alt

উপ-সম্পাদকীয়

পরিবেশ ছাড়পত্র কেন প্রয়োজন

সাঈদ চৌধুরী

: মঙ্গলবার, ১৫ জুন ২০২১

ধরুন আপনি একটি বাড়ি করবেন। এখন বাড়িটি আপনি যেখানে করবেন সে জায়গাটি সম্পর্কে আপনার যেমন জানার আছে তেমনি রাষ্ট্রেরও এ বিষয়ে কিছু বলবার আছে। রাষ্ট্রের অনেক কথার মধ্যে একটি বড় কথা হল যে জমিতে আপনি বাড়ি করতে চাইছেন সে জমিটি কি খাস, সে জমিটি কি বনের জমি, সে জমিটি কি রাষ্ট্রের রাস্তা করার জমি অথবা রাষ্ট্র কি এ জমি কোন কারণে কিনে রেখেছে?

আপনি জানেন না কিন্তু বাড়ি করলেন- এক্ষেত্রে কোন সমস্যায় পড়লে রাষ্ট্র আর আপনার মধ্যে কার অবস্থান কী হবে? শুধু তাই নয়-বনের জমি, নদীর জমি, জলাশয়, রাষ্ট্রের সরাসরি কোন জমিতে যদি আপনি শুধু বাড়িই করেন তবুও কিন্তু তা অপরাধ এবং এ কারণে পরিবেশ দূষণ হয়।

একটু দেখে নিন কি কি দূষণ আপনি প্রতিদিন ঘটাচ্ছেন। বাড়িতে যদি শুধু বাতিও জ্বালান তবে আপনি গ্রীন হাউস গ্যাস নিঃস্বরণে ভূমিকা রাখছেন, পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়াচ্ছেন। যদি আপনি চুলা জ্বালান তাহলে কার্বন বাড়াচ্ছেন। আপনি যদি ফ্রিজ ও এসি চালান তবে সিএফসি বাড়ছে। আর আপনি যদি এসবের কিছুই ব্যবহার না করেন তবুও বাড়ির খাবারের ময়লা ও অন্যান্য ময়লা দিয়ে দূষণ সৃষ্টি করছেন। এর সঙ্গে আপনার মলমূত্র তো মাটিতে মিশে যাচ্ছেই, খরচ করছেন পানিও।

একটি ফ্যাক্টরি করা হবে। প্রথমে ফ্যাক্টরিতে কি উৎপাদন হবে সেটা ঠিক করতে হবে। তারপর সে ফ্যাক্টরিতে কি পরিমাণ পানি ব্যবহার করবে, গ্যাস ব্যবহার করবে, বিদ্যুৎ ব্যবহার করবে এ বিষয়গুলোর একটি পরিমাণ উল্লেখ করে তালিকা করতে হবে। পুরো ফ্যাক্টরিটি স্থাপন করার ফলে ওই অঞ্চলে পরিবেশের কি ধরনের পরিবর্তন হতে পারে তা এনালাইসিস করতে হবে। ধরুন ফ্যাক্টরিটি হলে ৩০টি গাছ কাটা লাগতে পারে। আবার যারা কোন শিল্পকারখানা করবে তাদের অভ্যন্তরে ২৫ শতাংশ উদ্ভিদ থাকতে হয়। সব কিছু সঠিকভাবে হচ্ছে কিনা সে বিষয়য়টি যাচাইয়ের জন্য ইআইএ (এনভায়রনমেন্টাল ইমপ্যাক্ট এসেসমেন্ট) করে যদি দেখা যায় এখানে কোন শিল্পকারখানা করলে যারা বসবাস করছে তারা, প্রকৃতি অথবা রাষ্ট্রীয় সম্পদ এর তেমন ক্ষতি হবে না তবেই শুধু পরিবেশ ছাড়পত্র অনুমোদন দেয়া হয়!

এ কাজটি পরিবেশ অধিদপ্তর করে থাকে। যতই দিন যাচ্ছে ততই দূষণ বাড়ছে। এই দূষণ কমিয়ে আনার জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সঠিক চিন্তা এবং বিজ্ঞানভিত্তিক একটি পর্যালোচনা। কোন কিছু তৈরীর আগে তার পুরো বিশ্লেষণ থাকলেই শুধু একটি টেকসই উন্নয়ন বাস্তবায়ন সম্ভব।

পরিবেশ অধিদপ্তরে লোক সংকট আছে। তাই এখানে মেধাবী ও সৎলোকের প্রয়োজন। সঙ্গে সঙ্গে যারা টেকনিক্যাল মানুষ তাদের নিয়োগ দেয়া প্রয়োজন। প্রয়োজন প্রতিটি শিল্প এলাকায় ল্যাবরেটরি। দুর্নীতিমুক্ত পর্যালোচনাও খুব দরকারি এ বিষয়ে। যদি পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়া কোন উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন হয় উপরের সবগুলো বিষয় ফাঁকি দেয়া সহজ হয়ে যাবে। তাতে করে নদীদূষণ বাড়বে, নদী, বনভূমি, জলাশয়, সরকারি জায়গায় দখল বাড়বে। কৃষি জমির সংখ্যা কমে যাবে। এ বিষয়গুলো চিন্তা করে পরিবেশ অধিদপ্তরকে আরও গতিশীল করে যে কোন পরিবেশ ছাড়পত্র আবেদনের এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে দেয়ার ব্যবস্থা করাই সবচেয়ে বড় কাজ হতে পারে।

এ বিষয়ে যে যে ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন তা নিলেই কেবল আমাদের আগামীর বাংলাদেশ মাছে ভাতের বাংলাদেশ, সবুজের বাংলাদেশ, টেকসই অর্থনীতির বাংলাদেশ হতে পারে।

[লেখক : সদস্য, উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি ও রসায়নবিদ, শ্রীপুর, গাজীপুর]

জামাই মেলা : উৎসব, ঐতিহ্য ও কৃষ্টির রঙিন চিত্রপট

হারিয়ে যাওয়া ক্লাস, কঠোর মূল্যায়ন আর প্রশ্নের জটিলতায় নুয়ে পড়া এক প্রজন্ম

বৈষম্য দূর করে নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলুন

চিকিৎসা যেন বাণিজ্যের হাতিয়ারে পরিণত না হয়

পথশিশু ও বাংলাদেশে সামাজিক চুক্তির ব্যর্থতা

মেগা প্রকল্প : প্রশ্ন হওয়া উচিত স্বচ্ছতা নিয়ে

আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া জরুরি

স্মার্ট দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা : উপগ্রহ চিত্র ও ওয়েবসাইটের অপরিহার্যতা

ক্ষমতা ও জনপ্রশাসন : আমলাতন্ত্রের ছায়াতলে আমজনতা

জনসংখ্যা : সম্পদ না সংকট?

ব্রিকসে নতুন ভূ-রাজনৈতিক ব্যবস্থার উত্থান

রম্যগদ্য : ‘ল্যাংড়া-লুলা, আতুড়-পাতুড়’

আষাঢ়ী পূর্ণিমা : আত্মশুদ্ধির সাধনায় বুদ্ধের অনন্ত আলো

বদলে যাওয়া মাটিতে সাহসী বীজ : জলবায়ুর বিপরীতে বাংলাদেশের কৃষির অভিযোজনগাথা

ছবি

জুলাই অভ্যুত্থান-গাথা : ‘শিকলে নাহি দিব ধরা’

প্রাচীন যৌধেয় জাতি ও তাদের সাম্যবাদী শাসন

গণঅভ্যুত্থান-উত্তর ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের স্বপ্ন

টেকসই উন্নয়নের স্বপ্নপূরণে উপগ্রহ চিত্রই চাবিকাঠি

রাবার শিল্প : সংকট, করণীয় ও উত্তরণের দিশা

রম্যগদ্য : দুধ, দই, কলা...

ছবি

কোপার্নিকাস : আলো হয়ে জন্ম নেওয়া বৈপ্লবিক মতবাদের প্রবর্তক

জলবায়ু সংকটে মানবসভ্যতা

টেকসই অর্থনীতির জন্য চাই টেকসই ব্যাংকিং

ডিজিটাল দাসত্ব : মনোযোগ অর্থনীতি ও জ্ঞান পুঁজিবাদে তরুণ প্রজন্মের মননশীলতার অবক্ষয়

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার : আস্থা ভঙ্গ ও জবাবদিহিতার সংকট

আসামি এখন নির্বাচন কমিশন

কোথায় হারাল একান্নবর্তী পরিবার?

এই শান্তি কি মহাঝড়ের পূর্বলক্ষণ?

মেগাসিটি : দারিদ্র্য যখন ‘অবাঞ্ছিত বর্জ্য’

ফলের রাজ্য পার্বত্য চট্টগ্রাম

ছবি

তৃতীয় শক্তির জন্য জায়গা খালি : বামপন্থীরা কি ঘুরে দাঁড়াতে পারে না

জমি আপনার, দখল অন্যের?

সিধু-কানু : ধ্বংসস্তূপের নিচেও জেগে আছে সাহস

ছবি

বাংলার অনন্য লোকসংস্কৃতি ও গণতান্ত্রিক চেতনা

চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী সাম্পান

তিন দিক থেকে স্বাস্থ্যঝুঁকি : করোনা, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া

tab

উপ-সম্পাদকীয়

পরিবেশ ছাড়পত্র কেন প্রয়োজন

সাঈদ চৌধুরী

মঙ্গলবার, ১৫ জুন ২০২১

ধরুন আপনি একটি বাড়ি করবেন। এখন বাড়িটি আপনি যেখানে করবেন সে জায়গাটি সম্পর্কে আপনার যেমন জানার আছে তেমনি রাষ্ট্রেরও এ বিষয়ে কিছু বলবার আছে। রাষ্ট্রের অনেক কথার মধ্যে একটি বড় কথা হল যে জমিতে আপনি বাড়ি করতে চাইছেন সে জমিটি কি খাস, সে জমিটি কি বনের জমি, সে জমিটি কি রাষ্ট্রের রাস্তা করার জমি অথবা রাষ্ট্র কি এ জমি কোন কারণে কিনে রেখেছে?

আপনি জানেন না কিন্তু বাড়ি করলেন- এক্ষেত্রে কোন সমস্যায় পড়লে রাষ্ট্র আর আপনার মধ্যে কার অবস্থান কী হবে? শুধু তাই নয়-বনের জমি, নদীর জমি, জলাশয়, রাষ্ট্রের সরাসরি কোন জমিতে যদি আপনি শুধু বাড়িই করেন তবুও কিন্তু তা অপরাধ এবং এ কারণে পরিবেশ দূষণ হয়।

একটু দেখে নিন কি কি দূষণ আপনি প্রতিদিন ঘটাচ্ছেন। বাড়িতে যদি শুধু বাতিও জ্বালান তবে আপনি গ্রীন হাউস গ্যাস নিঃস্বরণে ভূমিকা রাখছেন, পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়াচ্ছেন। যদি আপনি চুলা জ্বালান তাহলে কার্বন বাড়াচ্ছেন। আপনি যদি ফ্রিজ ও এসি চালান তবে সিএফসি বাড়ছে। আর আপনি যদি এসবের কিছুই ব্যবহার না করেন তবুও বাড়ির খাবারের ময়লা ও অন্যান্য ময়লা দিয়ে দূষণ সৃষ্টি করছেন। এর সঙ্গে আপনার মলমূত্র তো মাটিতে মিশে যাচ্ছেই, খরচ করছেন পানিও।

একটি ফ্যাক্টরি করা হবে। প্রথমে ফ্যাক্টরিতে কি উৎপাদন হবে সেটা ঠিক করতে হবে। তারপর সে ফ্যাক্টরিতে কি পরিমাণ পানি ব্যবহার করবে, গ্যাস ব্যবহার করবে, বিদ্যুৎ ব্যবহার করবে এ বিষয়গুলোর একটি পরিমাণ উল্লেখ করে তালিকা করতে হবে। পুরো ফ্যাক্টরিটি স্থাপন করার ফলে ওই অঞ্চলে পরিবেশের কি ধরনের পরিবর্তন হতে পারে তা এনালাইসিস করতে হবে। ধরুন ফ্যাক্টরিটি হলে ৩০টি গাছ কাটা লাগতে পারে। আবার যারা কোন শিল্পকারখানা করবে তাদের অভ্যন্তরে ২৫ শতাংশ উদ্ভিদ থাকতে হয়। সব কিছু সঠিকভাবে হচ্ছে কিনা সে বিষয়য়টি যাচাইয়ের জন্য ইআইএ (এনভায়রনমেন্টাল ইমপ্যাক্ট এসেসমেন্ট) করে যদি দেখা যায় এখানে কোন শিল্পকারখানা করলে যারা বসবাস করছে তারা, প্রকৃতি অথবা রাষ্ট্রীয় সম্পদ এর তেমন ক্ষতি হবে না তবেই শুধু পরিবেশ ছাড়পত্র অনুমোদন দেয়া হয়!

এ কাজটি পরিবেশ অধিদপ্তর করে থাকে। যতই দিন যাচ্ছে ততই দূষণ বাড়ছে। এই দূষণ কমিয়ে আনার জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সঠিক চিন্তা এবং বিজ্ঞানভিত্তিক একটি পর্যালোচনা। কোন কিছু তৈরীর আগে তার পুরো বিশ্লেষণ থাকলেই শুধু একটি টেকসই উন্নয়ন বাস্তবায়ন সম্ভব।

পরিবেশ অধিদপ্তরে লোক সংকট আছে। তাই এখানে মেধাবী ও সৎলোকের প্রয়োজন। সঙ্গে সঙ্গে যারা টেকনিক্যাল মানুষ তাদের নিয়োগ দেয়া প্রয়োজন। প্রয়োজন প্রতিটি শিল্প এলাকায় ল্যাবরেটরি। দুর্নীতিমুক্ত পর্যালোচনাও খুব দরকারি এ বিষয়ে। যদি পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়া কোন উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন হয় উপরের সবগুলো বিষয় ফাঁকি দেয়া সহজ হয়ে যাবে। তাতে করে নদীদূষণ বাড়বে, নদী, বনভূমি, জলাশয়, সরকারি জায়গায় দখল বাড়বে। কৃষি জমির সংখ্যা কমে যাবে। এ বিষয়গুলো চিন্তা করে পরিবেশ অধিদপ্তরকে আরও গতিশীল করে যে কোন পরিবেশ ছাড়পত্র আবেদনের এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে দেয়ার ব্যবস্থা করাই সবচেয়ে বড় কাজ হতে পারে।

এ বিষয়ে যে যে ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন তা নিলেই কেবল আমাদের আগামীর বাংলাদেশ মাছে ভাতের বাংলাদেশ, সবুজের বাংলাদেশ, টেকসই অর্থনীতির বাংলাদেশ হতে পারে।

[লেখক : সদস্য, উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি ও রসায়নবিদ, শ্রীপুর, গাজীপুর]

back to top