alt

উপ-সম্পাদকীয়

মতামত

গ্রিনহাউস গ্যাস : সতর্কতা জরুরি

নুসরাত জাহান পন্নি

: মঙ্গলবার, ২৩ মে ২০২৩

জলবায়ু পরিবর্তনের কথা শুনলেই সবার আগে মাথায় আসে গ্রিনহাউস গ্যাসের কথা; কিন্তু গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন বন্ধ করলেই কি জলবায়ু পরিবর্তন বন্ধ হয়ে যাবে?

জলবায়ু পরিবর্তন আসলে কী এবং সেটা কিভাবে হয় সেটা আমাদের জানা দরকার। পৃথিবীর চারপাশের স্তরকে বায়ুমন্ডল বলা হয়। এটা সূর্যের ক্ষতিকর বিকিরণ থেকে আমাদের রক্ষা করে। পৃথিবীকে জীবন-যাপন উপযোগী উষ্ণ রাখে। এটা ঘটার কারণ হলো কার্বন-ডাই-অক্সাইড এবং মিথেনের মতো কিছু গ্যাস সূর্যের তাপকে ধরে রাখে। আর এ গ্যাসগুলোকেই মূলত গ্রিনহাউস গ্যাস বলা হয়। ঠিক যেমনিভাবে প্রচন্ড শীতের মৌসুমে একটি গ্রিনহাউসের ভিতরে ফসল এবং গাছপালকে উষ্ণ রেখে উৎপাদন করা হয়।

কিন্তু এই গ্রিনহাউস গ্যাসের প্রভাবে খাদ্য এবং খাবার পানির আরো অনেক বেশি দুষ্প্রাপ্যতা তৈরি হচ্ছে। জলাভূমি হচ্ছে আরো আর্দ্র এবং শুষ্ক ভূমি হয়ে যাচ্ছে আরো শুষ্ক। এই গ্রিনহাউস গ্যাসের প্রভাবেই দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে জলবায়ু উদ্বাস্তুদের সংখ্যা, বৃদ্ধি পাচ্ছে নানারকম স্বাস্থ্যঝুঁকি, ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে চাকরি এবং জীবনযাপনের ক্ষেত্রেও। এই গ্রিনহাউস গ্যাসই মূলত ৮০ শতাংশ বৈশ্বিক উষ্ণায়নের জন্য দায়ী, যেটা গোটা বায়ুমন্ডলের ০.০৩ শতাংশ। অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে খুব ছোট কিছু পরিবর্তনও অনেক বড় ফলাফল বয়ে নিয়ে আসছে।

কিন্তু উষ্ণায়ন কি একেবারেই নতুন ধারণা? পৃথিবীর শুরু থেকেই উষ্ণায়নের ধারণাটা চলে আসছে। এক সময় আমাদের পৃথিবীর বিরাট একটি অঞ্চল বরফে ঢাকা ছিল; কিন্তু পার্থক্য হলো মাত্রায়। শিল্প বিপ্লবের সময় থেকেই পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধি পেয়েছে এক ডিগ্রি সেলসিয়াস, যার দুই-তৃতীয়াংশ ১৯৭৫ সালের পর থেকে। অথচ অতীতে পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেতে সময় লাগতো পাঁচ হাজার বছর। অর্থাৎ বর্তমানে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বৃদ্ধি পাচ্ছে ২০ গুণ বেশি। ফলে অতীতে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে যেসব প্রাণী এবং গাছপালা তাদের মানিয়ে নিতে পারত, তারা সেটা আর করতে পারছে না। যে কারণে তাদের ১০০০ গুণ দ্রুত বিলুপ্তির পথে নিয়ে যাচ্ছে। বৃদ্ধি পাচ্ছে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা এবং তীব্র প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রবণতা। গ্রিনহাউস গ্যাসের একটি বড় নিয়ামক।

কিন্তু প্রশ্ন একটাই- গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন বন্ধ করলেই জলবায়ু আবার আগের মতো হয়ে যাবে? উত্তরটা হলো, না। গ্রিনহাউস গ্যাসের অতিরিক্ত নির্গমন আমাদের পৃথিবীকে শুক্র গ্রহের মতোই উষ্ণ এবং জীবনশূন্য করে দেবে। আবার গ্রিনহাউস গ্যাস ছাড়া আমাদের গ্রহ হয়ে পড়বে অতিরিক্ত ঠান্ডা এবং জনমানবহীন। তাই আমাদের এই সুন্দর পৃথিবীটাকে টিকিয়ে রাখতে হলে আমাদের প্রয়োজন পরিমাণ মতো গ্রিনহাউসের নির্গমন। এর অতিরিক্ত নির্গমন যেমন আমাদের বিপদের কারণ, তেমনি এর অতিরিক্ত কম নির্গমনও আমাদের জন্য কোন সুফল বয়ে আনবে না।

তাই আমাদের উচিত প্রত্যেকের নিজ নিজ পর্যায় থেকে এখনই সতর্ক হওয়া। কেননা এভাবে চলতে দিলে আমাদের অস্তিত্বই একদিন বিলীন হয়ে যাবে।

[লেখক : শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়]

বিয়ের কিছু লোকাচার ও অপব্যয় প্রসঙ্গে

ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্পকে রক্ষা করুন

তরুণদের দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি সম্ভব

শিশুমৃত্যু রোধে করণীয় কী

সিগমুন্ড ফ্রয়েড ও মনঃসমীক্ষণ

ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ও বাস্তবতা

স্বামী কিংবা স্ত্রীর পরবর্তী বিয়ের আইনি প্রতিকার ও বাস্তবতা

তথ্য-উপাত্তের গরমিলে বাজারে অস্থিরতা, অর্থনীতিতে বিভ্রান্তি

দেশে অফশোর ব্যাংকিংয়ের গুরুত্ব

ইরানে কট্টরপন্থার সাময়িক পরাজয়

পশ্চিমবঙ্গে বামপন্থার ভবিষ্যৎ কী

ক্ষমতার সাতকাহন

জলবায়ু সংকট : আমাদের উপলব্ধি

নারী-পুরুষ চুড়ি পরি, দেশের অন্যায় দূর করি!

ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার সবার

ছবি

সাধারণ মানুষেরা বড় অসাধারণ

চতুর্থ শিল্প বিপ্লব ও কারিগরি শিক্ষা

মাদক রুখতে গড়ে তুলতে হবে সামাজিক প্রতিরোধ

পারিবারিক অপরাধপ্রবণতা ও কয়েকটি প্রশ্ন

ডারউইনকে খুঁজে পেয়েছি

চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ফসল উৎপাদন করা জরুরি

পিএসসি প্রশ্নফাঁসের দায় এড়াবে কীভাবে

এত উন্নয়নের পরও বাসযোগ্যতায় কেন পিছিয়েই থাকছে ঢাকা

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য কি কেউ নেই?

জলবায়ু রক্ষায় কাজের কাজ কি কিছু হচ্ছে

অধরার হাতে সমর্পিত ক্ষমতা

প্রসঙ্গ : কোটাবিরোধী আন্দোলন

রম্যগদ্য : যে করিবে চালাকি, বুঝিবে তার জ্বালা কী

একটি মিথ্যা ধর্ষণ মামলার পরিণতি

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা কেন শ্রেণীকক্ষের বাইরে

মেধা নিয়ে কম মেধাবীর ভাবনা

প্রজাতন্ত্রের সেবক কেন ফ্রাঙ্কেনস্টাইন বনে যান

ছবি

বাইডেন কি দলে বোঝা হয়ে যাচ্ছেন?

ছবি

দুই যুগের পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

সাপ উপকারী প্রাণীও বটে!

ছবি

বাস্তববাদী রাজনীতিক জ্যোতি বসু

tab

উপ-সম্পাদকীয়

মতামত

গ্রিনহাউস গ্যাস : সতর্কতা জরুরি

নুসরাত জাহান পন্নি

মঙ্গলবার, ২৩ মে ২০২৩

জলবায়ু পরিবর্তনের কথা শুনলেই সবার আগে মাথায় আসে গ্রিনহাউস গ্যাসের কথা; কিন্তু গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন বন্ধ করলেই কি জলবায়ু পরিবর্তন বন্ধ হয়ে যাবে?

জলবায়ু পরিবর্তন আসলে কী এবং সেটা কিভাবে হয় সেটা আমাদের জানা দরকার। পৃথিবীর চারপাশের স্তরকে বায়ুমন্ডল বলা হয়। এটা সূর্যের ক্ষতিকর বিকিরণ থেকে আমাদের রক্ষা করে। পৃথিবীকে জীবন-যাপন উপযোগী উষ্ণ রাখে। এটা ঘটার কারণ হলো কার্বন-ডাই-অক্সাইড এবং মিথেনের মতো কিছু গ্যাস সূর্যের তাপকে ধরে রাখে। আর এ গ্যাসগুলোকেই মূলত গ্রিনহাউস গ্যাস বলা হয়। ঠিক যেমনিভাবে প্রচন্ড শীতের মৌসুমে একটি গ্রিনহাউসের ভিতরে ফসল এবং গাছপালকে উষ্ণ রেখে উৎপাদন করা হয়।

কিন্তু এই গ্রিনহাউস গ্যাসের প্রভাবে খাদ্য এবং খাবার পানির আরো অনেক বেশি দুষ্প্রাপ্যতা তৈরি হচ্ছে। জলাভূমি হচ্ছে আরো আর্দ্র এবং শুষ্ক ভূমি হয়ে যাচ্ছে আরো শুষ্ক। এই গ্রিনহাউস গ্যাসের প্রভাবেই দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে জলবায়ু উদ্বাস্তুদের সংখ্যা, বৃদ্ধি পাচ্ছে নানারকম স্বাস্থ্যঝুঁকি, ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে চাকরি এবং জীবনযাপনের ক্ষেত্রেও। এই গ্রিনহাউস গ্যাসই মূলত ৮০ শতাংশ বৈশ্বিক উষ্ণায়নের জন্য দায়ী, যেটা গোটা বায়ুমন্ডলের ০.০৩ শতাংশ। অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে খুব ছোট কিছু পরিবর্তনও অনেক বড় ফলাফল বয়ে নিয়ে আসছে।

কিন্তু উষ্ণায়ন কি একেবারেই নতুন ধারণা? পৃথিবীর শুরু থেকেই উষ্ণায়নের ধারণাটা চলে আসছে। এক সময় আমাদের পৃথিবীর বিরাট একটি অঞ্চল বরফে ঢাকা ছিল; কিন্তু পার্থক্য হলো মাত্রায়। শিল্প বিপ্লবের সময় থেকেই পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধি পেয়েছে এক ডিগ্রি সেলসিয়াস, যার দুই-তৃতীয়াংশ ১৯৭৫ সালের পর থেকে। অথচ অতীতে পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেতে সময় লাগতো পাঁচ হাজার বছর। অর্থাৎ বর্তমানে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বৃদ্ধি পাচ্ছে ২০ গুণ বেশি। ফলে অতীতে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে যেসব প্রাণী এবং গাছপালা তাদের মানিয়ে নিতে পারত, তারা সেটা আর করতে পারছে না। যে কারণে তাদের ১০০০ গুণ দ্রুত বিলুপ্তির পথে নিয়ে যাচ্ছে। বৃদ্ধি পাচ্ছে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা এবং তীব্র প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রবণতা। গ্রিনহাউস গ্যাসের একটি বড় নিয়ামক।

কিন্তু প্রশ্ন একটাই- গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন বন্ধ করলেই জলবায়ু আবার আগের মতো হয়ে যাবে? উত্তরটা হলো, না। গ্রিনহাউস গ্যাসের অতিরিক্ত নির্গমন আমাদের পৃথিবীকে শুক্র গ্রহের মতোই উষ্ণ এবং জীবনশূন্য করে দেবে। আবার গ্রিনহাউস গ্যাস ছাড়া আমাদের গ্রহ হয়ে পড়বে অতিরিক্ত ঠান্ডা এবং জনমানবহীন। তাই আমাদের এই সুন্দর পৃথিবীটাকে টিকিয়ে রাখতে হলে আমাদের প্রয়োজন পরিমাণ মতো গ্রিনহাউসের নির্গমন। এর অতিরিক্ত নির্গমন যেমন আমাদের বিপদের কারণ, তেমনি এর অতিরিক্ত কম নির্গমনও আমাদের জন্য কোন সুফল বয়ে আনবে না।

তাই আমাদের উচিত প্রত্যেকের নিজ নিজ পর্যায় থেকে এখনই সতর্ক হওয়া। কেননা এভাবে চলতে দিলে আমাদের অস্তিত্বই একদিন বিলীন হয়ে যাবে।

[লেখক : শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়]

back to top