মোতাহার হোসেন
শহরের কংক্রিটের গণ্ডি থেকে বেরিয়ে প্রকৃতির মধ্যে কিছু সময় কাটানো মানে নিজের জীবনের সৃজনশীলতা এবং প্রকৃত সৌন্দর্য খুঁজে পাওয়া
আজকের আধুনিক যুগে উন্নয়ন এবং অবকাঠামো মানুষের জীবনযাত্রার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। মানুষের প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী সুখ, স্বাচ্ছন্দ্য, আরাম-আয়েশের জন্য অবকাঠামো নির্মাণ যেমন- রাস্তাঘাট, সড়ক, পুল, কালভার্ট, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পানি, আলো, বাতাস, এবং অন্যান্য সুবিধা অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। তবে এ উন্নয়নের পাশাপাশি প্রকৃতির উপাদানগুলো অপরিহার্য। জীববৈচিত্র্য, গাছপালা, বনভূমি, পাহাড়, নদী, সাগর এবং মহাসাগরের ভূমিকা আমাদের জীবনে অমূল্য। এসব প্রাকৃতিক সম্পদ ছাড়া আমাদের জীবন অচল।
প্রকৃতি আমাদের শুধু শারীরিক জীবনের জন্য নয়, মানসিক শান্তি ও শৃঙ্খলার জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে, মানুষ উন্নয়ন বা অবকাঠামো নির্মাণের প্রক্রিয়ায় কখনও কখনও প্রকৃতির প্রতি অবহেলা করে। ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য বনভূমি, গাছপালা, পাহাড়, নদী, সাগর, জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করে চলেছে। এ ধ্বংসযজ্ঞের ফলে পরিবেশ বিপর্যয় ঘটছে, যা বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সৃষ্টি করছেÑঝড়, জলোচ্ছ্বাস, অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, বন্যা, ভূমিকম্প, শুষ্কতা এবং একদিকে বরফ গলার মতো পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। এসব বিপর্যয়ের ফলস্বরূপ মানুষের জীবন, স্বাস্থ্য এবং অর্থনীতি দুরবস্থার মধ্যে পড়ছে।
এখন সময় এসেছে আমাদের আরও সচেতন হওয়ার। যদি আমরা প্রকৃতির উপাদানগুলোকে অক্ষুণœ রেখে উন্নয়ন ও অবকাঠামো গড়ে তুলি, তবে তা শুধু আমাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করবে না, বরং আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্যও একটি নিরাপদ ও সুখী পরিবেশ সৃষ্টি করবে। তবে বাস্তবে আমরা দেখি যে উন্নয়ন পরিকল্পনার ক্ষেত্রে এই বিষয়গুলোর প্রভাব সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। উন্নয়ন কর্মকা-ের মধ্যে প্রকৃতি এবং পরিবেশের গুরুত্ব অনেক সময় উপেক্ষিত হয়।
ঢাকা শহরের উদাহরণ নেওয়া যাক। শহরটির উন্নয়ন এবং অবকাঠামো নির্মাণের জন্য প্রতিনিয়ত উদ্যোগ নেওয়া হয়Ñসুউচ্চ অট্টালিকা নির্মাণ, সড়ক ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, এবং নানা ধরনের অবকাঠামো প্রকল্প। প্রতিদিন মানুষ এই শহরে দৌড়াচ্ছে, নানা কাজে ব্যস্ত। কিন্তু কখনও কি আমরা সেই মুহূর্তে প্রকৃতির সাথে সংযোগ স্থাপন করতে পারি? এমন একদিন আসবে, যখন আমরা শহরের শব্দ, কোলাহল থেকে কিছুটা সময় বের করে প্রকৃতির মধ্যে শান্তি পাবো। এমন একটি দিন, যখন আমাদের চারপাশে থাকবে স্বচ্ছ আকাশ, নির্মল বাতাস এবং শান্ত পরিবেশ।
তবে শহুরে জীবনে এমন পরিবেশ খুঁজে পাওয়া কঠিন। প্রকৃতির কাছে গিয়ে, পাখির ডাক শুনে, ফুলের গন্ধে মগ্ন হয়ে যদি কিছু সময় কাটানো যায়, তবে তা কেবল আমাদের শারীরিক বিশ্রাম নয়, বরং আমাদের মনের প্রশান্তির জন্যও অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। শহরের কংক্রিটের গ-ি থেকে বেরিয়ে প্রকৃতির মধ্যে কিছু সময় কাটানো মানে নিজের জীবনের সৃজনশীলতা এবং প্রকৃত সৌন্দর্য খুঁজে পাওয়া।
বিশ্বব্যাপী একটি ধারণা হচ্ছে নেচার রিমাইন্ডার ডে, যেখানে মানুষ প্রকৃতির গুরুত্ব উপলব্ধি করে এবং প্রকৃতির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে। বিভিন্ন দেশে এই দিবস পালিত হয়, যদিও আমাদের দেশে এর প্রচার সীমিত। তবে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নির্দিষ্ট তারিখে এই দিবসটির প্রচার বৃদ্ধি পায় এবং মানুষ একত্রিত হয়ে প্রকৃতির গুরুত্ব তুলে ধরেন। আমাদের দেশের ক্ষেত্রে, ‘দিগন্ত’ শুধু আকাশ এবং মাটির মিলনরেখা নয়, এটি শান্তির খোঁজ। প্রকৃতির সাথে সময় কাটানোর অভিজ্ঞতা মানুষকে নতুন করে জীবন উপলব্ধি করতে সাহায্য করে।
সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, রাঙ্গামাটি, কক্সবাজার এবং মৌলভীবাজারের মতো অঞ্চলে প্রকৃতির অমূল্য সৌন্দর্য মানুষকে আকর্ষণ করে। এই স্থানগুলো প্রকৃতির সাথে মানুষের সম্পর্কের একটি চমৎকার উদাহরণ। এসব স্থানগুলো মানুষকে শান্তি, প্রশান্তি এবং শুদ্ধ জীবনের অনুভূতি দেয়। মৌলভীবাজারের কাউয়াদিঘি হাওরের একটি ভ্রমণ সেই শান্তির প্রমাণ। হাওরের জলরাশির সৌন্দর্য এবং শান্তি মানুষকে প্রকৃতির গভীরে নিয়ে যায়।
তবে বর্তমানে এমন প্রকৃতিক সৌন্দর্যের বিপরীতে নানা চ্যালেঞ্জও দেখা যাচ্ছে। হাওর অঞ্চলের পানি, নদী ও জলাশয় অনেক সময় কমে যাচ্ছে। অন্য বছরের তুলনায় এই অঞ্চলে পানির স্তর অনেক কমে গেছে। এটি প্রকৃতির প্রতি অবহেলার ফলস্বরূপ হতে পারে। তবে একদিকে স্থানীয় মানুষ এখনও প্রকৃতির মধ্যে শান্তি খুঁজে পান। এ অঞ্চলের জলাবন, করচগাছের জলে শরীর ডুবিয়ে কাটানো মানুষকে প্রশান্তি দেয়।
এতসব পরিপ্রেক্ষিতের মধ্যে আমাদের কাছে একটি প্রশ্ন রয়েছেÑ কিভাবে আমরা প্রকৃতিকে রক্ষা করতে পারি এবং উন্নয়নের সঙ্গে সমন্বয় স্থাপন করতে পারি? উত্তর একটাইÑ আমাদের অবশ্যই প্রকৃতির উপাদানগুলোকে রক্ষা করে উন্নয়ন করতে হবে। তা হলেই মানুষের জীবন থাকবে সুখী এবং নিরাপদ। এই ধরনের সমন্বয় ব্যবস্থা কেবল আমাদের বর্তমান প্রজন্মের জন্যই নয়, ভবিষ্যতের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অতএব, আসুন আমরা প্রকৃতির প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা বুঝে, সকল অবকাঠামো নির্মাণের সময় প্রকৃতির সুরক্ষা নিশ্চিত করি। এতে প্রকৃতি বাঁচবে, মানুষও বাঁচবে। আমাদের প্রজন্ম এবং পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল পৃথিবী গড়ে উঠবে।
[লেখক : সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরাম]
মোতাহার হোসেন
শহরের কংক্রিটের গণ্ডি থেকে বেরিয়ে প্রকৃতির মধ্যে কিছু সময় কাটানো মানে নিজের জীবনের সৃজনশীলতা এবং প্রকৃত সৌন্দর্য খুঁজে পাওয়া
রোববার, ১০ আগস্ট ২০২৫
আজকের আধুনিক যুগে উন্নয়ন এবং অবকাঠামো মানুষের জীবনযাত্রার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। মানুষের প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী সুখ, স্বাচ্ছন্দ্য, আরাম-আয়েশের জন্য অবকাঠামো নির্মাণ যেমন- রাস্তাঘাট, সড়ক, পুল, কালভার্ট, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পানি, আলো, বাতাস, এবং অন্যান্য সুবিধা অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। তবে এ উন্নয়নের পাশাপাশি প্রকৃতির উপাদানগুলো অপরিহার্য। জীববৈচিত্র্য, গাছপালা, বনভূমি, পাহাড়, নদী, সাগর এবং মহাসাগরের ভূমিকা আমাদের জীবনে অমূল্য। এসব প্রাকৃতিক সম্পদ ছাড়া আমাদের জীবন অচল।
প্রকৃতি আমাদের শুধু শারীরিক জীবনের জন্য নয়, মানসিক শান্তি ও শৃঙ্খলার জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে, মানুষ উন্নয়ন বা অবকাঠামো নির্মাণের প্রক্রিয়ায় কখনও কখনও প্রকৃতির প্রতি অবহেলা করে। ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য বনভূমি, গাছপালা, পাহাড়, নদী, সাগর, জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করে চলেছে। এ ধ্বংসযজ্ঞের ফলে পরিবেশ বিপর্যয় ঘটছে, যা বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সৃষ্টি করছেÑঝড়, জলোচ্ছ্বাস, অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, বন্যা, ভূমিকম্প, শুষ্কতা এবং একদিকে বরফ গলার মতো পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। এসব বিপর্যয়ের ফলস্বরূপ মানুষের জীবন, স্বাস্থ্য এবং অর্থনীতি দুরবস্থার মধ্যে পড়ছে।
এখন সময় এসেছে আমাদের আরও সচেতন হওয়ার। যদি আমরা প্রকৃতির উপাদানগুলোকে অক্ষুণœ রেখে উন্নয়ন ও অবকাঠামো গড়ে তুলি, তবে তা শুধু আমাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করবে না, বরং আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্যও একটি নিরাপদ ও সুখী পরিবেশ সৃষ্টি করবে। তবে বাস্তবে আমরা দেখি যে উন্নয়ন পরিকল্পনার ক্ষেত্রে এই বিষয়গুলোর প্রভাব সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। উন্নয়ন কর্মকা-ের মধ্যে প্রকৃতি এবং পরিবেশের গুরুত্ব অনেক সময় উপেক্ষিত হয়।
ঢাকা শহরের উদাহরণ নেওয়া যাক। শহরটির উন্নয়ন এবং অবকাঠামো নির্মাণের জন্য প্রতিনিয়ত উদ্যোগ নেওয়া হয়Ñসুউচ্চ অট্টালিকা নির্মাণ, সড়ক ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, এবং নানা ধরনের অবকাঠামো প্রকল্প। প্রতিদিন মানুষ এই শহরে দৌড়াচ্ছে, নানা কাজে ব্যস্ত। কিন্তু কখনও কি আমরা সেই মুহূর্তে প্রকৃতির সাথে সংযোগ স্থাপন করতে পারি? এমন একদিন আসবে, যখন আমরা শহরের শব্দ, কোলাহল থেকে কিছুটা সময় বের করে প্রকৃতির মধ্যে শান্তি পাবো। এমন একটি দিন, যখন আমাদের চারপাশে থাকবে স্বচ্ছ আকাশ, নির্মল বাতাস এবং শান্ত পরিবেশ।
তবে শহুরে জীবনে এমন পরিবেশ খুঁজে পাওয়া কঠিন। প্রকৃতির কাছে গিয়ে, পাখির ডাক শুনে, ফুলের গন্ধে মগ্ন হয়ে যদি কিছু সময় কাটানো যায়, তবে তা কেবল আমাদের শারীরিক বিশ্রাম নয়, বরং আমাদের মনের প্রশান্তির জন্যও অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। শহরের কংক্রিটের গ-ি থেকে বেরিয়ে প্রকৃতির মধ্যে কিছু সময় কাটানো মানে নিজের জীবনের সৃজনশীলতা এবং প্রকৃত সৌন্দর্য খুঁজে পাওয়া।
বিশ্বব্যাপী একটি ধারণা হচ্ছে নেচার রিমাইন্ডার ডে, যেখানে মানুষ প্রকৃতির গুরুত্ব উপলব্ধি করে এবং প্রকৃতির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে। বিভিন্ন দেশে এই দিবস পালিত হয়, যদিও আমাদের দেশে এর প্রচার সীমিত। তবে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নির্দিষ্ট তারিখে এই দিবসটির প্রচার বৃদ্ধি পায় এবং মানুষ একত্রিত হয়ে প্রকৃতির গুরুত্ব তুলে ধরেন। আমাদের দেশের ক্ষেত্রে, ‘দিগন্ত’ শুধু আকাশ এবং মাটির মিলনরেখা নয়, এটি শান্তির খোঁজ। প্রকৃতির সাথে সময় কাটানোর অভিজ্ঞতা মানুষকে নতুন করে জীবন উপলব্ধি করতে সাহায্য করে।
সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, রাঙ্গামাটি, কক্সবাজার এবং মৌলভীবাজারের মতো অঞ্চলে প্রকৃতির অমূল্য সৌন্দর্য মানুষকে আকর্ষণ করে। এই স্থানগুলো প্রকৃতির সাথে মানুষের সম্পর্কের একটি চমৎকার উদাহরণ। এসব স্থানগুলো মানুষকে শান্তি, প্রশান্তি এবং শুদ্ধ জীবনের অনুভূতি দেয়। মৌলভীবাজারের কাউয়াদিঘি হাওরের একটি ভ্রমণ সেই শান্তির প্রমাণ। হাওরের জলরাশির সৌন্দর্য এবং শান্তি মানুষকে প্রকৃতির গভীরে নিয়ে যায়।
তবে বর্তমানে এমন প্রকৃতিক সৌন্দর্যের বিপরীতে নানা চ্যালেঞ্জও দেখা যাচ্ছে। হাওর অঞ্চলের পানি, নদী ও জলাশয় অনেক সময় কমে যাচ্ছে। অন্য বছরের তুলনায় এই অঞ্চলে পানির স্তর অনেক কমে গেছে। এটি প্রকৃতির প্রতি অবহেলার ফলস্বরূপ হতে পারে। তবে একদিকে স্থানীয় মানুষ এখনও প্রকৃতির মধ্যে শান্তি খুঁজে পান। এ অঞ্চলের জলাবন, করচগাছের জলে শরীর ডুবিয়ে কাটানো মানুষকে প্রশান্তি দেয়।
এতসব পরিপ্রেক্ষিতের মধ্যে আমাদের কাছে একটি প্রশ্ন রয়েছেÑ কিভাবে আমরা প্রকৃতিকে রক্ষা করতে পারি এবং উন্নয়নের সঙ্গে সমন্বয় স্থাপন করতে পারি? উত্তর একটাইÑ আমাদের অবশ্যই প্রকৃতির উপাদানগুলোকে রক্ষা করে উন্নয়ন করতে হবে। তা হলেই মানুষের জীবন থাকবে সুখী এবং নিরাপদ। এই ধরনের সমন্বয় ব্যবস্থা কেবল আমাদের বর্তমান প্রজন্মের জন্যই নয়, ভবিষ্যতের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অতএব, আসুন আমরা প্রকৃতির প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা বুঝে, সকল অবকাঠামো নির্মাণের সময় প্রকৃতির সুরক্ষা নিশ্চিত করি। এতে প্রকৃতি বাঁচবে, মানুষও বাঁচবে। আমাদের প্রজন্ম এবং পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল পৃথিবী গড়ে উঠবে।
[লেখক : সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরাম]