alt

উপ-সম্পাদকীয়

জীবন থেকে নেয়া শিক্ষাগুলোই এগিয়ে দেয় জীবনকে

কামরুজ্জামান

: রোববার, ১৭ আগস্ট ২০২৫

মানুষের জীবনে শেখার শেষ নেই। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত শিক্ষা লাভ করে। একাডেমি পড়ালেখা করা একরকম আর জীবনের ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করা আরেকরকম। দুটো জায়গায়ই মানুষ শিক্ষা লাভ করে। একাডেমিক পড়ালেখায় মানুষ মেধা ও পরিশ্রম করে ভালো ফলাফল অর্জন করে শিক্ষা লাভ করে; আর বাস্তব জীবনে মানুষ বিভিন্ন সমস্যা ও প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে অভিজ্ঞতা অর্জন করে শিক্ষা লাভ করে।

মানুষ পরাজিত হওয়ার জন্য পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করেনি। প্রতিটি মানুষই কোনো না কোনো সময় বিজয়ী হয়। টাকাপয়সা অর্থ চাকরি ব্যবসা বাণিজ্য ইত্যাদি মাধ্যমেই শুধু মানুষ জয় লাভ করে নাÑ আরও অনেক মাধ্যমে মানুষ সফল হয় জয় লাভ করে। যেমন- একজন মানুষ যদি শুধু ভালো মানুষ হয় তাহলেও সে জয়ী হয়। কেন না পৃথিবীতে ভালো মানুষ হয়ে বেঁচে থাকা অত্যন্ত কঠিন কাজ।

একজন মানুষ জীবনে চলার পথে বিভিন্নভাবে প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয় এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করে। তবে সবচেয়ে বেশি অভিজ্ঞতা অর্জন করে এবং শিক্ষা লাভ করে ভুল করার মাধ্যমে। ভুল মানুষকে যেমন ধ্বংসের পথে নিয়ে যায় তেমনি ভুল মানুষকে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি জোগায়। কোনো কাজে মানুষ কখনও কখনও অকৃতকার্য হলে দ্বিগুণ শক্তি নিয়ে এগিয়ে যায়। আর এটা সম্ভব হয় তখনই যখন মানুষটি মনে মনে প্রতিজ্ঞা করে তাকে সফল হতেই হবে। তাকে তার গন্তব্যে পৌঁছাতেই হবে।

মানুষ উন্নতির পথে সাধারণত যেসব সমস্যার সম্মুখীন হয় সেগুলো সবার ক্ষেত্রে প্রায় একই রকম। যেমন- একটা সময় পর্যন্ত অর্থনৈতিক সংকটে থাকা : প্রতিটি মানুষই জীবনে কোনো না কোনো সময় অর্থনৈতিক সংকটে ভোগে। যারা প্রচুর বিত্তবৈভবে জন্মগ্রহণ করে তাদের কথা আলাদা। পৃথিবীর বেশির ভাগ মানুষ দরিদ্র ও নিম্ন মধ্যবিত্ত। যারা পড়ালেখা করতে পারে তারা একটা সময় পরে চাকরি করে জীবন পরিচালনা করে। যারা পড়ালেখা করার সুযোগ পায় না তারা অল্প বয়সেই কাজে লেগে যায়। যে কোনো কাজে লেগে যাওয়া বা চাকরি করা এমনি এমনি হয় না। এখানেও কঠোর সংগ্রাম এবং যুদ্ধ করতে হয়। কখনো কখনো একটা চাকরি বা কাজ পাওয়ার জন্য মানুষকে দিনের পর দিন মাসের পর এমনকি বছরের পর বছরও অপেক্ষা করতে হয়। তবে যারা বুদ্ধিমান এবং তীক্ষè চিন্তার অধিকারী তারা ভেঙে পড়ে না। তারা ধৈর্য্য ধরে এগিয়ে যায় এবং একসময় সফল হয়।

কাছাকাছি মানুষের অসহযোগিতা: একটা সময় পর্যন্ত মানুষ সহযোগিতা করে আন্তরিকতা দেখায়। যখনই মানুষ নিজেকে বদলাতে শুরু করে উন্নতির দিকে এগিয়ে যেতে থাকে তখনই শুরু হয় অসহযোগিতা এবং এটা কাছের মানুষগুলো সবচেয়ে বেশি করে। এমনও দেখা যায়Ñ আপন ভাই ভাইয়ের শত্রু হয়ে যায়। বন্ধু বন্ধুর শত্রু হয়ে যায়। নিটক প্রতিবেশী আত্মীয় শত্রু হয়ে যায়। মানুষের একটা স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য হচ্ছেÑ অন্যের সুখ এবং উন্নতি তার সহ্য হয় না।

কাছের মানুষের সঙ্গেই প্রতিযোগিতা : আসল সত্যটি হচ্ছে- পৃথিবীতে সবাই সবার প্রতিযোগী। এমনকি রক্তের সম্পর্কের মানুষগুলো একসময় প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠে মারাত্মকভাবে। ভাই ভাইয়ের প্রতিদ্বন্দ্বী, কখনও কখনও স্ত্রী স্বামীর প্রতিদ্বন্দ্বী, পরিবারের এক সদস্য আরেকজনের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বী, কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বী, বন্ধু বন্ধুর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বী। এভাবেই কেউ একজন এগিয়ে যেতে চাইলে অন্যেরা প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠে । নানা রকম কলাকৌশল করে পেছনে ফেলার চেষ্টা করে। যারা বুদ্ধিমান এবং ধৈর্য্যশীল তারা এই সব মোকাবিলা করেই এগিয়ে যায়। সফলতা নামক সোনার হরিণ ছিনিয়ে আনে। মনে রাখতে হবে এই পৃথিবীতে এমনি এমনি কিছু হয় না। পরিশ্রম এবং অধ্যাবসায় এবং বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা একজন মানুষকে পরিপূর্ণ সফলতা এনে দেয়।

নিজের কাজের মূল্যায়ন না হওয়া : প্রতিটি মানুষ তার নিজের কাজের মূল্যায়ন চায়। কাজের স্বীকৃতি মানুষকে আরও বেশি কাজ করতে উৎসাহ জোগায়; কিন্তু আমাদের সমাজ বাস্তবতা হচ্ছেÑ মানুষ কাজের স্বীকৃতি দিতে চায় না। বরং বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বিরোধিতা করে । ভালো কাজ করলেও অসহযোগিতা করে এবং কখনও কখনও শত্রুতা বাড়ে। তবে কে মূল্যায়ন করলো আর করলো না এটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। নিজেকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য, সফল হওয়ার জন্য কায়মনোবাক্যে কাজ করে যাওয়া জরুরি।

কর্মক্ষেত্রে অসহযোগিতা ও বিরোধিতা : মানুষের পরিচয় তার কাজের মাধ্যমেই হয়। মানুষ নানারকম কাজ করে জীবীকা নির্বাহ করে। মানুষের কর্মক্ষেত্রে একে অপরের যেমন সহযোগী তেমনি আবার প্রতিযোগী। নিজের ক্যারিয়ার, উপরে উঠার সিঁড়ি এবং প্রমোশন এসব মেধা এবং যোগ্যতা অনুযায়ী হওয়ার কথা থাকলেও অনেকসময় নানা রকম কায়দাকানুন করে পেছনে ফেলে দেওয়া হয়। মেধাবী এবং যোগ্যদের বঞ্চিত করে অযোগ্যদের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এতে কাজের মান যেমন খারাপ হয় তেমনি যোগ্যরা বঞ্চিত হয় মূল্যায়নে। এক্ষেত্রে যারা নিষ্ঠার সাথে ধৈর্য ধরে এগিয়ে যায় তারা একসময় মূল্যায়ন পায়।

একটা কথা প্রচলিত আছেÑ বোকারা শিখে ঠেকে আর বুদ্ধিমানরা শিখে দেখে। জীবন শিখায় কিন্তু কে কিভাবে শিক্ষা লাভ করে সেটি হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। একজন বাধ্য হয়ে শিখে আরেকজন অন্যের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা থেকে শিখে। মোটকথা মানুষ বাস্তব জীবন থেকেই সবচেয়ে বেশি শিক্ষা লাভ করে। এবং এই অর্জিত শিক্ষা ও জ্ঞান তাকে এগিয়ে যেতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

সফল হওয়ার চাবিকাঠি প্রতিটি মানুষের হাতেই থাকে। মানুষ ভুল করবে এটাই স্বাভাবিক। ভুল করেই মানুষ শিক্ষা লাভ করে, অভিজ্ঞতা অর্জন করে। পরিশ্রম যেমন সফলতার চাবিকাঠি; তেমনি সঞ্চিত অভিজ্ঞতা মানুষের মেধাকে শানিত করে। শুধুমাত্র জীবনের অভিজ্ঞতাগুলোকে কাজে লাগাতে পারলেই একজন মানুষ সফল মানুষ হয়ে উঠতে পারে।

[লেখক : সহকারী অধ্যাপক, ভূগোল বিভাগ, মুক্তিযোদ্ধা কলেজ, ভাওয়ালগড়, গাজীপুর]

বিমানবন্দরে প্রবাসীদের হয়রানি বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ কতদূর?

মবের উন্মাদনা ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক অধিকার

রাজনৈতিক কর্মসূচি, যানজট ও আচরণগত অর্থনীতি

সম্পদের অভিশাপ : সিলেটের সাদাপাথরে সংঘাতের সমাজতত্ত্ব ও নীতি-সংকট

নির্বাচন সুষ্ঠু হবে তো

মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই ব্যবহার জরুরি

ছবি

সাদাপাথরের নীলাভ দেশ : ভোলাগঞ্জের সৌন্দর্য ও সংকট

একাকীত্ব ও সামাজিক বিচ্ছিন্নতার সমাজতত্ত্ব

বেইজিংয়ের সঙ্গে নয়াদিল্লির নতুন ভূরাজনীতি

মব ও জাস্টিস

ইতিহাসকে নতুন করে লেখা এক জগাখিচুড়ি!

নারীর সমঅধিকার : সমাজ পরিবর্তনের চাবিকাঠি

জ্ঞানের মঞ্চ এখন সার্কাস, গবেষণা সেখানে নীরব দর্শক

ছবি

ভরা শ্রাবণে স্বদেশ-ভাবনা

নারীর প্রতি সহিংসতা : বাস্তবতা, আইন ও প্রতিরোধের জরুরি দিকনির্দেশনা

ছাত্র রাজনীতি : নেতৃত্বের হাতেখড়ি নাকি দাসত্বের লেজুড়বৃত্তি?

ছবি

নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ করতেই হবে

ছবি

উন্নয়ন ও প্রকৃতি

ছবি

কৃষকের চেয়ে বড় উদ্যোক্তা আর কে আছে

ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিশুদের শিক্ষাগত ও সামাজিক সমস্যা

ট্রেড ইউনিয়ন ও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট

সব অর্জনে কৃতিত্ব নিতে নেই

নাগাসাকি দিবস : পারমাণবিক বোমার অপপ্রয়োগ বন্ধ হোক

আদিবাসী অধিকার : দায় ঘোচানোর সুযোগ এসেছে, কাজে লাগাতে হবে রাষ্ট্রকেই

অদৃশ্য আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াই : উষ্ণ বাংলাদেশে জলবায়ু-প্রসূত স্বাস্থ্য সংকট

নেতানিয়াহুর এক ভ্রান্ত কৌশলের মুখোমুখি ইসরায়েল

আসিয়ানে বাংলাদেশের অভিযাত্রা : সম্ভাবনার পথে কূটনৈতিক বাস্তবতা ও রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ

ভাঙছে নদী, গড়ছে দুঃখের গ্রাম

ছবি

গণঅভ্যুত্থান ও গণআকাক্সক্ষা : এক বছরে অর্জনটা কী?

ছবি

ভিন্নমত, ভিন্নপথ এবং প্রান্তজনের স্বপ্ন

আচরণগত অর্থনীতির আয়নায় বাংলাদেশিদের বিদেশযাত্রা

গরিবের ইলিশ শুধুই স্বপ্ন কেন?

চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান : বৈষম্য ও স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে জাগরণ

শারীরিক শিক্ষা : সুস্থ ও সচেতন প্রজন্ম গড়ার সম্ভাবনা

জ্ঞানতীর্থের সংকট ও গবেষণাবিমুখ উচ্চশিক্ষা

ছবি

জুলাই অভ্যুত্থান-গাথা : মেঘ থম থম করে

tab

উপ-সম্পাদকীয়

জীবন থেকে নেয়া শিক্ষাগুলোই এগিয়ে দেয় জীবনকে

কামরুজ্জামান

রোববার, ১৭ আগস্ট ২০২৫

মানুষের জীবনে শেখার শেষ নেই। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত শিক্ষা লাভ করে। একাডেমি পড়ালেখা করা একরকম আর জীবনের ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করা আরেকরকম। দুটো জায়গায়ই মানুষ শিক্ষা লাভ করে। একাডেমিক পড়ালেখায় মানুষ মেধা ও পরিশ্রম করে ভালো ফলাফল অর্জন করে শিক্ষা লাভ করে; আর বাস্তব জীবনে মানুষ বিভিন্ন সমস্যা ও প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে অভিজ্ঞতা অর্জন করে শিক্ষা লাভ করে।

মানুষ পরাজিত হওয়ার জন্য পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করেনি। প্রতিটি মানুষই কোনো না কোনো সময় বিজয়ী হয়। টাকাপয়সা অর্থ চাকরি ব্যবসা বাণিজ্য ইত্যাদি মাধ্যমেই শুধু মানুষ জয় লাভ করে নাÑ আরও অনেক মাধ্যমে মানুষ সফল হয় জয় লাভ করে। যেমন- একজন মানুষ যদি শুধু ভালো মানুষ হয় তাহলেও সে জয়ী হয়। কেন না পৃথিবীতে ভালো মানুষ হয়ে বেঁচে থাকা অত্যন্ত কঠিন কাজ।

একজন মানুষ জীবনে চলার পথে বিভিন্নভাবে প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয় এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করে। তবে সবচেয়ে বেশি অভিজ্ঞতা অর্জন করে এবং শিক্ষা লাভ করে ভুল করার মাধ্যমে। ভুল মানুষকে যেমন ধ্বংসের পথে নিয়ে যায় তেমনি ভুল মানুষকে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি জোগায়। কোনো কাজে মানুষ কখনও কখনও অকৃতকার্য হলে দ্বিগুণ শক্তি নিয়ে এগিয়ে যায়। আর এটা সম্ভব হয় তখনই যখন মানুষটি মনে মনে প্রতিজ্ঞা করে তাকে সফল হতেই হবে। তাকে তার গন্তব্যে পৌঁছাতেই হবে।

মানুষ উন্নতির পথে সাধারণত যেসব সমস্যার সম্মুখীন হয় সেগুলো সবার ক্ষেত্রে প্রায় একই রকম। যেমন- একটা সময় পর্যন্ত অর্থনৈতিক সংকটে থাকা : প্রতিটি মানুষই জীবনে কোনো না কোনো সময় অর্থনৈতিক সংকটে ভোগে। যারা প্রচুর বিত্তবৈভবে জন্মগ্রহণ করে তাদের কথা আলাদা। পৃথিবীর বেশির ভাগ মানুষ দরিদ্র ও নিম্ন মধ্যবিত্ত। যারা পড়ালেখা করতে পারে তারা একটা সময় পরে চাকরি করে জীবন পরিচালনা করে। যারা পড়ালেখা করার সুযোগ পায় না তারা অল্প বয়সেই কাজে লেগে যায়। যে কোনো কাজে লেগে যাওয়া বা চাকরি করা এমনি এমনি হয় না। এখানেও কঠোর সংগ্রাম এবং যুদ্ধ করতে হয়। কখনো কখনো একটা চাকরি বা কাজ পাওয়ার জন্য মানুষকে দিনের পর দিন মাসের পর এমনকি বছরের পর বছরও অপেক্ষা করতে হয়। তবে যারা বুদ্ধিমান এবং তীক্ষè চিন্তার অধিকারী তারা ভেঙে পড়ে না। তারা ধৈর্য্য ধরে এগিয়ে যায় এবং একসময় সফল হয়।

কাছাকাছি মানুষের অসহযোগিতা: একটা সময় পর্যন্ত মানুষ সহযোগিতা করে আন্তরিকতা দেখায়। যখনই মানুষ নিজেকে বদলাতে শুরু করে উন্নতির দিকে এগিয়ে যেতে থাকে তখনই শুরু হয় অসহযোগিতা এবং এটা কাছের মানুষগুলো সবচেয়ে বেশি করে। এমনও দেখা যায়Ñ আপন ভাই ভাইয়ের শত্রু হয়ে যায়। বন্ধু বন্ধুর শত্রু হয়ে যায়। নিটক প্রতিবেশী আত্মীয় শত্রু হয়ে যায়। মানুষের একটা স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য হচ্ছেÑ অন্যের সুখ এবং উন্নতি তার সহ্য হয় না।

কাছের মানুষের সঙ্গেই প্রতিযোগিতা : আসল সত্যটি হচ্ছে- পৃথিবীতে সবাই সবার প্রতিযোগী। এমনকি রক্তের সম্পর্কের মানুষগুলো একসময় প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠে মারাত্মকভাবে। ভাই ভাইয়ের প্রতিদ্বন্দ্বী, কখনও কখনও স্ত্রী স্বামীর প্রতিদ্বন্দ্বী, পরিবারের এক সদস্য আরেকজনের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বী, কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বী, বন্ধু বন্ধুর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বী। এভাবেই কেউ একজন এগিয়ে যেতে চাইলে অন্যেরা প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠে । নানা রকম কলাকৌশল করে পেছনে ফেলার চেষ্টা করে। যারা বুদ্ধিমান এবং ধৈর্য্যশীল তারা এই সব মোকাবিলা করেই এগিয়ে যায়। সফলতা নামক সোনার হরিণ ছিনিয়ে আনে। মনে রাখতে হবে এই পৃথিবীতে এমনি এমনি কিছু হয় না। পরিশ্রম এবং অধ্যাবসায় এবং বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা একজন মানুষকে পরিপূর্ণ সফলতা এনে দেয়।

নিজের কাজের মূল্যায়ন না হওয়া : প্রতিটি মানুষ তার নিজের কাজের মূল্যায়ন চায়। কাজের স্বীকৃতি মানুষকে আরও বেশি কাজ করতে উৎসাহ জোগায়; কিন্তু আমাদের সমাজ বাস্তবতা হচ্ছেÑ মানুষ কাজের স্বীকৃতি দিতে চায় না। বরং বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বিরোধিতা করে । ভালো কাজ করলেও অসহযোগিতা করে এবং কখনও কখনও শত্রুতা বাড়ে। তবে কে মূল্যায়ন করলো আর করলো না এটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। নিজেকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য, সফল হওয়ার জন্য কায়মনোবাক্যে কাজ করে যাওয়া জরুরি।

কর্মক্ষেত্রে অসহযোগিতা ও বিরোধিতা : মানুষের পরিচয় তার কাজের মাধ্যমেই হয়। মানুষ নানারকম কাজ করে জীবীকা নির্বাহ করে। মানুষের কর্মক্ষেত্রে একে অপরের যেমন সহযোগী তেমনি আবার প্রতিযোগী। নিজের ক্যারিয়ার, উপরে উঠার সিঁড়ি এবং প্রমোশন এসব মেধা এবং যোগ্যতা অনুযায়ী হওয়ার কথা থাকলেও অনেকসময় নানা রকম কায়দাকানুন করে পেছনে ফেলে দেওয়া হয়। মেধাবী এবং যোগ্যদের বঞ্চিত করে অযোগ্যদের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এতে কাজের মান যেমন খারাপ হয় তেমনি যোগ্যরা বঞ্চিত হয় মূল্যায়নে। এক্ষেত্রে যারা নিষ্ঠার সাথে ধৈর্য ধরে এগিয়ে যায় তারা একসময় মূল্যায়ন পায়।

একটা কথা প্রচলিত আছেÑ বোকারা শিখে ঠেকে আর বুদ্ধিমানরা শিখে দেখে। জীবন শিখায় কিন্তু কে কিভাবে শিক্ষা লাভ করে সেটি হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। একজন বাধ্য হয়ে শিখে আরেকজন অন্যের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা থেকে শিখে। মোটকথা মানুষ বাস্তব জীবন থেকেই সবচেয়ে বেশি শিক্ষা লাভ করে। এবং এই অর্জিত শিক্ষা ও জ্ঞান তাকে এগিয়ে যেতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

সফল হওয়ার চাবিকাঠি প্রতিটি মানুষের হাতেই থাকে। মানুষ ভুল করবে এটাই স্বাভাবিক। ভুল করেই মানুষ শিক্ষা লাভ করে, অভিজ্ঞতা অর্জন করে। পরিশ্রম যেমন সফলতার চাবিকাঠি; তেমনি সঞ্চিত অভিজ্ঞতা মানুষের মেধাকে শানিত করে। শুধুমাত্র জীবনের অভিজ্ঞতাগুলোকে কাজে লাগাতে পারলেই একজন মানুষ সফল মানুষ হয়ে উঠতে পারে।

[লেখক : সহকারী অধ্যাপক, ভূগোল বিভাগ, মুক্তিযোদ্ধা কলেজ, ভাওয়ালগড়, গাজীপুর]

back to top