alt

উপ-সম্পাদকীয়

জ্ঞানই শক্তি

বাবুল রবিদাস

: বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪

উন্নয়ন, সুখ, সমৃদ্ধি ও শান্তিপ্রিয় দেশ গড়তে শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। শিক্ষা অর্জিত হয় বই-পুস্তক এবং অভিজ্ঞতা থেকে। একজন ব্যক্তি যখন শিক্ষার মাধ্যমে জ্ঞান অর্জন করেন, তখন তাকে বলা হয় জ্ঞানী ও গুণী। এমন ব্যক্তিরা সমাজ থেকে কুসংস্কার দূর করে গোটা সমাজের চেহারা পাল্টে দিতে পারেন। এ জন্যই বলা হয়- ‘জ্ঞানই শক্তি।’

জ্ঞান অর্জন করলে একজন ব্যক্তি হয়ে ওঠেন আলোকিত, ঠিক সূর্যের কিরণের মতো। জ্ঞান তার ব্যক্তিগত ও সামাজিক সীমানাকে অতিক্রম করে। দেশ-বিদেশ, আপন-পরÑসব কিছুই তার কাছে সমান হয়ে যায়। আজকের আলোচনার বিষয় সেই জ্ঞান, যা মানব সভ্যতার উন্নয়ন ও বিকাশের মূল চাবিকাঠি।

জ্ঞানের সংজ্ঞা ও তাৎপর্য

জ্ঞান এক কথায় হলো পরিচিতি। এটি কোনো কিছুর প্রকৃত অবস্থা, তথ্য, বিবরণ বা গুণাবলীর সঠিক ধারণা। জ্ঞান অর্জন করা যায় উপলব্ধি, অনুসন্ধান, শিক্ষা ও অভিজ্ঞতার মাধ্যমে। শিক্ষার্থীরা শিশুকাল থেকেই স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের কাছ থেকে জ্ঞান আহরণ শুরু করে।

এক সময় জ্ঞানের প্রসার ছিল ধীরগতি। সমাজের মানুষ নতুন জ্ঞান সৃষ্টি নিয়ে তেমন ভাবত না। অজ্ঞতা ও অশিক্ষার কারণে সমাজ ছিল অপরিবর্তিত। কোনো নতুন অভিজ্ঞতা হলে তা এক সময় নতুন জ্ঞানের উৎসে পরিণত হতো; কিন্তু এই অভিজ্ঞতা অর্জনের ঘটনাগুলো ছিল বিরল। পাশাপাশি নতুন জ্ঞান মানুষকে ভয়ও পাইয়ে দিত।

জ্ঞানের আধুনিকায়ন

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগে জ্ঞানের ধারায় এসেছে পরিবর্তন। গ্যালিলিওর সময় থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে জ্ঞান আহরণ শুরু হয়। প্রকৃতিতে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর কারণ নির্ণয় এবং বিশ্লেষণের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা নতুন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেন।

গবেষণার মাধ্যমে নতুন জ্ঞান সৃষ্টি শুরু হলেও প্রথমদিকে এটি খুবই সীমিত ছিল। আর্কিমিডিসের যুগে দর্শন, প্রকৃতি ও বিজ্ঞান ব্যক্তিগত অনুপ্রেরণার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু গ্যালিলিওর সময় থেকে নিয়ন্ত্রিত পরীক্ষার মাধ্যমে নতুন নতুন তত্ত্ব আবিষ্কার হতে থাকে।

জ্ঞানের বাধাগুলো

অতীতে মানুষের কল্পনা, অনুমান ও প্রচলিত বিশ্বাস যাচাই-বাছাই ছাড়াই গ্রহণ করা হতো। এই মানসিকতার কারণে নতুন জ্ঞানের পথে অনেক বাধা সৃষ্টি হয়েছিল। অ্যারিস্টটলীয় দৃষ্টিভঙ্গির মতো অনেক প্রাচীন তত্ত্ব পরীক্ষিত না হলেও প্রচলিত ছিল।

পাশাপাশি নতুন আবিষ্কার বা উদ্ভাবন অনেক সময় সমাজে সহজে গ্রহণযোগ্য হয়নি। কিন্তু মানব সভ্যতার উন্নয়ন ও বিকাশে উদ্ভাবন ও নতুন জ্ঞান অগ্রগতির পথকে উন্মোচিত করেছে।

আধুনিক জ্ঞানের গতি

আজকের বিশ্বে জ্ঞান অর্জনের গতি অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। যেখানে একসময় জ্ঞান দ্বিগুণ হতে হাজার বছর লাগত, এখন তা ১০-১৫ বছরের মধ্যে দ্বিগুণ হচ্ছে। বিজ্ঞানীরা শুধু সত্য উদ্ঘাটনেই থেমে থাকেন না, তারা সেই সত্যকে সাধারণ মানুষের কাছে বোধগম্য করে তোলার দায়িত্বও পালন করেন।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতির ফলে জ্ঞানের নতুন নতুন দিক উন্মোচিত হচ্ছে। অসংখ্য বিজ্ঞানী ও প্রযুক্তিবিদদের আবিষ্কার মানব সভ্যতাকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। তবে জ্ঞান-বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় কুসংস্কার ও অন্ধবিশ্বাসের শিকড় এখনো সমাজে রয়ে গেছে। এজন্য সবাইকে বিজ্ঞান শিক্ষায় অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন।

শিক্ষা, জ্ঞান ও গবেষণার সমন্বয়ে একটি সুখী, সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব। এর মাধ্যমে কুসংস্কার দূর হয়ে সমাজ জীবনে উন্নয়ন ও শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।

জনসংখ্যা : সম্পদ না সংকট?

ব্রিকসে নতুন ভূ-রাজনৈতিক ব্যবস্থার উত্থান

রম্যগদ্য : ‘ল্যাংড়া-লুলা, আতুড়-পাতুড়’

আষাঢ়ী পূর্ণিমা : আত্মশুদ্ধির সাধনায় বুদ্ধের অনন্ত আলো

বদলে যাওয়া মাটিতে সাহসী বীজ : জলবায়ুর বিপরীতে বাংলাদেশের কৃষির অভিযোজনগাথা

ছবি

জুলাই অভ্যুত্থান-গাথা : ‘শিকলে নাহি দিব ধরা’

প্রাচীন যৌধেয় জাতি ও তাদের সাম্যবাদী শাসন

গণঅভ্যুত্থান-উত্তর ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের স্বপ্ন

টেকসই উন্নয়নের স্বপ্নপূরণে উপগ্রহ চিত্রই চাবিকাঠি

রাবার শিল্প : সংকট, করণীয় ও উত্তরণের দিশা

রম্যগদ্য : দুধ, দই, কলা...

ছবি

কোপার্নিকাস : আলো হয়ে জন্ম নেওয়া বৈপ্লবিক মতবাদের প্রবর্তক

জলবায়ু সংকটে মানবসভ্যতা

টেকসই অর্থনীতির জন্য চাই টেকসই ব্যাংকিং

ডিজিটাল দাসত্ব : মনোযোগ অর্থনীতি ও জ্ঞান পুঁজিবাদে তরুণ প্রজন্মের মননশীলতার অবক্ষয়

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার : আস্থা ভঙ্গ ও জবাবদিহিতার সংকট

আসামি এখন নির্বাচন কমিশন

কোথায় হারাল একান্নবর্তী পরিবার?

এই শান্তি কি মহাঝড়ের পূর্বলক্ষণ?

মেগাসিটি : দারিদ্র্য যখন ‘অবাঞ্ছিত বর্জ্য’

ফলের রাজ্য পার্বত্য চট্টগ্রাম

ছবি

তৃতীয় শক্তির জন্য জায়গা খালি : বামপন্থীরা কি ঘুরে দাঁড়াতে পারে না

জমি আপনার, দখল অন্যের?

সিধু-কানু : ধ্বংসস্তূপের নিচেও জেগে আছে সাহস

ছবি

বাংলার অনন্য লোকসংস্কৃতি ও গণতান্ত্রিক চেতনা

চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী সাম্পান

তিন দিক থেকে স্বাস্থ্যঝুঁকি : করোনা, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া

দেশের অর্থ পাচারের বাস্তবতা

খাদ্য নিরাপত্তার নতুন দিগন্ত

আবারও কি রোহিঙ্গাদের ত্যাগ করবে বিশ্ব?

প্লান্ট ক্লিনিক বদলে দিচ্ছে কৃষির ভবিষ্যৎ

ঢাকাকে বাসযোগ্য নগরী করতে করণীয়

রম্যগদ্য : ‘ডন ডনা ডন ডন...’

ইরান-ইসরায়েল দ্বন্দ্ব : কে সন্ত্রাসী, কে শিকার?

সুস্থ ও শক্তিশালী জাতি গঠনে শারীরিক শিক্ষার গুরুত্ব

প্রতিরোধই উত্তম : মাদকমুক্ত প্রজন্ম গড়ার ডাক

tab

উপ-সম্পাদকীয়

জ্ঞানই শক্তি

বাবুল রবিদাস

বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪

উন্নয়ন, সুখ, সমৃদ্ধি ও শান্তিপ্রিয় দেশ গড়তে শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। শিক্ষা অর্জিত হয় বই-পুস্তক এবং অভিজ্ঞতা থেকে। একজন ব্যক্তি যখন শিক্ষার মাধ্যমে জ্ঞান অর্জন করেন, তখন তাকে বলা হয় জ্ঞানী ও গুণী। এমন ব্যক্তিরা সমাজ থেকে কুসংস্কার দূর করে গোটা সমাজের চেহারা পাল্টে দিতে পারেন। এ জন্যই বলা হয়- ‘জ্ঞানই শক্তি।’

জ্ঞান অর্জন করলে একজন ব্যক্তি হয়ে ওঠেন আলোকিত, ঠিক সূর্যের কিরণের মতো। জ্ঞান তার ব্যক্তিগত ও সামাজিক সীমানাকে অতিক্রম করে। দেশ-বিদেশ, আপন-পরÑসব কিছুই তার কাছে সমান হয়ে যায়। আজকের আলোচনার বিষয় সেই জ্ঞান, যা মানব সভ্যতার উন্নয়ন ও বিকাশের মূল চাবিকাঠি।

জ্ঞানের সংজ্ঞা ও তাৎপর্য

জ্ঞান এক কথায় হলো পরিচিতি। এটি কোনো কিছুর প্রকৃত অবস্থা, তথ্য, বিবরণ বা গুণাবলীর সঠিক ধারণা। জ্ঞান অর্জন করা যায় উপলব্ধি, অনুসন্ধান, শিক্ষা ও অভিজ্ঞতার মাধ্যমে। শিক্ষার্থীরা শিশুকাল থেকেই স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের কাছ থেকে জ্ঞান আহরণ শুরু করে।

এক সময় জ্ঞানের প্রসার ছিল ধীরগতি। সমাজের মানুষ নতুন জ্ঞান সৃষ্টি নিয়ে তেমন ভাবত না। অজ্ঞতা ও অশিক্ষার কারণে সমাজ ছিল অপরিবর্তিত। কোনো নতুন অভিজ্ঞতা হলে তা এক সময় নতুন জ্ঞানের উৎসে পরিণত হতো; কিন্তু এই অভিজ্ঞতা অর্জনের ঘটনাগুলো ছিল বিরল। পাশাপাশি নতুন জ্ঞান মানুষকে ভয়ও পাইয়ে দিত।

জ্ঞানের আধুনিকায়ন

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগে জ্ঞানের ধারায় এসেছে পরিবর্তন। গ্যালিলিওর সময় থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে জ্ঞান আহরণ শুরু হয়। প্রকৃতিতে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর কারণ নির্ণয় এবং বিশ্লেষণের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা নতুন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেন।

গবেষণার মাধ্যমে নতুন জ্ঞান সৃষ্টি শুরু হলেও প্রথমদিকে এটি খুবই সীমিত ছিল। আর্কিমিডিসের যুগে দর্শন, প্রকৃতি ও বিজ্ঞান ব্যক্তিগত অনুপ্রেরণার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু গ্যালিলিওর সময় থেকে নিয়ন্ত্রিত পরীক্ষার মাধ্যমে নতুন নতুন তত্ত্ব আবিষ্কার হতে থাকে।

জ্ঞানের বাধাগুলো

অতীতে মানুষের কল্পনা, অনুমান ও প্রচলিত বিশ্বাস যাচাই-বাছাই ছাড়াই গ্রহণ করা হতো। এই মানসিকতার কারণে নতুন জ্ঞানের পথে অনেক বাধা সৃষ্টি হয়েছিল। অ্যারিস্টটলীয় দৃষ্টিভঙ্গির মতো অনেক প্রাচীন তত্ত্ব পরীক্ষিত না হলেও প্রচলিত ছিল।

পাশাপাশি নতুন আবিষ্কার বা উদ্ভাবন অনেক সময় সমাজে সহজে গ্রহণযোগ্য হয়নি। কিন্তু মানব সভ্যতার উন্নয়ন ও বিকাশে উদ্ভাবন ও নতুন জ্ঞান অগ্রগতির পথকে উন্মোচিত করেছে।

আধুনিক জ্ঞানের গতি

আজকের বিশ্বে জ্ঞান অর্জনের গতি অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। যেখানে একসময় জ্ঞান দ্বিগুণ হতে হাজার বছর লাগত, এখন তা ১০-১৫ বছরের মধ্যে দ্বিগুণ হচ্ছে। বিজ্ঞানীরা শুধু সত্য উদ্ঘাটনেই থেমে থাকেন না, তারা সেই সত্যকে সাধারণ মানুষের কাছে বোধগম্য করে তোলার দায়িত্বও পালন করেন।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতির ফলে জ্ঞানের নতুন নতুন দিক উন্মোচিত হচ্ছে। অসংখ্য বিজ্ঞানী ও প্রযুক্তিবিদদের আবিষ্কার মানব সভ্যতাকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। তবে জ্ঞান-বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় কুসংস্কার ও অন্ধবিশ্বাসের শিকড় এখনো সমাজে রয়ে গেছে। এজন্য সবাইকে বিজ্ঞান শিক্ষায় অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন।

শিক্ষা, জ্ঞান ও গবেষণার সমন্বয়ে একটি সুখী, সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব। এর মাধ্যমে কুসংস্কার দূর হয়ে সমাজ জীবনে উন্নয়ন ও শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।

back to top