alt

উপ-সম্পাদকীয়

আয়ারল্যান্ডে বইমেলা

সাজেদুল চৌধুরী রুবেল

: শনিবার, ২০ মে ২০২৩

সবার ভেতরে প্রকল্প খেলা করে না। প্রকল্প কারিগরও সবাই হতে জানেনা। মৌলিকতার মূল সূচনা ঘটিয়ে উত্তীর্ণ পুরুষ হয়ে ওঠার সৌভাগ্য কি সবার হয়? হয় না। এর জন্য তকদিরের পাশাপাশি শ্রম ও দক্ষতা দুটোরই প্রয়োজন। অন্ধকার চিরে আলোর কুসুম ছড়িয়ে বেড়ানোর লোক কতজন আছে আমাদের সমাজে! সৃষ্টির রূপকল্পে মহান উদ্যোক্তা হিসেবেই বা আমরা কতজনকে কাছে পাই! নেহাত কম। তাছাড়া উদ্যোক্তার হাত ধরে যে কোনো উদ্যোগকে সামনের দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য পেছন থেকে যারা কাজ করেন তাদের সংখ্যাটা কি খুব বেশি? নিশ্চয়ই না। হাতেগোনা কয়েকজন থাকেন যারা স্বার্থের কথা না ভেবে যে কোনো সামাজিক কাজেকামে নিজেদের বিলিয়ে দেন। যে কোনো উৎসব, আয়োজন বা অনুষ্ঠানকে সাফল্যমন্ডিত করার জন্য ঝাপিয়ে পড়েন। এরা হচ্ছে সমাজের নিবেদিত প্রাণ। এমন একদল নিবেদিত প্রাণের সঙ্গে আমার দেখা হয় সেদিন।

গত ৪ মে ডাবলিনের ডি সি ইউ (ডাবলিন সিটি ইউনিভার্সিটি) তে তৃতীয়বারের মতো বইমেলা শুরু হয়েছে। এটা চলবে আগামী ২৮ মে পর্যন্ত। মেলাকে সাফল্যমন্ডিত করার লক্ষ্যে এক প্রস্তুতি সভার আয়োজন করা হয়। সভাটি ডাবলিনের ওল্ড এয়ারপোর্ট রোডের আলসা স্পোর্টস ক্লাবে অনুষ্ঠিত হয়। গাড়ি থেকে নেমে বিশাল ক্লাব ভবনের সভাকক্ষে কিভাবে যেতে পারি তা জানার জন্য বইমেলার প্রাণপুরুষ ও প্রধান সংগঠক সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমানকে যখন গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যে ফোন দেব ভাবছিলাম ঠিক তখনই ঘাড় ফিরিয়ে দেখি, ‘বাংলাদেশ কমিউনিটি ডাবলিন’ (বিসিডি)- এর হাস্যোজ্জ্বল ও সজ্জ্বন সভাপতি মোহাম্মদ মোস্তফাকে। দেখামাত্রই তিনি তার স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্যানুযায়ী জড়িয়ে ধরে উষ্ণ করমর্দনের মাধ্যমে স্বাগত জানিয়ে সভা কক্ষে নিয়ে গেলেন।

পৌঁছার কিছুক্ষণের মধ্যেই সভা শুরু হলো। উপস্থিত সবাই বইমেলাবিষয়ক অর্থাৎ বইমেলাকে কিভাবে ফলপ্রসূ ও চমকপ্রদ করে তোলা যায় সে ব্যাপারে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, নতুন নতুন ধারণা ও পরামর্শমৃলক অভিমত ব্যক্ত করেন। যে বিষয়টি আমার কাছে সবচেয়ে বেশি ইতিবাচক মনে হয়েছে ও আমাকে খুব আশান্বিত করেছে তা হলো আয়োজক কমিটির কাউকে নেতৃত্বের তালুকদারি নিয়ে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়নি। এমনকি সামনের সারিতে বা মঞ্চে বসে নিজের চেহারা দেখিয়ে নেতৃত্ব জাহিরের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও সে সুযোগ তারা লুফে নেননি। আগত অতিথিদের আদর-আপ্যায়নসহ সভাটিকে কিভাবে অর্থবহ ও সাফল্যমন্ডিত করে তোলা যায় সে দিকটাতেই তাদের নজর ছিল বেশি। এমন একটি ডেডিকেটেড দল যদি কোনো কাজে হাত দেয় তবে সে কাজ কি সফল না হয়ে পারে! সুতরাং বলতেই পারি, এ দলের দরদি মন ও ভালোবাসায়, কর্মস্পৃহা ও হাতের ছোঁয়ায় প্রস্তুতি সভাটি যেমন সফল হয়েছে তেমনি আগামী ২৮ তারিখের বইমেলাটিও যে অনবদ্য হয়ে উঠবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

কোনো কাজে যখন নারীদের অংশগ্রহণ থাকে সে কাজটি তখন আরও বেশি সহজ, সুন্দর, সাবলীল ও সুচারু হয়ে উঠে। ওইদিনের মিটিংয়ে বেশ কিছু সম্মানিত নারী সদস্যের উপস্থিতি ও সক্রিয়তা পরিলক্ষিত হয়। তারাও যে ভালো দিক মন্দ দিক নিয়ে ভাবেন বা সঙ্গতি-অসঙ্গতি নিয়ে কথা বলতে জানেন তারই প্রতিফলন ঘটেছে ওই সভায়। এক শ্রদ্ধেয় ভাবি তো বলেই ফেললেন, ‘ভাইয়া , সমাজের অসঙ্গতি নিয়ে আর চুপ থাকা যাবে না। তাই এসব নিয়ে আরও বেশি বেশি করে লেখা চাই।’

যে সমাজে নারীরা এমন সাহসী, স্পষ্টবাদী ও অগ্রগামী সে সমাজকে ঠেকিয়ে রাখে ওই সাধ্য কার! আর এমন নারীদের অংশগ্রহণমৃলক কোনো কর্মকান্ডকে বিফল করে দেয় সে শক্তিই বা কার! সুতারাং আমাদের এ সম্মানিত নারীদের সমর্থন ও সহযোগিতা এবং আয়োজক কমিটির একদল নিবেদিত প্রাণের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আগামী ২৮ তারিখের বইমেলাটি সফলতার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছাবে বলে আমার বিশ্বাস।

তবে হ্যাঁ, আমজনতা হিসেবে আমাদেরও বেশ দায়িত্ববোধ ও দায়বদ্ধতা রয়েছে। আমরা যদি স্বেচ্ছায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে বইমেলায় অংশগ্রহণ না করি তবে তা কখনো সফলতার মুখ দেখবে না। কিন্ত সত্যিকারার্থে আমাদের নিজেদের স্বার্থেই বইমেলায় যোগদান করে একে পরিপূর্ণ সার্থক করে তুলতে হবে। আমাদের সন্তান-সন্ততি তথা নতুন প্রজন্মকে বইমেলার প্রয়োজনীয়তা, ইতিহাস ও কৃষ্টি এবং বইমেলা, ভাষা আন্দোলন ও ভাষাদিবস যে একই সুতোয় গাঁথা তা তুলে ধরতে হলে মোট কথা শেকড়ের প্রতি মোহময় করে তুলতে হলে বইমেলার মতো এমন উৎসবে সপরিবারে উপস্থিত হওয়া একান্তই বাঞ্চনীয়।

যখন থেকে আয়ারল্যান্ডে বইমেলার যাত্রা শুরু তখন থেকেই আমি এর সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং প্রতিবারই এর ওপর ভিত্তি করে একটি করে নিবন্ধ লিখি। তারই ধারাবাহিকতায় গত কোনো একটি নিবন্ধে বলেছিলাম, একদিন এ বইমেলা এক মহিরুহে পরিণত হবে। আজ আবারো লিখি, পেছন থেকে সহযোগিতা করে যাওয়া এমেরিটাস প্রফেসর হাসমির উদারতা, বইমেলার প্রথম স্বপ্নদ্রষ্টা সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমানের সাংগঠনিক দক্ষতা, আয়োজক কমিটির বুদ্ধিমত্তা-পরিকল্পনা-একাগ্রতা, কর্মস্পৃহা ও পরিশশীলতা, নারীদের ত্যাগ ও অগ্রগামীতা এবং সাধারণ মানুষের দরদি ভালোবাসা অর্থাৎ এগুলো রসায়নের সঠিক সংমিশ্রণ অব্যাহত রাখতে পারলে আমাদের এ বইমেলাটি শুধু আয়ারল্যান্ড নয় গোটা ইউরোপের রোল মডেলে যে পরিণত হবে তাতে কোন সন্দেহের অবকাশ নেই।

[লেখক: উপদেষ্টা, আয়ারল্যান্ড পরিবহন মন্ত্রণালয়]

চিকিৎসা যেন বাণিজ্যের হাতিয়ারে পরিণত না হয়

পথশিশু ও বাংলাদেশে সামাজিক চুক্তির ব্যর্থতা

মেগা প্রকল্প : প্রশ্ন হওয়া উচিত স্বচ্ছতা নিয়ে

আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া জরুরি

স্মার্ট দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা : উপগ্রহ চিত্র ও ওয়েবসাইটের অপরিহার্যতা

ক্ষমতা ও জনপ্রশাসন : আমলাতন্ত্রের ছায়াতলে আমজনতা

জনসংখ্যা : সম্পদ না সংকট?

ব্রিকসে নতুন ভূ-রাজনৈতিক ব্যবস্থার উত্থান

রম্যগদ্য : ‘ল্যাংড়া-লুলা, আতুড়-পাতুড়’

আষাঢ়ী পূর্ণিমা : আত্মশুদ্ধির সাধনায় বুদ্ধের অনন্ত আলো

বদলে যাওয়া মাটিতে সাহসী বীজ : জলবায়ুর বিপরীতে বাংলাদেশের কৃষির অভিযোজনগাথা

ছবি

জুলাই অভ্যুত্থান-গাথা : ‘শিকলে নাহি দিব ধরা’

প্রাচীন যৌধেয় জাতি ও তাদের সাম্যবাদী শাসন

গণঅভ্যুত্থান-উত্তর ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের স্বপ্ন

টেকসই উন্নয়নের স্বপ্নপূরণে উপগ্রহ চিত্রই চাবিকাঠি

রাবার শিল্প : সংকট, করণীয় ও উত্তরণের দিশা

রম্যগদ্য : দুধ, দই, কলা...

ছবি

কোপার্নিকাস : আলো হয়ে জন্ম নেওয়া বৈপ্লবিক মতবাদের প্রবর্তক

জলবায়ু সংকটে মানবসভ্যতা

টেকসই অর্থনীতির জন্য চাই টেকসই ব্যাংকিং

ডিজিটাল দাসত্ব : মনোযোগ অর্থনীতি ও জ্ঞান পুঁজিবাদে তরুণ প্রজন্মের মননশীলতার অবক্ষয়

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার : আস্থা ভঙ্গ ও জবাবদিহিতার সংকট

আসামি এখন নির্বাচন কমিশন

কোথায় হারাল একান্নবর্তী পরিবার?

এই শান্তি কি মহাঝড়ের পূর্বলক্ষণ?

মেগাসিটি : দারিদ্র্য যখন ‘অবাঞ্ছিত বর্জ্য’

ফলের রাজ্য পার্বত্য চট্টগ্রাম

ছবি

তৃতীয় শক্তির জন্য জায়গা খালি : বামপন্থীরা কি ঘুরে দাঁড়াতে পারে না

জমি আপনার, দখল অন্যের?

সিধু-কানু : ধ্বংসস্তূপের নিচেও জেগে আছে সাহস

ছবি

বাংলার অনন্য লোকসংস্কৃতি ও গণতান্ত্রিক চেতনা

চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী সাম্পান

তিন দিক থেকে স্বাস্থ্যঝুঁকি : করোনা, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া

দেশের অর্থ পাচারের বাস্তবতা

খাদ্য নিরাপত্তার নতুন দিগন্ত

আবারও কি রোহিঙ্গাদের ত্যাগ করবে বিশ্ব?

tab

উপ-সম্পাদকীয়

আয়ারল্যান্ডে বইমেলা

সাজেদুল চৌধুরী রুবেল

শনিবার, ২০ মে ২০২৩

সবার ভেতরে প্রকল্প খেলা করে না। প্রকল্প কারিগরও সবাই হতে জানেনা। মৌলিকতার মূল সূচনা ঘটিয়ে উত্তীর্ণ পুরুষ হয়ে ওঠার সৌভাগ্য কি সবার হয়? হয় না। এর জন্য তকদিরের পাশাপাশি শ্রম ও দক্ষতা দুটোরই প্রয়োজন। অন্ধকার চিরে আলোর কুসুম ছড়িয়ে বেড়ানোর লোক কতজন আছে আমাদের সমাজে! সৃষ্টির রূপকল্পে মহান উদ্যোক্তা হিসেবেই বা আমরা কতজনকে কাছে পাই! নেহাত কম। তাছাড়া উদ্যোক্তার হাত ধরে যে কোনো উদ্যোগকে সামনের দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য পেছন থেকে যারা কাজ করেন তাদের সংখ্যাটা কি খুব বেশি? নিশ্চয়ই না। হাতেগোনা কয়েকজন থাকেন যারা স্বার্থের কথা না ভেবে যে কোনো সামাজিক কাজেকামে নিজেদের বিলিয়ে দেন। যে কোনো উৎসব, আয়োজন বা অনুষ্ঠানকে সাফল্যমন্ডিত করার জন্য ঝাপিয়ে পড়েন। এরা হচ্ছে সমাজের নিবেদিত প্রাণ। এমন একদল নিবেদিত প্রাণের সঙ্গে আমার দেখা হয় সেদিন।

গত ৪ মে ডাবলিনের ডি সি ইউ (ডাবলিন সিটি ইউনিভার্সিটি) তে তৃতীয়বারের মতো বইমেলা শুরু হয়েছে। এটা চলবে আগামী ২৮ মে পর্যন্ত। মেলাকে সাফল্যমন্ডিত করার লক্ষ্যে এক প্রস্তুতি সভার আয়োজন করা হয়। সভাটি ডাবলিনের ওল্ড এয়ারপোর্ট রোডের আলসা স্পোর্টস ক্লাবে অনুষ্ঠিত হয়। গাড়ি থেকে নেমে বিশাল ক্লাব ভবনের সভাকক্ষে কিভাবে যেতে পারি তা জানার জন্য বইমেলার প্রাণপুরুষ ও প্রধান সংগঠক সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমানকে যখন গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যে ফোন দেব ভাবছিলাম ঠিক তখনই ঘাড় ফিরিয়ে দেখি, ‘বাংলাদেশ কমিউনিটি ডাবলিন’ (বিসিডি)- এর হাস্যোজ্জ্বল ও সজ্জ্বন সভাপতি মোহাম্মদ মোস্তফাকে। দেখামাত্রই তিনি তার স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্যানুযায়ী জড়িয়ে ধরে উষ্ণ করমর্দনের মাধ্যমে স্বাগত জানিয়ে সভা কক্ষে নিয়ে গেলেন।

পৌঁছার কিছুক্ষণের মধ্যেই সভা শুরু হলো। উপস্থিত সবাই বইমেলাবিষয়ক অর্থাৎ বইমেলাকে কিভাবে ফলপ্রসূ ও চমকপ্রদ করে তোলা যায় সে ব্যাপারে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, নতুন নতুন ধারণা ও পরামর্শমৃলক অভিমত ব্যক্ত করেন। যে বিষয়টি আমার কাছে সবচেয়ে বেশি ইতিবাচক মনে হয়েছে ও আমাকে খুব আশান্বিত করেছে তা হলো আয়োজক কমিটির কাউকে নেতৃত্বের তালুকদারি নিয়ে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়নি। এমনকি সামনের সারিতে বা মঞ্চে বসে নিজের চেহারা দেখিয়ে নেতৃত্ব জাহিরের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও সে সুযোগ তারা লুফে নেননি। আগত অতিথিদের আদর-আপ্যায়নসহ সভাটিকে কিভাবে অর্থবহ ও সাফল্যমন্ডিত করে তোলা যায় সে দিকটাতেই তাদের নজর ছিল বেশি। এমন একটি ডেডিকেটেড দল যদি কোনো কাজে হাত দেয় তবে সে কাজ কি সফল না হয়ে পারে! সুতরাং বলতেই পারি, এ দলের দরদি মন ও ভালোবাসায়, কর্মস্পৃহা ও হাতের ছোঁয়ায় প্রস্তুতি সভাটি যেমন সফল হয়েছে তেমনি আগামী ২৮ তারিখের বইমেলাটিও যে অনবদ্য হয়ে উঠবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

কোনো কাজে যখন নারীদের অংশগ্রহণ থাকে সে কাজটি তখন আরও বেশি সহজ, সুন্দর, সাবলীল ও সুচারু হয়ে উঠে। ওইদিনের মিটিংয়ে বেশ কিছু সম্মানিত নারী সদস্যের উপস্থিতি ও সক্রিয়তা পরিলক্ষিত হয়। তারাও যে ভালো দিক মন্দ দিক নিয়ে ভাবেন বা সঙ্গতি-অসঙ্গতি নিয়ে কথা বলতে জানেন তারই প্রতিফলন ঘটেছে ওই সভায়। এক শ্রদ্ধেয় ভাবি তো বলেই ফেললেন, ‘ভাইয়া , সমাজের অসঙ্গতি নিয়ে আর চুপ থাকা যাবে না। তাই এসব নিয়ে আরও বেশি বেশি করে লেখা চাই।’

যে সমাজে নারীরা এমন সাহসী, স্পষ্টবাদী ও অগ্রগামী সে সমাজকে ঠেকিয়ে রাখে ওই সাধ্য কার! আর এমন নারীদের অংশগ্রহণমৃলক কোনো কর্মকান্ডকে বিফল করে দেয় সে শক্তিই বা কার! সুতারাং আমাদের এ সম্মানিত নারীদের সমর্থন ও সহযোগিতা এবং আয়োজক কমিটির একদল নিবেদিত প্রাণের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আগামী ২৮ তারিখের বইমেলাটি সফলতার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছাবে বলে আমার বিশ্বাস।

তবে হ্যাঁ, আমজনতা হিসেবে আমাদেরও বেশ দায়িত্ববোধ ও দায়বদ্ধতা রয়েছে। আমরা যদি স্বেচ্ছায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে বইমেলায় অংশগ্রহণ না করি তবে তা কখনো সফলতার মুখ দেখবে না। কিন্ত সত্যিকারার্থে আমাদের নিজেদের স্বার্থেই বইমেলায় যোগদান করে একে পরিপূর্ণ সার্থক করে তুলতে হবে। আমাদের সন্তান-সন্ততি তথা নতুন প্রজন্মকে বইমেলার প্রয়োজনীয়তা, ইতিহাস ও কৃষ্টি এবং বইমেলা, ভাষা আন্দোলন ও ভাষাদিবস যে একই সুতোয় গাঁথা তা তুলে ধরতে হলে মোট কথা শেকড়ের প্রতি মোহময় করে তুলতে হলে বইমেলার মতো এমন উৎসবে সপরিবারে উপস্থিত হওয়া একান্তই বাঞ্চনীয়।

যখন থেকে আয়ারল্যান্ডে বইমেলার যাত্রা শুরু তখন থেকেই আমি এর সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং প্রতিবারই এর ওপর ভিত্তি করে একটি করে নিবন্ধ লিখি। তারই ধারাবাহিকতায় গত কোনো একটি নিবন্ধে বলেছিলাম, একদিন এ বইমেলা এক মহিরুহে পরিণত হবে। আজ আবারো লিখি, পেছন থেকে সহযোগিতা করে যাওয়া এমেরিটাস প্রফেসর হাসমির উদারতা, বইমেলার প্রথম স্বপ্নদ্রষ্টা সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমানের সাংগঠনিক দক্ষতা, আয়োজক কমিটির বুদ্ধিমত্তা-পরিকল্পনা-একাগ্রতা, কর্মস্পৃহা ও পরিশশীলতা, নারীদের ত্যাগ ও অগ্রগামীতা এবং সাধারণ মানুষের দরদি ভালোবাসা অর্থাৎ এগুলো রসায়নের সঠিক সংমিশ্রণ অব্যাহত রাখতে পারলে আমাদের এ বইমেলাটি শুধু আয়ারল্যান্ড নয় গোটা ইউরোপের রোল মডেলে যে পরিণত হবে তাতে কোন সন্দেহের অবকাশ নেই।

[লেখক: উপদেষ্টা, আয়ারল্যান্ড পরিবহন মন্ত্রণালয়]

back to top