alt

উপ-সম্পাদকীয়

বায়ু দূষণের কারণে বাড়ছে ওষুধের ব্যবহার

সাঈদ চৌধুরী

: বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

বায়ু দূষণের কারণে ওষুধের ওপর নির্ভরশীলতা বাড়ছে। এলার্জি, ঠান্ডা, স্বর্দি, কাশি এখন অনেক ধীরে সারে। আগে এক ধরণের এন্টি হিস্টামিন বা এন্টি এলার্জিক ব্যবহার করলেও এখন কমবাইন্ড ওষুধ প্রয়োগ করতে হচ্ছে এই ধরণের রোগ সারাতে। যেখানে প্রচুর গাছ আছে সেখানেই কি কেবল সমস্যা কম? তা কিন্তু নয় কারণ প্রকৃতিতেও এলার্জিক উপাদান আছে। বিশেষ করে নতুন ধান, নতুন ফুল অথবা শীতের সময় কুয়াশায় কিছু ব্যকটেরিয়ার উপস্থিতি মানুষের শ্বাসনালীতে সংক্রমণ ঘটায়।

আমাদের দেশে এক ধরনের গবেষণা বেশি। যেমন বায়ু দূষণের কারণে কী কী রোগ হতে পারে। কিন্তু প্রকৃতিগত পরিবর্তনে বায়োলজিক্যাল পরিবর্তন ও সব ধরণের দূষকের উপস্থিতিতে বাতাসের গুণাগুণের পরিবর্তন নিয়ে এখনও তেমন কাজ হয়েছে বলে জানা নেই। গাজীপুরের ভাওয়াল গড়ের বন আছে এখনও কিছু। এমনিতেও বৃক্ষ আছে। চাষাবাদেও ক্ষেত্রে ধান সহ অনেক ফসল হয়। সাথে সাথে সব ধরণের ইন্ডাস্ট্রি এখানে আছে। আছে পানি থেকে বায়ু দূষণ এবং সরাসরি বায়ু দূষণের ক্ষেত্র। এজন্য অনেকবার উঠে এসেছে সবচেয়ে দূষিত বায়ুর শহর হিসেবে গাজীপুরের নাম। বাতাসের মান নির্ভর করে ভাসমান সূক্ষ্ম ধূলিকণার পরিমাণ (পার্টিকুলেট ম্যাটার বা পিএম-১০) এবং অতি সূক্ষ্ম ধূলিকণার পরিমাণের (পিএম ২.৫) ওপর, যা পরিমাপ করা হয় প্রতি ঘনমিটারে মাইক্রোগ্রাম (পার্টস পার মিলিয়ন- পিপিএম) এককে।

কিন্তু সূক্ষ্ম ধূলিকণার বাইরে এমন কোন উপাদান আছে যা মানুষের শ্বাসনালীসহ ফুসফুসের জন্য ক্ষতিকর। কেমিক্যাল বায়ুকে যে দূষণ করছে তা সূর্যের আলোর উপস্থিতিতে ভূপৃষ্ঠে আরও সময় ধরে থেকে যাচ্ছে। এ ধরণের দূষণ নিয়ে তেমন কোনো কথা হয় না। বায়ু দূষণের প্রতিটি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ইপাদান নিয়ে কাজ না হলে ওষুধ সেবনের মাত্রা সাধারণ মানুষে আরও বাড়বে। তারা যেকোনো শারীরিক পরিবর্তনকে বা অসুস্থতাকে ঠান্ডা বা সর্দি হিসেবে ধরে নিয়ে এন্টি হিস্টামিন, মন্টিলুকাস্ট টাইপের ওষুধ ব্যবহার করেই যাচ্ছে।

গাজীপুরে যে পরিমাণ মন্টিলুকাস্ট জাতীয় ওষুধ বিক্রি হয় তা পৃথিবীর আর কোনো শহরে হয় কিনা জানা নেই। আগে জ্বরের ট্যাবলেট যেমন নাপা মানুষ জানতো তেমনি মন্টিলুকাস্ট গ্রুপের (এম-কাস্ট, মনটেয়ার) ওষুধের কথা সবাই জানে এবং ঘরে রাখতে বাধ্য হয়। ওষুধের এমন সঙ্গী হওয়া আমাদের কোন দিকে ধাবিত করছে? এর সাথে তো এন্টিবায়োটিকের বিরূপ ব্যবহার আছেই।

আসলে এখন গবেষণা হওয়া দরকার বাতাসের উপাদানগুলো কত প্রকারে কোন জায়গায় পরিবর্তন হয়েছেন। একটি কেমিক্যাল উপাদানের সাথে প্রকৃতির এলার্জিক যে উপাদান আছে সেগুলো রি-অ্যাকশন করে কি ধরণের উপাদানে পরিনত হচ্ছে। সাথে সাথে গাছ দিয়ে দূষণ নিয়ন্ত্রণের চিন্তাকেও ঢেলে সাজাতে হবে। একদিকে বৃক্ষ রোপণ বাড়াতে হবে আর অন্যদিকে বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রক ফিল্টারগুলো বাড়াতে হবে। পরিবেশ অধিদপ্তর বাতাসের মান পরীক্ষার একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে কিন্তু এখন এই রিপোর্ট প্রকাশের সাথে সাথে স্বাস্থ্য বিভাগের সাথে তাদের এক হয়ে কাজ করা প্রয়োজন। স্বাস্থ্য বিভাগ দেখবে কন্টামিনেটেড এয়ার এবং বর্তমান ওষুধ কতটা কার্যকরী কোন ক্ষেত্রে। তারপর একটি প্রেসক্রিপশন হবে কোন এলাকায় কোন ধরনের ওষুধ বেশি কার্যকরী বা কার্যকরী নয়। এভাবে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে ওষুধের ব্যবহার সব ওষুধের কার্যকারিতা বন্ধের পাশাপাশি সৃষ্টি করে ফেলতে পারে নতুন রোগের। সুতরাং গুরুত্ব দিয়ে এ বিষয়গুলো ভাবা হবেÑ এটাই প্রত্যাশা।

[লেখক : রসায়নবিদ ও পরিবেশকর্মী]

শুভ বড়দিন

উগান্ডায় নতুন ভাইরাস ডিঙ্গা ডিঙ্গা

পরিবেশবান্ধব ঢাকা চাই

বনভূমি রক্ষায় কার্যকর উদ্যোগ প্রয়োজন

ছবি

২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা : ফ্যাসিবাদী প্রবণতা সৃষ্টির প্রথম ভ্রুণ

ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ভূমিকা

প্রগতিতে অগ্রগতি

পরিবারতন্ত্র ও পরিবারতত্ত্ব : উত্তরণের উপায়

উপেক্ষিত উত্তরাঞ্চলের আদিবাসীরা

সরিষার তেল গবেষণায় সাফল্য

সিরিয়ায় রাজনৈতিক পালাবদল : কার লাভ, কার ক্ষতি?

অতীত থেকে মুক্তি এবং ইতিবাচক জীবনযাপন

মুক্তি সংগ্রামে তিনটি ধারা

বাসযোগ্যতার সূচকে ঢাকা কেন পিছিয়ে

শুধু নিচেই নামছে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর

উপেক্ষিত আটকে পড়া পাকিস্তানিরা

রম্যগদ্য : সিন্দাবাদের বুড়ো ও আমরা

নেই কেনো সেই পাখি

বায়ুদূষণ থেকে মুক্তি কোন পথে

পরিবারতত্ত্ব ও পরিবারতন্ত্র : রাষ্ট্র সংস্কারের দুর্গম পথ

পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র

বিজয়ের প্রেরণা

মুক্তিযুদ্ধের উত্তরাধিকার পুনর্বীক্ষণ

সিদরাত জেবিনের মৃত্যু অথবা প্রশ্নহীন বায়ুদূষণ

বিজয়ের গৌরব ও সম্ভাবনাময় তরুণ সমাজ

ছবি

মুক্তিযুদ্ধে বিদেশি বন্ধুদের অবদান

ছবি

বিজয় সংগ্রামের সূচনার সন্ধানে

মানসম্মত কনটেন্ট ও টিআরপির দ্বৈরথ

জিকা ভাইরাস রোধে প্রয়োজন সচেতনতা

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক

স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট সেবার গুরুত্ব

ঢাকার বাতাস বিষাক্ত কেন

চরের কৃষি ও কৃষকের জীবন

নিম্ন আয়ের মানুষ ভালো নাই

সবার আগে নিজেকে পরিবর্তন করা দরকার

পুলিশ কবে পুলিশ হবে

tab

উপ-সম্পাদকীয়

বায়ু দূষণের কারণে বাড়ছে ওষুধের ব্যবহার

সাঈদ চৌধুরী

বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

বায়ু দূষণের কারণে ওষুধের ওপর নির্ভরশীলতা বাড়ছে। এলার্জি, ঠান্ডা, স্বর্দি, কাশি এখন অনেক ধীরে সারে। আগে এক ধরণের এন্টি হিস্টামিন বা এন্টি এলার্জিক ব্যবহার করলেও এখন কমবাইন্ড ওষুধ প্রয়োগ করতে হচ্ছে এই ধরণের রোগ সারাতে। যেখানে প্রচুর গাছ আছে সেখানেই কি কেবল সমস্যা কম? তা কিন্তু নয় কারণ প্রকৃতিতেও এলার্জিক উপাদান আছে। বিশেষ করে নতুন ধান, নতুন ফুল অথবা শীতের সময় কুয়াশায় কিছু ব্যকটেরিয়ার উপস্থিতি মানুষের শ্বাসনালীতে সংক্রমণ ঘটায়।

আমাদের দেশে এক ধরনের গবেষণা বেশি। যেমন বায়ু দূষণের কারণে কী কী রোগ হতে পারে। কিন্তু প্রকৃতিগত পরিবর্তনে বায়োলজিক্যাল পরিবর্তন ও সব ধরণের দূষকের উপস্থিতিতে বাতাসের গুণাগুণের পরিবর্তন নিয়ে এখনও তেমন কাজ হয়েছে বলে জানা নেই। গাজীপুরের ভাওয়াল গড়ের বন আছে এখনও কিছু। এমনিতেও বৃক্ষ আছে। চাষাবাদেও ক্ষেত্রে ধান সহ অনেক ফসল হয়। সাথে সাথে সব ধরণের ইন্ডাস্ট্রি এখানে আছে। আছে পানি থেকে বায়ু দূষণ এবং সরাসরি বায়ু দূষণের ক্ষেত্র। এজন্য অনেকবার উঠে এসেছে সবচেয়ে দূষিত বায়ুর শহর হিসেবে গাজীপুরের নাম। বাতাসের মান নির্ভর করে ভাসমান সূক্ষ্ম ধূলিকণার পরিমাণ (পার্টিকুলেট ম্যাটার বা পিএম-১০) এবং অতি সূক্ষ্ম ধূলিকণার পরিমাণের (পিএম ২.৫) ওপর, যা পরিমাপ করা হয় প্রতি ঘনমিটারে মাইক্রোগ্রাম (পার্টস পার মিলিয়ন- পিপিএম) এককে।

কিন্তু সূক্ষ্ম ধূলিকণার বাইরে এমন কোন উপাদান আছে যা মানুষের শ্বাসনালীসহ ফুসফুসের জন্য ক্ষতিকর। কেমিক্যাল বায়ুকে যে দূষণ করছে তা সূর্যের আলোর উপস্থিতিতে ভূপৃষ্ঠে আরও সময় ধরে থেকে যাচ্ছে। এ ধরণের দূষণ নিয়ে তেমন কোনো কথা হয় না। বায়ু দূষণের প্রতিটি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ইপাদান নিয়ে কাজ না হলে ওষুধ সেবনের মাত্রা সাধারণ মানুষে আরও বাড়বে। তারা যেকোনো শারীরিক পরিবর্তনকে বা অসুস্থতাকে ঠান্ডা বা সর্দি হিসেবে ধরে নিয়ে এন্টি হিস্টামিন, মন্টিলুকাস্ট টাইপের ওষুধ ব্যবহার করেই যাচ্ছে।

গাজীপুরে যে পরিমাণ মন্টিলুকাস্ট জাতীয় ওষুধ বিক্রি হয় তা পৃথিবীর আর কোনো শহরে হয় কিনা জানা নেই। আগে জ্বরের ট্যাবলেট যেমন নাপা মানুষ জানতো তেমনি মন্টিলুকাস্ট গ্রুপের (এম-কাস্ট, মনটেয়ার) ওষুধের কথা সবাই জানে এবং ঘরে রাখতে বাধ্য হয়। ওষুধের এমন সঙ্গী হওয়া আমাদের কোন দিকে ধাবিত করছে? এর সাথে তো এন্টিবায়োটিকের বিরূপ ব্যবহার আছেই।

আসলে এখন গবেষণা হওয়া দরকার বাতাসের উপাদানগুলো কত প্রকারে কোন জায়গায় পরিবর্তন হয়েছেন। একটি কেমিক্যাল উপাদানের সাথে প্রকৃতির এলার্জিক যে উপাদান আছে সেগুলো রি-অ্যাকশন করে কি ধরণের উপাদানে পরিনত হচ্ছে। সাথে সাথে গাছ দিয়ে দূষণ নিয়ন্ত্রণের চিন্তাকেও ঢেলে সাজাতে হবে। একদিকে বৃক্ষ রোপণ বাড়াতে হবে আর অন্যদিকে বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রক ফিল্টারগুলো বাড়াতে হবে। পরিবেশ অধিদপ্তর বাতাসের মান পরীক্ষার একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে কিন্তু এখন এই রিপোর্ট প্রকাশের সাথে সাথে স্বাস্থ্য বিভাগের সাথে তাদের এক হয়ে কাজ করা প্রয়োজন। স্বাস্থ্য বিভাগ দেখবে কন্টামিনেটেড এয়ার এবং বর্তমান ওষুধ কতটা কার্যকরী কোন ক্ষেত্রে। তারপর একটি প্রেসক্রিপশন হবে কোন এলাকায় কোন ধরনের ওষুধ বেশি কার্যকরী বা কার্যকরী নয়। এভাবে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে ওষুধের ব্যবহার সব ওষুধের কার্যকারিতা বন্ধের পাশাপাশি সৃষ্টি করে ফেলতে পারে নতুন রোগের। সুতরাং গুরুত্ব দিয়ে এ বিষয়গুলো ভাবা হবেÑ এটাই প্রত্যাশা।

[লেখক : রসায়নবিদ ও পরিবেশকর্মী]

back to top