alt

উপ-সম্পাদকীয়

অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনে রক্ত জমাটের ঝুঁকি কতটা উদ্বেগের?

মুহম্মদ দিদারে আলম মুহসিন

: মঙ্গলবার, ২৭ এপ্রিল ২০২১
image

করোনা অতিমারি এ ধরিত্রীর বাসিন্দাদের পরীক্ষা নেয়া অব্যাহত রেখেছে। ২০১৯ সালের শেষদিকে চীনের উহানে প্রথমে আবির্ভূত হওয়ার পর এটি যখন বিদ্যুৎ স্ফুলিঙ্গের ন্যায় বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়ে, তখন বিশ্বের সর্বোন্নত চিকিৎসা সুবিধাসম্পন্ন দেশসমূহও এর সামনে অসহায় হয়ে পড়ে। প্রথম ধাক্কাটা কাটতে না কাটতে অনেক দেশেই অতিমারির দ্বিতীয় ঢেউ, এমনকি কোথাও কোথাও তৃতীয় ঢেউ আঘাত হেনে চলেছে। সুনির্দিষ্টভাবে কার্যকর কোনো চিকিৎসা ব্যবস্থার অনুপস্থিতিতে বিজ্ঞানীরা অতিমারির সূচনালগ্ন থেকেই সংক্রমণের বিস্তার ঠেকাতে এর বিরুদ্ধে সুরক্ষা দিতে সক্ষম এমন ভ্যাকসিন তৈরির ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ করে আসছিলেন।

বিজ্ঞানীদের অসামান্য পরিশ্রমের ফলশ্রুতিতে অতিমারি শুরুর এক বছরের মধ্যেই ভ্যাকসিন তৈরিতে সাফল্য আসতে শুরু করে। এখন পর্যন্ত যেসব ভ্যাকসিন সাধারণ্যে প্রয়োগের জন্য বিভিন্ন দেশে অনুমোদন লাভ করেছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো- ফাইজার-বায়োএনটেক ভ্যাকসিন, মডার্না-এনআইএআইডি ভ্যাকসিন, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন, জনসন অ্যান্ড জনসন (জেএন্ডজে) ভ্যাকসিন, সাইনোফার্ম-বেইজিং ভ্যাকসিন, সাইনোভ্যাক ভ্যাকসিন এবং স্পুটনিক ভি ভ্যাকসিন। ফাইজার ও মডার্নার ভ্যাকসিনে মূল উপাদান হিসেবে করোনাভাইরাসের স্পাইক প্রোটিন নির্দেশকারী এম-আরএনএ ব্যবহৃত হয়েছে। অন্যদিকে অ্যাস্ট্রাজেনেকা, জেএন্ডজে এবং স্পুটনিক ভি ভ্যাকসিনে স্পাইক প্রোটিনের কোডবাহী এডেনোভাইরাস (নন-রেপ্লিকেটিং) ভেক্টর ব্যবহার করা হয়েছে। এ ধরনের ভাইরাস মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর দেহে পরিলক্ষিত সাধারণ ঠাণ্ডা সৃষ্টি করে থাকে। অন্যদিকে সাইনোফার্ম ও সাইনোভ্যাক ভ্যাকসিনে সরাসরি করোনাভাইরাসের একটি নিষ্কিয়কৃত ভার্সন ব্যবহার করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সাথে তিন কোটি ডোজ অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। এছাড়া, কোভ্যাক্স কর্মসূচির আওতায় একই ভ্যাকসিনের আরও ছয় কোটি আশি লাখ ডোজ পাওয়ার কথা রয়েছে। সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে ইতোমধ্যে চুক্তির আওতায় ৭০ লাখ ডোজ এবং ভারত সরকারের উপহার হিসেবে আরও ৩৩ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন দেশে এসেছে এবং এর ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারি মাস থেকে গণ টিকাদান কর্মসূচি চালু হয়েছে। অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের উল্লেখযোগ্য সুবিধাদির মধ্যে রয়েছে এর নিম্নমূল্য (ডোজপ্রতি মাত্র ৪-৮ ডলার) এবং সাধারণ রেফ্রিজারেটরের তাপমাত্রায় (৪ক্ক সে.) এর সংরক্ষণযোগ্যতা। তাছাড়া, এটি করোনা সংক্রমণের বিরুদ্ধে ৭০ শতাংশ সুরক্ষা দিতে সক্ষম বলে পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে।

মূল্য ও সংরক্ষণ তাপমাত্রার বিচারে অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য একটি ভালো অপশন। তবে দেশে ইদানীং ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া সাউথ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে এই ভ্যাকসিন কতটুকু কার্যকর তা নিয়ে কিছুটা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। অবশ্য সংবাদ সূত্রে প্রকাশ, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ইতোমধ্যে এই ভ্যাকসিনের সাউথ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্টের উপযোগী একটি পরিবর্তিত ভার্সন তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছে, যা বছরের শেষনাগাদ পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। অন্য একটি কারণে এই ভ্যাকসিন সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষভাবে সংবাদ শিরোনাম হয়েছে। তা হলো- এই ভ্যাকসিন গ্রহণের ফলে গ্রহীতাদের একটি অতি ক্ষুদ্র অংশের মধ্যে বিশেষ ধরনের রক্ত জমাটের প্রবণতা দেখা গেছে, যা এমনকি কিছু রোগীর মৃত্যুরও কারণ হয়েছে। এ সমস্যা দেখা দেয়ায় বিশ্বের অনেক দেশ এই ভ্যাকসিনের প্রয়োগ সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে। একটি দেশ- ডেনমার্ক তো এর প্রয়োগ সম্পূর্ণরূপে বাতিলই করে দিয়েছে।

এ সমস্যায়? প্রধানত মস্তিষ্ক কিংবা উদর অঞ্চলের শিরাসমূহে রক্ত জমাট বাঁধতে এবং যুগপৎভাবে রক্তের অণুচক্রিকার সংখ্যা হ্রাস পেতে দেখা যায়। সাধারণভাবে ভ্যাকসিন গ্রহণের ৫-২০ দিনের মধ্যে সমস্যাটি পরিলক্ষিত হতে দেখা গেছে। রোগীর মধ্যে যেসব উপসর্গ দেখা দেয় তার মধ্যে রয়েছে, শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা, পা ফুলে যাওয়া, অবিরাম পেটে ব্যথা, অনবরত প্রচণ্ড মাথা ব্যথা, চোখে ঝাপসা দেখা, ত্বকে ছোট ছোট লাল দাগ ইত্যাদি। সাধারণত হেপারিন নামক রক্ত জমাট প্রতিরোধী ওষুধ সেবনের পর কিছু বিরল ক্ষেত্রে এ ধরনের সমস্যা হতে দেখা যায়, যা চিকিৎসা শাস্ত্রে হেপারিন ইনডিউসড থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া (এইচআইটি) নামে পরিচিত। এর অনুকরণে বিজ্ঞানীরা ভ্যাকসিন গ্রহণের ফলে দেখা দেয়া এই সমস্যাটির নাম দিয়েছেন ভ্যাকসিন ইনডিউসড থ্রম্বোটিক থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া (ভিআইটিটি)। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, করোনা সংক্রমণের ফলেও এ ধরনের রক্ত জমাটের সমস্যা দেখা দিতে পারে (কোভিড-১৯ অ্যাসোসিয়েটেড কোয়াগুলোপ্যাথি-সিএসি)।

দেখা গেছে, যে সব লোকের ক্ষেত্রে হেপারিন গ্রহণের ফলে এ সমস্যা দেখা দেয়, হেপারিন তাদের দেহে প্লাটিলেট ফ্যাক্টর ৪ নামের একটি প্রোটিনের সাথে বিক্রিয়া করার কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা এর বিরুদ্ধে এন্টিবডি তৈরি করে, যা অবশেষে প্লাটিলেট ভেঙ্গে রক্ত জমাটকারী উপাদানের নিঃসরণ ঘটায়। অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাক্সিন গ্রহণে যাদের রক্ত জমাটের সমস্যা হয়েছে, তাদের দেহেও এধরনের এন্টিবডির অস্তিত্ব মিলেছে। তবে যে বিষয়টি বিজ্ঞানীদের কাছে এখনও পরিষ্কার নয় তা হল, এসব ভ্যাকসিন গ্রহীতার শরীরে ভ্যাকসিন নেয়ার আগে থেকেই কি এধরনের কিছু এন্টিবডি ছিল, নাকি ভ্যাকসিন নেয়ার পরেই কেবল এতে ব্যবহৃত এডেনোভাইরাস, এ থেকে উৎপাদিত স্পাইক প্রোটিন কিংবা এতে বিদ্যমান কোন অপদ্রব্যের প্রভাবে এগুলো তৈরি হয়েছে। এদিকে ইউনিভার্সিটি অফ ইউটাহ-এর ইমিউনোলজিস্ট এরন পেট্রি মনে করেন, করোনা সংক্রমণের ফলে যে রক্ত জমাটের সমস্যা দেখা যায়, সেখানেও একই এন্টিবডি কাজ করে। তবে এক্ষেত্রে আরও কিছু মেকানিজম যুগপৎভাবে সক্রিয় হয়ে থাকে, ফলে সমস্যাটি অধিকতর গুরুতর আকার ধারণ করে। (Blood Clot Risk from COVID-19 Higher than After Vaccines: Study. The Scientist Magazine®, April 16, 2021)

শুধু অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন নয়, জেএন্ডজে ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রেও রক্ত জমাটের সমস্যা দেখা গেছে। যেহেতু এ দুটি ভ্যাকসিনই এডেনোভাইরাসে তৈরি, এডেনোভাইরাসের কোন উপাদান কিংবা এতে মিশ্রিত কোন অপদ্রব্যের প্রভাবে এসব এন্টিবডি তৈরি হচ্ছে এমনটি মনে করার যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে। কিন্তু এডেনোভাইরাসে তৈরি অন্য ভ্যাকসিন স্পুটনিক ভি-এর ক্ষেত্রে এ ধরনের কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ঘটেনি বলে দাবি করা হয়েছে। যদিও প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এর সপক্ষে ভ্যাকসিন তৈরিতে ভিন্নতর এডেনোভাইরাস ব্যবহার এবং প্রক্রিয়াজাতকরণকালে উন্নততর বিশোধন পদ্ধতি প্রয়োগসহ বিভিন্ন যুক্তি দেয়া হয়েছে, এ বিষয়ে এখনই চূড়ান্ত কোন উপসংহার টানা সমীচীন হবে না। (Russia seeks to distance Sputnik V from blood clotting cases. The Pharma Letter, April 15, 2021)

রেগুলেটরি বডিসমূহের কাছে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো, ভ্যাকসিন গ্রহণে করোনা থেকে সুরক্ষা প্রাপ্তির উপকারিতার তুলনায় রক্ত জমাটের যে ঝুঁকি তা কতটা গুরুতর। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিচালিত সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, করোনা সংক্রমণের ফলে সেরেব্রাল ভেনাস থ্রম্বোসিস (সিভিটি) অর্থাৎ মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি প্রতি ১০ লাখে ৩৯ এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজের পর প্রতি ১০ লাখে ৫। এর মানে দাঁড়ায় করোনা সংক্রমণে সিভিটির আশঙ্কা অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের তুলনায় প্রায় ৮ গুণ বেশি। (Risk of rare blood clotting higher for COVID-19 than for vaccines. University of Oxford, NEWS & EVENTS, April 15, 2021)।

পাশাপাশি যে বিষয়টি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ তা হলো, অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন করোনাজনিত গুরুতর অসুস্থতা ও মৃত্যুর বিরুদ্ধে প্রায় পুরোপুরি সুরক্ষা দিতে সক্ষম। কাজেই স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে, এই ভ্যাকসিন নেয়ার উপকারিতা এর ফলে রক্ত জমাটের যে বিরল ঝুঁকি রয়েছে তার চেয়ে বহুগুণ বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুসের ভাষায় : ‘কোভিড-১৯ জনিত গুরুতর অসুস্থতা ও মৃত্যুর ঝুঁকি এই ভ্যাকসিনের যেসব খুবই নগণ্য ঝুঁকি রয়েছে তার চেয়ে বহুগুণ বেশি।’ (AZ Covid-19 vaccine and blood clots: the risks explained. PHARMACEUTICAL TECHNOLOGY, April 12, 2021)। তবে ভ্যাকসিন নেয়ার পরে রক্ত জমাট সংশ্লিষ্ট যেসব উপসর্গের কথা উপরে বলা হয়েছে, তেমন কিছু দেখা গেলে কাল বিলম্ব না করে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার কোনো বিকল্প নেই।

এখানে আরেকটি বিষয় আলোচনা করা দরকার। অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন গ্রহণে রক্ত জমাটের এই যে সমস্যাটি দেখা যাচ্ছে তাতে লিঙ্গ, বয়স কিংবা অন্য কোন বিষয় রিস্ক ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে কি? যদিও এখন পর্যন্ত বেশির ভাগ ঘটনা অনূর্ধ্ব ৬০ বছর বয়সী মহিলাদের ক্ষেত্রে ঘটেছে, ইউকে এবং ইউ-এর রেগুলেটরি অথরিটিসমূহের অভিমত হচ্ছে, এযাবৎ প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্থের আলোকে বিশেষ কোন বিষয়কে রিস্ক ফ্যাক্টর হিসেবে চিহ্নিত করার সুযোগ নাই। প্রাপ্ত রিপোর্টসমূহে মহিলাদের সংখ্যা বেশি হওয়ার একটি সম্ভাব্য কারণ এই হতে পারে যে- প্রথমদিকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে স্বাস্থ্যকর্মীদের ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই মহিলা। তবে সতর্কতা হিসেবে ইউরোপের অনেক দেশ অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের প্রয়োগ তুলনামূলকভাবে অধিক বয়স্ক লোকদের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ রাখতে নির্দেশ দিয়ে যুক্তরাজ্যের জেসিভিআইও অনূর্ধ্ব-৩০ বয়সীদের ক্ষেত্রে অন্য কোনো ভ্যাকসিন প্রয়োগের সুপারিশ করেছে। (AZ Covid-19 vaccine and blood clots: the risks explained. PHARMACEUTICAL TECHNOLOGY, April 12, 2021)।

[লেখক : অধ্যাপক, ফার্মেসি বিভাগ, জাবি]

ছবি

স্মরণ : কাঙ্গাল হরিনাথ মজুমদার

ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস

দাবদাহে সুস্থ থাকবেন কীভাবে

কত দিন পরে এলে, একটু শোনো

রম্যগদ্য : আনন্দ, দ্বিগুণ আনন্দ...

ছবি

ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় নাম

বৈসাবি : ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বর্ষবরণ উৎসব

‘ইন্ডিয়া আউট’ ক্যাম্পেইন

উদার-উদ্দাম বৈশাখ চাই

ঈদ নিয়ে আসুক শান্তি ও সমৃদ্ধি, বিস্তৃত হোক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ

প্রসঙ্গ: বিদেশি ঋণ

ছাত্ররাজনীতি কি খারাপ?

জাকাত : বিশ্বের প্রথম সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা

বাংলাদেশ স্কাউটস দিবস : শুরুর কথা

ছবি

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত

প্রবাসীর ঈদ-ভাবনা

বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস

ধানের ফলন বাড়াতে ক্লাইমেট স্মার্ট গুটি ইউরিয়া প্রযুক্তি

কমিশন কিংবা ভিজিটে জমি রেজিস্ট্রির আইনি বিধান ও প্রাসঙ্গিকতা

ছবি

ঈদের অর্থনীতি

পশ্চিমবঙ্গে ভোটের রাজনীতিতে ‘পোস্ট পার্টিশন সিনড্রম’

শিক্ষকের বঞ্চনা, শিক্ষকের বেদনা

নিরাপদ সড়ক কেন চাই

রম্যগদ্য : ‘প্রহরীর সাতশ কোটি টাকা...’

ছবি

অবন্তিকাদের আত্মহনন

শিক্ষাবিষয়ক ভাবনা

অপ্রয়োজনে সিজারিয়ান নয়

পণ্য রপ্তানিতে বৈচিত্র্য আনতে হবে

আত্মহত্যা রোধে নৈতিক শিক্ষা

আউশ ধান : পরিবেশ ও কৃষকবান্ধব ফসল

ছবি

বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের আতুড়ঘর

চেক ডিজঅনার মামলার অধিক্ষেত্র ও প্রাসঙ্গিকতা

বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন ও বাংলাদেশের কৃষি

ছবি

‘হৃৎ কলমের’ পাখি এবং আমাদের জেগে ওঠা

ছবি

ভূগর্ভস্থ পানি সুরক্ষায় বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ

tab

উপ-সম্পাদকীয়

অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনে রক্ত জমাটের ঝুঁকি কতটা উদ্বেগের?

মুহম্মদ দিদারে আলম মুহসিন

image

মঙ্গলবার, ২৭ এপ্রিল ২০২১

করোনা অতিমারি এ ধরিত্রীর বাসিন্দাদের পরীক্ষা নেয়া অব্যাহত রেখেছে। ২০১৯ সালের শেষদিকে চীনের উহানে প্রথমে আবির্ভূত হওয়ার পর এটি যখন বিদ্যুৎ স্ফুলিঙ্গের ন্যায় বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়ে, তখন বিশ্বের সর্বোন্নত চিকিৎসা সুবিধাসম্পন্ন দেশসমূহও এর সামনে অসহায় হয়ে পড়ে। প্রথম ধাক্কাটা কাটতে না কাটতে অনেক দেশেই অতিমারির দ্বিতীয় ঢেউ, এমনকি কোথাও কোথাও তৃতীয় ঢেউ আঘাত হেনে চলেছে। সুনির্দিষ্টভাবে কার্যকর কোনো চিকিৎসা ব্যবস্থার অনুপস্থিতিতে বিজ্ঞানীরা অতিমারির সূচনালগ্ন থেকেই সংক্রমণের বিস্তার ঠেকাতে এর বিরুদ্ধে সুরক্ষা দিতে সক্ষম এমন ভ্যাকসিন তৈরির ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ করে আসছিলেন।

বিজ্ঞানীদের অসামান্য পরিশ্রমের ফলশ্রুতিতে অতিমারি শুরুর এক বছরের মধ্যেই ভ্যাকসিন তৈরিতে সাফল্য আসতে শুরু করে। এখন পর্যন্ত যেসব ভ্যাকসিন সাধারণ্যে প্রয়োগের জন্য বিভিন্ন দেশে অনুমোদন লাভ করেছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো- ফাইজার-বায়োএনটেক ভ্যাকসিন, মডার্না-এনআইএআইডি ভ্যাকসিন, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন, জনসন অ্যান্ড জনসন (জেএন্ডজে) ভ্যাকসিন, সাইনোফার্ম-বেইজিং ভ্যাকসিন, সাইনোভ্যাক ভ্যাকসিন এবং স্পুটনিক ভি ভ্যাকসিন। ফাইজার ও মডার্নার ভ্যাকসিনে মূল উপাদান হিসেবে করোনাভাইরাসের স্পাইক প্রোটিন নির্দেশকারী এম-আরএনএ ব্যবহৃত হয়েছে। অন্যদিকে অ্যাস্ট্রাজেনেকা, জেএন্ডজে এবং স্পুটনিক ভি ভ্যাকসিনে স্পাইক প্রোটিনের কোডবাহী এডেনোভাইরাস (নন-রেপ্লিকেটিং) ভেক্টর ব্যবহার করা হয়েছে। এ ধরনের ভাইরাস মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর দেহে পরিলক্ষিত সাধারণ ঠাণ্ডা সৃষ্টি করে থাকে। অন্যদিকে সাইনোফার্ম ও সাইনোভ্যাক ভ্যাকসিনে সরাসরি করোনাভাইরাসের একটি নিষ্কিয়কৃত ভার্সন ব্যবহার করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সাথে তিন কোটি ডোজ অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। এছাড়া, কোভ্যাক্স কর্মসূচির আওতায় একই ভ্যাকসিনের আরও ছয় কোটি আশি লাখ ডোজ পাওয়ার কথা রয়েছে। সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে ইতোমধ্যে চুক্তির আওতায় ৭০ লাখ ডোজ এবং ভারত সরকারের উপহার হিসেবে আরও ৩৩ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন দেশে এসেছে এবং এর ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারি মাস থেকে গণ টিকাদান কর্মসূচি চালু হয়েছে। অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের উল্লেখযোগ্য সুবিধাদির মধ্যে রয়েছে এর নিম্নমূল্য (ডোজপ্রতি মাত্র ৪-৮ ডলার) এবং সাধারণ রেফ্রিজারেটরের তাপমাত্রায় (৪ক্ক সে.) এর সংরক্ষণযোগ্যতা। তাছাড়া, এটি করোনা সংক্রমণের বিরুদ্ধে ৭০ শতাংশ সুরক্ষা দিতে সক্ষম বলে পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে।

মূল্য ও সংরক্ষণ তাপমাত্রার বিচারে অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য একটি ভালো অপশন। তবে দেশে ইদানীং ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া সাউথ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে এই ভ্যাকসিন কতটুকু কার্যকর তা নিয়ে কিছুটা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। অবশ্য সংবাদ সূত্রে প্রকাশ, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ইতোমধ্যে এই ভ্যাকসিনের সাউথ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্টের উপযোগী একটি পরিবর্তিত ভার্সন তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছে, যা বছরের শেষনাগাদ পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। অন্য একটি কারণে এই ভ্যাকসিন সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষভাবে সংবাদ শিরোনাম হয়েছে। তা হলো- এই ভ্যাকসিন গ্রহণের ফলে গ্রহীতাদের একটি অতি ক্ষুদ্র অংশের মধ্যে বিশেষ ধরনের রক্ত জমাটের প্রবণতা দেখা গেছে, যা এমনকি কিছু রোগীর মৃত্যুরও কারণ হয়েছে। এ সমস্যা দেখা দেয়ায় বিশ্বের অনেক দেশ এই ভ্যাকসিনের প্রয়োগ সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে। একটি দেশ- ডেনমার্ক তো এর প্রয়োগ সম্পূর্ণরূপে বাতিলই করে দিয়েছে।

এ সমস্যায়? প্রধানত মস্তিষ্ক কিংবা উদর অঞ্চলের শিরাসমূহে রক্ত জমাট বাঁধতে এবং যুগপৎভাবে রক্তের অণুচক্রিকার সংখ্যা হ্রাস পেতে দেখা যায়। সাধারণভাবে ভ্যাকসিন গ্রহণের ৫-২০ দিনের মধ্যে সমস্যাটি পরিলক্ষিত হতে দেখা গেছে। রোগীর মধ্যে যেসব উপসর্গ দেখা দেয় তার মধ্যে রয়েছে, শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা, পা ফুলে যাওয়া, অবিরাম পেটে ব্যথা, অনবরত প্রচণ্ড মাথা ব্যথা, চোখে ঝাপসা দেখা, ত্বকে ছোট ছোট লাল দাগ ইত্যাদি। সাধারণত হেপারিন নামক রক্ত জমাট প্রতিরোধী ওষুধ সেবনের পর কিছু বিরল ক্ষেত্রে এ ধরনের সমস্যা হতে দেখা যায়, যা চিকিৎসা শাস্ত্রে হেপারিন ইনডিউসড থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া (এইচআইটি) নামে পরিচিত। এর অনুকরণে বিজ্ঞানীরা ভ্যাকসিন গ্রহণের ফলে দেখা দেয়া এই সমস্যাটির নাম দিয়েছেন ভ্যাকসিন ইনডিউসড থ্রম্বোটিক থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া (ভিআইটিটি)। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, করোনা সংক্রমণের ফলেও এ ধরনের রক্ত জমাটের সমস্যা দেখা দিতে পারে (কোভিড-১৯ অ্যাসোসিয়েটেড কোয়াগুলোপ্যাথি-সিএসি)।

দেখা গেছে, যে সব লোকের ক্ষেত্রে হেপারিন গ্রহণের ফলে এ সমস্যা দেখা দেয়, হেপারিন তাদের দেহে প্লাটিলেট ফ্যাক্টর ৪ নামের একটি প্রোটিনের সাথে বিক্রিয়া করার কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা এর বিরুদ্ধে এন্টিবডি তৈরি করে, যা অবশেষে প্লাটিলেট ভেঙ্গে রক্ত জমাটকারী উপাদানের নিঃসরণ ঘটায়। অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাক্সিন গ্রহণে যাদের রক্ত জমাটের সমস্যা হয়েছে, তাদের দেহেও এধরনের এন্টিবডির অস্তিত্ব মিলেছে। তবে যে বিষয়টি বিজ্ঞানীদের কাছে এখনও পরিষ্কার নয় তা হল, এসব ভ্যাকসিন গ্রহীতার শরীরে ভ্যাকসিন নেয়ার আগে থেকেই কি এধরনের কিছু এন্টিবডি ছিল, নাকি ভ্যাকসিন নেয়ার পরেই কেবল এতে ব্যবহৃত এডেনোভাইরাস, এ থেকে উৎপাদিত স্পাইক প্রোটিন কিংবা এতে বিদ্যমান কোন অপদ্রব্যের প্রভাবে এগুলো তৈরি হয়েছে। এদিকে ইউনিভার্সিটি অফ ইউটাহ-এর ইমিউনোলজিস্ট এরন পেট্রি মনে করেন, করোনা সংক্রমণের ফলে যে রক্ত জমাটের সমস্যা দেখা যায়, সেখানেও একই এন্টিবডি কাজ করে। তবে এক্ষেত্রে আরও কিছু মেকানিজম যুগপৎভাবে সক্রিয় হয়ে থাকে, ফলে সমস্যাটি অধিকতর গুরুতর আকার ধারণ করে। (Blood Clot Risk from COVID-19 Higher than After Vaccines: Study. The Scientist Magazine®, April 16, 2021)

শুধু অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন নয়, জেএন্ডজে ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রেও রক্ত জমাটের সমস্যা দেখা গেছে। যেহেতু এ দুটি ভ্যাকসিনই এডেনোভাইরাসে তৈরি, এডেনোভাইরাসের কোন উপাদান কিংবা এতে মিশ্রিত কোন অপদ্রব্যের প্রভাবে এসব এন্টিবডি তৈরি হচ্ছে এমনটি মনে করার যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে। কিন্তু এডেনোভাইরাসে তৈরি অন্য ভ্যাকসিন স্পুটনিক ভি-এর ক্ষেত্রে এ ধরনের কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ঘটেনি বলে দাবি করা হয়েছে। যদিও প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এর সপক্ষে ভ্যাকসিন তৈরিতে ভিন্নতর এডেনোভাইরাস ব্যবহার এবং প্রক্রিয়াজাতকরণকালে উন্নততর বিশোধন পদ্ধতি প্রয়োগসহ বিভিন্ন যুক্তি দেয়া হয়েছে, এ বিষয়ে এখনই চূড়ান্ত কোন উপসংহার টানা সমীচীন হবে না। (Russia seeks to distance Sputnik V from blood clotting cases. The Pharma Letter, April 15, 2021)

রেগুলেটরি বডিসমূহের কাছে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো, ভ্যাকসিন গ্রহণে করোনা থেকে সুরক্ষা প্রাপ্তির উপকারিতার তুলনায় রক্ত জমাটের যে ঝুঁকি তা কতটা গুরুতর। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিচালিত সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, করোনা সংক্রমণের ফলে সেরেব্রাল ভেনাস থ্রম্বোসিস (সিভিটি) অর্থাৎ মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি প্রতি ১০ লাখে ৩৯ এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজের পর প্রতি ১০ লাখে ৫। এর মানে দাঁড়ায় করোনা সংক্রমণে সিভিটির আশঙ্কা অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের তুলনায় প্রায় ৮ গুণ বেশি। (Risk of rare blood clotting higher for COVID-19 than for vaccines. University of Oxford, NEWS & EVENTS, April 15, 2021)।

পাশাপাশি যে বিষয়টি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ তা হলো, অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন করোনাজনিত গুরুতর অসুস্থতা ও মৃত্যুর বিরুদ্ধে প্রায় পুরোপুরি সুরক্ষা দিতে সক্ষম। কাজেই স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে, এই ভ্যাকসিন নেয়ার উপকারিতা এর ফলে রক্ত জমাটের যে বিরল ঝুঁকি রয়েছে তার চেয়ে বহুগুণ বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুসের ভাষায় : ‘কোভিড-১৯ জনিত গুরুতর অসুস্থতা ও মৃত্যুর ঝুঁকি এই ভ্যাকসিনের যেসব খুবই নগণ্য ঝুঁকি রয়েছে তার চেয়ে বহুগুণ বেশি।’ (AZ Covid-19 vaccine and blood clots: the risks explained. PHARMACEUTICAL TECHNOLOGY, April 12, 2021)। তবে ভ্যাকসিন নেয়ার পরে রক্ত জমাট সংশ্লিষ্ট যেসব উপসর্গের কথা উপরে বলা হয়েছে, তেমন কিছু দেখা গেলে কাল বিলম্ব না করে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার কোনো বিকল্প নেই।

এখানে আরেকটি বিষয় আলোচনা করা দরকার। অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন গ্রহণে রক্ত জমাটের এই যে সমস্যাটি দেখা যাচ্ছে তাতে লিঙ্গ, বয়স কিংবা অন্য কোন বিষয় রিস্ক ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে কি? যদিও এখন পর্যন্ত বেশির ভাগ ঘটনা অনূর্ধ্ব ৬০ বছর বয়সী মহিলাদের ক্ষেত্রে ঘটেছে, ইউকে এবং ইউ-এর রেগুলেটরি অথরিটিসমূহের অভিমত হচ্ছে, এযাবৎ প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্থের আলোকে বিশেষ কোন বিষয়কে রিস্ক ফ্যাক্টর হিসেবে চিহ্নিত করার সুযোগ নাই। প্রাপ্ত রিপোর্টসমূহে মহিলাদের সংখ্যা বেশি হওয়ার একটি সম্ভাব্য কারণ এই হতে পারে যে- প্রথমদিকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে স্বাস্থ্যকর্মীদের ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই মহিলা। তবে সতর্কতা হিসেবে ইউরোপের অনেক দেশ অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের প্রয়োগ তুলনামূলকভাবে অধিক বয়স্ক লোকদের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ রাখতে নির্দেশ দিয়ে যুক্তরাজ্যের জেসিভিআইও অনূর্ধ্ব-৩০ বয়সীদের ক্ষেত্রে অন্য কোনো ভ্যাকসিন প্রয়োগের সুপারিশ করেছে। (AZ Covid-19 vaccine and blood clots: the risks explained. PHARMACEUTICAL TECHNOLOGY, April 12, 2021)।

[লেখক : অধ্যাপক, ফার্মেসি বিভাগ, জাবি]

back to top