alt

উপ-সম্পাদকীয়

প্রত্যাশিত শিক্ষা কমিশনের প্রস্তাবিত রূপরেখা

মাহরুফ চৌধুরী

: সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

আগের লেখায় সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি যে, শিক্ষার নানা সংস্কার ও অব্যাহত উন্নয়নের জন্যে একটি স্থায়ী শিক্ষা কমিশন গঠন এখন সময়ে দাবি। গণঅভ্যুত্থান-উত্তর ছাত্র-জনতার কাক্সিক্ষত রাষ্ট্র সংস্কারের প্রেক্ষাপটে এ কমিশনটি গঠনের উদ্দেশ্য হবে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার স্থায়িত্ব ও অগ্রগতি, শিক্ষার মানোন্নয়ন ও ধারাবাহিতা এবং নানা ধারা ও স্তরের মধ্যে সমতা নিশ্চিত করা। এ শিক্ষা কমিশন একটি স্বতন্ত্র ও স্বাধীন সংস্থা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে, যার প্রধান কাজ হবে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং শিক্ষার প্রতিটি স্তরের জন্য সমন্বিত নীতিমালা তৈরি। এখানে আগেই বলে রাখা ভালো যে এ লেখায় একটা সাধারণ প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়েছে। বিজ্ঞজন ও বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে আরও চিন্তাভাবনা, আলোচনা-পর্যালোচনার মাধ্যমে ঠিক করতে হবে কেমন হবে আমাদের কাক্সিক্ষত স্থায়ী শিক্ষা কমিশনটি। নিচে একটি আদর্শ স্থায়ী শিক্ষা সংস্কার কমিশনের গঠন, কার্যাবলী এবং বৈশিষ্ট্য নিয়ে কিছুটা আলোচনা করা হলো।

১. স্থায়ী শিক্ষা সংস্কার কমিশনের জন্যে একটি সুসংগঠিত ও কার্যকরী কাঠামো নির্ধারণ করা প্রয়োজন। এ কমিশন যাতে যথাযথভাবে কাজ করে, সেজন্য কমিশনের কাঠামোকে বিভিন্ন স্তরে বিভক্ত করা যেতে পারে।

প্রথমত, কমিশনের প্রধান হিসেবে একজন চেয়ারপারসন থাকবেন, যিনি অবশ্যই শিক্ষা বিজ্ঞানের বিশেষ করে, শিক্ষার কোন একটা ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ ও শিক্ষা নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এবং তিনি সমাজে গ্রহণযোগ্য দের একজন হবেন। এর পাশাপাশি পরিচালনা পরিষদের সদস্য হিসেবে থাকবেন শিক্ষার নানা স্তরের ও বিষয়ের বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ, গবেষক, প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং শিক্ষাক্ষেত্রে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের ব্যক্তিরা।

দ্বিতীয়ত, কমিশনকে বিভিন্ন শিক্ষাস্তর এবং বিষয়ভিত্তিক বিভাগে বিভক্ত করা যেতে পারে। যেমন- প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা, প্রাথমিক শিক্ষা, মাধ্যমিক শিক্ষা, উচ্চশিক্ষা, কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা, উপানুষ্ঠানিক ও গণশিক্ষা, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও পেশাগত উন্নয়ন, নারী ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর শিক্ষা, ডিজিটাল ও অব্যাহত শিক্ষা।

তৃতীয়ত, শিক্ষাক্ষেত্রের আরও উন্নয়নের জন্য কমিশনের পরামর্শক বোর্ড থাকবে, যেখানে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের প্রতিনিধি এবং শিক্ষাবিদ শিক্ষা বিশেষজ্ঞদের সমবায়ে এপরামর্শক পরিষদ তৈরি হবে যাতে নীতিনির্ধারণে তাদের মতামতকে প্রাধান্য দেয়া যায়।

চতুর্থত, শিক্ষা খাতের উন্নয়নে কোন নীতি বা পদ্ধতিগত পরিবর্তন আনার আগে অংশীজনের বিশেষ করে শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং শিক্ষকদের অংশগ্রহণে গবেষণার মাধ্যমে প্রাপ্ত ফলাফল বিচার-বিশ্লেষণের ভিত্তিতেই করতে হবে। হুটহাট করে কোন কিছু করা যাবে না।

২. কমিশনের প্রধান কাজগুলো কি হতে পারে সেটাও আগেভাগে নির্ধারণ করতে হবে। প্রাথমিকভাবে একটি স্থায়ী শিক্ষা সংস্কার কমিশনের প্রধান কাজগুলো হতে পারেÑ

(ক) শিক্ষানীতি প্রণয়ন ও পর্যালোচনা করা। স্থায়ী কমিশন নিয়মিতভাবে দেশের শিক্ষানীতির পর্যালোচনা করবে এবং শিক্ষা খাতে উদ্ভূত নতুন চ্যালেঞ্জগুলোর মোকাবেলায় মানানসই নীতিমালা প্রণয়ন করবে। শিক্ষানীতি প্রণয়নের সময় কমিশন আর যে বিষয়গুলো বিবেচনা করবে, সেগুলো হলো শিক্ষার মান উন্নয়ন, শিক্ষার নানা ধারায় সমতা বিধান ও শিক্ষায় প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো। বর্তমান অবস্থা থেকে উত্তরণে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতির জন্য শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি এবং শিক্ষকদের দক্ষতা বাড়ানো ছাড়া কোন বিকল্প নেই। শিক্ষার নানা ধারার মাঝে গুণগত পার্থক্য, শহর-গ্রাম, ধনী-গরিবের মধ্যে শিক্ষার সুযোগ ও মানের বৈষম্য দূর করার ব্যবস্থা করা। তাছাড়া যুগের সাথে তাল মিলিয়ে শিক্ষাব্যবস্থায় প্রযুক্তির প্রয়োগ বাড়ানো এবং অব্যাহত শিক্ষার জন্যে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমকে উৎসাহিত করা জরুরি।

(খ) শিক্ষা কমিশনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হবে শিক্ষাব্যবস্থার মান পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন করা এবং শিক্ষার্থীদের ফলাফল ও যুগের সাথে তালমিলিয়ে শিক্ষায় তাদের অগ্রগতি পর্যালোচনা করা। কমিশন দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মান নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করবে। প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান পর্যন্ত শিক্ষার মান ঠিক আছে কিনা, তা কমিশনের দায়িত্বের মধ্যে থাকবে। কমিশন বিশেষ করে শিক্ষকদের দক্ষতা এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যকারিতা পর্যবেক্ষণ করবে। শিক্ষার্থীদের শিক্ষাগত অগ্রগতি পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে নিয়মিত মূল্যায়ন ও করবে কমিশন।

(গ) শিক্ষা কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ অব্যাহত কাজটি হলো শিক্ষার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন ও শিক্ষার বাজেট পরিকল্পনা করার পাশাপাশি শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়নের পরিকল্পনা করা। কমিশনের মাধ্যমে শিক্ষা খাতে স্থায়ী উন্নয়নের জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করা হবে। এটি বিশেষভাবে প্রয়োজন যাতে শিক্ষার ক্ষেত্রে ধারাবাহিক উন্নয়ন সম্ভব হয়। শিক্ষাখাতে সুষ্ঠু অর্থায়ন এবং পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দে কমিশন নীতিমালা তৈরি করবে। আর শিক্ষার প্রাণশক্তি শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা বাড়াতে প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা প্রবর্তনের নিয়ম-নীতি করবে।

৩. দেশ ও জনগণের কাছে কমিশনের সব কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ব্যবস্থা থাকতে হবে। তাছাড়া এ স্থায়ী শিক্ষা সংস্কার কমিশনটি গঠনের সময় এর পরিচালক এবং পরিচালনা পরিষদ ও পরামর্শক পরিষদের সদস্যদের নির্বাচন ও নিয়োগে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা জরুরি। এক্ষেত্রে কয়েকটি বিশেষ দিক বিবেচনা করা যেতে পারে। যেমন -নিয়মিত প্রতিবেদন প্রকাশ, জনমত গ্রহণ এবং কমিশনের কাজের স্বাধীনতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। অব্যাহত প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে, কমিশন একটি নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে তাদের কার্যক্রম এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের নানা দিক নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করবে।

শিক্ষা খাতের উন্নয়নে অব্যাহত প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে শিক্ষানীতির কোন পরিবর্তন, পরিবর্ধন বা নতুন নীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে জনমতকে প্রাধান্য দিতে হবে, যাতে সমাজের সকল শ্রেণীর আশা-আকাক্সক্ষা ও মতামতের প্রতিফলন ঘটে। কমিশনের প্রতিটি কাজকর্ম যেন রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ থেকে মুক্ত থাকে সেটা নিশ্চিত করে কমিশনকে সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ তৈরি করে দিতে হবে।

৪. এ শিক্ষা কমিশনের মাধ্যমেই শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও উদ্ভাবনের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। বর্তমান যুগে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে প্রযুক্তির ব্যবহারের গুরুত্ব অপরিসীম। এজন্য কমিশন নতুন নীতিমালা তৈরির মাধ্যমে শিক্ষায় প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করবে। যেমন- ডিজিটাল শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টিতে শেখার জন্যে বিশেষায়িত নানা প্ল্যাটফর্মের উন্নয়নের ওপার জোর দিতে হবে। এ স্থায়ী কমিশন একদিকে ডিজিটাল শিক্ষার প্ল্যাটফর্ম এবং অব্যাহত শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টিতে অনলাইন শিক্ষার সম্প্রসারণে কাজ করবে।

অপরদিকে, কমিশন বিভিন্নমুখী গবেষণা ও উদ্ভাবনের সুযোগ সৃষ্টির জন্য নীতিমালা তৈরির মাধ্যমে শিক্ষার ক্ষেত্রে নতুন নতুন উদ্ভাবন ও গবেষণাকে উৎসাহিত করবে, যা শিক্ষার্থীদের নতুন জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনে সাহায্য করবে।

৫. শিক্ষার নীতিমালার স্থায়িত্ব ও কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে কমিশন নিরলসভাবে কাজ করে যাবে। স্থায়ী শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠনের উদ্দেশ্যকে সফল করতে হলে এর কার্যকারিতাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। এর কর্মপরিধিকে চিহ্নিত করার পাশাপাশি এজন্য প্রয়োজন হবে নিরন্তর গবেষণা ও পর্যালোচনা, বিভাগীয় স্বয়ংসম্পূর্ণতা ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা। শিক্ষাব্যবস্থার অব্যাহত উন্নয়নে প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল পরিস্থিতি মোকাবেলায় গবেষণা এবং তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ অপরিহার্য। এ শিক্ষা কমিশনের প্রতিটি বিভাগকে তাদের নিজস্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী নীতিমালা তৈরি এবং তা কার্যকর করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার স্বাধীনতা দিতে হবে। শিক্ষা ব্যবস্থার অব্যাহত উন্নয়ন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে দেশীয় শিক্ষার উন্নয়নে আন্তর্জাতিক মানদ-ের সাথে মিল রেখে নানা পরিকল্পনা গ্রহণ এবং সেসব বাস্তবায়নে বৈশ্বিক শিক্ষা ব্যবস্থার উদাহরণগুলো থেকে আমাদের অবস্থা ও অবস্থান অনুযায়ী শিক্ষণীয় বিষয়গুলো অনুসরণ করা যেতে পারে।

বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান-উত্তর বাংলাদেশে একটি স্থায়ী শিক্ষা কমিশন গঠনের মাধ্যমে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনা সম্ভব। আমাদের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার দুরবস্থা থেকে মুক্তি পেতে এবং আমাদের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার গিনিপিগ বা রাজনৈতিক বলির পাঁঠা বানানো থেকে অব্যাহতি দিতে এই কাক্সিক্ষত স্থায়ী শিক্ষা কমিশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ত্রিশঙ্কু অবস্থা থেকে মুক্তি দিতে এই কমিশন শিক্ষার নীতি প্রণয়ন, শিক্ষার মানোন্নয়ন, এবং শিক্ষা ব্যবস্থায় সমতা ও স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে পারে। সঠিক পরিকল্পনা এবং দীর্ঘমেয়াদী দৃষ্টিভঙ্গির ভিত্তিতে এই কমিশন শিক্ষার প্রাণশক্তি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের স্বার্থ সংরক্ষণের মাধ্যমে আগামী প্রজন্মের জন্যে একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে নিরলসভাবে কাজ করে।

অন্তর্র্বতীকালীন সরকার যত তাড়াতাড়ি এ কাক্সিক্ষত শিক্ষা কমিশনটি গঠন করে শিক্ষা সংস্কারের কাজ শুরু করবে, ততই মঙ্গল হবে এই সংক্ষুব্ধ জাতির এবং কাক্সিক্ষত সংস্কার প্রক্রিয়ার অগ্রগতি সাধিত হবে। রাষ্ট্র সংস্কারের যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে এ সরকার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছে তা সম্পন্ন করতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি শিক্ষা সংস্কারকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। শিক্ষার দ্রুত সংস্কারের মধ্যে দিয়ে আমরা অচিরেই একুশ শতকের যুগোপযোগী ও জীবনমুখী শিক্ষাকে আত্মস্থ করে হয়ে উঠব একটি আত্মপ্রত্যয়ী জাতির। তাই অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের অঙ্গীকার পূরণের প্রথম ধাপই হলো জাতিকে একটি স্থায়ী শিক্ষা কমিশন উপহার দেয়া। সরকারের সেই সদিচ্ছা ও ঘোষণার অপেক্ষায় রইলাম।

[লেখক : ভিজিটিং ফ্যাকাল্টি, ইউনিভার্সিটি অব রোহ্যাম্পটন, যুক্তরাজ্য]

গার্মেন্টস খাতে সংকট

সরকারি হাসপাতালের টয়লেট ব্যবস্থাপনায় করুণ দশা

ডেঙ্গু থেকে বাঁচার উপায় কী

শ্রমশক্তিতে নারীর অংশগ্রহণের হার বাড়াতে

বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতির দুর্বলতা

ইরানের কেন কৌশলগত পরিবর্তন

শিক্ষা ও মানবসম্পদ উন্নয়ন একে অন্যের পরিপূরক

রামু ট্র্যাজেডির এক যুগ

ব্যাংক খাতের সংস্কার

শিক্ষার একটি স্থায়ী কমিশন সময়ের দাবি

ছবি

ক্ষমতা এখন ‘মব’-এর হাতে

উচ্চ ফলনশীল বারি মসুর-৮

শ্রীলঙ্কার রাজনীতিতে বামপন্থির উত্থান

আমন ধানে আগাম ফুল আসার কারণ

উচ্চ ফলনশীল বারি মসুর-৮

কী হবে আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ রাজনীতি

রম্যগদ্য : ‘বল করে দুর্বল...’

মধ্যপ্রাচ্যে প্রযুক্তিগত যুদ্ধ

বন্যাপরবর্তী কৃষি উৎপাদনে সময়োপযোগী সহায়তা প্রদান

গুণগত উন্নয়নই সমাজের প্রকৃত উন্নতির চাবিকাঠি

বিশেষ শিশু ও বিশেষ শিক্ষালয়

বিশ্ব ফার্মাসিস্ট দিবস

সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার অধিকার

উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি

প্রসঙ্গ : আনসার বাহিনী

শান্তির সংস্কৃতি : প্রেক্ষিত বাংলাদেশ

মব লিঞ্চিং আইনের শাসনের পরিপন্থি

মব জাস্টিসের মতো বর্বরতা বন্ধ হোক

বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে রাজনীতি

জাতীয় সংগীত নিয়ে বিতর্ক

জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে বিতর্ক

ভূমি অধিগ্রহণে কোনো প্রশ্ন উত্থাপিত হলে কী করবেন?

ছবি

নিবেদিত প্রাণ এক কৃষিবিজ্ঞানী

জনমনে স্বস্তি ফিরুক

দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের শিক্ষার সুযোগ

মাদকের বিরুদ্ধে লড়তে হবে

tab

উপ-সম্পাদকীয়

প্রত্যাশিত শিক্ষা কমিশনের প্রস্তাবিত রূপরেখা

মাহরুফ চৌধুরী

সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

আগের লেখায় সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি যে, শিক্ষার নানা সংস্কার ও অব্যাহত উন্নয়নের জন্যে একটি স্থায়ী শিক্ষা কমিশন গঠন এখন সময়ে দাবি। গণঅভ্যুত্থান-উত্তর ছাত্র-জনতার কাক্সিক্ষত রাষ্ট্র সংস্কারের প্রেক্ষাপটে এ কমিশনটি গঠনের উদ্দেশ্য হবে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার স্থায়িত্ব ও অগ্রগতি, শিক্ষার মানোন্নয়ন ও ধারাবাহিতা এবং নানা ধারা ও স্তরের মধ্যে সমতা নিশ্চিত করা। এ শিক্ষা কমিশন একটি স্বতন্ত্র ও স্বাধীন সংস্থা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে, যার প্রধান কাজ হবে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং শিক্ষার প্রতিটি স্তরের জন্য সমন্বিত নীতিমালা তৈরি। এখানে আগেই বলে রাখা ভালো যে এ লেখায় একটা সাধারণ প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়েছে। বিজ্ঞজন ও বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে আরও চিন্তাভাবনা, আলোচনা-পর্যালোচনার মাধ্যমে ঠিক করতে হবে কেমন হবে আমাদের কাক্সিক্ষত স্থায়ী শিক্ষা কমিশনটি। নিচে একটি আদর্শ স্থায়ী শিক্ষা সংস্কার কমিশনের গঠন, কার্যাবলী এবং বৈশিষ্ট্য নিয়ে কিছুটা আলোচনা করা হলো।

১. স্থায়ী শিক্ষা সংস্কার কমিশনের জন্যে একটি সুসংগঠিত ও কার্যকরী কাঠামো নির্ধারণ করা প্রয়োজন। এ কমিশন যাতে যথাযথভাবে কাজ করে, সেজন্য কমিশনের কাঠামোকে বিভিন্ন স্তরে বিভক্ত করা যেতে পারে।

প্রথমত, কমিশনের প্রধান হিসেবে একজন চেয়ারপারসন থাকবেন, যিনি অবশ্যই শিক্ষা বিজ্ঞানের বিশেষ করে, শিক্ষার কোন একটা ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ ও শিক্ষা নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এবং তিনি সমাজে গ্রহণযোগ্য দের একজন হবেন। এর পাশাপাশি পরিচালনা পরিষদের সদস্য হিসেবে থাকবেন শিক্ষার নানা স্তরের ও বিষয়ের বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ, গবেষক, প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং শিক্ষাক্ষেত্রে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের ব্যক্তিরা।

দ্বিতীয়ত, কমিশনকে বিভিন্ন শিক্ষাস্তর এবং বিষয়ভিত্তিক বিভাগে বিভক্ত করা যেতে পারে। যেমন- প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা, প্রাথমিক শিক্ষা, মাধ্যমিক শিক্ষা, উচ্চশিক্ষা, কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা, উপানুষ্ঠানিক ও গণশিক্ষা, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও পেশাগত উন্নয়ন, নারী ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর শিক্ষা, ডিজিটাল ও অব্যাহত শিক্ষা।

তৃতীয়ত, শিক্ষাক্ষেত্রের আরও উন্নয়নের জন্য কমিশনের পরামর্শক বোর্ড থাকবে, যেখানে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের প্রতিনিধি এবং শিক্ষাবিদ শিক্ষা বিশেষজ্ঞদের সমবায়ে এপরামর্শক পরিষদ তৈরি হবে যাতে নীতিনির্ধারণে তাদের মতামতকে প্রাধান্য দেয়া যায়।

চতুর্থত, শিক্ষা খাতের উন্নয়নে কোন নীতি বা পদ্ধতিগত পরিবর্তন আনার আগে অংশীজনের বিশেষ করে শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং শিক্ষকদের অংশগ্রহণে গবেষণার মাধ্যমে প্রাপ্ত ফলাফল বিচার-বিশ্লেষণের ভিত্তিতেই করতে হবে। হুটহাট করে কোন কিছু করা যাবে না।

২. কমিশনের প্রধান কাজগুলো কি হতে পারে সেটাও আগেভাগে নির্ধারণ করতে হবে। প্রাথমিকভাবে একটি স্থায়ী শিক্ষা সংস্কার কমিশনের প্রধান কাজগুলো হতে পারেÑ

(ক) শিক্ষানীতি প্রণয়ন ও পর্যালোচনা করা। স্থায়ী কমিশন নিয়মিতভাবে দেশের শিক্ষানীতির পর্যালোচনা করবে এবং শিক্ষা খাতে উদ্ভূত নতুন চ্যালেঞ্জগুলোর মোকাবেলায় মানানসই নীতিমালা প্রণয়ন করবে। শিক্ষানীতি প্রণয়নের সময় কমিশন আর যে বিষয়গুলো বিবেচনা করবে, সেগুলো হলো শিক্ষার মান উন্নয়ন, শিক্ষার নানা ধারায় সমতা বিধান ও শিক্ষায় প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো। বর্তমান অবস্থা থেকে উত্তরণে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতির জন্য শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি এবং শিক্ষকদের দক্ষতা বাড়ানো ছাড়া কোন বিকল্প নেই। শিক্ষার নানা ধারার মাঝে গুণগত পার্থক্য, শহর-গ্রাম, ধনী-গরিবের মধ্যে শিক্ষার সুযোগ ও মানের বৈষম্য দূর করার ব্যবস্থা করা। তাছাড়া যুগের সাথে তাল মিলিয়ে শিক্ষাব্যবস্থায় প্রযুক্তির প্রয়োগ বাড়ানো এবং অব্যাহত শিক্ষার জন্যে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমকে উৎসাহিত করা জরুরি।

(খ) শিক্ষা কমিশনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হবে শিক্ষাব্যবস্থার মান পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন করা এবং শিক্ষার্থীদের ফলাফল ও যুগের সাথে তালমিলিয়ে শিক্ষায় তাদের অগ্রগতি পর্যালোচনা করা। কমিশন দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মান নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করবে। প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান পর্যন্ত শিক্ষার মান ঠিক আছে কিনা, তা কমিশনের দায়িত্বের মধ্যে থাকবে। কমিশন বিশেষ করে শিক্ষকদের দক্ষতা এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যকারিতা পর্যবেক্ষণ করবে। শিক্ষার্থীদের শিক্ষাগত অগ্রগতি পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে নিয়মিত মূল্যায়ন ও করবে কমিশন।

(গ) শিক্ষা কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ অব্যাহত কাজটি হলো শিক্ষার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন ও শিক্ষার বাজেট পরিকল্পনা করার পাশাপাশি শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়নের পরিকল্পনা করা। কমিশনের মাধ্যমে শিক্ষা খাতে স্থায়ী উন্নয়নের জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করা হবে। এটি বিশেষভাবে প্রয়োজন যাতে শিক্ষার ক্ষেত্রে ধারাবাহিক উন্নয়ন সম্ভব হয়। শিক্ষাখাতে সুষ্ঠু অর্থায়ন এবং পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দে কমিশন নীতিমালা তৈরি করবে। আর শিক্ষার প্রাণশক্তি শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা বাড়াতে প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা প্রবর্তনের নিয়ম-নীতি করবে।

৩. দেশ ও জনগণের কাছে কমিশনের সব কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ব্যবস্থা থাকতে হবে। তাছাড়া এ স্থায়ী শিক্ষা সংস্কার কমিশনটি গঠনের সময় এর পরিচালক এবং পরিচালনা পরিষদ ও পরামর্শক পরিষদের সদস্যদের নির্বাচন ও নিয়োগে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা জরুরি। এক্ষেত্রে কয়েকটি বিশেষ দিক বিবেচনা করা যেতে পারে। যেমন -নিয়মিত প্রতিবেদন প্রকাশ, জনমত গ্রহণ এবং কমিশনের কাজের স্বাধীনতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। অব্যাহত প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে, কমিশন একটি নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে তাদের কার্যক্রম এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের নানা দিক নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করবে।

শিক্ষা খাতের উন্নয়নে অব্যাহত প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে শিক্ষানীতির কোন পরিবর্তন, পরিবর্ধন বা নতুন নীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে জনমতকে প্রাধান্য দিতে হবে, যাতে সমাজের সকল শ্রেণীর আশা-আকাক্সক্ষা ও মতামতের প্রতিফলন ঘটে। কমিশনের প্রতিটি কাজকর্ম যেন রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ থেকে মুক্ত থাকে সেটা নিশ্চিত করে কমিশনকে সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ তৈরি করে দিতে হবে।

৪. এ শিক্ষা কমিশনের মাধ্যমেই শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও উদ্ভাবনের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। বর্তমান যুগে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে প্রযুক্তির ব্যবহারের গুরুত্ব অপরিসীম। এজন্য কমিশন নতুন নীতিমালা তৈরির মাধ্যমে শিক্ষায় প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করবে। যেমন- ডিজিটাল শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টিতে শেখার জন্যে বিশেষায়িত নানা প্ল্যাটফর্মের উন্নয়নের ওপার জোর দিতে হবে। এ স্থায়ী কমিশন একদিকে ডিজিটাল শিক্ষার প্ল্যাটফর্ম এবং অব্যাহত শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টিতে অনলাইন শিক্ষার সম্প্রসারণে কাজ করবে।

অপরদিকে, কমিশন বিভিন্নমুখী গবেষণা ও উদ্ভাবনের সুযোগ সৃষ্টির জন্য নীতিমালা তৈরির মাধ্যমে শিক্ষার ক্ষেত্রে নতুন নতুন উদ্ভাবন ও গবেষণাকে উৎসাহিত করবে, যা শিক্ষার্থীদের নতুন জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনে সাহায্য করবে।

৫. শিক্ষার নীতিমালার স্থায়িত্ব ও কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে কমিশন নিরলসভাবে কাজ করে যাবে। স্থায়ী শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠনের উদ্দেশ্যকে সফল করতে হলে এর কার্যকারিতাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। এর কর্মপরিধিকে চিহ্নিত করার পাশাপাশি এজন্য প্রয়োজন হবে নিরন্তর গবেষণা ও পর্যালোচনা, বিভাগীয় স্বয়ংসম্পূর্ণতা ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা। শিক্ষাব্যবস্থার অব্যাহত উন্নয়নে প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল পরিস্থিতি মোকাবেলায় গবেষণা এবং তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ অপরিহার্য। এ শিক্ষা কমিশনের প্রতিটি বিভাগকে তাদের নিজস্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী নীতিমালা তৈরি এবং তা কার্যকর করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার স্বাধীনতা দিতে হবে। শিক্ষা ব্যবস্থার অব্যাহত উন্নয়ন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে দেশীয় শিক্ষার উন্নয়নে আন্তর্জাতিক মানদ-ের সাথে মিল রেখে নানা পরিকল্পনা গ্রহণ এবং সেসব বাস্তবায়নে বৈশ্বিক শিক্ষা ব্যবস্থার উদাহরণগুলো থেকে আমাদের অবস্থা ও অবস্থান অনুযায়ী শিক্ষণীয় বিষয়গুলো অনুসরণ করা যেতে পারে।

বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান-উত্তর বাংলাদেশে একটি স্থায়ী শিক্ষা কমিশন গঠনের মাধ্যমে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনা সম্ভব। আমাদের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার দুরবস্থা থেকে মুক্তি পেতে এবং আমাদের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার গিনিপিগ বা রাজনৈতিক বলির পাঁঠা বানানো থেকে অব্যাহতি দিতে এই কাক্সিক্ষত স্থায়ী শিক্ষা কমিশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ত্রিশঙ্কু অবস্থা থেকে মুক্তি দিতে এই কমিশন শিক্ষার নীতি প্রণয়ন, শিক্ষার মানোন্নয়ন, এবং শিক্ষা ব্যবস্থায় সমতা ও স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে পারে। সঠিক পরিকল্পনা এবং দীর্ঘমেয়াদী দৃষ্টিভঙ্গির ভিত্তিতে এই কমিশন শিক্ষার প্রাণশক্তি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের স্বার্থ সংরক্ষণের মাধ্যমে আগামী প্রজন্মের জন্যে একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে নিরলসভাবে কাজ করে।

অন্তর্র্বতীকালীন সরকার যত তাড়াতাড়ি এ কাক্সিক্ষত শিক্ষা কমিশনটি গঠন করে শিক্ষা সংস্কারের কাজ শুরু করবে, ততই মঙ্গল হবে এই সংক্ষুব্ধ জাতির এবং কাক্সিক্ষত সংস্কার প্রক্রিয়ার অগ্রগতি সাধিত হবে। রাষ্ট্র সংস্কারের যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে এ সরকার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছে তা সম্পন্ন করতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি শিক্ষা সংস্কারকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। শিক্ষার দ্রুত সংস্কারের মধ্যে দিয়ে আমরা অচিরেই একুশ শতকের যুগোপযোগী ও জীবনমুখী শিক্ষাকে আত্মস্থ করে হয়ে উঠব একটি আত্মপ্রত্যয়ী জাতির। তাই অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের অঙ্গীকার পূরণের প্রথম ধাপই হলো জাতিকে একটি স্থায়ী শিক্ষা কমিশন উপহার দেয়া। সরকারের সেই সদিচ্ছা ও ঘোষণার অপেক্ষায় রইলাম।

[লেখক : ভিজিটিং ফ্যাকাল্টি, ইউনিভার্সিটি অব রোহ্যাম্পটন, যুক্তরাজ্য]

back to top