alt

উপ-সম্পাদকীয়

নারী জাগরণের পথিকৃৎ

সাবরিনা ওবায়েদ আনিকা

: বুধবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২১
image

ঊনবিংশ শতাব্দীর ধর্মীয় গোঁড়ামি ও কুসংস্কারের শৃঙ্খল থেকে নারীকে মুক্ত করার লক্ষ্যে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে যে মহীয়সী নারী ইতিহাসের পাতায় অবিস্মরণীয় হয়ে আছেন, তিনি হলেন বেগম রোকেয়া শাখাওয়াত হোসেন। তার জন্ম ও মৃত্যু উভয়ই ৯ ডিসেম্বর। ৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশের সরকার কর্তৃক বিভিন্ন সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নারী জাগরণ উন্মোচনবিষয়ক শিক্ষণীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উদ্যাপনের মাধ্যমে এই মহীয়সী নারীকে বিশেষভাবে সম্মান প্রদর্শন করে স্মরণ করা হয়।

বিংশ শতাব্দীর সূচনাকালে রোকেয়ার যখন উত্থান, তখনও বাঙালি-মুসলমান নারী ছিল অন্ধকারে, পুরো বাঙালি মুসলমান সমাজই ছিল অন্ধকারে। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষাংশ থেকে থেকে শুরু হয়েছিল বাঙালি মুসলমানের বহুবিলম্বিত জাগরণ। সেই জাগরণের মধ্যে রোকেয়া নারীকেও অন্তর্ভুক্ত করে নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু রোকেয়া ছিলেন উন্মুক্ত মনের মানুষ। ফলে বাঙালি-মুসলমান নারীর মধ্যেই আবদ্ধ থাকেননি, দেশ-কাল-জাতি-ধর্ম-নির্বিশেষে সমগ্রভাবে নারীর জাগরণ আকাক্সক্ষা করেছেন। তাই আমরা সামগ্রিকভাবে বলতে

রোকেয়া তার নারীবাদী চিন্তার প্রকাশ ঘটিয়েছেন মতিচূর প্রবন্ধসংগ্রহের প্রথম (১৯০৪) ও দ্বিতীয় খন্ডে (১৯২২)। সুলতানার স্বপ্ন (১৯০৫), পদ্মরাগ (১৯২৪), অবরোধবাসিনী (১৯৩১) ইত্যাদি তার সৃজনশীল রচনা। তার সুলতানার স্বপ্নকে বিশ্বের নারীবাদী সাহিত্যে একটি মাইলফলক ধরা হয়। গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হওয়ার আগে তার লেখাগুলো নবনূর, সওগাত, মোহাম্মদী ইত্যাদি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল।

তার প্রবন্ধ, গল্প, উপন্যাসের মধ্য দিয়ে তিনি নারীশিক্ষার প্রয়োজনীয়তা আর লিঙ্গসমতার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেছেন। হাস্যরস আর ব্যঙ্গ-বিদ্রপের সাহায্যে পিতৃতান্ত্রিক সমাজে নারীর অসম অবস্থান ফুটিয়ে তুলেছেন। তার রচনা দিয়ে তিনি সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টির চেষ্টা করেছেন, ধর্মের নামে নারীর প্রতি অবিচার রোধ করতে চেয়েছেন। শিক্ষা আর পছন্দানুযায়ী পেশা নির্বাচনের সুযোগ ছাড়া যে নারী মুক্তি আসবে না-তা বলেছেন।

রোকেয়া অলঙ্কারকে দাসত্বের প্রতীক বিবেচনা করেছেন। নারীদের অলঙ্কার ত্যাগ করে আত্মসম্মানবোধে উজ্জীবিত হয়ে আর্থ-রাজনৈতিক স্বাধীনতা অর্জনে সচেষ্ট হতে আহ্বান জানিযেছেন।

১৯৩২ সালে তার অকালমৃত্যুর পরেও বাঙালি তাকে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানিয়েছে-অনুষ্ঠান করে, নিবেদিত কবিতা লিখে, জীবনী লিখে। বিংশ শতাব্দীর প্রথমে বেগম রোকেয়া যে আলোড়ন জাগিয়েছিলেন শতাব্দীর শেষেও তার তরঙ্গের ওঠানামা প্রত্যক্ষ করছি আমরা।

[লেখক : শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়]

দক্ষ মানবসম্পদ ও সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার

আফ্রিকায় হঠাৎ কেন যুক্তরাষ্ট্রের ঝোঁক?

ঢাকা মহানগর ও বুড়িগঙ্গা

জামাই মেলা : উৎসব, ঐতিহ্য ও কৃষ্টির রঙিন চিত্রপট

হারিয়ে যাওয়া ক্লাস, কঠোর মূল্যায়ন আর প্রশ্নের জটিলতায় নুয়ে পড়া এক প্রজন্ম

বৈষম্য দূর করে নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলুন

চিকিৎসা যেন বাণিজ্যের হাতিয়ারে পরিণত না হয়

পথশিশু ও বাংলাদেশে সামাজিক চুক্তির ব্যর্থতা

মেগা প্রকল্প : প্রশ্ন হওয়া উচিত স্বচ্ছতা নিয়ে

আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া জরুরি

স্মার্ট দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা : উপগ্রহ চিত্র ও ওয়েবসাইটের অপরিহার্যতা

ক্ষমতা ও জনপ্রশাসন : আমলাতন্ত্রের ছায়াতলে আমজনতা

জনসংখ্যা : সম্পদ না সংকট?

ব্রিকসে নতুন ভূ-রাজনৈতিক ব্যবস্থার উত্থান

রম্যগদ্য : ‘ল্যাংড়া-লুলা, আতুড়-পাতুড়’

আষাঢ়ী পূর্ণিমা : আত্মশুদ্ধির সাধনায় বুদ্ধের অনন্ত আলো

বদলে যাওয়া মাটিতে সাহসী বীজ : জলবায়ুর বিপরীতে বাংলাদেশের কৃষির অভিযোজনগাথা

ছবি

জুলাই অভ্যুত্থান-গাথা : ‘শিকলে নাহি দিব ধরা’

প্রাচীন যৌধেয় জাতি ও তাদের সাম্যবাদী শাসন

গণঅভ্যুত্থান-উত্তর ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের স্বপ্ন

টেকসই উন্নয়নের স্বপ্নপূরণে উপগ্রহ চিত্রই চাবিকাঠি

রাবার শিল্প : সংকট, করণীয় ও উত্তরণের দিশা

রম্যগদ্য : দুধ, দই, কলা...

ছবি

কোপার্নিকাস : আলো হয়ে জন্ম নেওয়া বৈপ্লবিক মতবাদের প্রবর্তক

জলবায়ু সংকটে মানবসভ্যতা

টেকসই অর্থনীতির জন্য চাই টেকসই ব্যাংকিং

ডিজিটাল দাসত্ব : মনোযোগ অর্থনীতি ও জ্ঞান পুঁজিবাদে তরুণ প্রজন্মের মননশীলতার অবক্ষয়

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার : আস্থা ভঙ্গ ও জবাবদিহিতার সংকট

আসামি এখন নির্বাচন কমিশন

কোথায় হারাল একান্নবর্তী পরিবার?

এই শান্তি কি মহাঝড়ের পূর্বলক্ষণ?

মেগাসিটি : দারিদ্র্য যখন ‘অবাঞ্ছিত বর্জ্য’

ফলের রাজ্য পার্বত্য চট্টগ্রাম

ছবি

তৃতীয় শক্তির জন্য জায়গা খালি : বামপন্থীরা কি ঘুরে দাঁড়াতে পারে না

জমি আপনার, দখল অন্যের?

সিধু-কানু : ধ্বংসস্তূপের নিচেও জেগে আছে সাহস

tab

উপ-সম্পাদকীয়

নারী জাগরণের পথিকৃৎ

সাবরিনা ওবায়েদ আনিকা

image

বুধবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২১

ঊনবিংশ শতাব্দীর ধর্মীয় গোঁড়ামি ও কুসংস্কারের শৃঙ্খল থেকে নারীকে মুক্ত করার লক্ষ্যে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে যে মহীয়সী নারী ইতিহাসের পাতায় অবিস্মরণীয় হয়ে আছেন, তিনি হলেন বেগম রোকেয়া শাখাওয়াত হোসেন। তার জন্ম ও মৃত্যু উভয়ই ৯ ডিসেম্বর। ৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশের সরকার কর্তৃক বিভিন্ন সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নারী জাগরণ উন্মোচনবিষয়ক শিক্ষণীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উদ্যাপনের মাধ্যমে এই মহীয়সী নারীকে বিশেষভাবে সম্মান প্রদর্শন করে স্মরণ করা হয়।

বিংশ শতাব্দীর সূচনাকালে রোকেয়ার যখন উত্থান, তখনও বাঙালি-মুসলমান নারী ছিল অন্ধকারে, পুরো বাঙালি মুসলমান সমাজই ছিল অন্ধকারে। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষাংশ থেকে থেকে শুরু হয়েছিল বাঙালি মুসলমানের বহুবিলম্বিত জাগরণ। সেই জাগরণের মধ্যে রোকেয়া নারীকেও অন্তর্ভুক্ত করে নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু রোকেয়া ছিলেন উন্মুক্ত মনের মানুষ। ফলে বাঙালি-মুসলমান নারীর মধ্যেই আবদ্ধ থাকেননি, দেশ-কাল-জাতি-ধর্ম-নির্বিশেষে সমগ্রভাবে নারীর জাগরণ আকাক্সক্ষা করেছেন। তাই আমরা সামগ্রিকভাবে বলতে

রোকেয়া তার নারীবাদী চিন্তার প্রকাশ ঘটিয়েছেন মতিচূর প্রবন্ধসংগ্রহের প্রথম (১৯০৪) ও দ্বিতীয় খন্ডে (১৯২২)। সুলতানার স্বপ্ন (১৯০৫), পদ্মরাগ (১৯২৪), অবরোধবাসিনী (১৯৩১) ইত্যাদি তার সৃজনশীল রচনা। তার সুলতানার স্বপ্নকে বিশ্বের নারীবাদী সাহিত্যে একটি মাইলফলক ধরা হয়। গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হওয়ার আগে তার লেখাগুলো নবনূর, সওগাত, মোহাম্মদী ইত্যাদি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল।

তার প্রবন্ধ, গল্প, উপন্যাসের মধ্য দিয়ে তিনি নারীশিক্ষার প্রয়োজনীয়তা আর লিঙ্গসমতার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেছেন। হাস্যরস আর ব্যঙ্গ-বিদ্রপের সাহায্যে পিতৃতান্ত্রিক সমাজে নারীর অসম অবস্থান ফুটিয়ে তুলেছেন। তার রচনা দিয়ে তিনি সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টির চেষ্টা করেছেন, ধর্মের নামে নারীর প্রতি অবিচার রোধ করতে চেয়েছেন। শিক্ষা আর পছন্দানুযায়ী পেশা নির্বাচনের সুযোগ ছাড়া যে নারী মুক্তি আসবে না-তা বলেছেন।

রোকেয়া অলঙ্কারকে দাসত্বের প্রতীক বিবেচনা করেছেন। নারীদের অলঙ্কার ত্যাগ করে আত্মসম্মানবোধে উজ্জীবিত হয়ে আর্থ-রাজনৈতিক স্বাধীনতা অর্জনে সচেষ্ট হতে আহ্বান জানিযেছেন।

১৯৩২ সালে তার অকালমৃত্যুর পরেও বাঙালি তাকে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানিয়েছে-অনুষ্ঠান করে, নিবেদিত কবিতা লিখে, জীবনী লিখে। বিংশ শতাব্দীর প্রথমে বেগম রোকেয়া যে আলোড়ন জাগিয়েছিলেন শতাব্দীর শেষেও তার তরঙ্গের ওঠানামা প্রত্যক্ষ করছি আমরা।

[লেখক : শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়]

back to top