alt

উপ-সম্পাদকীয়

বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে ঢাকা

আর কে চৌধুরী

: মঙ্গলবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২

ঢাকা মহানগরী ক্রমেই বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। বৈশ্বিক বিভিন্ন জরিপেও তার প্রমাণ মেলে। সেসব জরিপে ঢাকার অবস্থান সর্বনিম্নে গিয়ে ঠেকেছে। এ বসবাস অযোগ্যতার নানা কারণের মধ্যে দূষণ, জলাবদ্ধতা ও যানজট অন্যতম। রাজধানীর পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা রীতিমতো অচল হয়ে পড়েছে। ফলে নিম্নাঞ্চলগুলো সামান্য বৃষ্টিতেই পানিতে তলিয়ে যায়। এখনো ঢাকার চারপাশের নদীগুলো ভরে যায়নি। পানি দেরিতে হলেও নামতে পারছে। ভরা বর্ষায় নদীগুলো যখন কানায় কানায় পূর্ণ থাকবে কিংবা উপচে পানি ঢুকবে তখন এই মহানগরীর অবস্থা কী হবে- এমন ভাবনা অনেকেরই ঘুম কেড়ে নিয়েছে।

ঢাকার পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার এ দুরবস্থা আজ থেকে নয়। দুর্নীতির আখড়া হিসেবে খ্যাত ঢাকা ওয়াসার কাছে নাগরিক দুর্ভোগ কোনো মূল্য পায় না। রাজধানীর খাল উদ্ধারের নামে তারা অতীতে খাল ভরাটে কৃতিত্ব দেখিয়েছে। বর্ষায় রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করে বরাবরই নাগরিক দুর্ভোগ বাড়িয়েছে। তাদের কার্যক্রমে নজরদারি বাড়িয়ে দ্রুত এই জলাবদ্ধতা নিরসনের উদ্যোগ নিতে হবে।

বিশ্বে বসবাস অযোগ্য শহরের তালিকায় ঢাকার অবস্থান নগরবাসীর জন্য পীড়াদায়ক বৈকি। কিন্তু বাস্তবতাকে তো আর অস্বীকার করা যায় না। ঢাকাকে বলা হয় বস্তির শহর, কংক্রিটের নগর, যানজট, জনজট স্বাভাবিক তার জীবনজুড়ে, কোলাহলে পূর্ণ তথা শব্দদূষণের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে বায়ুদূষণ পরিবেশদূষণ, বর্জ্যদূষণ মিলিয়ে এক নারকীয় অবস্থা বৈকি। বসবাসের অযোগ্য হিসেবে বিশ্বের মধ্যে প্রথম সারির তালিকায় থাকা ঢাকা নাগরিক সুযোগ সুবিধাগুলোর বিধান না রেখেই অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে; তার নগরায়ন হচ্ছে জঞ্জালপূর্ণতায়।

তিলোত্তমা নগরীর স্বপ্ন তবু এরই মাঝে দেখানো হয়, শেখানো হয়; কিন্তু আদতে দুঃস্বপ্নের ভারে ডাস্টবিনের গন্ধে ভরপুর থাকে নগরী। ঢাকা এখন শিল্প-বাণিজ্য, প্রশাসনিক ও শিক্ষার শহর হিসেবেও খ্যাত। কিন্তু নগরীর পুরনো অংশ তার ঐহিহ্য ধরে রাখতে পারেনি। ঘিঞ্জি অবস্থা আর অধিক জনসংখ্যার চাপে পুরান ঢাকা আধুনিকতার স্পর্শে রঞ্জিত হয়ে উঠতে পারছে না। প্রায় এলাকাজুড়ে ছোট ছোট শিল্প-কারখানা গড়ে ওঠায় একটা দূষিত পরিবেশ বিরাজ করছে। রাসায়নিক দ্রব্যের কারখানা থেকে বিষাক্ত গ্যাস যেমন ছড়িয়ে পড়ে বাতাসে, তেমনি অগ্নিকান্ডের ঘটনাও কম নয়। এসব কলকারখানার শব্দদূষণ সহ্যাতীত হলেও অধিবাসীরা তা মেনে নিয়েছে বলা যায়।

স্বাধীনতাপূর্ব ঢাকা শহরে বসবাস করত কয়েক লাখ লোক। তাদের চাহিদানুপাতে পানি, বিদ্যুতের সরবরাহ করা সম্ভব হতো না। একুশ শতকে এসে লোকসংখ্যা দুই কোটি ছাড়িয়ে গেছে। পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা দূরে থাক, স্বাভাবিক চাহিদাটুকু মেটানোও সম্ভব হয় না, এই বিপুল জনসংখ্যার জন্য। তাই দেখা যায় আবাসিক এলাকাগুলো বাণিজ্যিক অঞ্চলে পরিণত হতে। রাস্তাঘাটে মানুষ আর মানুষ। তার সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে হরেক কিসিমের যানবাহন। দৃষ্টিসীমা যতদূর যায়, দেখা যায়। সবখানেই হাট-বাজার এমনকি ফুটপাত ও প্রধান সড়কজুড়ে দোকানপাট আর প্রায় এলাকায় বিপণিবিতানে সয়লাব। আবাসিক ভবনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে কারখানা পর্যন্ত চলছে। পোশাকশিল্প, খুচরা যন্ত্রাংশ নির্মাণ কারখানার সংখ্যা বাড়ছে প্রতিদিন। বাসাবাড়িতে বিষাক্ত রাসায়নিক গুদাম, চামড়ার কারখানা, বর্জ্যরে ডিপো, গুদামঘর। যেখানে সেখানে নির্মিত হচ্ছে বহুতল ভবন, যেখানে নেই গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা।

জনসংখ্যার ভারে ন্যুব্জ রাজধানী ঢাকার সংকট নানাদিকে পূর্ণ, সড়ক দখল করে ভবন নির্মাণ হয় যে শহরে, ফুটপাতগুলো পথচারীদের চলাচলের অযোগ্য, খানাখন্দপূর্ণ সড়ক আর ধুলোবালির সম্প্রসারণ স্বাভাবিক বিষয়। ঢাকাকে ঢেলে সাজানোর মতো অবস্থা বুঝি আজ সুদূরপরাহত। বাসযোগ্য যদি না হয় রাজধানী তবে তো বিপদ বাড়ে। রাজধানীকে রাজধানীর মর্যাদা দিতে হলে সর্বাগ্রে প্রয়োজন সব ধরনের শিল্পকারখানা পর্যায়ক্রমে সরিয়ে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে নেয়া। বিশেষ করে চামড়া ও চামড়া প্রক্রিয়াজাত শিল্প, গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিসহ বিভিন্ন ধরনের শিল্পকারখানা নির্দিষ্ট ও পরিকল্পিত বা অর্থনৈতিক অঞ্চলে স্থানান্তর করা প্রয়োজন। এছাড়া রাজধানী ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের খালবিল ও নিম্নভূমি জলাধার সংরক্ষণের লক্ষ্যে জরুরীভিত্তিতে পরিকল্পিত ও সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা একান্ত আবশ্যক। এসব স্থানান্তর হলে শহরে জনসংখ্যার চাপ যেমন কমবে, তেমনি একে কেন্দ্র করে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা স্থাপনাসমূহও দূরীভূত হবে। এতে বাসযোগ্য নগরী গড়ে তোলার পথে অন্যতম পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে। জনগণের জন্য বসবাসোপযোগী হোক ঢাকা- এমন প্রত্যাশা চিরকালের।

শুধু ঢাকা নয়, দেশের অন্যান্য শহরকেও পরিকল্পনামাফিক গড়ে তুলতে হবে। সুষম উন্নয়ন করতে হবে গ্রামেও। শহরের ওপর জনসংখ্যার চাপ কমাতে হলে এর কোনো বিকল্প নেই।

[লেখক : সাবেক চেয়ারম্যান, রাজউক]

জামাই মেলা : উৎসব, ঐতিহ্য ও কৃষ্টির রঙিন চিত্রপট

হারিয়ে যাওয়া ক্লাস, কঠোর মূল্যায়ন আর প্রশ্নের জটিলতায় নুয়ে পড়া এক প্রজন্ম

বৈষম্য দূর করে নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলুন

চিকিৎসা যেন বাণিজ্যের হাতিয়ারে পরিণত না হয়

পথশিশু ও বাংলাদেশে সামাজিক চুক্তির ব্যর্থতা

মেগা প্রকল্প : প্রশ্ন হওয়া উচিত স্বচ্ছতা নিয়ে

আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া জরুরি

স্মার্ট দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা : উপগ্রহ চিত্র ও ওয়েবসাইটের অপরিহার্যতা

ক্ষমতা ও জনপ্রশাসন : আমলাতন্ত্রের ছায়াতলে আমজনতা

জনসংখ্যা : সম্পদ না সংকট?

ব্রিকসে নতুন ভূ-রাজনৈতিক ব্যবস্থার উত্থান

রম্যগদ্য : ‘ল্যাংড়া-লুলা, আতুড়-পাতুড়’

আষাঢ়ী পূর্ণিমা : আত্মশুদ্ধির সাধনায় বুদ্ধের অনন্ত আলো

বদলে যাওয়া মাটিতে সাহসী বীজ : জলবায়ুর বিপরীতে বাংলাদেশের কৃষির অভিযোজনগাথা

ছবি

জুলাই অভ্যুত্থান-গাথা : ‘শিকলে নাহি দিব ধরা’

প্রাচীন যৌধেয় জাতি ও তাদের সাম্যবাদী শাসন

গণঅভ্যুত্থান-উত্তর ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের স্বপ্ন

টেকসই উন্নয়নের স্বপ্নপূরণে উপগ্রহ চিত্রই চাবিকাঠি

রাবার শিল্প : সংকট, করণীয় ও উত্তরণের দিশা

রম্যগদ্য : দুধ, দই, কলা...

ছবি

কোপার্নিকাস : আলো হয়ে জন্ম নেওয়া বৈপ্লবিক মতবাদের প্রবর্তক

জলবায়ু সংকটে মানবসভ্যতা

টেকসই অর্থনীতির জন্য চাই টেকসই ব্যাংকিং

ডিজিটাল দাসত্ব : মনোযোগ অর্থনীতি ও জ্ঞান পুঁজিবাদে তরুণ প্রজন্মের মননশীলতার অবক্ষয়

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার : আস্থা ভঙ্গ ও জবাবদিহিতার সংকট

আসামি এখন নির্বাচন কমিশন

কোথায় হারাল একান্নবর্তী পরিবার?

এই শান্তি কি মহাঝড়ের পূর্বলক্ষণ?

মেগাসিটি : দারিদ্র্য যখন ‘অবাঞ্ছিত বর্জ্য’

ফলের রাজ্য পার্বত্য চট্টগ্রাম

ছবি

তৃতীয় শক্তির জন্য জায়গা খালি : বামপন্থীরা কি ঘুরে দাঁড়াতে পারে না

জমি আপনার, দখল অন্যের?

সিধু-কানু : ধ্বংসস্তূপের নিচেও জেগে আছে সাহস

ছবি

বাংলার অনন্য লোকসংস্কৃতি ও গণতান্ত্রিক চেতনা

চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী সাম্পান

তিন দিক থেকে স্বাস্থ্যঝুঁকি : করোনা, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া

tab

উপ-সম্পাদকীয়

বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে ঢাকা

আর কে চৌধুরী

মঙ্গলবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২

ঢাকা মহানগরী ক্রমেই বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। বৈশ্বিক বিভিন্ন জরিপেও তার প্রমাণ মেলে। সেসব জরিপে ঢাকার অবস্থান সর্বনিম্নে গিয়ে ঠেকেছে। এ বসবাস অযোগ্যতার নানা কারণের মধ্যে দূষণ, জলাবদ্ধতা ও যানজট অন্যতম। রাজধানীর পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা রীতিমতো অচল হয়ে পড়েছে। ফলে নিম্নাঞ্চলগুলো সামান্য বৃষ্টিতেই পানিতে তলিয়ে যায়। এখনো ঢাকার চারপাশের নদীগুলো ভরে যায়নি। পানি দেরিতে হলেও নামতে পারছে। ভরা বর্ষায় নদীগুলো যখন কানায় কানায় পূর্ণ থাকবে কিংবা উপচে পানি ঢুকবে তখন এই মহানগরীর অবস্থা কী হবে- এমন ভাবনা অনেকেরই ঘুম কেড়ে নিয়েছে।

ঢাকার পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার এ দুরবস্থা আজ থেকে নয়। দুর্নীতির আখড়া হিসেবে খ্যাত ঢাকা ওয়াসার কাছে নাগরিক দুর্ভোগ কোনো মূল্য পায় না। রাজধানীর খাল উদ্ধারের নামে তারা অতীতে খাল ভরাটে কৃতিত্ব দেখিয়েছে। বর্ষায় রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করে বরাবরই নাগরিক দুর্ভোগ বাড়িয়েছে। তাদের কার্যক্রমে নজরদারি বাড়িয়ে দ্রুত এই জলাবদ্ধতা নিরসনের উদ্যোগ নিতে হবে।

বিশ্বে বসবাস অযোগ্য শহরের তালিকায় ঢাকার অবস্থান নগরবাসীর জন্য পীড়াদায়ক বৈকি। কিন্তু বাস্তবতাকে তো আর অস্বীকার করা যায় না। ঢাকাকে বলা হয় বস্তির শহর, কংক্রিটের নগর, যানজট, জনজট স্বাভাবিক তার জীবনজুড়ে, কোলাহলে পূর্ণ তথা শব্দদূষণের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে বায়ুদূষণ পরিবেশদূষণ, বর্জ্যদূষণ মিলিয়ে এক নারকীয় অবস্থা বৈকি। বসবাসের অযোগ্য হিসেবে বিশ্বের মধ্যে প্রথম সারির তালিকায় থাকা ঢাকা নাগরিক সুযোগ সুবিধাগুলোর বিধান না রেখেই অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে; তার নগরায়ন হচ্ছে জঞ্জালপূর্ণতায়।

তিলোত্তমা নগরীর স্বপ্ন তবু এরই মাঝে দেখানো হয়, শেখানো হয়; কিন্তু আদতে দুঃস্বপ্নের ভারে ডাস্টবিনের গন্ধে ভরপুর থাকে নগরী। ঢাকা এখন শিল্প-বাণিজ্য, প্রশাসনিক ও শিক্ষার শহর হিসেবেও খ্যাত। কিন্তু নগরীর পুরনো অংশ তার ঐহিহ্য ধরে রাখতে পারেনি। ঘিঞ্জি অবস্থা আর অধিক জনসংখ্যার চাপে পুরান ঢাকা আধুনিকতার স্পর্শে রঞ্জিত হয়ে উঠতে পারছে না। প্রায় এলাকাজুড়ে ছোট ছোট শিল্প-কারখানা গড়ে ওঠায় একটা দূষিত পরিবেশ বিরাজ করছে। রাসায়নিক দ্রব্যের কারখানা থেকে বিষাক্ত গ্যাস যেমন ছড়িয়ে পড়ে বাতাসে, তেমনি অগ্নিকান্ডের ঘটনাও কম নয়। এসব কলকারখানার শব্দদূষণ সহ্যাতীত হলেও অধিবাসীরা তা মেনে নিয়েছে বলা যায়।

স্বাধীনতাপূর্ব ঢাকা শহরে বসবাস করত কয়েক লাখ লোক। তাদের চাহিদানুপাতে পানি, বিদ্যুতের সরবরাহ করা সম্ভব হতো না। একুশ শতকে এসে লোকসংখ্যা দুই কোটি ছাড়িয়ে গেছে। পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা দূরে থাক, স্বাভাবিক চাহিদাটুকু মেটানোও সম্ভব হয় না, এই বিপুল জনসংখ্যার জন্য। তাই দেখা যায় আবাসিক এলাকাগুলো বাণিজ্যিক অঞ্চলে পরিণত হতে। রাস্তাঘাটে মানুষ আর মানুষ। তার সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে হরেক কিসিমের যানবাহন। দৃষ্টিসীমা যতদূর যায়, দেখা যায়। সবখানেই হাট-বাজার এমনকি ফুটপাত ও প্রধান সড়কজুড়ে দোকানপাট আর প্রায় এলাকায় বিপণিবিতানে সয়লাব। আবাসিক ভবনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে কারখানা পর্যন্ত চলছে। পোশাকশিল্প, খুচরা যন্ত্রাংশ নির্মাণ কারখানার সংখ্যা বাড়ছে প্রতিদিন। বাসাবাড়িতে বিষাক্ত রাসায়নিক গুদাম, চামড়ার কারখানা, বর্জ্যরে ডিপো, গুদামঘর। যেখানে সেখানে নির্মিত হচ্ছে বহুতল ভবন, যেখানে নেই গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা।

জনসংখ্যার ভারে ন্যুব্জ রাজধানী ঢাকার সংকট নানাদিকে পূর্ণ, সড়ক দখল করে ভবন নির্মাণ হয় যে শহরে, ফুটপাতগুলো পথচারীদের চলাচলের অযোগ্য, খানাখন্দপূর্ণ সড়ক আর ধুলোবালির সম্প্রসারণ স্বাভাবিক বিষয়। ঢাকাকে ঢেলে সাজানোর মতো অবস্থা বুঝি আজ সুদূরপরাহত। বাসযোগ্য যদি না হয় রাজধানী তবে তো বিপদ বাড়ে। রাজধানীকে রাজধানীর মর্যাদা দিতে হলে সর্বাগ্রে প্রয়োজন সব ধরনের শিল্পকারখানা পর্যায়ক্রমে সরিয়ে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে নেয়া। বিশেষ করে চামড়া ও চামড়া প্রক্রিয়াজাত শিল্প, গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিসহ বিভিন্ন ধরনের শিল্পকারখানা নির্দিষ্ট ও পরিকল্পিত বা অর্থনৈতিক অঞ্চলে স্থানান্তর করা প্রয়োজন। এছাড়া রাজধানী ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের খালবিল ও নিম্নভূমি জলাধার সংরক্ষণের লক্ষ্যে জরুরীভিত্তিতে পরিকল্পিত ও সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা একান্ত আবশ্যক। এসব স্থানান্তর হলে শহরে জনসংখ্যার চাপ যেমন কমবে, তেমনি একে কেন্দ্র করে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা স্থাপনাসমূহও দূরীভূত হবে। এতে বাসযোগ্য নগরী গড়ে তোলার পথে অন্যতম পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে। জনগণের জন্য বসবাসোপযোগী হোক ঢাকা- এমন প্রত্যাশা চিরকালের।

শুধু ঢাকা নয়, দেশের অন্যান্য শহরকেও পরিকল্পনামাফিক গড়ে তুলতে হবে। সুষম উন্নয়ন করতে হবে গ্রামেও। শহরের ওপর জনসংখ্যার চাপ কমাতে হলে এর কোনো বিকল্প নেই।

[লেখক : সাবেক চেয়ারম্যান, রাজউক]

back to top