মাসুম আলভী
বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। এ দেশের অর্থনৈতিক চালিকাশক্তি মূলত কৃষি। প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ কৃষির সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত, যা শ্রমশক্তি প্রায় ৬০ ভাগ। কিন্তু গত কয়েক বছর কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় মানুষ কৃষিবিমুখ হয়ে পড়ে। মানুষ উন্নত জীবনযাপনের জন্য শহরমুখী হচ্ছে, ফলে বহু জমি অনাবাদি হয়ে পড়ে। মোট দেশজ উৎপাদন তথা জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান ১৩ দশমিক ছয় শতাংশ। বিগত বছরের তুলনায় কৃষি খাতের অবদান কমতে শুরু করেছে। করোনায় অর্থনৈতিক চাকা স্থবির হয়ে পড়ে। শিল্প-কারখানায় অনিয়মের কারণে অনেকটা মেরুদ-হীন প্রায়। দিন শেষে আবার মানুষ কৃষি অর্থনীতির দিকে ঝুঁকছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়ার লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে হলে টেকসই কৃষির কোন বিকল্প নেই।
কৃষি তথ্য সার্ভিস কৃষি অর্থনীতি উন্নয়ন অপ্রতিরোধ্য করে তুলেছে। কৃষি তথ্য সার্ভিসের পরিচালিত ‘কৃষি কল সেন্টার’ (১৬১২৩) নম্বরে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ফোন করে কৃষি, মৎস্য, প্রাণিসম্পদ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে পারবে।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের ওয়েবসাইট (www.ais.gov.bd) থেকে কৃষিবিষয়ক প্রয়োজনীয় সব তথ্য ও প্রশ্নের সমাধান জানতে পারবে। কৃষিবিষয়ক তথ্য ও পরামর্শ জন্য এআইএসের সহায়তায় প্রতিদিন সকাল ৭টা ২৫ মিনিটে বিটিভিতে সম্প্রচারিত হচ্ছে ‘বাংলার কৃষি’ অনুষ্ঠান। গ্রামীণ কৃষি অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করতে আরেকটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হলো দেশব্যাপী ২৪৫টি কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ কেন্দ্র (এআইসিসি) স্থাপন করেছে।
কৃষি তথ্যসেবা সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি নানামুখী কার্যক্রম রয়েছে তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য কৃষি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট (www.moa.gov.bd) থেকে কৃষিনীতি, আদেশসহ বিভিন্ন প্রশাসনিক বিষয় সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) এর ওয়েবসাইট (www.dae.gov.bd) থেকে মাঠ ফসলের বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত, যোগাযোগ ঠিকানা, পরামর্শ, প্রশাসনিক বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়। এছাড়াও ‘ভূমির উপযোগিতাভিত্তিক ফসল অঞ্চল’ ওয়েব (www.barcapps.gov.bd/cropzoning)। বিএডিসির বিভিন্ন বীজ, সার, সেচ সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের ওয়েবসাইট www.badc.gov.bd থেকে পাওয়া যায়। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের ‘বাংলাদেশ রাইস নলেজ ব্যাংক’ (www.knowledgebank-brri.org) এর মাধ্যমে ব্রি উদ্ভাবিত ধানের সব তথ্য পাওয়া যায়।
মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট (এসআরডিআই) এর ওয়েবসাইট (www.srdi.gov.bd) থেকে ‘অনলাইন ফার্টিলাইজার রিকমেন্ডেশন সিস্টেম’ বা ওএফআরএস নামক সফটওয়্যারের সাহায্যে সহজেই বাংলাদেশের যে কোন স্থানের জমির জন্য সার সুপারিশ সেবা গ্রহণ করা যায়। জলবায়ু তথ্য ব্যবস্থাপনা সিস্টেম’ অ্যাপ্লিকেশন (www.barcapps.gov.bd/climate) পাশাপাশি www.barcapps.gov.bd/cropcalender লিংক থেকে পাওয়া যাবে ‘ফসল পঞ্জিকা’। বাজারবিষয়ক প্রয়োজনীয় তথ্যসেবা পেতে রয়েছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট (www.dam.gov.bd)। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই কর্মসূচি থেকে নির্মিত জাতীয় ই-তথ্য কোষ (www.infokosh.gov.bd) থেকে কৃষি ও জীবন জীবিকার বিভিন্ন ক্ষেত্রের তথ্য পাওয়া যায়।
যে দেশের সিংহভাগ মানুষ কৃষির সঙ্গে জড়িত সেখানে কৃষকদের উন্নয়ন নিশ্চিত না করলে অর্থনৈতিক মুক্তি আদো সম্ভব নয়। ই-কৃষি সেবা সব শ্রেণীর কৃষকদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে হবে। সুবিধাগুলো ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারলে কৃষি অর্থনীতির মন্দা দূর হবে। প্রয়োজনে কৃষকদের কৃষি যন্ত্রপাতি কেনার জন্য ভর্তুকি প্রদান করতে হবে। একই সঙ্গে সুন্দর বিপণন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক চাকা পুনরায় প্রবল গতিশীল হবে।
[লেখক : শিক্ষার্থী,
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।
মাসুম আলভী
বুধবার, ১৬ জুন ২০২১
বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। এ দেশের অর্থনৈতিক চালিকাশক্তি মূলত কৃষি। প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ কৃষির সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত, যা শ্রমশক্তি প্রায় ৬০ ভাগ। কিন্তু গত কয়েক বছর কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় মানুষ কৃষিবিমুখ হয়ে পড়ে। মানুষ উন্নত জীবনযাপনের জন্য শহরমুখী হচ্ছে, ফলে বহু জমি অনাবাদি হয়ে পড়ে। মোট দেশজ উৎপাদন তথা জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান ১৩ দশমিক ছয় শতাংশ। বিগত বছরের তুলনায় কৃষি খাতের অবদান কমতে শুরু করেছে। করোনায় অর্থনৈতিক চাকা স্থবির হয়ে পড়ে। শিল্প-কারখানায় অনিয়মের কারণে অনেকটা মেরুদ-হীন প্রায়। দিন শেষে আবার মানুষ কৃষি অর্থনীতির দিকে ঝুঁকছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়ার লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে হলে টেকসই কৃষির কোন বিকল্প নেই।
কৃষি তথ্য সার্ভিস কৃষি অর্থনীতি উন্নয়ন অপ্রতিরোধ্য করে তুলেছে। কৃষি তথ্য সার্ভিসের পরিচালিত ‘কৃষি কল সেন্টার’ (১৬১২৩) নম্বরে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ফোন করে কৃষি, মৎস্য, প্রাণিসম্পদ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে পারবে।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের ওয়েবসাইট (www.ais.gov.bd) থেকে কৃষিবিষয়ক প্রয়োজনীয় সব তথ্য ও প্রশ্নের সমাধান জানতে পারবে। কৃষিবিষয়ক তথ্য ও পরামর্শ জন্য এআইএসের সহায়তায় প্রতিদিন সকাল ৭টা ২৫ মিনিটে বিটিভিতে সম্প্রচারিত হচ্ছে ‘বাংলার কৃষি’ অনুষ্ঠান। গ্রামীণ কৃষি অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করতে আরেকটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হলো দেশব্যাপী ২৪৫টি কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ কেন্দ্র (এআইসিসি) স্থাপন করেছে।
কৃষি তথ্যসেবা সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি নানামুখী কার্যক্রম রয়েছে তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য কৃষি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট (www.moa.gov.bd) থেকে কৃষিনীতি, আদেশসহ বিভিন্ন প্রশাসনিক বিষয় সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) এর ওয়েবসাইট (www.dae.gov.bd) থেকে মাঠ ফসলের বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত, যোগাযোগ ঠিকানা, পরামর্শ, প্রশাসনিক বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়। এছাড়াও ‘ভূমির উপযোগিতাভিত্তিক ফসল অঞ্চল’ ওয়েব (www.barcapps.gov.bd/cropzoning)। বিএডিসির বিভিন্ন বীজ, সার, সেচ সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের ওয়েবসাইট www.badc.gov.bd থেকে পাওয়া যায়। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের ‘বাংলাদেশ রাইস নলেজ ব্যাংক’ (www.knowledgebank-brri.org) এর মাধ্যমে ব্রি উদ্ভাবিত ধানের সব তথ্য পাওয়া যায়।
মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট (এসআরডিআই) এর ওয়েবসাইট (www.srdi.gov.bd) থেকে ‘অনলাইন ফার্টিলাইজার রিকমেন্ডেশন সিস্টেম’ বা ওএফআরএস নামক সফটওয়্যারের সাহায্যে সহজেই বাংলাদেশের যে কোন স্থানের জমির জন্য সার সুপারিশ সেবা গ্রহণ করা যায়। জলবায়ু তথ্য ব্যবস্থাপনা সিস্টেম’ অ্যাপ্লিকেশন (www.barcapps.gov.bd/climate) পাশাপাশি www.barcapps.gov.bd/cropcalender লিংক থেকে পাওয়া যাবে ‘ফসল পঞ্জিকা’। বাজারবিষয়ক প্রয়োজনীয় তথ্যসেবা পেতে রয়েছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট (www.dam.gov.bd)। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই কর্মসূচি থেকে নির্মিত জাতীয় ই-তথ্য কোষ (www.infokosh.gov.bd) থেকে কৃষি ও জীবন জীবিকার বিভিন্ন ক্ষেত্রের তথ্য পাওয়া যায়।
যে দেশের সিংহভাগ মানুষ কৃষির সঙ্গে জড়িত সেখানে কৃষকদের উন্নয়ন নিশ্চিত না করলে অর্থনৈতিক মুক্তি আদো সম্ভব নয়। ই-কৃষি সেবা সব শ্রেণীর কৃষকদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে হবে। সুবিধাগুলো ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারলে কৃষি অর্থনীতির মন্দা দূর হবে। প্রয়োজনে কৃষকদের কৃষি যন্ত্রপাতি কেনার জন্য ভর্তুকি প্রদান করতে হবে। একই সঙ্গে সুন্দর বিপণন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক চাকা পুনরায় প্রবল গতিশীল হবে।
[লেখক : শিক্ষার্থী,
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।