alt

মতামত » উপ-সম্পাদকীয়

রম্যগদ্য : ডাক্তারি যখন আইসিইউতে

জাঁ-নেসার ওসমান

: শনিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

কি রে ভাই এমনিই পাবলিকরা আজকাল ডাক্তারগোরে নাজেহাল করতাছে, ভাংচুর, মাইরপিট লাইগাই আছে। আপনে আবার ডাক্তারগোরে আইসিইউতে হোতায়া রাখলেন ব্যাপার কী?

না ভাই, আমি তো মহামান্য ডাক্তার স্যারদের আইসিইউতে হোতায় নাই, আমি বলছি উনারা যে প্রচলিত ভাষায়, ডাক্তারি করে মানে যে চিকিৎসা দেয় সেই চিকিৎসাটা ধুঁকছে, চিকিৎসা এখন আইসিইউতে। ডাক্তারি-চিকিৎসা এইটা তো একটা সাবজেক্ট, এইটা তো অ্যাবসট্রাক্ট নাউন মানে ধরাছোঁয়ার বাইরে এইটা আবার আইসিইউতে যায় ক্যেমনে! তাজ্জব কী বাত? এই তাজ্জব কী বাত, শুনতে হলে তোমাকে ফিরে যেতে হবে ব্রিটিশ ভারতের সন্ধিক্ষণে। ব্রিটিশ, ভারত, সন্ধিক্ষণ, ভাই, ভাই, ভাই না বালা, এতো না প্যাঁচায় সহজ কইরা কন, কি কইতে চান।

শোন তা হলে, শুরু করিতেছি বাংলার অশিক্ষিত-অর্ধশিক্ষিত জনগনের নামে যাঁরা পরম করুনাময় এবং অত্যন্ত দয়ালু। এই দয়ালু লোকেরা যখন চ্যেইত্তা উঠে, তখন স্বৈরাচারও ভাগতে পথ পায় না। ডাক্তার তো কোন ছার। ডাক্তার তো ছারপোকা বুঝলাম, কিন্তু ডাক্তারি? আরে সেটাই তো বলছি, বৃটিশ ভারতের ১৯৪৬ সালে ঢাকা মেডিকেলের জন্ম। জন্ম লগ্ন থেকে এর চিকিৎসার সুনাম সুদূর ইংল্যান্ডের রানী পর্যন্ত পৌঁছেছিলো। ১৯৬০ সালে কুইন এলিজাবেথ যখন আইয়ূব শাহীর আমলে ইষ্ট পাকিস্তানে এসেছিলেন, তখন তিনিও এই ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভিজিট করেন। এমনই ছিলো এর নাম-ডাক।

নাম তো ঠিকই আছে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ; কিন্তু বর্তমানে এর ডাকের এই অবস্থা কেন? যে ডাক্তাররে হাবলিকে হীডায়! হরিবোল অবস্থা। একটু র্ধৈয্য ধরে শোন। দু’দিন আগে ঢাকা মেডিকেল কলেজের এক মহামান্য ডাক্তার স্যার প্রেস কনফারেন্সে বললেন, আমি তার ভাষায় কোট করছি, “গতরাতের একটি ইন্সিডেন্ট বাংলাদেশ নয় সারাবিশ্বের কোনো ইতিহাসে যদি আপনারা দ্যেখাইতে পারেন যে কোনো ইমার্জেন্সিতে ইনজুর্ড একটা পেশেন্ট হসপিটালে ভর্তি, বাহির থেকে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা চাপাতি-রামদা নিয়ে ওই রোগীকে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য মার্ডার করছে।

আগে আপনি বলেন? নো নো নো, আগে আপনি বলেন। আপনি উত্তর দেন। আগে উত্তর দেন, জবাব দেন? ভাই, ভর্তি রোগীরে ডাক্তারের সামনে কোপাইলো এইটা কোনো দেশ হইলো? এখন শোন মহামান্য ডাক্তার স্যার তো জাতির বিবেকের কাছে প্রশ্ন ছুড়লেন যে, সারাবিশ্বের ইতিহাসে এই ঘটনার নজির আছে কি না? স্যার হয়তো জানেন না, যে শাকিব খানের ‘তুফান’ ছবিতে শাকিব খান ঢাকা মেডিকেলে ঢুইক্কা গুল্লি মাইরা ডাক্তার, নার্স, সিকিরিউটির সামনে থ্যেইক্কা রোগী উঠায়া নিয়া, গুল্লি কইরা মৃত্যু নিশ্চিত করেন।

ওই মিয়া এইডা তো সিনেমার দৃশ্য, বস্তবের কথা কন, সারাবিশ্বের কোথায় এ ধরনের ঘটনা ঘটছে? ঠিক আছে তুই তায়লে আমাকে বল, সারাবিশ্বের ইতিহাসে কোথায় ডাক্তাররা প্যাথোলজিক্যাল ল্যাবরোটরি থ্যেইক্কা ৪০% শতকরা চল্লিশ পার্সেন্ট কমিশন খায়? সারাবিশ্বের ইতিহাসে কোথায় ডাক্তাররা হার্টের ইন্ডিয়ান স্টেম আমেরিকান স্টেম কয়া আড়াই লক্ষ টাকা নেয়? সারাবিশ্বের ইতিহাসে কোথায় ডাক্তাররা হসপিটালের বেড থ্যেইক্কা কমিশন খায়? সারাবিশ্বের ইতিহাসে কোথায় ডাক্তাররা প্রেশকিপশনে নির্দিষ্ট ঔষধ কোম্পানির ঔষধের নাম না লিখলে মেডিকেল রিপ্রেজেনটেটিভ ডাক্তাররে হিডায়? সারাবিশ্বের ইতিহাসে কোথায় হসপিটালের ডাক্তারদের চেয়ে হসপিটালের দালালরা বেশি টাকা কামায়? ওটির, নার্সদের ঢাকায় ৪টি, দুই হাজার স্কয়ার ফিটের ফ্ল্যাট? সারাবিশ্বের ইতিহাসে কোথায় ডাক্তাররা নিজের নামে রোগী ভর্তি করে এ্যাসিসটেন্ট দিয়া অপারেশন করাতে যায়া রোগী মারে? সারাবিশ্বের ইতিহাসে কোথায় ডাক্তাররা টিউমার মনে কইরা কিডনি ফালায়া রোগী মাইরা রোগীর আত্মীয়দের.২৫ লক্ষ টাকা দিয়া ম্যানেজ করে? সারাবিশ্বের ইতিহাসে কোথায় হসপিটালরা মাসে মাসে থানায় মাসোহারা দিয়া আসে? সারাবিশ্বের কোথায় হসপিটালের ওটিতে মাছি ঘুরে! সারাবিশ্বের ইতিহাসে কোথায় ওটির. ভেতরে ডাক্তাররা সেলুলার ফোনে রোগীরে ওটি টেবিলে হোতায়া আরকে রোগীর সাথে দর কষাকষি করে! সারাবিশ্বের ইতিহাসে কোথায় ডাক্তাররা রাত আড়াইটা পর্যন্ত রোগী দেখে আবার ন’টার মধ্যে হসপিটালে আসে! কোথায় কোথায় কোথায়? আবার বলে হিপোক্রেটিক ওথ। ধিক। না মানে বলছিলাম কী...নো নো নো, আগে আপনি বলেন। আপনি উত্তর দেন। আগে উত্তর দেন, জবাব দেন? আমার প্রশ্নের জবাব দেন?

ভাই এই সব দিবালোকের মতো বাস্তব সত্য এই গুলার আমি কী জবাব দিমু। তাহলে শোন ব্যাটা তোর ডাক্তার যদি ঠিক মতো ডাক্তারি মানে চিকিৎসা করতো, তাহলে প্রতি বছর ভারতে বাংলাদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ ডলার বৈধপথে চলে যেতো না। তোরা খালি টাকার লোভ করে চিকিৎসার বারোটা বাজালি, গরিব রোগীদের তেরোটা বাজালি, আর তোদের ডাক্তারদের নিজেদের জীবন ঝুঁকিতে ফেললি! কিন্তু ডাক্তার স্যার যে বললেন ইমার্জেন্সিতে এক সাথে দশজন ডাক্তার ডিউটি করে তাহলে, রেলওয়ে-পুলিশ, টুরিস্ট-পুলিশ, শিল্প-পুলিশ এমনি একটা স্বাস্থ্য-পুলিশ রাখলে তো ডাক্তারের জান বাঁচে।

ভাইরে তুই যদি ডাক্তারি ঠিক মতো মানে সঠিক চিকিৎসা দিতে না পারিস, তাহলে পুলিশ কেন, তোকে সেনাবাহিনী দিয়েও বাঁচানো যাবে না, কারণ চোখের সামনে দেখলি, ৫ অগাস্ট ২০২৪ সালে, পুলিশ, প্রশাসন, সেনাবাহিনী দিয়েও স্বৈরাচার নিস্তার পেলো না, কারণ সে তার দায়িত্ব ঠিক মতো পালন করেনি। তাই চিকিৎসা ঠিকমতো করতে না পারলে, তোকে জাতিসংঘের মিশন দিয়াও রক্ষা করা যাবে না।

তাহলে বাংলাদেশে ধন্বন্তরিরা মানে ডাক্তাররা আজীবন জীবনের ঝুঁকিতে থাকবে! কি বলবো বল, পয়সার লোভ ছাড়, মানুষের মতো মানুষ হ, নিজের কাজের প্রতি মনযোগী হ, তাহলে তোরা পাবলিকের মাইরের হাত থেকে বাঁচবি। আর পয়সার লোভ করলে পাবলিক তোদের ঘর-বাড়িতে আগুন দিবে আর তোরা পালায়া বেড়াবি? তখন ডাক্তারি থাকবে আইসিইউতে।

[লেখক : চলচ্চিত্রকার]

অধ্যবসায়ের বিকল্প নেই

দিপু দাস হত্যাকাণ্ড ও মব সন্ত্রাস

ভোগের দৃশ্যপট: ঢাকায় আধুনিকতা কেন কেবল অল্প কিছু মানুষের জন্য?

স্বর্ণের মোহ ও মানবিক দ্বন্দ্ব

ভালোবাসার দেহধারণ: বড়দিনের তাৎপর্য

জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট

বিনা-ভাড়ার ট্রেনযাত্রা

ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলে এশিয়া

ছবি

নামে ইসলামী, কাজে আবু জাহেল!

জলবায়ু পরিবর্তন: স্বাস্থ্যঝুঁকি

ছবি

অস্থির পেঁয়াজের বাজার: আমদানি কি সত্যিই সমাধান?

মূল্যবৃদ্ধির ঘেরাটোপ: সংকটাক্রান্ত পরিবার ও সামাজিক রূপান্তর

বায়দূষণে অকালমৃত্যু

লাশের বদলে লাশই যদি চুড়ান্ত হয়, তবে রাষ্ট্রের দরকার কী?

ভিক্ষাবৃত্তি যেখানে অন্যতম পেশা

বুদ্ধিজীবী হত্যা ও এর স্বরূপ সন্ধানে

আদিবাসীদের ভূমি অধিকার ও নিরাপত্তা সংকট

“মুনীর চৌধুরীর কবর...”

বুদ্ধিজীবী হত্যা ও এর স্বরূপ সন্ধানে

জলবায়ু সংকট ও খাদ্য নিরাপত্তা

স্বাধীন তদন্ত কমিশন দাবির নেপথ্যে কি দায়মুক্তি?

বুদ্ধিজীবী হত্যা ও এর স্বরূপ সন্ধানে

প্রহর গুনি কোন আশাতে!

বিজয়ের রক্তাক্ত সূর্য ও আমাদের ঋণের হিসাব

বিজয় দিবস: নতুন প্রজন্মের রাষ্ট্রচিন্তার দিকদর্শন

ছবি

আমাদের বিজয়ের অন্তর্নিহিত বার্তা

প্রাণিসম্পদ: দেশীয় জাত, আধুনিক প্রযুক্তি

জমির জরিপ: ন্যায়বিচার প্রসঙ্গ

বুদ্ধিজীবী হত্যা ও এর স্বরূপ সন্ধানে

উন্নয়নের আড়ালে রোগীর ভোগান্তি: আস্থা সংকটে স্বাস্থ্যসেবা

ছবি

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস: অমিত শক্তির উৎস

ছবি

বেগম রোকেয়া এখনো জাগ্রত

পশ্চিমবঙ্গ: বামপন্থীদের ‘বাংলা বাঁচাও’-এর ডাক

সবার বাংলাদেশ কবে প্রতিষ্ঠিত হবে?

বিদেশি বিনিয়োগ : প্রয়োজন আইনের শাসন ও সামাজিক স্থিতি

চিকিৎসা যখন অসহনীয় ব্যয়, তখন প্রতিবাদই ন্যায়

tab

মতামত » উপ-সম্পাদকীয়

রম্যগদ্য : ডাক্তারি যখন আইসিইউতে

জাঁ-নেসার ওসমান

শনিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

কি রে ভাই এমনিই পাবলিকরা আজকাল ডাক্তারগোরে নাজেহাল করতাছে, ভাংচুর, মাইরপিট লাইগাই আছে। আপনে আবার ডাক্তারগোরে আইসিইউতে হোতায়া রাখলেন ব্যাপার কী?

না ভাই, আমি তো মহামান্য ডাক্তার স্যারদের আইসিইউতে হোতায় নাই, আমি বলছি উনারা যে প্রচলিত ভাষায়, ডাক্তারি করে মানে যে চিকিৎসা দেয় সেই চিকিৎসাটা ধুঁকছে, চিকিৎসা এখন আইসিইউতে। ডাক্তারি-চিকিৎসা এইটা তো একটা সাবজেক্ট, এইটা তো অ্যাবসট্রাক্ট নাউন মানে ধরাছোঁয়ার বাইরে এইটা আবার আইসিইউতে যায় ক্যেমনে! তাজ্জব কী বাত? এই তাজ্জব কী বাত, শুনতে হলে তোমাকে ফিরে যেতে হবে ব্রিটিশ ভারতের সন্ধিক্ষণে। ব্রিটিশ, ভারত, সন্ধিক্ষণ, ভাই, ভাই, ভাই না বালা, এতো না প্যাঁচায় সহজ কইরা কন, কি কইতে চান।

শোন তা হলে, শুরু করিতেছি বাংলার অশিক্ষিত-অর্ধশিক্ষিত জনগনের নামে যাঁরা পরম করুনাময় এবং অত্যন্ত দয়ালু। এই দয়ালু লোকেরা যখন চ্যেইত্তা উঠে, তখন স্বৈরাচারও ভাগতে পথ পায় না। ডাক্তার তো কোন ছার। ডাক্তার তো ছারপোকা বুঝলাম, কিন্তু ডাক্তারি? আরে সেটাই তো বলছি, বৃটিশ ভারতের ১৯৪৬ সালে ঢাকা মেডিকেলের জন্ম। জন্ম লগ্ন থেকে এর চিকিৎসার সুনাম সুদূর ইংল্যান্ডের রানী পর্যন্ত পৌঁছেছিলো। ১৯৬০ সালে কুইন এলিজাবেথ যখন আইয়ূব শাহীর আমলে ইষ্ট পাকিস্তানে এসেছিলেন, তখন তিনিও এই ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভিজিট করেন। এমনই ছিলো এর নাম-ডাক।

নাম তো ঠিকই আছে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ; কিন্তু বর্তমানে এর ডাকের এই অবস্থা কেন? যে ডাক্তাররে হাবলিকে হীডায়! হরিবোল অবস্থা। একটু র্ধৈয্য ধরে শোন। দু’দিন আগে ঢাকা মেডিকেল কলেজের এক মহামান্য ডাক্তার স্যার প্রেস কনফারেন্সে বললেন, আমি তার ভাষায় কোট করছি, “গতরাতের একটি ইন্সিডেন্ট বাংলাদেশ নয় সারাবিশ্বের কোনো ইতিহাসে যদি আপনারা দ্যেখাইতে পারেন যে কোনো ইমার্জেন্সিতে ইনজুর্ড একটা পেশেন্ট হসপিটালে ভর্তি, বাহির থেকে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা চাপাতি-রামদা নিয়ে ওই রোগীকে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য মার্ডার করছে।

আগে আপনি বলেন? নো নো নো, আগে আপনি বলেন। আপনি উত্তর দেন। আগে উত্তর দেন, জবাব দেন? ভাই, ভর্তি রোগীরে ডাক্তারের সামনে কোপাইলো এইটা কোনো দেশ হইলো? এখন শোন মহামান্য ডাক্তার স্যার তো জাতির বিবেকের কাছে প্রশ্ন ছুড়লেন যে, সারাবিশ্বের ইতিহাসে এই ঘটনার নজির আছে কি না? স্যার হয়তো জানেন না, যে শাকিব খানের ‘তুফান’ ছবিতে শাকিব খান ঢাকা মেডিকেলে ঢুইক্কা গুল্লি মাইরা ডাক্তার, নার্স, সিকিরিউটির সামনে থ্যেইক্কা রোগী উঠায়া নিয়া, গুল্লি কইরা মৃত্যু নিশ্চিত করেন।

ওই মিয়া এইডা তো সিনেমার দৃশ্য, বস্তবের কথা কন, সারাবিশ্বের কোথায় এ ধরনের ঘটনা ঘটছে? ঠিক আছে তুই তায়লে আমাকে বল, সারাবিশ্বের ইতিহাসে কোথায় ডাক্তাররা প্যাথোলজিক্যাল ল্যাবরোটরি থ্যেইক্কা ৪০% শতকরা চল্লিশ পার্সেন্ট কমিশন খায়? সারাবিশ্বের ইতিহাসে কোথায় ডাক্তাররা হার্টের ইন্ডিয়ান স্টেম আমেরিকান স্টেম কয়া আড়াই লক্ষ টাকা নেয়? সারাবিশ্বের ইতিহাসে কোথায় ডাক্তাররা হসপিটালের বেড থ্যেইক্কা কমিশন খায়? সারাবিশ্বের ইতিহাসে কোথায় ডাক্তাররা প্রেশকিপশনে নির্দিষ্ট ঔষধ কোম্পানির ঔষধের নাম না লিখলে মেডিকেল রিপ্রেজেনটেটিভ ডাক্তাররে হিডায়? সারাবিশ্বের ইতিহাসে কোথায় হসপিটালের ডাক্তারদের চেয়ে হসপিটালের দালালরা বেশি টাকা কামায়? ওটির, নার্সদের ঢাকায় ৪টি, দুই হাজার স্কয়ার ফিটের ফ্ল্যাট? সারাবিশ্বের ইতিহাসে কোথায় ডাক্তাররা নিজের নামে রোগী ভর্তি করে এ্যাসিসটেন্ট দিয়া অপারেশন করাতে যায়া রোগী মারে? সারাবিশ্বের ইতিহাসে কোথায় ডাক্তাররা টিউমার মনে কইরা কিডনি ফালায়া রোগী মাইরা রোগীর আত্মীয়দের.২৫ লক্ষ টাকা দিয়া ম্যানেজ করে? সারাবিশ্বের ইতিহাসে কোথায় হসপিটালরা মাসে মাসে থানায় মাসোহারা দিয়া আসে? সারাবিশ্বের কোথায় হসপিটালের ওটিতে মাছি ঘুরে! সারাবিশ্বের ইতিহাসে কোথায় ওটির. ভেতরে ডাক্তাররা সেলুলার ফোনে রোগীরে ওটি টেবিলে হোতায়া আরকে রোগীর সাথে দর কষাকষি করে! সারাবিশ্বের ইতিহাসে কোথায় ডাক্তাররা রাত আড়াইটা পর্যন্ত রোগী দেখে আবার ন’টার মধ্যে হসপিটালে আসে! কোথায় কোথায় কোথায়? আবার বলে হিপোক্রেটিক ওথ। ধিক। না মানে বলছিলাম কী...নো নো নো, আগে আপনি বলেন। আপনি উত্তর দেন। আগে উত্তর দেন, জবাব দেন? আমার প্রশ্নের জবাব দেন?

ভাই এই সব দিবালোকের মতো বাস্তব সত্য এই গুলার আমি কী জবাব দিমু। তাহলে শোন ব্যাটা তোর ডাক্তার যদি ঠিক মতো ডাক্তারি মানে চিকিৎসা করতো, তাহলে প্রতি বছর ভারতে বাংলাদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ ডলার বৈধপথে চলে যেতো না। তোরা খালি টাকার লোভ করে চিকিৎসার বারোটা বাজালি, গরিব রোগীদের তেরোটা বাজালি, আর তোদের ডাক্তারদের নিজেদের জীবন ঝুঁকিতে ফেললি! কিন্তু ডাক্তার স্যার যে বললেন ইমার্জেন্সিতে এক সাথে দশজন ডাক্তার ডিউটি করে তাহলে, রেলওয়ে-পুলিশ, টুরিস্ট-পুলিশ, শিল্প-পুলিশ এমনি একটা স্বাস্থ্য-পুলিশ রাখলে তো ডাক্তারের জান বাঁচে।

ভাইরে তুই যদি ডাক্তারি ঠিক মতো মানে সঠিক চিকিৎসা দিতে না পারিস, তাহলে পুলিশ কেন, তোকে সেনাবাহিনী দিয়েও বাঁচানো যাবে না, কারণ চোখের সামনে দেখলি, ৫ অগাস্ট ২০২৪ সালে, পুলিশ, প্রশাসন, সেনাবাহিনী দিয়েও স্বৈরাচার নিস্তার পেলো না, কারণ সে তার দায়িত্ব ঠিক মতো পালন করেনি। তাই চিকিৎসা ঠিকমতো করতে না পারলে, তোকে জাতিসংঘের মিশন দিয়াও রক্ষা করা যাবে না।

তাহলে বাংলাদেশে ধন্বন্তরিরা মানে ডাক্তাররা আজীবন জীবনের ঝুঁকিতে থাকবে! কি বলবো বল, পয়সার লোভ ছাড়, মানুষের মতো মানুষ হ, নিজের কাজের প্রতি মনযোগী হ, তাহলে তোরা পাবলিকের মাইরের হাত থেকে বাঁচবি। আর পয়সার লোভ করলে পাবলিক তোদের ঘর-বাড়িতে আগুন দিবে আর তোরা পালায়া বেড়াবি? তখন ডাক্তারি থাকবে আইসিইউতে।

[লেখক : চলচ্চিত্রকার]

back to top