মাহতাব হোসাইন মাজেদ
করোনার পর কোনো ভাইরাসের নাম শুনলেই ভয়ে চুপসে যান অনেকে। করোনার সেই ভয়াবহতা আর নেই। তবে ভবিষ্যতে এ ধরনের ভাইরাসের সংক্রমণের আশঙ্কার কথা প্রায়ই বলছেন বিজ্ঞানীরা। এবার সেই শঙ্কার মধ্যেই নতুন এক ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হলো। অদ্ভুত নামের ভাইরাসটি বর্তমান সময়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। নতুন এই ভাইরাসের নাম ডিঙ্গা ডিঙ্গা। নতুন এ ভাইরাসে আক্রাক্ত হচ্ছেন আফ্রিকার দেশ উগান্ডার বুন্ডিবুগিও জেলার মানুষরা। নারী ও কিশোরীরাই মূলত এ ভাইরাসে আক্রাক্ত হচ্ছেন। প্রায় ৩০০ জন এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এ ভাইরাসে আক্রান্তদের জ্বর এবং অত্যধিক শরীর কাঁপুনি হচ্ছে। এ কারণেই ভাইরাসটির নাম ডিঙ্গা ডিঙ্গা।
আর ডিঙ্গা ডিঙ্গা শব্দটির অর্থ নাচের মতো কাঁপা। স্থানীয় চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা এর কারণ ও প্রতিকারের উপায় বের করার চেষ্টা করছেন। কীভাবে এবং কেন এ রোগ ছড়াচ্ছে তা এখনো জানা যায়নি।
ডিঙ্গা ডিঙ্গায় আক্রান্তের লক্ষণ :
ডিঙ্গা ডিঙ্গায় আক্রান্ত হলে রোগীর শরীরে অত্যধিক কাঁপুনি হতে থাকে। অনিয়ন্ত্রিত কাঁপুনি এ ভাইরাসে আক্রান্তের অন্যতম লক্ষণ। একইসঙ্গে জ্বর, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, সারা শরীরে ব্যথার মতো লক্ষণও দেখা দিতে পারে। মাথাব্যথাও করে। ডিঙ্গা ডিঙ্গায় আক্রান্তের শ্বাসকষ্ট হয়। আক্রান্ত ব্যক্তি খুব দুর্বল হয়ে পড়ে। এমনকি অবস্থা ভয়াবহ হলে দেহ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে যেতে পারে।
ডিঙ্গা ডিঙ্গার ইতিহাস :
২০২৩ সালে প্রথমবার ডিঙ্গা ডিঙ্গা রোগের কথা জানা যায়। আক্রান্তদের মধ্যে জ্বর, মাথা যন্ত্রণা, সর্দি-কাশি, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, সারা শরীর ব্যথার মতো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। এছাড়া ইনফ্লুয়েঞ্জা, করোনা ভাইরাস, ম্যালেরিয়া, হাম হলে যে রকম শ্বাসকষ্ট হয়, ডিঙ্গা ডিঙ্গা রোগেও সেই লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। আর ফ্রান্সে ১৫১৮ সালে প্রায় একইরকম সংক্রমণ দেখা যায়। এই ডিঙ্গা ডিঙ্গার মতোই লক্ষণ ছিল ওই রোগের। তাই স্ট্রাসবার্গের ‘ড্যান্সিং প্লেগের’ সঙ্গে ডিঙ্গা ডিঙ্গার উপসর্গের তুলনা করা হচ্ছে। ওই রোগে আক্রান্তদের দেহ নাচের মতো অনবরত কাঁপতে থাকত। দিনের পর দিন এভাবে নড়াচড়ার পর ক্লান্ত হয়ে অনেকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছিলেন। এদিকে, কঙ্গোতে আরেকটি অজানা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, এ পর্যন্ত ৩৯৪ জন আক্রান্ত ও ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তদের জ্বর, মাথাব্যথা, কাশি, নাক দিয়ে পানি পড়া ও শরীর ব্যথার মতো উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। এই দুই প্রাদুর্ভাবের মধ্যে কোনো সম্পর্ক আছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে উগান্ডার স্বাস্থ্য বিভাগ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
ডিঙ্গা ডিঙ্গার কোনো চিকিৎসা নেই। তবে যে কোনো ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মতোই সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিয়ে এর প্রকোপ রোধ করা যায়। আর ডিঙ্গা ডিঙ্গা রোগের অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা এখনো কার্যকর প্রমাণিত হয়নি। আর হোমিওপ্যাথি সুনির্দিষ্ট চিকিৎসাপদ্ধতি ব্যবহার করলে সাধারণত রোগীরা এক সপ্তাহের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠবেন। আমি সবাইকে অনুরোধ করব, যদি এই রোগের লক্ষণ বাংলাদেশে দেখতে পান তাহলে দ্রুত অভিজ্ঞতা সম্পন্ন হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকের কাছে যান। চিকিৎসা নিলে দ্রুত সময়ে সুস্থ হওয়া সম্ভব।
[লেখক : প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি]
মাহতাব হোসাইন মাজেদ
মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪
করোনার পর কোনো ভাইরাসের নাম শুনলেই ভয়ে চুপসে যান অনেকে। করোনার সেই ভয়াবহতা আর নেই। তবে ভবিষ্যতে এ ধরনের ভাইরাসের সংক্রমণের আশঙ্কার কথা প্রায়ই বলছেন বিজ্ঞানীরা। এবার সেই শঙ্কার মধ্যেই নতুন এক ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হলো। অদ্ভুত নামের ভাইরাসটি বর্তমান সময়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। নতুন এই ভাইরাসের নাম ডিঙ্গা ডিঙ্গা। নতুন এ ভাইরাসে আক্রাক্ত হচ্ছেন আফ্রিকার দেশ উগান্ডার বুন্ডিবুগিও জেলার মানুষরা। নারী ও কিশোরীরাই মূলত এ ভাইরাসে আক্রাক্ত হচ্ছেন। প্রায় ৩০০ জন এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এ ভাইরাসে আক্রান্তদের জ্বর এবং অত্যধিক শরীর কাঁপুনি হচ্ছে। এ কারণেই ভাইরাসটির নাম ডিঙ্গা ডিঙ্গা।
আর ডিঙ্গা ডিঙ্গা শব্দটির অর্থ নাচের মতো কাঁপা। স্থানীয় চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা এর কারণ ও প্রতিকারের উপায় বের করার চেষ্টা করছেন। কীভাবে এবং কেন এ রোগ ছড়াচ্ছে তা এখনো জানা যায়নি।
ডিঙ্গা ডিঙ্গায় আক্রান্তের লক্ষণ :
ডিঙ্গা ডিঙ্গায় আক্রান্ত হলে রোগীর শরীরে অত্যধিক কাঁপুনি হতে থাকে। অনিয়ন্ত্রিত কাঁপুনি এ ভাইরাসে আক্রান্তের অন্যতম লক্ষণ। একইসঙ্গে জ্বর, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, সারা শরীরে ব্যথার মতো লক্ষণও দেখা দিতে পারে। মাথাব্যথাও করে। ডিঙ্গা ডিঙ্গায় আক্রান্তের শ্বাসকষ্ট হয়। আক্রান্ত ব্যক্তি খুব দুর্বল হয়ে পড়ে। এমনকি অবস্থা ভয়াবহ হলে দেহ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে যেতে পারে।
ডিঙ্গা ডিঙ্গার ইতিহাস :
২০২৩ সালে প্রথমবার ডিঙ্গা ডিঙ্গা রোগের কথা জানা যায়। আক্রান্তদের মধ্যে জ্বর, মাথা যন্ত্রণা, সর্দি-কাশি, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, সারা শরীর ব্যথার মতো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। এছাড়া ইনফ্লুয়েঞ্জা, করোনা ভাইরাস, ম্যালেরিয়া, হাম হলে যে রকম শ্বাসকষ্ট হয়, ডিঙ্গা ডিঙ্গা রোগেও সেই লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। আর ফ্রান্সে ১৫১৮ সালে প্রায় একইরকম সংক্রমণ দেখা যায়। এই ডিঙ্গা ডিঙ্গার মতোই লক্ষণ ছিল ওই রোগের। তাই স্ট্রাসবার্গের ‘ড্যান্সিং প্লেগের’ সঙ্গে ডিঙ্গা ডিঙ্গার উপসর্গের তুলনা করা হচ্ছে। ওই রোগে আক্রান্তদের দেহ নাচের মতো অনবরত কাঁপতে থাকত। দিনের পর দিন এভাবে নড়াচড়ার পর ক্লান্ত হয়ে অনেকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছিলেন। এদিকে, কঙ্গোতে আরেকটি অজানা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, এ পর্যন্ত ৩৯৪ জন আক্রান্ত ও ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তদের জ্বর, মাথাব্যথা, কাশি, নাক দিয়ে পানি পড়া ও শরীর ব্যথার মতো উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। এই দুই প্রাদুর্ভাবের মধ্যে কোনো সম্পর্ক আছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে উগান্ডার স্বাস্থ্য বিভাগ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
ডিঙ্গা ডিঙ্গার কোনো চিকিৎসা নেই। তবে যে কোনো ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মতোই সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিয়ে এর প্রকোপ রোধ করা যায়। আর ডিঙ্গা ডিঙ্গা রোগের অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা এখনো কার্যকর প্রমাণিত হয়নি। আর হোমিওপ্যাথি সুনির্দিষ্ট চিকিৎসাপদ্ধতি ব্যবহার করলে সাধারণত রোগীরা এক সপ্তাহের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠবেন। আমি সবাইকে অনুরোধ করব, যদি এই রোগের লক্ষণ বাংলাদেশে দেখতে পান তাহলে দ্রুত অভিজ্ঞতা সম্পন্ন হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকের কাছে যান। চিকিৎসা নিলে দ্রুত সময়ে সুস্থ হওয়া সম্ভব।
[লেখক : প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি]