alt

opinion » post-editorial

মায়ের সম্পত্তিতে কার অংশ কতটুকু?

সিরাজ প্রামাণিক

: মঙ্গলবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২১

আমাদের সমাজে প্রচলিত একটি ভুল ধারণা রয়েছে যে, মায়ের সম্পত্তিতে মেয়েরা বেশি পাবে। অর্থাৎ মায়ের মৃত্যুর পর উত্তরাধিকার হিসাবে ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা বেশি পরিমাণ সম্পত্তির অংশীদার হবে। প্রকৃত আইনটি হচ্ছে, মুসলিম উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী মৃত ব্যক্তি পুরুষ অথবা নারী যিনিই হোন না কেন, তার সম্পত্তিতে ছেলে ও মেয়ে একইভাবে সম্পত্তির মালিক হয়ে থাকেন। মৃত ব্যক্তির যদি সন্তান থাকে তবে স্বামী পাবে এক চতুর্থাংশ আর মৃত ব্যক্তির সন্তান সন্ততি বা পুত্রের সন্তান সন্ততি বা তার নিম্নে কেউ না থাকে, তবে স্বামী পবে ১/২ অংশ।

এই সম্পত্তি স্বামীকে দেয়ার পর অবশিষ্ট সম্পত্তি ছেলে ও মেয়ের মধ্যে ২:১ হারে বাটোয়ারা হবে। অর্থাৎ ছেলেরা পাবে ডাবল আর মেয়েরা ছেলের অর্ধেক পরিমাণ পাবে। যদি মেয়ে না থাকে তবে বাকি সম্পূর্ণ অংশ ছেলে পাবে। আরও স্পষ্ট করে বলি, একজন মেয়ে ৩ নিয়মে মৃত ব্যক্তির সম্পদ পেয়ে থাকে।

১। যদি একজন মেয়ে হয় তবে দুইভাগের একভাগ (১/২) অংশ পাবে অর্থাৎ বাকি সম্পত্তির অর্ধেক মেয়ে পাবে। ২। যদি একাধিক মেয়ে হয় তবে সকলে তিন ভাগের দুই ভাগ (২/৩) আংশ পাবে। ৩। যদি মৃত ব্যক্তির ছেলেমেয়ে উভয়েই থাকে তবে ছেলে যে পরিমাণ পাবে মেয়ে তার অর্ধেক পাবে। কাজেই ‘মায়ের সম্পত্তি মেয়েরা বেশি পাবে’ এই ধারণাটি ভুল।

হিন্দু উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী কোন পুরুষ মারা গেলে তার সম্পত্তির ওপর প্রথমে পুত্র, পৌত্র, প্রপৌত্র এবং বিধবার অগ্রাধিকার। এদের অনুপস্থিতিতে পর্যায়ক্রমে কন্যা, দৌহিত্র, পিতা, মাতা, ভ্রাতা, ভ্রাতুষ্পুত্ররা সম্পত্তির উত্তরাধিকার হন। কিন্তু কোন হিন্দু মহিলা মারা গেলে তার সম্পত্তি বণ্টনের দুটি নিয়ম রয়েছে।

১) কোন মহিলা যদি উত্তরাধিকার সূত্রে কোন সম্পত্তির মালিক হন তাহলে তার মৃত্যুর পর সেই সম্পত্তি উত্তরাধিকার সূত্রে যার নিকট হতে পেয়েছিলেন তার নিকটাত্মীয়দের নিকট ফিরে যাবে।

২) উত্তরাধিকার ব্যতীত অন্য কোনভাবে যদি কোন সম্পত্তির মালিক হন তাহলে সেই সম্পত্তি মালিকানার ধরন অনুযায়ী তার উত্তরাধিকারদের মধ্য বণ্টিত হবে।

১৯৩৭ সালের হিন্দু আইন অনুযায়ী মেয়েরা কোন সম্পত্তির উত্তরাধিকারী নয়। তবে বিধবা হওয়ার পর সন্তান নাবালক থাকা অবস্থায় শুধু বসতি বাড়ির অধিকারী হয়। দীর্ঘ ৮৩ বছরেও হিন্দু আইনে আর কোন পরিবর্তন হয়নি। ২০২০ সালের ১ আগস্ট বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে রায় ঘোষণা করেছে যে, হিন্দু বিধবারা স্বামীর সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হবে, তবে প্রাপ্ত সম্পত্তি কোন প্রকার বিক্রি, হস্তান্তরযোগ্য নয়। শুধু ভোগদখলকৃত বলে গণ্য হবে।

[লেখক : আইনজীবী, সুপ্রিম কোর্ট]

মামলাজট নিরসনে দেওয়ানি কার্যবিধির সংস্কার

বাস্তব মস্কো বনাম বিভ্রান্ত ইউরোপ

ছাত্রসংসদ নির্বাচন ও ভবিষ্যৎ ছাত্ররাজনীতির গতিপ্রকৃতি

সড়ক দুর্ঘটনা: কারও মৃত্যু সাধারণ, কারও মৃত্যু বিশেষ

ঐকমত্য ছাড়াও কিছু সংস্কার সম্ভব

আবার বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম : সংকটে সাধারণ মানুষ

ডায়াবেটিস রোগীর সেবা ও জনসচেতনতা

ভিন্ন ধরনের ডাকসু নির্বাচন

ডাকসু নির্বাচন : পেছনে ফেলে আসি

প্রসঙ্গ : এলডিসি তালিকা থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ

“কোপা চাটিগাঁ...”

ই-কমার্স হতে পারে প্রবৃদ্ধির ইঞ্জিন

ভারত-চীনের নতুন সমীকরণ

সাইবার যুগে মানুষের মর্যাদা ও নিরাপত্তা

ছবি

ভারত-চীন সম্পর্কে কৌশলগত উষ্ণতার সূচনা

ভারত-চীন সম্পর্কে কৌশলগত উষ্ণতার সূচনা

একজন নাগরিকের অভিমানী বিদায় ও রাষ্ট্রের নৈতিক সংকট

নিষিদ্ধ জালের অভিশাপে হুমকির মুখে সমুদ্রের জীববৈচিত্র্য

আধিপত্যবাদের শৃঙ্খল এবং পুঁজির লুন্ঠন যাদের রক্তাক্ত করে, তাদের চাই একজোটে

জার্মানি : কৃচ্ছসাধনের বোঝা জনগণের কাঁধে

পাট চাষের সংকট ও সম্ভাবনা

সামাজিক-প্রযুক্তিগত কল্পনা: বাংলাদেশের উন্নয়ন চিন্তার নতুন দিগন্ত

অগ্রক্রয় মোকদ্দমায় উভয় পক্ষের আইনি ডিফেন্স

পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম

এক সাংবাদিকের খোলা চিঠি

বাংলাদেশের দারিদ্র্য বৃদ্ধি ও অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ

ক্লাউডবার্স্ট: মৃত্যুর বার্তা নিয়ে, আকাশ যখন কান্নায় ভেঙে পড়ে

রম্যগদ্য:“কবি এখন জেলে...”

কারা কর্তৃপক্ষের সীমাবদ্ধতা ও ‘কারেকশন সার্ভিস’-এর বাস্তবতা

ছবি

বাংলাদেশের শহর পরিকল্পনার চ্যালেঞ্জ ও করণীয়

ছবি

‘আজ ফির তুমপে পেয়ার আয়া হ্যায়’

স্বপ্নের দক্ষিণ কোরিয়া; বাংলাদেশে আন্দোলন, ভিয়েতনামের সাফল্য

ডাকসু নির্বাচন ও জাতীয় রাজনীতি

ঢাকা শহরের উষ্ণতা: সবুজ হারানোর মূল্য

তিন বাহিনী প্রধানদের আশা ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা

গনমাধ্যম জগতও নিষ্ঠুরতায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে!

tab

opinion » post-editorial

মায়ের সম্পত্তিতে কার অংশ কতটুকু?

সিরাজ প্রামাণিক

মঙ্গলবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২১

আমাদের সমাজে প্রচলিত একটি ভুল ধারণা রয়েছে যে, মায়ের সম্পত্তিতে মেয়েরা বেশি পাবে। অর্থাৎ মায়ের মৃত্যুর পর উত্তরাধিকার হিসাবে ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা বেশি পরিমাণ সম্পত্তির অংশীদার হবে। প্রকৃত আইনটি হচ্ছে, মুসলিম উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী মৃত ব্যক্তি পুরুষ অথবা নারী যিনিই হোন না কেন, তার সম্পত্তিতে ছেলে ও মেয়ে একইভাবে সম্পত্তির মালিক হয়ে থাকেন। মৃত ব্যক্তির যদি সন্তান থাকে তবে স্বামী পাবে এক চতুর্থাংশ আর মৃত ব্যক্তির সন্তান সন্ততি বা পুত্রের সন্তান সন্ততি বা তার নিম্নে কেউ না থাকে, তবে স্বামী পবে ১/২ অংশ।

এই সম্পত্তি স্বামীকে দেয়ার পর অবশিষ্ট সম্পত্তি ছেলে ও মেয়ের মধ্যে ২:১ হারে বাটোয়ারা হবে। অর্থাৎ ছেলেরা পাবে ডাবল আর মেয়েরা ছেলের অর্ধেক পরিমাণ পাবে। যদি মেয়ে না থাকে তবে বাকি সম্পূর্ণ অংশ ছেলে পাবে। আরও স্পষ্ট করে বলি, একজন মেয়ে ৩ নিয়মে মৃত ব্যক্তির সম্পদ পেয়ে থাকে।

১। যদি একজন মেয়ে হয় তবে দুইভাগের একভাগ (১/২) অংশ পাবে অর্থাৎ বাকি সম্পত্তির অর্ধেক মেয়ে পাবে। ২। যদি একাধিক মেয়ে হয় তবে সকলে তিন ভাগের দুই ভাগ (২/৩) আংশ পাবে। ৩। যদি মৃত ব্যক্তির ছেলেমেয়ে উভয়েই থাকে তবে ছেলে যে পরিমাণ পাবে মেয়ে তার অর্ধেক পাবে। কাজেই ‘মায়ের সম্পত্তি মেয়েরা বেশি পাবে’ এই ধারণাটি ভুল।

হিন্দু উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী কোন পুরুষ মারা গেলে তার সম্পত্তির ওপর প্রথমে পুত্র, পৌত্র, প্রপৌত্র এবং বিধবার অগ্রাধিকার। এদের অনুপস্থিতিতে পর্যায়ক্রমে কন্যা, দৌহিত্র, পিতা, মাতা, ভ্রাতা, ভ্রাতুষ্পুত্ররা সম্পত্তির উত্তরাধিকার হন। কিন্তু কোন হিন্দু মহিলা মারা গেলে তার সম্পত্তি বণ্টনের দুটি নিয়ম রয়েছে।

১) কোন মহিলা যদি উত্তরাধিকার সূত্রে কোন সম্পত্তির মালিক হন তাহলে তার মৃত্যুর পর সেই সম্পত্তি উত্তরাধিকার সূত্রে যার নিকট হতে পেয়েছিলেন তার নিকটাত্মীয়দের নিকট ফিরে যাবে।

২) উত্তরাধিকার ব্যতীত অন্য কোনভাবে যদি কোন সম্পত্তির মালিক হন তাহলে সেই সম্পত্তি মালিকানার ধরন অনুযায়ী তার উত্তরাধিকারদের মধ্য বণ্টিত হবে।

১৯৩৭ সালের হিন্দু আইন অনুযায়ী মেয়েরা কোন সম্পত্তির উত্তরাধিকারী নয়। তবে বিধবা হওয়ার পর সন্তান নাবালক থাকা অবস্থায় শুধু বসতি বাড়ির অধিকারী হয়। দীর্ঘ ৮৩ বছরেও হিন্দু আইনে আর কোন পরিবর্তন হয়নি। ২০২০ সালের ১ আগস্ট বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে রায় ঘোষণা করেছে যে, হিন্দু বিধবারা স্বামীর সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হবে, তবে প্রাপ্ত সম্পত্তি কোন প্রকার বিক্রি, হস্তান্তরযোগ্য নয়। শুধু ভোগদখলকৃত বলে গণ্য হবে।

[লেখক : আইনজীবী, সুপ্রিম কোর্ট]

back to top