ভাই, বেইন্না-ফজরত, এ-পাশ ও পাশ করতাছেন, সারারাত কি ঘুম হয় নাই? ওই বেক্কল, এটা এ-পাশ মানে এ-দিক, আর ও-পাশ মানে অন্যদিক। এটা এ-পাশ, ও-পাশ না, এটা হলো, এ-পাস, মানে এই পরীক্ষা ও-পাস মানে ওই পরীক্ষায় পাস। আমি ছাত্রদের পরীক্ষায় পাসের কথা বলছিলাম। ছাত্ররা লেখাপড়া করবে পরীক্ষা দিবে, পাস করবে, এতে তো, কোনো প্রবলেম দেখি না। এ নিয়ে আবার আপনি পড়লেন ক্যান? না, তুই শুনলি না, সচিব মহোদয় না কি বলেছেন, ছাত্রদের আন্দোলনের মুখে, স্বৈরাচার পতনের আন্দোলনের জন্য যে সব পরীক্ষা পিছিয়ে গিয়েছিলো সে সব পরীক্ষা আর দিতে হবে না। ছেলেরা পরীক্ষা না দিয়ে গণ-পাস করবে!

বলেন কী! দু’দিন আগে এই সব বীর ছাত্র-জনতা, কোটা সংস্কারের জন্য শত শত ভাই বোন জান দিলো, কোটা নয়, কোটা নয়, মেধা চাই, মেধা চাই, তারাই আবার আজ পরীক্ষা ছাড়া পাস করতে চায়। মেধা বাদ! বিষয়টা কী? বিষয়টা আর কিছু নয়, হিস্ট্রি রিপিট ইটসেলফ, ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি। ইতিহাস ঘুরে ঘুরে আসে। ইতিহাস ঘুরে আসবে মানে কি, বাংলাদেশে আগেও কি পরীক্ষা ছাড়া ছাত্ররা পাস করেছে?

না ঠিক তা না, পরীক্ষা ছাড়া পাস, না, তবে পরীক্ষায় শতভাগ পাস, বাংলাদেশে এমনি একটি তুঘলকী কা- ঘটেছিলে। বলেন কী, পরীক্ষায় শতভাগ পাস! কবে ঘটছে এমন রেজাল্ট, শতভাগ পাস! এটা কি পরীক্ষা?

কেজি ওয়ান টু... ধ্যৎ ব্যেডা। কে জি ওয়ান-টু, বা ক্লাস এইট হইলেও কোনো কথা ছিলো না। এঁটা ছিলো বি.এ. পরীক্ষা। ব্যাচেলার অব আর্টস, বিএ পরীক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায় সারাদেশের সব বোর্ডের সব পরীক্ষার্থী, মানে শতকরা শতভাগ ছাত্র পাস! জয়বাংলা!

জি, ঠিকই ধরেছিস, এটা জয়বাংলার প্রথম আমলে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর প্রথম যে বি.এ. পরীক্ষা হয়েছিলো সে পরীক্ষায় বাংলাদেশের সবাই বোর্ডের সবাই পরীক্ষার্থী শতকরা একশ ভাগ পাস। ভাবতে পারিস অবস্থা!

বাংলাদেশ স্বাধীনের পর, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে কি কোনো শিক্ষিত লোক ছিলো না? শিক্ষিত লোক ছিলো, কিন্তু সবগুলো চাটুকারের পরদাদা। মানে? চাটুকার তো চাটুকার। চাটুকারের আবার দাদা-পরদাদা, এদের আবার রকমফের আছে নাকি? আরে ব্যাটা, চাটুকারের মহা রকমফের আছে। বর্তমানের ডিজিটাল চাটুকাররা তো অল্পশিক্ষিত-অশিক্ষিত, এদের চাটুকারিতায় কোনো শিল্প নাই। হালারা গাড়ল। হালারা ‘র’।

ও বাংলাদেশের প্রথম দিককার চাটুকাররা কি সব পিএইচডি করা ডক্টরেট? আরে ডক্টরেট তো এদের কাছে কিছুই না। এদের চাটুকারিতা শুনলে স্বয়ং পাথরের মূর্তি পর্যন্ত নড়ে চড়ে ওঠে। তো গুরু এদের একটা চাটুকারিতার নমুনা দেখান দেখি?

এই চাটুকারিরা তখন বলতো, বাংলার মহান নেতা, অসমুদ্র হিমাচল, আপনার মহিমায় মহিমান্বিত, আপনার এই মহান মতবাদের কাছে, সক্রেটিস-অ্যারিস্টটল শিশুমাত্র! গুরু এই সক্রেটিস-অ্যরিস্টটল, এই গুলা কী, কমিউনিজমের মতো, কোনো মতবাদের নাম?

আমি তখনই বলেছিলাম বর্তমান ডিজিটাল চাটুকাররা ওই লেভেলে যাইতে পারে নাই যাইতে পারবও না। কারণ তখন চাটুকাররা শিক্ষিত, আর যার লগে চাটুকারিতা করতো, তিনিও শিক্ষিত। তাই চাটুকারের লেভেলও ছিলো অনেক হাই। কিন্তু আপনার ওই হাইভোল্টের শিক্ষিত চাটুকাররা শতকরা একশ ভাগ বিএ পাস থামাইতে পারে নাই?

ক্যেমনে পারবে, হাইপাওয়ার বললেন ছেলেরা যুদ্ধ করেছে, দেশ স্বাধীন করেছে পড়ার সময় পাইলো কখন, সব পাস করায়া দাও। বুজছি বুজছি অমনি চাটুকাররা, ‘রাজা যত কহে, পরিষদ তার কহে শতগুণ’ সবাই লাফ দিয়া শতভাগ পাস করাইলো; কিন্তু এইটাও তো দ্বিতীয় স্বাধীনতা, ছাত্র-জনতা সংগ্রাম করে স্বৈরাচার ফালাইলো একটা রিওয়ার্ড তো দেয়াই যায়। আচ্ছা ছাত্রদের না হয় পরীক্ষা ছাড়া পাস করায়া রিওয়ার্ড দিলি; কিন্তু এই রিওয়ার্ডের ফল কি হয় জানিস? ফল আবার কি, স্বল্প খাটুনিতে অধিক লাভ। জি-না, কোনো লাভ হয় না ক্ষতিই হয়। বিনা পরীক্ষায় পাস কইরা ক্ষতি হয়! না গুরু বুঝলাম না। না বুঝার কি আছে, পরবর্তী জীবনে এই ছাত্ররা যখন কোনো চাকরির জন্য অ্যাপ্লাই করবে, তখন বোর্ডের মেম্বাররা ২০২৪ সালের এইচএসসি দেখলে বায়োডাটা সরায়া রাখবে অথবা একটু নিম্নমানের ছাত্র ভাববে। এসব ছাত্রদের সারা জীবন এই কলঙ্কের বোঝা বইতে হবে। যেমনটি ঘটেছিলো বাংলাদেশের প্রথম বিএ পরীক্ষার শতভাগ পাস করা ছাত্রদের ভাগ্যে। বাপরে ব্যাপারটা তো ভাববার বিষয়।

তাছাড়া দ্যেখ, এই যে ‘পানি লাগবে পানি’ বলতে বলতে প্রাণ দেয়া মুগ্ধের, আবু সাঈদের, ফাইয়াজের, ইয়ামিনের রক্তের সাথে তোদের বেইমানি হবে না! আহনাফ, সাফায়েত-সমীররা যে সমাজ গড়ার জন্য রক্ত দিলো প্রাণ-উৎসর্গ করলো তোরা সেটাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ব্যক্তিস্বার্থে ওই স্বৈরাচারের মতো বিনা পরীক্ষায় পাস করতে চাস! তাহলে মেধার দাম থাকলো কোথায়! আর বড়দেরও মাথায় ঝাঁটা। ছোটবেলায় সন্তান যেমন অসুখের সময় বলতো আমি ওষুধ খাবো না বলে বায়না করতো, তখন তো বড়রা ঠিকই বুঝিয়ে-সুঝিয়ে বাচ্চাদের ওষুধ সেবন করাতেন। তাহলে এখন ক্যান বাচ্চাদের অন্যায় আবদার মেনে নিচ্ছেন! ছাত্রদের অন্ধকার ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন!

বুড়ো ভাম, পুঁপ পুঁপ... তোদের লজ্জা করে না!

তাই বলি, প্লিজ আপনারা আবু সাঈদ, আহনাফ, ফাইয়াজ, মুগ্ধর মতো শত শহীদের রক্তের সাথে বেইমানি করবেন না প্লিজ।

[ লেখক : চলচ্চিত্রকার ]

জামাই মেলা : উৎসব, ঐতিহ্য ও কৃষ্টির রঙিন চিত্রপট

হারিয়ে যাওয়া ক্লাস, কঠোর মূল্যায়ন আর প্রশ্নের জটিলতায় নুয়ে পড়া এক প্রজন্ম

বৈষম্য দূর করে নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলুন

চিকিৎসা যেন বাণিজ্যের হাতিয়ারে পরিণত না হয়

পথশিশু ও বাংলাদেশে সামাজিক চুক্তির ব্যর্থতা

মেগা প্রকল্প : প্রশ্ন হওয়া উচিত স্বচ্ছতা নিয়ে

আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া জরুরি

স্মার্ট দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা : উপগ্রহ চিত্র ও ওয়েবসাইটের অপরিহার্যতা

ক্ষমতা ও জনপ্রশাসন : আমলাতন্ত্রের ছায়াতলে আমজনতা

জনসংখ্যা : সম্পদ না সংকট?

ব্রিকসে নতুন ভূ-রাজনৈতিক ব্যবস্থার উত্থান

রম্যগদ্য : ‘ল্যাংড়া-লুলা, আতুড়-পাতুড়’

আষাঢ়ী পূর্ণিমা : আত্মশুদ্ধির সাধনায় বুদ্ধের অনন্ত আলো

বদলে যাওয়া মাটিতে সাহসী বীজ : জলবায়ুর বিপরীতে বাংলাদেশের কৃষির অভিযোজনগাথা

ছবি

জুলাই অভ্যুত্থান-গাথা : ‘শিকলে নাহি দিব ধরা’

প্রাচীন যৌধেয় জাতি ও তাদের সাম্যবাদী শাসন

গণঅভ্যুত্থান-উত্তর ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের স্বপ্ন

টেকসই উন্নয়নের স্বপ্নপূরণে উপগ্রহ চিত্রই চাবিকাঠি

রাবার শিল্প : সংকট, করণীয় ও উত্তরণের দিশা

রম্যগদ্য : দুধ, দই, কলা...

ছবি

কোপার্নিকাস : আলো হয়ে জন্ম নেওয়া বৈপ্লবিক মতবাদের প্রবর্তক

জলবায়ু সংকটে মানবসভ্যতা

টেকসই অর্থনীতির জন্য চাই টেকসই ব্যাংকিং

ডিজিটাল দাসত্ব : মনোযোগ অর্থনীতি ও জ্ঞান পুঁজিবাদে তরুণ প্রজন্মের মননশীলতার অবক্ষয়

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার : আস্থা ভঙ্গ ও জবাবদিহিতার সংকট

আসামি এখন নির্বাচন কমিশন

কোথায় হারাল একান্নবর্তী পরিবার?

এই শান্তি কি মহাঝড়ের পূর্বলক্ষণ?

মেগাসিটি : দারিদ্র্য যখন ‘অবাঞ্ছিত বর্জ্য’

ফলের রাজ্য পার্বত্য চট্টগ্রাম

ছবি

তৃতীয় শক্তির জন্য জায়গা খালি : বামপন্থীরা কি ঘুরে দাঁড়াতে পারে না

জমি আপনার, দখল অন্যের?

সিধু-কানু : ধ্বংসস্তূপের নিচেও জেগে আছে সাহস

ছবি

বাংলার অনন্য লোকসংস্কৃতি ও গণতান্ত্রিক চেতনা

চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী সাম্পান

তিন দিক থেকে স্বাস্থ্যঝুঁকি : করোনা, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া

tab

উপ-সম্পাদকীয়

রম্যগদ্য : এ-পাস, না ও-পাস?

জাঁ-নেসার ওসমান

শনিবার, ২৪ আগস্ট ২০২৪

কি রে ভাই, বেইন্না-ফজরত, এ-পাশ ও পাশ করতাছেন, সারারাত কি ঘুম হয় নাই? ওই বেক্কল, এটা এ-পাশ মানে এ-দিক, আর ও-পাশ মানে অন্যদিক। এটা এ-পাশ, ও-পাশ না, এটা হলো, এ-পাস, মানে এই পরীক্ষা ও-পাস মানে ওই পরীক্ষায় পাস। আমি ছাত্রদের পরীক্ষায় পাসের কথা বলছিলাম। ছাত্ররা লেখাপড়া করবে পরীক্ষা দিবে, পাস করবে, এতে তো, কোনো প্রবলেম দেখি না। এ নিয়ে আবার আপনি পড়লেন ক্যান? না, তুই শুনলি না, সচিব মহোদয় না কি বলেছেন, ছাত্রদের আন্দোলনের মুখে, স্বৈরাচার পতনের আন্দোলনের জন্য যে সব পরীক্ষা পিছিয়ে গিয়েছিলো সে সব পরীক্ষা আর দিতে হবে না। ছেলেরা পরীক্ষা না দিয়ে গণ-পাস করবে!

বলেন কী! দু’দিন আগে এই সব বীর ছাত্র-জনতা, কোটা সংস্কারের জন্য শত শত ভাই বোন জান দিলো, কোটা নয়, কোটা নয়, মেধা চাই, মেধা চাই, তারাই আবার আজ পরীক্ষা ছাড়া পাস করতে চায়। মেধা বাদ! বিষয়টা কী? বিষয়টা আর কিছু নয়, হিস্ট্রি রিপিট ইটসেলফ, ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি। ইতিহাস ঘুরে ঘুরে আসে। ইতিহাস ঘুরে আসবে মানে কি, বাংলাদেশে আগেও কি পরীক্ষা ছাড়া ছাত্ররা পাস করেছে?

না ঠিক তা না, পরীক্ষা ছাড়া পাস, না, তবে পরীক্ষায় শতভাগ পাস, বাংলাদেশে এমনি একটি তুঘলকী কা- ঘটেছিলে। বলেন কী, পরীক্ষায় শতভাগ পাস! কবে ঘটছে এমন রেজাল্ট, শতভাগ পাস! এটা কি পরীক্ষা?

কেজি ওয়ান টু... ধ্যৎ ব্যেডা। কে জি ওয়ান-টু, বা ক্লাস এইট হইলেও কোনো কথা ছিলো না। এঁটা ছিলো বি.এ. পরীক্ষা। ব্যাচেলার অব আর্টস, বিএ পরীক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায় সারাদেশের সব বোর্ডের সব পরীক্ষার্থী, মানে শতকরা শতভাগ ছাত্র পাস! জয়বাংলা!

জি, ঠিকই ধরেছিস, এটা জয়বাংলার প্রথম আমলে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর প্রথম যে বি.এ. পরীক্ষা হয়েছিলো সে পরীক্ষায় বাংলাদেশের সবাই বোর্ডের সবাই পরীক্ষার্থী শতকরা একশ ভাগ পাস। ভাবতে পারিস অবস্থা!

বাংলাদেশ স্বাধীনের পর, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে কি কোনো শিক্ষিত লোক ছিলো না? শিক্ষিত লোক ছিলো, কিন্তু সবগুলো চাটুকারের পরদাদা। মানে? চাটুকার তো চাটুকার। চাটুকারের আবার দাদা-পরদাদা, এদের আবার রকমফের আছে নাকি? আরে ব্যাটা, চাটুকারের মহা রকমফের আছে। বর্তমানের ডিজিটাল চাটুকাররা তো অল্পশিক্ষিত-অশিক্ষিত, এদের চাটুকারিতায় কোনো শিল্প নাই। হালারা গাড়ল। হালারা ‘র’।

ও বাংলাদেশের প্রথম দিককার চাটুকাররা কি সব পিএইচডি করা ডক্টরেট? আরে ডক্টরেট তো এদের কাছে কিছুই না। এদের চাটুকারিতা শুনলে স্বয়ং পাথরের মূর্তি পর্যন্ত নড়ে চড়ে ওঠে। তো গুরু এদের একটা চাটুকারিতার নমুনা দেখান দেখি?

এই চাটুকারিরা তখন বলতো, বাংলার মহান নেতা, অসমুদ্র হিমাচল, আপনার মহিমায় মহিমান্বিত, আপনার এই মহান মতবাদের কাছে, সক্রেটিস-অ্যারিস্টটল শিশুমাত্র! গুরু এই সক্রেটিস-অ্যরিস্টটল, এই গুলা কী, কমিউনিজমের মতো, কোনো মতবাদের নাম?

আমি তখনই বলেছিলাম বর্তমান ডিজিটাল চাটুকাররা ওই লেভেলে যাইতে পারে নাই যাইতে পারবও না। কারণ তখন চাটুকাররা শিক্ষিত, আর যার লগে চাটুকারিতা করতো, তিনিও শিক্ষিত। তাই চাটুকারের লেভেলও ছিলো অনেক হাই। কিন্তু আপনার ওই হাইভোল্টের শিক্ষিত চাটুকাররা শতকরা একশ ভাগ বিএ পাস থামাইতে পারে নাই?

ক্যেমনে পারবে, হাইপাওয়ার বললেন ছেলেরা যুদ্ধ করেছে, দেশ স্বাধীন করেছে পড়ার সময় পাইলো কখন, সব পাস করায়া দাও। বুজছি বুজছি অমনি চাটুকাররা, ‘রাজা যত কহে, পরিষদ তার কহে শতগুণ’ সবাই লাফ দিয়া শতভাগ পাস করাইলো; কিন্তু এইটাও তো দ্বিতীয় স্বাধীনতা, ছাত্র-জনতা সংগ্রাম করে স্বৈরাচার ফালাইলো একটা রিওয়ার্ড তো দেয়াই যায়। আচ্ছা ছাত্রদের না হয় পরীক্ষা ছাড়া পাস করায়া রিওয়ার্ড দিলি; কিন্তু এই রিওয়ার্ডের ফল কি হয় জানিস? ফল আবার কি, স্বল্প খাটুনিতে অধিক লাভ। জি-না, কোনো লাভ হয় না ক্ষতিই হয়। বিনা পরীক্ষায় পাস কইরা ক্ষতি হয়! না গুরু বুঝলাম না। না বুঝার কি আছে, পরবর্তী জীবনে এই ছাত্ররা যখন কোনো চাকরির জন্য অ্যাপ্লাই করবে, তখন বোর্ডের মেম্বাররা ২০২৪ সালের এইচএসসি দেখলে বায়োডাটা সরায়া রাখবে অথবা একটু নিম্নমানের ছাত্র ভাববে। এসব ছাত্রদের সারা জীবন এই কলঙ্কের বোঝা বইতে হবে। যেমনটি ঘটেছিলো বাংলাদেশের প্রথম বিএ পরীক্ষার শতভাগ পাস করা ছাত্রদের ভাগ্যে। বাপরে ব্যাপারটা তো ভাববার বিষয়।

তাছাড়া দ্যেখ, এই যে ‘পানি লাগবে পানি’ বলতে বলতে প্রাণ দেয়া মুগ্ধের, আবু সাঈদের, ফাইয়াজের, ইয়ামিনের রক্তের সাথে তোদের বেইমানি হবে না! আহনাফ, সাফায়েত-সমীররা যে সমাজ গড়ার জন্য রক্ত দিলো প্রাণ-উৎসর্গ করলো তোরা সেটাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ব্যক্তিস্বার্থে ওই স্বৈরাচারের মতো বিনা পরীক্ষায় পাস করতে চাস! তাহলে মেধার দাম থাকলো কোথায়! আর বড়দেরও মাথায় ঝাঁটা। ছোটবেলায় সন্তান যেমন অসুখের সময় বলতো আমি ওষুধ খাবো না বলে বায়না করতো, তখন তো বড়রা ঠিকই বুঝিয়ে-সুঝিয়ে বাচ্চাদের ওষুধ সেবন করাতেন। তাহলে এখন ক্যান বাচ্চাদের অন্যায় আবদার মেনে নিচ্ছেন! ছাত্রদের অন্ধকার ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন!

বুড়ো ভাম, পুঁপ পুঁপ... তোদের লজ্জা করে না!

তাই বলি, প্লিজ আপনারা আবু সাঈদ, আহনাফ, ফাইয়াজ, মুগ্ধর মতো শত শহীদের রক্তের সাথে বেইমানি করবেন না প্লিজ।

[ লেখক : চলচ্চিত্রকার ]

back to top