alt

উপ-সম্পাদকীয়

ভারতের নতুন সংসদ ভবন এবং হিন্দু আধিপত্যবাদ

গৌতম রায়

: শুক্রবার, ০২ জুন ২০২৩

ভারতের নতুন সংসদ ভবন নির্মাণ ঘিরে বেশ কিছুদিন ধরেই নানা ধরনের বিতর্ক চলছিল। কোন পরিস্থিতিতে এই নতুন অত্যাধুনিক সংসদ ভবন নির্মাণের প্রাসঙ্গিকতা রয়েছে সেই প্রশ্ন উঠেছে প্রথম থেকেই। এত বিপুল পরিমাণ টাকা খরচ করে, কোভিড উত্তর কালের নানা ধরনের অর্থনৈতিক সংকটের ভেতরে, নতুন সংসদ ভবনের মত সুরম্য অট্টালিকা তৈরির প্রয়োজনীয়তাই বা কোথায়, সেই প্রশ্ন বিরোধীরা বারবার তুলেছেন। তা সত্ত্বেও নিজের মেজাজে সেইসব কথায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, আদৌ কর্ণপাত করেননি। নিজের স্বভাব সুলভ ভাবেই তিনি এই নতুন সংসদ ভবনের ভিত্তি প্রস্তাব স্থাপন করেছিলেন হিন্দু ধর্মীয় রীতিনীতিকে পালন করে।

স্বাধীন ভারতের যাবতীয় সংসদীয় রীতি-নীতির ভিত্তি হলো ভারতের সংবিধান। এ সংবিধান কখনো কোনো বিশেষ ধর্মের প্রতি বিন্দুমাত্র পক্ষপাতিত্ব দেখায়নি। বহুত্ববাদী চেতনায় যুগ যুগ ধরে ভারতের যে প্রবাহমানতা রয়েছে, সেই প্রবাহমানতাকে স্বীকৃতি দিয়ে, শক হুনদল, পাঠান মোগল এক দেহে হলো লীন- এই ভাবনার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ভারতের সংবিধান রচিত হয়েছিল। এই সংবিধানে জাতি-ধর্ম-বর্ণ-ভাষা-লিঙ্গ নির্বিশেষে প্রতিটি মানুষ যাতে সমান অধিকার পায়, তার জন্য অঙ্গীকার করা হয়েছিল।

সংখ্যালঘুর অধিকারকে ভারতের সংবিধান প্রণেতারা সংবিধানের একটি অবশ্য পালনীয় কর্তব্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। সংবিধান বিশেষজ্ঞরা সংখ্যালঘুর অধিকার সুরক্ষিত রাখা টাকে সংখ্যাগুরুর বিশেষ দায়িত্ব এবং কর্তব্য বলে অভিহিত করে ছিলেন।

নরেন্দ্র মোদি কেন্দ্রে একক গরিষ্ঠতা নিয়ে বিজেপিকে ক্ষমতাসীন করবার পর থেকেই ভারতীয় সংবিধানের যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোকে ধ্বংস করবার পাশাপাশি, সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্রকে ধ্বংস করবার এক ভয়াবহ ষড়যন্ত্র শুরু করে দিয়েছিলেন। সময় যত এগিয়েছে, ততই এই প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিজেপির মূল মস্তিষ্ক আরএসএস যত তার দখদন্ত বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছে, ততই ভারতীয় সংবিধানের মূল নির্যাস গণতন্ত্র, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো, মৌলিক অধিকার রক্ষা, বাকস্বাধীনতা রক্ষা, সর্বোপরি ধর্ম নিরপেক্ষতা, ভয়ংকর রকম ভাবে বিঘ্নিত হতে হতে এমন একটা জায়গায় এসে আজ উপস্থাপিত হয়েছে যে, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরে এই সন্দেহ ক্রমশই তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠছে। আগামী দিনে ভারতীয় সংবিধানের মূল পরিকাঠামো, ধর্মনিরপেক্ষতা অক্ষুন্ন থাকবে? নাকি সেই জায়গাটি দখল করবে আরএসএসের হিটলারীয় আদলে ফ্যাসিবাদকে কায়েম করবার যে কৌশল, রাজনৈতিক হিন্দুরা রাষ্ট্র, সেদিকে ভারতকে রূপান্তরিত করবেন মোদি? এইসব করে গোটা ভারতের বহুত্ববাদী সমন্বয়ে চিন্তার ধারাবাহিকতাকে সমূলে উৎপাটন করে ফেলা হবে।

নরেন্দ্র মোদির দ্বিতীয়বার ২০১৯ সালে একক গরিষ্ঠতা নিয়ে বিজেপিকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনবার পর, যে সংখ্যাগুরু সাম্প্রদায়িকতার উপর ভিত্তি করে আরএসএস- বিজেপির ভারতকে পরিচালিত করছিল, অচিরেই তা রূপান্তরিত হয়, সংখ্যাগুরুর আধিপত্য বাদে। ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদের ধ্বংসস্তূপের জমির মালিকানা সংক্রান্ত মামলায়, ভারতের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট, যেভাবে জমির মালিকানা নির্ধারণ করতে গিয়ে, একটি পবিত্র মসজিদকে স্থানান্তরিত করবার মতো চরম ইসলাম বিরোধী সিদ্ধান্ত আদালতের সীলমোহর দিয়ে প্রকাশ করে, তখনই বুঝতে পারা যায়, ভারতে নেহরু, আজাদ, জ্যোতি বসুর ধর্মনিরপেক্ষতা আর বোধহয় সুরক্ষিত থাকবে না।

সেই আশঙ্কা অল্পদিনের মধ্যে ক্রমশ সত্য বলে প্রমাণিত হতে থাকে। পবিত্র মসজিদের ধ্বংসস্তূপের উপরে তথাকথিত রাম মন্দিরের শিলান্যাস করেন নরেন্দ্র মোদী এমন একটা সময়, যখন কোভিডত জনিত পরিস্থিতিতে গোটা ভারতের সাধারণ মানুষের জীবন জীবিকা এক ভয়াবহ সংকটের মধ্যে এসে দাঁড়িয়েছে। এই রকম একটা সংকটের মধ্যেই বহু কোটি টাকা ব্যয়ে ভারতের নতুন সংসদ ভবনের স্থাপনের যে কর্মকান্ড নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার করেছে, সেই কর্মকান্ড থেকেই পরিষ্কার ছিল যে, সংসদ পরিচালনার ক্ষেত্রে, ভারতের সংবিধান, দেশের রাষ্ট্রপতিকে যে ক্ষমতা অর্পণ করেছে, সেই ক্ষমতাকে নিজের খেয়াল খুশি মত লঙ্ঘন করার মধ্যে দিয়ে, সংবিধানের খোলনলচে বদলে দেওয়ার যে নোংরা ষড়যন্ত্র বিজেপি সরকার করছে, সেই পদক্ষেপকে নরেন্দ্র মোদি ক্রমশ আরো নগ্ন রূপ প্রদান করবেন তার মূল মস্তিষ্ক আরএসএস সহায়তায়।

নতুন সংসদ ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনে ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এই রামনাথ কোবিদ কিন্তু বিজেপিরই মনোনীত প্রার্থী হিসেবে রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন। কিন্তু যেহেতু তিনি তপশিলি জাতিভুক্ত মানুষ, তাই ব্রাহ্মণ্যবাদকে রাষ্ট্রপরিচালনার একমাত্র ভিত্তি হিসেবে স্থাপন করতে উন্মুখ, বিজেপি জন্ম পরিচয় নিম্নবর্গীয় হিন্দু হওয়ার দরুন, তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে সংসদ ভবনের শিলান্যাসের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানায়নি।

সেদিনই বুঝতে পারা গিয়েছিল, ভারতীয় গণতন্ত্রকে কোন ভয়ংকর পথে পরিচালিত করতে চায় কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার। নতুন সংসদ ভবনের ভিত্তিপ্রস্তার স্থাপনকে ঘিরে সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক যে পথ ধরে বিজেপি সরকার হেঁটেছে, মিলিতভাবে ভারতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যাতীত, বিরোধী রাজনীতির প্রায় সবাই দলই তার তীব্র প্রতিবাদ করেছে। আরএসএস-এর গর্ভে জন্ম নেওয়া তৃণমূল কংগ্রেস, যারা সংখ্যালঘু প্রেমির একটা মুখোশ পরে ভোট বিভাজনের মধ্যে দিয়ে, কেবলমাত্র পশ্চিমবঙ্গ নয়, ভারতের গোটা পূর্বাঞ্চল কে বিজেপির স্বর্গরাজ্যে পরিণত করতে সব রকম ভাবে সাহায্য করেছে, সেই দল বা সেই দলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, যিনি ভোটের স্বার্থেই নিজেকে কখনো বিজেপির বন্ধু ক, খনো বিজেপির শত্রু বলে নানা ধরনের নাটকীয় ঘটনাবলির অবতারণা করে থাকেন, তিনি কিন্তু একটি বারের জন্য নতুন সংসদ ভবনের ভিত্তিপ্রস্থা স্থাপনের জন্য তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ কে আমন্ত্রণ না জানানোর নরেন্দ্র মোদির সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে একটি শব্দ উচ্চারণ করেননি বা বর্তমান রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে উদ্বোধনে আমন্ত্রণ না জানানো ঘিরে একটা কথাও বলেন নি।

কোভিড উত্তরকালে সরকারের জনকল্যাণমুখী যে কোনো কাজের মধ্যেই একটা অদ্ভুত ধরনের দীর্ঘসূত্রিতা দেখতে পাওয়া যায়, অথচ একটা বিপুল অংকের টাকা খরচ করে, এই নতুন সংসদ ভবন তৈরির বিষয়ে কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদি সরকারের মধ্যে এতোুকু শৈথিল্য আমরা দেখতে পেলাম না। করোনাজনিত পরিস্থিতি দরুন দেশের অর্থনীতির ভয়াবহ দুরবস্থা সত্ত্বেও, সমস্ত ধরনের বিরোধিতা কে উপেক্ষা করে, কোটি কোটি টাকা খরচ করে, এই নতুন সংসদ ভবন নির্মাণের কাজ কেন্দ্রীয় সরকার সমাপ্ত করলেন। নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধন করবার জন্য, কেন্দ্র দিন ঠিক করলো, তাদের তাত্ত্বিক ভিত্তির অন্যতম নির্মাতা বিনায়ক দামোদর সাভারকারের জন্মদিন টিকে। ভারতের সাধারণত রবিবার ছুটির দিন কোন সরকারি অনুষ্ঠান হয় না। চলতি ২০২৩ সালে সাভারকারের জন্মদিন ২৮শে মে, তারিখটি রবিবার পরা সত্বেও, সমস্ত ধরনের প্রচলিত প্রথাকে উপেক্ষা করে, সংশ্লিষ্ট দিনেই এই নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন করা হলো প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে দিয়ে।

সব থেকে আশ্চর্যের বিষয় হলো- সংসদের নেতা রাষ্ট্রপতি, উপনেতা হলেন উপরাষ্ট্রপতি। যে রাষ্ট্রপতির আহ্বানে সংসদের অধিবেশন বসে এবং অধিবেশন বন্ধ হয়, যে উপরাষ্ট্রপতি পদাধিকার বলে রাজ্যসভার সভাপতি, এঁরা কেউই নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধনে আমন্ত্রিত ছিলেন না। গোটা অনুষ্ঠানটি কার্যত পরিচালনা করে আরএসএসের ঘনিষ্ঠ একদল কর্নাটকের সাধু সন্ন্যাসী। প্রায় অর্ধনগ্ন, দেহের উপরিভাগ সম্পূর্ণ উন্মুক্ত বেশধারী একদল তথাকথিত সাধুর দ্বারা, একেবারে অতীতে, রাজতন্ত্রের যুগে, যেভাবে রাজার অভিষেক ঘটতো, তেমন আদলে ভারতের গণতন্ত্রের পীঠস্থান, ভারতের সংসদের নতুন ভবনের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো আগেই এই অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। এখনও পর্যন্ত এই অনুষ্ঠানের যে কটা ছবি সামাজিক গণমাধ্যমে বেরিয়েছে, তাতে এই উদ্বোধনে মহিলাদের উপস্থিতি ছিল কিনা, এটা পরিষ্কারভাবে জানতে পারা যাচ্ছে না। যেভাবে একজন সাধু নরেন্দ্র মোদির হাতে একটি তথাকথিত রাজদন্ড তুলে দিচ্ছেন এবং সেই রাজদন্ডটি আরো অনেক সাধু একসঙ্গে ধরে অর্পণ করছেন প্রধানমন্ত্রীকে, এই প্রথাটির মধ্যে ৪৭ সালে ব্রিটিশের কাছ থেকে স্বাধীনতা ছিনিয়ে নেওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত ভারতীয় সংসদ ভবনে যে সংসদীয় রীতিনীতি আছে, তার সঙ্গে কোনো রকম সাদৃশ্য দেখতে পাওয়া যায় না।

হিন্দুত্ববাদী শিবির থেকে দাবি করা হচ্ছে, এই রাজদন্ডটি নাকি ঐতিহ্যগতভাবে স্বাধীন ভারতের রাষ্ট্রপ্রধানের হাতে অর্পণ করা হয়েছিল। কিন্তু আরএসএসপন্থিদের এই আজগুবি দাবির সমর্থনে আজ পর্যন্ত কোনো তথ্য প্রমাণ আমাদের সামনে আসেনি। আরএসএসকে এ নিয়ে চ্যালেঞ্জ জানানো সত্ত্বেও, আরএসএস এ সম্পর্কে কোন তথ্য প্রমাণ প্রকাশ্যে আনতে সক্ষম হয়নি।

এ রাজদন্ডটি গ্রহণ করবার পর সংসদ ভবনের ভেতরে প্রধানমন্ত্রী যেভাবে সস্তাঙ্গে প্রণাম করেছেন, তাতে নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন প্রক্রিয়া দেখে প্রথমে মানুষের মনে একটা বিভ্রান্তি তৈরি হতেই পারে। সাধারণ মানুষের মনে হতেই পারে, এটা ভারতের নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন হচ্ছে, নাকি হিন্দুদের কোনো উপাসনালয়ের উদ্বোধন হচ্ছে। একেবারে মধ্যযুগীয় কোনরকম প্রথাকে অবলম্বন করে এসব হয়েছে। যে ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানের উপর ভিত্তি করে ভারতের সাংবিধানিক কাঠামো আজও প্রতিষ্ঠিত রয়েছে, সেখানে সরকারিভাবে কোনো বিশেষ ধর্মের প্রতি পক্ষপাতিত্ব পালন বা কোনো বিশেষ ধর্ম পালন সরকারিভাবে করতে পারাটা সংবিধানকে সম্পূর্ণ অমান্য করা। নরেন্দ্র মোদি ভারতের নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধনে একদল অর্ধনগ্ন সন্ন্যাসীকে নিয়ে এসে যে কান্ডকারখানা করলেন, সে কান্ডকারখানাতে সম্পূর্ণভাবে ভারতের সংবিধানকে অমান্য করে করা হলো।

(বাকি অংশ আগামীকাল)

টেকসই কৃষিতে নবায়নযোগ্য জ্বালানির সম্ভাবনা

ছবি

জয়নুলের সাঁওতাল দম্পতি এবং সুমনের সৌন্দর্যপ্রিয়তা

এরপরও কি গাছ লাগাবেন না, বন রক্ষা করবেন না?

বিশ্ব ধরিত্রী দিবস

সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিলের শেষ কোথায়

খুব জানতে ইচ্ছে করে

কোন দিকে মোড় নিচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের সংকট?

কৃষিগুচ্ছ : ভর্তির আবেদনের নূ্যূনতম যোগ্যতা ও ফলাফল প্রস্তুতিতে বৈষম্য

ছবি

গণপরিবহনে নৈরাজ্যের শেষ কোথায়

ছাত্র রাজনীতি : পক্ষে-বিপক্ষে

ছবি

বি আর আম্বেদকর : নিম্নবর্গের মানুষের প্রতিনিধি

চেকের মামলায় আসামির মুক্তির পথ কী

রাম-নবমী : হিন্দুত্বের নয়া গবেষণাগার

‘একটি গ্রাম একটি পণ্য’ উদ্যোগ কি সফল হবে

কিশোর গ্যাং : সমস্যার মূলে যেতে হবে

গীতি চলচ্চিত্র ‘কাজল রেখা’ : সুস্থধারার চলচ্চিত্র বিকাশ ঘটুক

ছবি

ঋতুভিত্তিক চিরায়ত বাঙালি সংস্কৃতি

ছবি

স্মরণ : কাঙ্গাল হরিনাথ মজুমদার

ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস

দাবদাহে সুস্থ থাকবেন কীভাবে

কত দিন পরে এলে, একটু শোনো

রম্যগদ্য : আনন্দ, দ্বিগুণ আনন্দ...

ছবি

ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় নাম

বৈসাবি : ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বর্ষবরণ উৎসব

‘ইন্ডিয়া আউট’ ক্যাম্পেইন

উদার-উদ্দাম বৈশাখ চাই

ঈদ নিয়ে আসুক শান্তি ও সমৃদ্ধি, বিস্তৃত হোক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ

প্রসঙ্গ: বিদেশি ঋণ

ছাত্ররাজনীতি কি খারাপ?

জাকাত : বিশ্বের প্রথম সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা

বাংলাদেশ স্কাউটস দিবস : শুরুর কথা

ছবি

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত

প্রবাসীর ঈদ-ভাবনা

বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস

ধানের ফলন বাড়াতে ক্লাইমেট স্মার্ট গুটি ইউরিয়া প্রযুক্তি

কমিশন কিংবা ভিজিটে জমি রেজিস্ট্রির আইনি বিধান ও প্রাসঙ্গিকতা

tab

উপ-সম্পাদকীয়

ভারতের নতুন সংসদ ভবন এবং হিন্দু আধিপত্যবাদ

গৌতম রায়

শুক্রবার, ০২ জুন ২০২৩

ভারতের নতুন সংসদ ভবন নির্মাণ ঘিরে বেশ কিছুদিন ধরেই নানা ধরনের বিতর্ক চলছিল। কোন পরিস্থিতিতে এই নতুন অত্যাধুনিক সংসদ ভবন নির্মাণের প্রাসঙ্গিকতা রয়েছে সেই প্রশ্ন উঠেছে প্রথম থেকেই। এত বিপুল পরিমাণ টাকা খরচ করে, কোভিড উত্তর কালের নানা ধরনের অর্থনৈতিক সংকটের ভেতরে, নতুন সংসদ ভবনের মত সুরম্য অট্টালিকা তৈরির প্রয়োজনীয়তাই বা কোথায়, সেই প্রশ্ন বিরোধীরা বারবার তুলেছেন। তা সত্ত্বেও নিজের মেজাজে সেইসব কথায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, আদৌ কর্ণপাত করেননি। নিজের স্বভাব সুলভ ভাবেই তিনি এই নতুন সংসদ ভবনের ভিত্তি প্রস্তাব স্থাপন করেছিলেন হিন্দু ধর্মীয় রীতিনীতিকে পালন করে।

স্বাধীন ভারতের যাবতীয় সংসদীয় রীতি-নীতির ভিত্তি হলো ভারতের সংবিধান। এ সংবিধান কখনো কোনো বিশেষ ধর্মের প্রতি বিন্দুমাত্র পক্ষপাতিত্ব দেখায়নি। বহুত্ববাদী চেতনায় যুগ যুগ ধরে ভারতের যে প্রবাহমানতা রয়েছে, সেই প্রবাহমানতাকে স্বীকৃতি দিয়ে, শক হুনদল, পাঠান মোগল এক দেহে হলো লীন- এই ভাবনার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ভারতের সংবিধান রচিত হয়েছিল। এই সংবিধানে জাতি-ধর্ম-বর্ণ-ভাষা-লিঙ্গ নির্বিশেষে প্রতিটি মানুষ যাতে সমান অধিকার পায়, তার জন্য অঙ্গীকার করা হয়েছিল।

সংখ্যালঘুর অধিকারকে ভারতের সংবিধান প্রণেতারা সংবিধানের একটি অবশ্য পালনীয় কর্তব্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। সংবিধান বিশেষজ্ঞরা সংখ্যালঘুর অধিকার সুরক্ষিত রাখা টাকে সংখ্যাগুরুর বিশেষ দায়িত্ব এবং কর্তব্য বলে অভিহিত করে ছিলেন।

নরেন্দ্র মোদি কেন্দ্রে একক গরিষ্ঠতা নিয়ে বিজেপিকে ক্ষমতাসীন করবার পর থেকেই ভারতীয় সংবিধানের যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোকে ধ্বংস করবার পাশাপাশি, সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্রকে ধ্বংস করবার এক ভয়াবহ ষড়যন্ত্র শুরু করে দিয়েছিলেন। সময় যত এগিয়েছে, ততই এই প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিজেপির মূল মস্তিষ্ক আরএসএস যত তার দখদন্ত বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছে, ততই ভারতীয় সংবিধানের মূল নির্যাস গণতন্ত্র, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো, মৌলিক অধিকার রক্ষা, বাকস্বাধীনতা রক্ষা, সর্বোপরি ধর্ম নিরপেক্ষতা, ভয়ংকর রকম ভাবে বিঘ্নিত হতে হতে এমন একটা জায়গায় এসে আজ উপস্থাপিত হয়েছে যে, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরে এই সন্দেহ ক্রমশই তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠছে। আগামী দিনে ভারতীয় সংবিধানের মূল পরিকাঠামো, ধর্মনিরপেক্ষতা অক্ষুন্ন থাকবে? নাকি সেই জায়গাটি দখল করবে আরএসএসের হিটলারীয় আদলে ফ্যাসিবাদকে কায়েম করবার যে কৌশল, রাজনৈতিক হিন্দুরা রাষ্ট্র, সেদিকে ভারতকে রূপান্তরিত করবেন মোদি? এইসব করে গোটা ভারতের বহুত্ববাদী সমন্বয়ে চিন্তার ধারাবাহিকতাকে সমূলে উৎপাটন করে ফেলা হবে।

নরেন্দ্র মোদির দ্বিতীয়বার ২০১৯ সালে একক গরিষ্ঠতা নিয়ে বিজেপিকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনবার পর, যে সংখ্যাগুরু সাম্প্রদায়িকতার উপর ভিত্তি করে আরএসএস- বিজেপির ভারতকে পরিচালিত করছিল, অচিরেই তা রূপান্তরিত হয়, সংখ্যাগুরুর আধিপত্য বাদে। ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদের ধ্বংসস্তূপের জমির মালিকানা সংক্রান্ত মামলায়, ভারতের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট, যেভাবে জমির মালিকানা নির্ধারণ করতে গিয়ে, একটি পবিত্র মসজিদকে স্থানান্তরিত করবার মতো চরম ইসলাম বিরোধী সিদ্ধান্ত আদালতের সীলমোহর দিয়ে প্রকাশ করে, তখনই বুঝতে পারা যায়, ভারতে নেহরু, আজাদ, জ্যোতি বসুর ধর্মনিরপেক্ষতা আর বোধহয় সুরক্ষিত থাকবে না।

সেই আশঙ্কা অল্পদিনের মধ্যে ক্রমশ সত্য বলে প্রমাণিত হতে থাকে। পবিত্র মসজিদের ধ্বংসস্তূপের উপরে তথাকথিত রাম মন্দিরের শিলান্যাস করেন নরেন্দ্র মোদী এমন একটা সময়, যখন কোভিডত জনিত পরিস্থিতিতে গোটা ভারতের সাধারণ মানুষের জীবন জীবিকা এক ভয়াবহ সংকটের মধ্যে এসে দাঁড়িয়েছে। এই রকম একটা সংকটের মধ্যেই বহু কোটি টাকা ব্যয়ে ভারতের নতুন সংসদ ভবনের স্থাপনের যে কর্মকান্ড নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার করেছে, সেই কর্মকান্ড থেকেই পরিষ্কার ছিল যে, সংসদ পরিচালনার ক্ষেত্রে, ভারতের সংবিধান, দেশের রাষ্ট্রপতিকে যে ক্ষমতা অর্পণ করেছে, সেই ক্ষমতাকে নিজের খেয়াল খুশি মত লঙ্ঘন করার মধ্যে দিয়ে, সংবিধানের খোলনলচে বদলে দেওয়ার যে নোংরা ষড়যন্ত্র বিজেপি সরকার করছে, সেই পদক্ষেপকে নরেন্দ্র মোদি ক্রমশ আরো নগ্ন রূপ প্রদান করবেন তার মূল মস্তিষ্ক আরএসএস সহায়তায়।

নতুন সংসদ ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনে ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এই রামনাথ কোবিদ কিন্তু বিজেপিরই মনোনীত প্রার্থী হিসেবে রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন। কিন্তু যেহেতু তিনি তপশিলি জাতিভুক্ত মানুষ, তাই ব্রাহ্মণ্যবাদকে রাষ্ট্রপরিচালনার একমাত্র ভিত্তি হিসেবে স্থাপন করতে উন্মুখ, বিজেপি জন্ম পরিচয় নিম্নবর্গীয় হিন্দু হওয়ার দরুন, তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে সংসদ ভবনের শিলান্যাসের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানায়নি।

সেদিনই বুঝতে পারা গিয়েছিল, ভারতীয় গণতন্ত্রকে কোন ভয়ংকর পথে পরিচালিত করতে চায় কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার। নতুন সংসদ ভবনের ভিত্তিপ্রস্তার স্থাপনকে ঘিরে সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক যে পথ ধরে বিজেপি সরকার হেঁটেছে, মিলিতভাবে ভারতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যাতীত, বিরোধী রাজনীতির প্রায় সবাই দলই তার তীব্র প্রতিবাদ করেছে। আরএসএস-এর গর্ভে জন্ম নেওয়া তৃণমূল কংগ্রেস, যারা সংখ্যালঘু প্রেমির একটা মুখোশ পরে ভোট বিভাজনের মধ্যে দিয়ে, কেবলমাত্র পশ্চিমবঙ্গ নয়, ভারতের গোটা পূর্বাঞ্চল কে বিজেপির স্বর্গরাজ্যে পরিণত করতে সব রকম ভাবে সাহায্য করেছে, সেই দল বা সেই দলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, যিনি ভোটের স্বার্থেই নিজেকে কখনো বিজেপির বন্ধু ক, খনো বিজেপির শত্রু বলে নানা ধরনের নাটকীয় ঘটনাবলির অবতারণা করে থাকেন, তিনি কিন্তু একটি বারের জন্য নতুন সংসদ ভবনের ভিত্তিপ্রস্থা স্থাপনের জন্য তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ কে আমন্ত্রণ না জানানোর নরেন্দ্র মোদির সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে একটি শব্দ উচ্চারণ করেননি বা বর্তমান রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে উদ্বোধনে আমন্ত্রণ না জানানো ঘিরে একটা কথাও বলেন নি।

কোভিড উত্তরকালে সরকারের জনকল্যাণমুখী যে কোনো কাজের মধ্যেই একটা অদ্ভুত ধরনের দীর্ঘসূত্রিতা দেখতে পাওয়া যায়, অথচ একটা বিপুল অংকের টাকা খরচ করে, এই নতুন সংসদ ভবন তৈরির বিষয়ে কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদি সরকারের মধ্যে এতোুকু শৈথিল্য আমরা দেখতে পেলাম না। করোনাজনিত পরিস্থিতি দরুন দেশের অর্থনীতির ভয়াবহ দুরবস্থা সত্ত্বেও, সমস্ত ধরনের বিরোধিতা কে উপেক্ষা করে, কোটি কোটি টাকা খরচ করে, এই নতুন সংসদ ভবন নির্মাণের কাজ কেন্দ্রীয় সরকার সমাপ্ত করলেন। নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধন করবার জন্য, কেন্দ্র দিন ঠিক করলো, তাদের তাত্ত্বিক ভিত্তির অন্যতম নির্মাতা বিনায়ক দামোদর সাভারকারের জন্মদিন টিকে। ভারতের সাধারণত রবিবার ছুটির দিন কোন সরকারি অনুষ্ঠান হয় না। চলতি ২০২৩ সালে সাভারকারের জন্মদিন ২৮শে মে, তারিখটি রবিবার পরা সত্বেও, সমস্ত ধরনের প্রচলিত প্রথাকে উপেক্ষা করে, সংশ্লিষ্ট দিনেই এই নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন করা হলো প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে দিয়ে।

সব থেকে আশ্চর্যের বিষয় হলো- সংসদের নেতা রাষ্ট্রপতি, উপনেতা হলেন উপরাষ্ট্রপতি। যে রাষ্ট্রপতির আহ্বানে সংসদের অধিবেশন বসে এবং অধিবেশন বন্ধ হয়, যে উপরাষ্ট্রপতি পদাধিকার বলে রাজ্যসভার সভাপতি, এঁরা কেউই নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধনে আমন্ত্রিত ছিলেন না। গোটা অনুষ্ঠানটি কার্যত পরিচালনা করে আরএসএসের ঘনিষ্ঠ একদল কর্নাটকের সাধু সন্ন্যাসী। প্রায় অর্ধনগ্ন, দেহের উপরিভাগ সম্পূর্ণ উন্মুক্ত বেশধারী একদল তথাকথিত সাধুর দ্বারা, একেবারে অতীতে, রাজতন্ত্রের যুগে, যেভাবে রাজার অভিষেক ঘটতো, তেমন আদলে ভারতের গণতন্ত্রের পীঠস্থান, ভারতের সংসদের নতুন ভবনের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো আগেই এই অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। এখনও পর্যন্ত এই অনুষ্ঠানের যে কটা ছবি সামাজিক গণমাধ্যমে বেরিয়েছে, তাতে এই উদ্বোধনে মহিলাদের উপস্থিতি ছিল কিনা, এটা পরিষ্কারভাবে জানতে পারা যাচ্ছে না। যেভাবে একজন সাধু নরেন্দ্র মোদির হাতে একটি তথাকথিত রাজদন্ড তুলে দিচ্ছেন এবং সেই রাজদন্ডটি আরো অনেক সাধু একসঙ্গে ধরে অর্পণ করছেন প্রধানমন্ত্রীকে, এই প্রথাটির মধ্যে ৪৭ সালে ব্রিটিশের কাছ থেকে স্বাধীনতা ছিনিয়ে নেওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত ভারতীয় সংসদ ভবনে যে সংসদীয় রীতিনীতি আছে, তার সঙ্গে কোনো রকম সাদৃশ্য দেখতে পাওয়া যায় না।

হিন্দুত্ববাদী শিবির থেকে দাবি করা হচ্ছে, এই রাজদন্ডটি নাকি ঐতিহ্যগতভাবে স্বাধীন ভারতের রাষ্ট্রপ্রধানের হাতে অর্পণ করা হয়েছিল। কিন্তু আরএসএসপন্থিদের এই আজগুবি দাবির সমর্থনে আজ পর্যন্ত কোনো তথ্য প্রমাণ আমাদের সামনে আসেনি। আরএসএসকে এ নিয়ে চ্যালেঞ্জ জানানো সত্ত্বেও, আরএসএস এ সম্পর্কে কোন তথ্য প্রমাণ প্রকাশ্যে আনতে সক্ষম হয়নি।

এ রাজদন্ডটি গ্রহণ করবার পর সংসদ ভবনের ভেতরে প্রধানমন্ত্রী যেভাবে সস্তাঙ্গে প্রণাম করেছেন, তাতে নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন প্রক্রিয়া দেখে প্রথমে মানুষের মনে একটা বিভ্রান্তি তৈরি হতেই পারে। সাধারণ মানুষের মনে হতেই পারে, এটা ভারতের নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন হচ্ছে, নাকি হিন্দুদের কোনো উপাসনালয়ের উদ্বোধন হচ্ছে। একেবারে মধ্যযুগীয় কোনরকম প্রথাকে অবলম্বন করে এসব হয়েছে। যে ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানের উপর ভিত্তি করে ভারতের সাংবিধানিক কাঠামো আজও প্রতিষ্ঠিত রয়েছে, সেখানে সরকারিভাবে কোনো বিশেষ ধর্মের প্রতি পক্ষপাতিত্ব পালন বা কোনো বিশেষ ধর্ম পালন সরকারিভাবে করতে পারাটা সংবিধানকে সম্পূর্ণ অমান্য করা। নরেন্দ্র মোদি ভারতের নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধনে একদল অর্ধনগ্ন সন্ন্যাসীকে নিয়ে এসে যে কান্ডকারখানা করলেন, সে কান্ডকারখানাতে সম্পূর্ণভাবে ভারতের সংবিধানকে অমান্য করে করা হলো।

(বাকি অংশ আগামীকাল)

back to top