ঢাকাসহ সারাদেশে রাস্তার পাশে ডাস্টবিন রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ডাস্টবিনের গায়ে লেখা আছে ‘আমাকে ব্যবহার করুন।’ কথাটা যেন এখানেই সীমাবদ্ধ। সত্যি কি সবাই ডাস্টবিন ব্যবহার করছে? তাই যদি করবে তাহলে এত দূষণ হবে কেন?
আমরা প্রায়ই কোনো বস্তু ব্যবহার করে তার উচ্ছিষ্ট ফুটপাতে ফেলে রাখি। ফেলার আগে বিবেচনাও করি না, যে এতে ফুটপাত নোংরা হচ্ছে। ডাস্টবিন থাকলেও অনেকে রাস্তায় বা ফুটপাতে ময়লা ফেলে পরিবেশ নষ্ট করে। ঢাকা শহর বেশ কয়েকবার পৃথিবীর শীর্ষ দূষিত শহরগুলোর তালিকায় নিজের নাম লিখিয়েছে। এসব দূষণের পেছনে একাধিক কারণ দায়ী। এর মধ্যে অন্যতম কারণ হলো জনসচেতনতার অভাব। আমাদের দেশের জনগণ পর্যাপ্ত পরিমাণে সচেতন নয়। অনেক সময় দেখা যায় যে, অনেক উচ্চশিক্ষিত মানুষও অসচেতনভাবে যত্রতত্র ময়লা ফেল।
রাজধানী ঢাকায় নিয়ন্ত্রণহীন ধুলা, ফিটনেসবিহীন গাড়ির অবাধ চলাচল, ইটভাটা, সড়কের নিয়ন্ত্রণহীন খোঁড়াখুঁড়ি, শিল্পকারখানার বর্জ্য, কঠিন বর্জ্যরে অব্যবস্থাপনা ও বর্জ্য পোড়ানোÑ মূলত এসব ঢাকা শহরের বাতাস বিপজ্জনক করে তুলেছে। বায়ুদূষণের বিভিন্ন উৎসের পাশাপাশি ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকার জলাভূমি ভরাট এবং দূষণ এবং সবুজ এলাকা কমে যাওয়া, পার্ক, উদ্যান ও খেলার মাঠে প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংস করে দিয়ে কংক্রিটনির্ভর উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের কারণেও বায়ুদূষণ বাড়ছে। তাছাড়া ঢাকা শহরে রাস্তার পাশে মলমূত্র ত্যাগ করা একটি নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
দূষণের ফলে নগরবাসীর ওপর বিরূপ প্রভাব সৃষ্টি হচ্ছে বেশি। এজন্য অন্যান্য শহরের তুলনায় ঢাকায় মানুষ বেশি অসুস্থ হয়। দূষণের ফলাফল মারাত্মক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য জানাচ্ছে, পৃথিবীতে প্রতি বছর সড়ক দুর্ঘটনা, ধূমপান ও ডায়াবেটিসÑ এ তিন কারণের থেকেও বায়ুদূষণে বেশি মানুষ মারা যায়।
ঢাকা শহরের বায়ুতে যেসব ক্ষতিকর উপাদান আছে, তার মধ্যে মানবদেহের জন্য সবচেয়ে মারাত্মক উপাদান হচ্ছে পিএম ২.৫ যা শ্বাসপ্রশ্বাসের মাধ্যমে সহজেই শরীরে প্রবেশ করে শ্বাসতন্ত্রের নানা রোগসহ হৃদরোগের পরিমাণ বাড়ায়। এই ক্ষতিকর পিএম ২.৫ এর কারণে অ্যাজমা ও ফুসফুসের ক্যানসারও হতে পারে। একটি সমীক্ষা তথ্য দিচ্ছে যে, বায়ুদূষণের কারণে দেশে প্রতি বছর প্রায় ১ লাখ ২২ হাজার ৪০০ মানুষের মৃত্যু হয়।
প্রশাসন ইতোমধ্যে ঢাকার দূষণ রোধে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছো। এক্ষেত্রে সিটি করপোরেশন থেকে যত্রতত্র টায়ার জ্বালাতে নিষেধ করা হয়েছে। এছাড়া সিটি করপোরেশনের বর্জ্য নিষ্কাষনের গাড়ি যথাসময় ময়লা আবর্জনা অপসারণ করছে। কিন্তু এসব ময়লার শেষ ঠিকানা হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী বুড়িগঙ্গাসহ ঢাকার বিভিন্ন নদ নদী।
বুড়িগঙ্গা ইতোমধ্যে মরা নদীতে পরিণত হয়েছে। নদীতে মাছ বলতে আর কিছু অবশিষ্ট নাই। এক্ষেত্রে ব্ুিড়গঙ্গা নদী রক্ষায় সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন। তবে শুধু সরকারি উদ্যোগ এসব সমস্যা সমাধানে যথেষ্ট নয়। এজন্য দরকার মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণ। দরকার ডাস্টবিনের সঠিক ব্যবহার।
অংকন বিশ্বাস
বুধবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
ঢাকাসহ সারাদেশে রাস্তার পাশে ডাস্টবিন রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ডাস্টবিনের গায়ে লেখা আছে ‘আমাকে ব্যবহার করুন।’ কথাটা যেন এখানেই সীমাবদ্ধ। সত্যি কি সবাই ডাস্টবিন ব্যবহার করছে? তাই যদি করবে তাহলে এত দূষণ হবে কেন?
আমরা প্রায়ই কোনো বস্তু ব্যবহার করে তার উচ্ছিষ্ট ফুটপাতে ফেলে রাখি। ফেলার আগে বিবেচনাও করি না, যে এতে ফুটপাত নোংরা হচ্ছে। ডাস্টবিন থাকলেও অনেকে রাস্তায় বা ফুটপাতে ময়লা ফেলে পরিবেশ নষ্ট করে। ঢাকা শহর বেশ কয়েকবার পৃথিবীর শীর্ষ দূষিত শহরগুলোর তালিকায় নিজের নাম লিখিয়েছে। এসব দূষণের পেছনে একাধিক কারণ দায়ী। এর মধ্যে অন্যতম কারণ হলো জনসচেতনতার অভাব। আমাদের দেশের জনগণ পর্যাপ্ত পরিমাণে সচেতন নয়। অনেক সময় দেখা যায় যে, অনেক উচ্চশিক্ষিত মানুষও অসচেতনভাবে যত্রতত্র ময়লা ফেল।
রাজধানী ঢাকায় নিয়ন্ত্রণহীন ধুলা, ফিটনেসবিহীন গাড়ির অবাধ চলাচল, ইটভাটা, সড়কের নিয়ন্ত্রণহীন খোঁড়াখুঁড়ি, শিল্পকারখানার বর্জ্য, কঠিন বর্জ্যরে অব্যবস্থাপনা ও বর্জ্য পোড়ানোÑ মূলত এসব ঢাকা শহরের বাতাস বিপজ্জনক করে তুলেছে। বায়ুদূষণের বিভিন্ন উৎসের পাশাপাশি ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকার জলাভূমি ভরাট এবং দূষণ এবং সবুজ এলাকা কমে যাওয়া, পার্ক, উদ্যান ও খেলার মাঠে প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংস করে দিয়ে কংক্রিটনির্ভর উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের কারণেও বায়ুদূষণ বাড়ছে। তাছাড়া ঢাকা শহরে রাস্তার পাশে মলমূত্র ত্যাগ করা একটি নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
দূষণের ফলে নগরবাসীর ওপর বিরূপ প্রভাব সৃষ্টি হচ্ছে বেশি। এজন্য অন্যান্য শহরের তুলনায় ঢাকায় মানুষ বেশি অসুস্থ হয়। দূষণের ফলাফল মারাত্মক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য জানাচ্ছে, পৃথিবীতে প্রতি বছর সড়ক দুর্ঘটনা, ধূমপান ও ডায়াবেটিসÑ এ তিন কারণের থেকেও বায়ুদূষণে বেশি মানুষ মারা যায়।
ঢাকা শহরের বায়ুতে যেসব ক্ষতিকর উপাদান আছে, তার মধ্যে মানবদেহের জন্য সবচেয়ে মারাত্মক উপাদান হচ্ছে পিএম ২.৫ যা শ্বাসপ্রশ্বাসের মাধ্যমে সহজেই শরীরে প্রবেশ করে শ্বাসতন্ত্রের নানা রোগসহ হৃদরোগের পরিমাণ বাড়ায়। এই ক্ষতিকর পিএম ২.৫ এর কারণে অ্যাজমা ও ফুসফুসের ক্যানসারও হতে পারে। একটি সমীক্ষা তথ্য দিচ্ছে যে, বায়ুদূষণের কারণে দেশে প্রতি বছর প্রায় ১ লাখ ২২ হাজার ৪০০ মানুষের মৃত্যু হয়।
প্রশাসন ইতোমধ্যে ঢাকার দূষণ রোধে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছো। এক্ষেত্রে সিটি করপোরেশন থেকে যত্রতত্র টায়ার জ্বালাতে নিষেধ করা হয়েছে। এছাড়া সিটি করপোরেশনের বর্জ্য নিষ্কাষনের গাড়ি যথাসময় ময়লা আবর্জনা অপসারণ করছে। কিন্তু এসব ময়লার শেষ ঠিকানা হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী বুড়িগঙ্গাসহ ঢাকার বিভিন্ন নদ নদী।
বুড়িগঙ্গা ইতোমধ্যে মরা নদীতে পরিণত হয়েছে। নদীতে মাছ বলতে আর কিছু অবশিষ্ট নাই। এক্ষেত্রে ব্ুিড়গঙ্গা নদী রক্ষায় সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন। তবে শুধু সরকারি উদ্যোগ এসব সমস্যা সমাধানে যথেষ্ট নয়। এজন্য দরকার মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণ। দরকার ডাস্টবিনের সঠিক ব্যবহার।
অংকন বিশ্বাস