alt

পাঠকের চিঠি

কেমন আছে জাতীয় ফুল শাপলা

: বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশের জাতীয় ফুল শাপলা, আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রতীক, আজ বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে। শৈশবের সেই সাদা শাপলার সৌন্দর্য এবং এর সঙ্গে জড়িত স্মৃতিগুলো এখন কেবলই ফিকে হয়ে আসছে। একসময় গ্রামের খাল-বিল, ডোবা ও জলাশয়ে যে শাপলার সমারোহ দেখা যেত, আজ তা যেন চোখে পঙার মতো আর নেই। অতিরিক্ত জনসংখ্যা, অযতœ, অপরিকল্পিত নগরায়ণ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং কৃষিতে নির্বিচারে কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের ব্যবহার এই বিলুপ্তির প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।

শাপলার ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব অপরিসীম। এটি আমাদের দেশের পয়সা, টাকা ও সরকারি দলিলে চিত্রিত থাকে, যা জাতির পরিচয় বহন করে। প্রাকৃতিকভাবে খাল-বিলের পানিতে কোনো পরিচর্যা ছাড়াই এই ফুল ফুটে উঠত। এর সাদা রং যেমন আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে, তেমনই এটি জাতির ঐক্য ও সংহতির প্রতীক। কিন্তু আজকের দিনে গ্রামীণ জনপদে শাপলার সেই সাদামাটা সৌন্দর্য যেন হারিয়ে যেতে বসেছে। প্রবীণরা শৈশবের শাপলা ফুলে খেলার মিষ্টি স্মৃতিগুলোকে মনে করে আজও মুচকি হাসেন, কিন্তু সেই দৃশ্য আজ কেবল অতীত।

শাপলা কেবল সৌন্দর্যের প্রতীক নয়, এটি বহন করে আরও মূল্যবান গুণাবলি। এর ঔষধি গুণের মধ্যে রয়েছে হজম সমস্যা, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ এবং অতিরিক্ত পিপাসা নিবারণের ক্ষমতা। প্রাচীনকালে শাপলার লতা ও ডগা সবজি হিসেবে বিক্রি করে অনেকে তাদের জীবিকা নির্বাহ করত। কিন্তু এখন সেই দিনগুলোও যেন অতীতের মতো হারিয়ে যাচ্ছে।

অতিরিক্ত জনসংখ্যার চাপে, মানুষের মৌলিক চাহিদা মেটাতে কৃষিতে কীটনাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহারের মাধ্যমে শাপলার প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। খাল-বিল ও ডোবা ভরাট করে পুকুর ও ঘরবাডড় নির্মাণের ফলে শাপলার জন্মানোর স্থান ধীরে ধীরে সংকুচিত হয়ে পড়ছে। এক সময় যেখানে শাপলার সৌন্দর্য ছড়িয়ে থাকত, আজ সেখানে ইট-পাথরের ঘরবাড়ি মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। সেই স্মৃতিময় স্থানগুলো এখন শুধুই অতীতের ধোঁয়াশায় ঢাকা।

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবেও শাপলার অস্তিত্ব হুমকির মুখে। সঠিক সময়ে বৃষ্টি না হওয়া, খাল-বিলের পানি শুকিয়ে যাওয়া এবং লবণাক্ততার বৃদ্ধি শাপলার জন্মানোর প্রাকৃতিক পরিবেশকে ধ্বংস করছে। এর ফলে মাটিতে লুকিয়ে থাকা শাপলার বীজ এবং মা শালুক বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে শাপলা ফুলের সৌন্দর্য থেকে বঞ্চিত করবে।

শাপলা আমাদের জাতীয় পরিচয়ের অবিচ্ছেদ্য অংশ, আমাদের ঐতিহ্যের প্রতীক। এই ফুলের বিলুপ্তি আমাদের জাতীয় চেতনার একটি গভীর ক্ষতি ডেকে আনবে। শাপলা রক্ষায় এখনই কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা অপরিহার্য। নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত জাতীয় ফুলের এই মহিমাকে রক্ষায় দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা। তা না হলে, আগামী প্রজন্ম হয়তো আর কোনোদিন শাপলাকে জাতীয় ফুল হিসেবে দেখতে পাবে না। পুরোপুরি বিলুপ্ত হওয়ার আগেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে।

তামিম তুলি

শিক্ষকদের বেতন-ভাতার বৈষম্য দূর করতে হবে

বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সংবাদ প্রসঙ্গে

মাটি কেটে নষ্ট হচ্ছে ফসলি জমি

পিঠা উৎসব : ঐতিহ্যের পুনরুত্থান ও জনপ্রিয়তা

পরিবেশ সুরক্ষায় সবুজ অর্থনীতি

পানির অপচয় রোধে সচেতনতা

নিরাপত্তায় মনোযোগ বাড়ানো জরুরি

ছবি

প্লাস্টিক দূষণ : সমাধানের পথ কী?

ছাত্রত্বহীন আদুভাইদের রাজনীতি বন্ধ হোক

অগ্নিকা- থেকে মুক্তির উপায় কী?

ছবি

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কাঁকড়া শিকার

ছবি

টিসিবির ট্রাকে চাল নেই কেন?

মেট্রোরেলে মশা

ছবি

গণপরিবহনে নারী আসনের অপ্রতুলতা

ছবি

অভিযান যেন একতরফা না হয়

পরিবহন ভাড়া কমান

ইন্টারনেট প্রযুক্তির গুরুত্ব

ছবি

বই নির্বাচন, বন্ধু নির্বাচনের মতো গুরুত্বপূর্ণ

অব্যবস্থাপনার দিকে মেট্রোরেল

সাহিত্যের সঙ্গে সাংবাদিকতার সম্পর্ক : বিশ্লেষণ

কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের সংস্কার চাই

খাল খনন করুন

ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

মুন্সীগঞ্জের মিরকাদিম পৌরসভার খাল ভরাটের কারণে বেহাল দশা

ছবি

রেলক্রসিং যেন মরণ ফাঁদ

ছবি

অবৈধ পথে ইউরোপ যাত্রা : স্বপ্ন নাকি মৃত্যুর ফাঁদ?

ছাতারপাইয়ায় রাস্তা সংস্কার জরুরি

বইয়ের আলোয় দূর হোক অন্ধকার

পোস্তগোলা রাস্তার শোচনীয় অবস্থা

কৃষক কাঁদে, ভোক্তাও কাঁদে

হতাশার আরেক নাম ভর্তি পরীক্ষা

চট্টগ্রামের পাঁচলাইশে ক্ষতিগ্রস্তদের লিজ দলিল দিন

ছবি

সাতার শেখা জরুরি

গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়া : শিক্ষার্থীদের জন্য স্বস্তি নাকি ভোগান্তি?

ছবি

বন্ধ করা হোক ফিটনেসবিহীন যানবাহন

ছবি

অমর একুশে বইমেলা

tab

পাঠকের চিঠি

কেমন আছে জাতীয় ফুল শাপলা

বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশের জাতীয় ফুল শাপলা, আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রতীক, আজ বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে। শৈশবের সেই সাদা শাপলার সৌন্দর্য এবং এর সঙ্গে জড়িত স্মৃতিগুলো এখন কেবলই ফিকে হয়ে আসছে। একসময় গ্রামের খাল-বিল, ডোবা ও জলাশয়ে যে শাপলার সমারোহ দেখা যেত, আজ তা যেন চোখে পঙার মতো আর নেই। অতিরিক্ত জনসংখ্যা, অযতœ, অপরিকল্পিত নগরায়ণ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং কৃষিতে নির্বিচারে কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের ব্যবহার এই বিলুপ্তির প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।

শাপলার ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব অপরিসীম। এটি আমাদের দেশের পয়সা, টাকা ও সরকারি দলিলে চিত্রিত থাকে, যা জাতির পরিচয় বহন করে। প্রাকৃতিকভাবে খাল-বিলের পানিতে কোনো পরিচর্যা ছাড়াই এই ফুল ফুটে উঠত। এর সাদা রং যেমন আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে, তেমনই এটি জাতির ঐক্য ও সংহতির প্রতীক। কিন্তু আজকের দিনে গ্রামীণ জনপদে শাপলার সেই সাদামাটা সৌন্দর্য যেন হারিয়ে যেতে বসেছে। প্রবীণরা শৈশবের শাপলা ফুলে খেলার মিষ্টি স্মৃতিগুলোকে মনে করে আজও মুচকি হাসেন, কিন্তু সেই দৃশ্য আজ কেবল অতীত।

শাপলা কেবল সৌন্দর্যের প্রতীক নয়, এটি বহন করে আরও মূল্যবান গুণাবলি। এর ঔষধি গুণের মধ্যে রয়েছে হজম সমস্যা, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ এবং অতিরিক্ত পিপাসা নিবারণের ক্ষমতা। প্রাচীনকালে শাপলার লতা ও ডগা সবজি হিসেবে বিক্রি করে অনেকে তাদের জীবিকা নির্বাহ করত। কিন্তু এখন সেই দিনগুলোও যেন অতীতের মতো হারিয়ে যাচ্ছে।

অতিরিক্ত জনসংখ্যার চাপে, মানুষের মৌলিক চাহিদা মেটাতে কৃষিতে কীটনাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহারের মাধ্যমে শাপলার প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। খাল-বিল ও ডোবা ভরাট করে পুকুর ও ঘরবাডড় নির্মাণের ফলে শাপলার জন্মানোর স্থান ধীরে ধীরে সংকুচিত হয়ে পড়ছে। এক সময় যেখানে শাপলার সৌন্দর্য ছড়িয়ে থাকত, আজ সেখানে ইট-পাথরের ঘরবাড়ি মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। সেই স্মৃতিময় স্থানগুলো এখন শুধুই অতীতের ধোঁয়াশায় ঢাকা।

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবেও শাপলার অস্তিত্ব হুমকির মুখে। সঠিক সময়ে বৃষ্টি না হওয়া, খাল-বিলের পানি শুকিয়ে যাওয়া এবং লবণাক্ততার বৃদ্ধি শাপলার জন্মানোর প্রাকৃতিক পরিবেশকে ধ্বংস করছে। এর ফলে মাটিতে লুকিয়ে থাকা শাপলার বীজ এবং মা শালুক বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে শাপলা ফুলের সৌন্দর্য থেকে বঞ্চিত করবে।

শাপলা আমাদের জাতীয় পরিচয়ের অবিচ্ছেদ্য অংশ, আমাদের ঐতিহ্যের প্রতীক। এই ফুলের বিলুপ্তি আমাদের জাতীয় চেতনার একটি গভীর ক্ষতি ডেকে আনবে। শাপলা রক্ষায় এখনই কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা অপরিহার্য। নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত জাতীয় ফুলের এই মহিমাকে রক্ষায় দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা। তা না হলে, আগামী প্রজন্ম হয়তো আর কোনোদিন শাপলাকে জাতীয় ফুল হিসেবে দেখতে পাবে না। পুরোপুরি বিলুপ্ত হওয়ার আগেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে।

তামিম তুলি

back to top