শিশুশ্রম এবং শিশু নির্যাতনের মধ্যে একটি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। শিশুদের কাজে লাগানোর ফলে তারা শারীরিক ও মানসিকভাবে নিপীড়িত হয়, যা এক প্রকার নির্যাতন হিসেবে গণ্য হতে পারে। শিশুশ্রমে নিযুক্ত শিশুরা প্রায়ই নির্যাতনের শিকার হয়, বিশেষত যখন তাদের কাজ অত্যধিক পরিশ্রমী বা শোষণমূলক হয়। তাদের খাওয়ার বা বিশ্রামের সুযোগ কম থাকে, তারা অধিকাংশ সময়ই উপেক্ষিত থাকে এবং অনেক ক্ষেত্রেই শারীরিক বা মানসিকভাবে অপমানিত হতে হয়। এই সমস্ত পরিস্থিতি শিশুদের জীবনযাত্রার মান কমিয়ে দেয় এবং তাদের ভবিষ্যতের সুযোগ সংকুচিত করে।
শিশুশ্রম ও শিশু নির্যাতন রোধ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি একটি বৃহৎ সামাজিক দায়িত্ব। এ দুটি সমস্যা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন,যাতে শিশুদের নিরাপত্তা, অধিকার এবং সুস্থতা নিশ্চিত করা যায়।
শিশুশ্রমের অন্যতম কারণ হলো অল্প বয়সে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হওয়া। তাই সরকার এবং সমাজের উচিত শিশুদের জন্য সুলভ ও বাধাহীন শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। ফ্রি এবং বাধ্যতামূলক শিক্ষা প্রবর্তন করতে হবে, বিশেষত দরিদ্র এলাকায়।
শিশুশ্রমের প্রধান কারণ হলো দারিদ্র্য। দরিদ্র পরিবারগুলো তাদের সন্তানদের কাজে নিযুক্ত করে থাকে। দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য অর্থনৈতিক সহায়তা এবং সামাজিক নিরাপত্তা প্রকল্প চালু করা উচিত। সরকারি এবং এনজিও প্রতিষ্ঠানগুলো দরিদ্র পরিবারগুলোর জন্য অর্থনৈতিক সহায়তা এবং মাইক্রোফিন্যান্স সুবিধা দিতে পারে।
শিশুশ্রম রোধে কঠোর আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ করতে হবে। একই সঙ্গে শিশুদের অধিকার সম্পর্কেও পরিবার এবং সমাজের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। শিশুদের কাজের পরিবেশে নজরদারি বৃদ্ধি এবং শিশুশ্রমের সঙ্গে জড়িত সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি দেওয়া উচিত।
বিভিন্ন শিল্প-কারখানা এবং অন্যান্য কাজের জায়গায় শিশুদের উপস্থিতি খতিয়ে দেখতে হবে। পাড়া-মহল্লায় কর্মস্থলে শিশুদের কাজের অবস্থা নজরদারি করা যেতে পারে। পরিবারগুলোকে শিশুশ্রম থেকে মুক্ত রাখার জন্য তাদের প্রাথমিক চাহিদা মেটাতে সাহায্য করা উচিত, যাতে শিশুরা কর্মক্ষেত্রে যেতে বাধ্য না হয়।
সমাজিক প্রচারণা চালিয়ে শিশুশ্রম ও শিশু নির্যাতন রোধের জন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মিডিয়া, সেমিনার, ওর্য়াকশপের মাধ্যমে মানুষকে এসব বিষয়ে সচেতন করতে হবে। বিভিন্ন এনজিও এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা শিশুশ্রম ও নির্যাতন রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। তারা প্রচারণা চালাতে, সহয়তা প্রদান করতে এবং আইনি সাহায্য দিতে পারে। একে অপরকে সাহায্য করার জন্য পারিবারিক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা জরুরি। যদি কেউ কোনো শিশুর প্রতি নির্যাতন বা শোষণ দেখে, তারা যেন তা জানাতে সাহস পায়।
শিশুশ্রম এবং শিশু নির্যাতন রোধে সমাজের প্রতিটি স্তরের অবদান গুরুত্বপূর্ণ। সরকারের কঠোর আইন, সামাজিক সচেতনতা, পরিবার এবং স্কুলের সহয়তায় শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব। শিশুশ্রম ও শিশু নির্যাতন একটি সমাজের স্বাস্থ্য, উন্নয়ন এবং নৈতিকতার জন্য বড় হুমকি। সবাইকে একযোগভাবে কাজ করতে হবে যেন ভবিষ্যতের প্রজন্ম নিরাপদ, সুরক্ষিত এবং সুষ্ঠু পরিবেশে বেড়ে উঠতে পারে। শিশুদের অধিকার রক্ষা করা আমাদের সবারই নৈতিক দায়িত্ব।
হেনা শিকদার
শিক্ষার্থী, দর্শন বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪
শিশুশ্রম এবং শিশু নির্যাতনের মধ্যে একটি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। শিশুদের কাজে লাগানোর ফলে তারা শারীরিক ও মানসিকভাবে নিপীড়িত হয়, যা এক প্রকার নির্যাতন হিসেবে গণ্য হতে পারে। শিশুশ্রমে নিযুক্ত শিশুরা প্রায়ই নির্যাতনের শিকার হয়, বিশেষত যখন তাদের কাজ অত্যধিক পরিশ্রমী বা শোষণমূলক হয়। তাদের খাওয়ার বা বিশ্রামের সুযোগ কম থাকে, তারা অধিকাংশ সময়ই উপেক্ষিত থাকে এবং অনেক ক্ষেত্রেই শারীরিক বা মানসিকভাবে অপমানিত হতে হয়। এই সমস্ত পরিস্থিতি শিশুদের জীবনযাত্রার মান কমিয়ে দেয় এবং তাদের ভবিষ্যতের সুযোগ সংকুচিত করে।
শিশুশ্রম ও শিশু নির্যাতন রোধ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি একটি বৃহৎ সামাজিক দায়িত্ব। এ দুটি সমস্যা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন,যাতে শিশুদের নিরাপত্তা, অধিকার এবং সুস্থতা নিশ্চিত করা যায়।
শিশুশ্রমের অন্যতম কারণ হলো অল্প বয়সে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হওয়া। তাই সরকার এবং সমাজের উচিত শিশুদের জন্য সুলভ ও বাধাহীন শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। ফ্রি এবং বাধ্যতামূলক শিক্ষা প্রবর্তন করতে হবে, বিশেষত দরিদ্র এলাকায়।
শিশুশ্রমের প্রধান কারণ হলো দারিদ্র্য। দরিদ্র পরিবারগুলো তাদের সন্তানদের কাজে নিযুক্ত করে থাকে। দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য অর্থনৈতিক সহায়তা এবং সামাজিক নিরাপত্তা প্রকল্প চালু করা উচিত। সরকারি এবং এনজিও প্রতিষ্ঠানগুলো দরিদ্র পরিবারগুলোর জন্য অর্থনৈতিক সহায়তা এবং মাইক্রোফিন্যান্স সুবিধা দিতে পারে।
শিশুশ্রম রোধে কঠোর আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ করতে হবে। একই সঙ্গে শিশুদের অধিকার সম্পর্কেও পরিবার এবং সমাজের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। শিশুদের কাজের পরিবেশে নজরদারি বৃদ্ধি এবং শিশুশ্রমের সঙ্গে জড়িত সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি দেওয়া উচিত।
বিভিন্ন শিল্প-কারখানা এবং অন্যান্য কাজের জায়গায় শিশুদের উপস্থিতি খতিয়ে দেখতে হবে। পাড়া-মহল্লায় কর্মস্থলে শিশুদের কাজের অবস্থা নজরদারি করা যেতে পারে। পরিবারগুলোকে শিশুশ্রম থেকে মুক্ত রাখার জন্য তাদের প্রাথমিক চাহিদা মেটাতে সাহায্য করা উচিত, যাতে শিশুরা কর্মক্ষেত্রে যেতে বাধ্য না হয়।
সমাজিক প্রচারণা চালিয়ে শিশুশ্রম ও শিশু নির্যাতন রোধের জন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মিডিয়া, সেমিনার, ওর্য়াকশপের মাধ্যমে মানুষকে এসব বিষয়ে সচেতন করতে হবে। বিভিন্ন এনজিও এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা শিশুশ্রম ও নির্যাতন রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। তারা প্রচারণা চালাতে, সহয়তা প্রদান করতে এবং আইনি সাহায্য দিতে পারে। একে অপরকে সাহায্য করার জন্য পারিবারিক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা জরুরি। যদি কেউ কোনো শিশুর প্রতি নির্যাতন বা শোষণ দেখে, তারা যেন তা জানাতে সাহস পায়।
শিশুশ্রম এবং শিশু নির্যাতন রোধে সমাজের প্রতিটি স্তরের অবদান গুরুত্বপূর্ণ। সরকারের কঠোর আইন, সামাজিক সচেতনতা, পরিবার এবং স্কুলের সহয়তায় শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব। শিশুশ্রম ও শিশু নির্যাতন একটি সমাজের স্বাস্থ্য, উন্নয়ন এবং নৈতিকতার জন্য বড় হুমকি। সবাইকে একযোগভাবে কাজ করতে হবে যেন ভবিষ্যতের প্রজন্ম নিরাপদ, সুরক্ষিত এবং সুষ্ঠু পরিবেশে বেড়ে উঠতে পারে। শিশুদের অধিকার রক্ষা করা আমাদের সবারই নৈতিক দায়িত্ব।
হেনা শিকদার
শিক্ষার্থী, দর্শন বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়