alt

পাঠকের চিঠি

সবজির দাম, মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য, কৃষকের বঞ্চনা

: বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪

সবজি উৎপাদনের জন্য কৃষককে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। জমি প্রস্তুত থেকে শুরু করে বীজ বপন, পরিচর্যা, সেচ, কীটনাশক ব্যবহার, এবং ফসল সংগ্রহ পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে তাদের বিনিয়োগ করতে হয় শ্রম, সময় এবং অর্থ। পাশাপাশি সার, কীটনাশক, বীজ এবং জ্বালানির ক্রমাগত মূল্যবৃদ্ধি তাদের উৎপাদন খরচ বাড়িয়ে তোলে; কিন্তু যখন সেই উৎপাদিত ফসল বাজারে আসে, তখন কৃষক ন্যায্যমূল্য পায় না। মধ্যস্বত্বভোগীরা কম দামে কৃষকের কাছ থেকে ফসল কিনে বেশি দামে বিক্রি করে মুনাফা অর্জন করে। ফলে ভোক্তারা বেশি দামে সবজি কিনলেও এর সুফল কৃষক পান না।

মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে কৃষক ও ভোক্তার মধ্যে সরাসরি সংযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয় না। এই দালাল শ্রেণি কৃষি পণ্যের বাজার ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করে এবং ইচ্ছেমতো মূল্য নির্ধারণ করে। কৃষক বাধ্য হয়ে তাদের কাছে কম দামে ফসল বিক্রি করে দেয়, কারণ তারা সরাসরি বাজারে পণ্য নিয়ে যাওয়ার সুযোগ বা অবকাঠামো পায় না। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কৃষি উৎপাদনের মৌসুমে অতিরিক্ত সরবরাহের অজুহাতে তারা কৃষকের কাছ থেকে অতি কম দামে পণ্য কিনে নেয়। তবে খুচরা বাজারে এই পণ্য কয়েক গুণ বেশি দামে বিক্রি হয়, যা মূলত মধ্যস্বত্বভোগীদের মুনাফার সুযোগ সৃষ্টি করে।

সবজির উচ্চমূল্যের ফলে ভোক্তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। একটি সুষম অর্থনীতির জন্য বাজার ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা এবং মধ্যস্বত্বভোগীদের প্রভাব কমানো জরুরি। কৃষকদের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার জন্য সরকারের উচিত সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে সবজি সংগ্রহ করার উদ্যোগ নেওয়া। এক্ষেত্রে কোল্ড স্টোরেজ সুবিধা বাড়ানো, কৃষক বাজার তৈরি, এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে কৃষকদের সঙ্গে ভোক্তাদের সরাসরি সংযোগ স্থাপন করা অত্যন্ত কার্যকর হতে পারে।

তাছাড়া কৃষকদের জন্য ন্যায্যমূল্য নির্ধারণে একটি শক্তিশালী নীতিমালা প্রণয়ন করা প্রয়োজন। কৃষকদের উৎপাদন খরচ বিবেচনা করে সবজির মূল্য নির্ধারণ করা হলে তারা তাদের শ্রমের সঠিক মূল্য পাবেন। মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য কমাতে স্থানীয় প্রশাসনকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। এর পাশাপাশি কৃষকদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করতে সহজ শর্তে ঋণ প্রদান এবং প্রশিক্ষণ দেওয়া যেতে পারে।

কৃষক শুধু একটি পেশা নয়, এটি দেশের খাদ্য নিরাপত্তার ভিত্তি। অথচ মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে তাদের শ্রমের যথাযোগ্য মূল্য থেকে তারা বঞ্চিত। সবজির দাম বৃদ্ধি ভোক্তার ওপর চাপ বাড়ালেও তার সুফল যদি কৃষকের কাছে না পৌঁছায়, তবে এটি একটি অর্থনৈতিক বৈষম্যের উদাহরণ হয়ে দাঁড়ায়। কৃষকদের ন্যায্য পাওনা নিশ্চিত করতে হলে বাজার ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনতে হবে এবং মধ্যস্বত্বভোগীদের প্রভাব কমাতে হবে। তাহলেই কৃষি অর্থনীতি টেকসই হবে এবং কৃষক তার প্রাপ্য মর্যাদা ও অর্থনৈতিক সুরক্ষা পাবে।

হালিমা আক্তার হানি

শিক্ষার্থী, রাজশাহী কলেজ

সভ্যতার সঙ্গে প্রযুক্তির সম্পর্ক

পশুদের সুরক্ষায় এগিয়ে আসুন

দূষিত বায়ুতে জর্জরিত ঢাকা শহর

খাদ্যে উচ্চ মাত্রার লবণ গ্রহণ সম্পর্কে সতর্কতা

ছবি

রিও ভাইরাস : আতঙ্ক নয়, সচেতন হোন

ছবি

তীব্র গ্যাস সংকটে ভোগান্তিতে নগরবাসী

ছবি

হলুদ চাদরে জড়ানো বাংলার প্রান্তর

বন্যপ্রাণী সুরক্ষায় উদ্যোগ নিন

ঢাবির আবাসন সংকটের নিরসন কোথায়?

ভিক্ষার চালের দামও বেড়েছে

ছবি

দেওয়ালে পোস্টার লাগানো বন্ধ করুন

শিক্ষকদের সম্মান প্রসঙ্গে

নতুন বছরের অঙ্গীকার হোক নিরাপদ সড়ক

সংকটে ঘিওর স্বাস্থ্যকেন্দ্র

ছবি

সান্তাহার রেলওয়ে জংশনে যাত্রীদের দুর্ভোগ

ছাত্র সংসদ নির্বাচন

রক্তদানে সম্পৃক্ত হোন

নিজের স্বপ্ন অন্যের ওপর চাপিয়ে দেবেন না

ছবি

বুড়িগঙ্গা নদীর বেহাল অবস্থা

ছবি

বৃক্ষের দেহে পেরেক ঠোকা কেন

মাদককে না, ক্রীড়াকে হ্যাঁ বলুন

বায়ুদূষণ

শিক্ষকদের পেনশন প্রাপ্তিতে দুর্ভোগ

ছবি

রাজধানীতে ফিটনেসবিহীন বাস

শৃঙ্খলা ও শান্তির জন্য জননিরাপত্তা

¬তরুণদের সামাজিক কাজে উদ্বুুদ্ধ করতে হবে

মহাসড়কে কেন সিএনজিচালিত অটোরিকশা

মাধ্যমিক থেকেই চাই কর্মমুখী শিক্ষা

গণপরিবহনে নারীদের নিরাপত্তা জরুরি

যানজট নিরসনে পদক্ষেপ চাই

ছবি

নিপাহ ভাইরাস : আতঙ্ক নয়, প্রয়োজন সচেতনতা

ছবি

ব্যাটারিচালিত রিকশা

সারের সংকট ও কৃষকের দুর্ভোগ

সংস্কার আর সময়ের সমীকরণে নির্বাচন

বাণিজ্য মুক্ত হোক সান্ধ্যকোর্স

ছবি

ডে-কেয়ার সেন্টার

tab

পাঠকের চিঠি

সবজির দাম, মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য, কৃষকের বঞ্চনা

বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪

সবজি উৎপাদনের জন্য কৃষককে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। জমি প্রস্তুত থেকে শুরু করে বীজ বপন, পরিচর্যা, সেচ, কীটনাশক ব্যবহার, এবং ফসল সংগ্রহ পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে তাদের বিনিয়োগ করতে হয় শ্রম, সময় এবং অর্থ। পাশাপাশি সার, কীটনাশক, বীজ এবং জ্বালানির ক্রমাগত মূল্যবৃদ্ধি তাদের উৎপাদন খরচ বাড়িয়ে তোলে; কিন্তু যখন সেই উৎপাদিত ফসল বাজারে আসে, তখন কৃষক ন্যায্যমূল্য পায় না। মধ্যস্বত্বভোগীরা কম দামে কৃষকের কাছ থেকে ফসল কিনে বেশি দামে বিক্রি করে মুনাফা অর্জন করে। ফলে ভোক্তারা বেশি দামে সবজি কিনলেও এর সুফল কৃষক পান না।

মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে কৃষক ও ভোক্তার মধ্যে সরাসরি সংযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয় না। এই দালাল শ্রেণি কৃষি পণ্যের বাজার ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করে এবং ইচ্ছেমতো মূল্য নির্ধারণ করে। কৃষক বাধ্য হয়ে তাদের কাছে কম দামে ফসল বিক্রি করে দেয়, কারণ তারা সরাসরি বাজারে পণ্য নিয়ে যাওয়ার সুযোগ বা অবকাঠামো পায় না। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কৃষি উৎপাদনের মৌসুমে অতিরিক্ত সরবরাহের অজুহাতে তারা কৃষকের কাছ থেকে অতি কম দামে পণ্য কিনে নেয়। তবে খুচরা বাজারে এই পণ্য কয়েক গুণ বেশি দামে বিক্রি হয়, যা মূলত মধ্যস্বত্বভোগীদের মুনাফার সুযোগ সৃষ্টি করে।

সবজির উচ্চমূল্যের ফলে ভোক্তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। একটি সুষম অর্থনীতির জন্য বাজার ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা এবং মধ্যস্বত্বভোগীদের প্রভাব কমানো জরুরি। কৃষকদের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার জন্য সরকারের উচিত সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে সবজি সংগ্রহ করার উদ্যোগ নেওয়া। এক্ষেত্রে কোল্ড স্টোরেজ সুবিধা বাড়ানো, কৃষক বাজার তৈরি, এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে কৃষকদের সঙ্গে ভোক্তাদের সরাসরি সংযোগ স্থাপন করা অত্যন্ত কার্যকর হতে পারে।

তাছাড়া কৃষকদের জন্য ন্যায্যমূল্য নির্ধারণে একটি শক্তিশালী নীতিমালা প্রণয়ন করা প্রয়োজন। কৃষকদের উৎপাদন খরচ বিবেচনা করে সবজির মূল্য নির্ধারণ করা হলে তারা তাদের শ্রমের সঠিক মূল্য পাবেন। মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য কমাতে স্থানীয় প্রশাসনকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। এর পাশাপাশি কৃষকদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করতে সহজ শর্তে ঋণ প্রদান এবং প্রশিক্ষণ দেওয়া যেতে পারে।

কৃষক শুধু একটি পেশা নয়, এটি দেশের খাদ্য নিরাপত্তার ভিত্তি। অথচ মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে তাদের শ্রমের যথাযোগ্য মূল্য থেকে তারা বঞ্চিত। সবজির দাম বৃদ্ধি ভোক্তার ওপর চাপ বাড়ালেও তার সুফল যদি কৃষকের কাছে না পৌঁছায়, তবে এটি একটি অর্থনৈতিক বৈষম্যের উদাহরণ হয়ে দাঁড়ায়। কৃষকদের ন্যায্য পাওনা নিশ্চিত করতে হলে বাজার ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনতে হবে এবং মধ্যস্বত্বভোগীদের প্রভাব কমাতে হবে। তাহলেই কৃষি অর্থনীতি টেকসই হবে এবং কৃষক তার প্রাপ্য মর্যাদা ও অর্থনৈতিক সুরক্ষা পাবে।

হালিমা আক্তার হানি

শিক্ষার্থী, রাজশাহী কলেজ

back to top