alt

পাঠকের চিঠি

নিপাহ ভাইরাস : আতঙ্ক নয়, প্রয়োজন সচেতনতা

: বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

নিপাহ ভাইরাস হচ্ছে একটি ভাইরাসজনিত জুনোটিক ডিজিজ অর্থাৎ প্রাণীদের দেহ থেকে মানবশরীরে সংক্রমিত হওয়া ডিজিজ। যদিও নানা প্রাণী থেকে এ রোগ হতে পারে কিন্তু এদের মধ্যে সবার আগে বাদুড়ের নামটা চলে আসে। আক্রান্ত মানুষ থেকে মানুষেও ছড়াতে পারে এই রোগ। এ রোগের মৃত্যুর হার অনেক বেশি(৪০-৭৫%)।

শীতের আগমন মানেই যেন খেজুরের কাঁচা রস খাওয়ার এক বিলাসী প্রতিযোগিতা শুরু হয়। আমরা জানি, খেজুরের কাঁচা রসের সাথে নিপা ভাইরাস সংক্রমণের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। আর এই বিলাসী প্রতিযোগিতা আমাদের জন্য মরণব্যাধি হয়ে উঠে। চলতি বছর এখন পর্যন্ত পাঁচজন নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এবং পাঁচজনই মারা গেছেন।

নিপাহর যেহেতু কার্যকর কোন চিকিৎসা নেই কাজেই বাঁচতে হলে মানতে হবে সচেতনতা ও সাবধানতা। নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণ হলে কেউ কেউ উপসর্গহীন থাকতে পারে, কারো আবার শুধু সাধারণ জ্বর-কাশি দেখা দিতে পারে। তবে সবচেয়ে জটিল অবস্থা হলো, যখন মস্তিষ্কে সংক্রমণ বা এনকাফালাইটিস দেখা দেয়। নিপাহ ভাইরাস শরীরে প্রবেশের পাঁচ থেকে ১৪ দিন পর রোগের লক্ষণ প্রকাশিত হয়। তবে লক্ষণ প্রকাশ ছাড়াও ৪৫ দিন পর্যন্ত সুপ্ত অবস্থায় ভাইরাসটি শরীরের মধ্যে থাকতে পারে। শুরুতে প্রচ- জ্বর, মাথা ও পেশিতে ব্যথা, খিঁচুনি, শ্বাসকষ্ট, কাশি, পেটে ব্যথা, বমিভাব, দুর্বলতা ইত্যাদি দেখা দিতে পারে।

এই রোগে মস্তিষ্কে এনসেফালাইটিস-জাতীয় ভয়াবহ প্রদাহ দেখা দেয় এবং একপর্যায়ে রোগী প্রলাপ বকতে শুরু করে; ঘুমঘুম ভাব, মানসিক ভারসাম্যহীন এবং অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে। সময়মতো চিকিৎসা না হলে রোগী মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। আর যারা বেঁচে যায়, তারা অনেকেই স্মৃতি হারিয়ে ফেলে এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে না, এমনকি পঙ্গু হয়ে যেতে পারে চিরতরে।এমন পরিস্থিতিতে স্পষ্ট দৃশ্যমান যে,সচেতনতা ও সাবধানতার বিকল্প নেই। খেজুরের কাঁচা রস কোনভাবেই পান করা যাবে না। খেজুরের গুড়, রান্না করা খেজুর রসের পায়েস, পিঠা খাওয়া নিরাপদ।

গাছ থেকে খেজুর রস সংগ্রহের হাঁড়ি জাল বা পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। মেরু অঞ্চল আর মরুভূমি বাদ দিয়ে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে প্রায় ১৪০০ প্রজাতির বাদুড়। কোনভাবেই যেন বাদুড়ের লালা, মল, মূত্র খেজুর রসের সাথে মিশে না যায় সেদিকে সর্বোচ্চ সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে পাশাপাশি খেজুর রস সংগ্রহকারী গাছিয়া কে সতর্কতার সঙ্গে রস সংগ্রহ করতে হবে সেফটি মেনে। বাদুড়ে বা পাখি আংশিক খাওয়া ফলমূল খাওয়া যাবে না। বাজার থেকে ক্রয়কৃত ফল ভালোভাবে ধুয়ে খেতে হবে। নিপাহ ভাইরাসে আক্রমণ ব্যক্তির কাছে বিনা প্রয়োজনে কেউ যাবেন না। রোগীর সেবার জন্য মেডিকেল সেফটি মেনে সেবা করতে হবে। এক্ষেত্রে রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

নিপাহ ভাইরাস রোগের লক্ষ্মণ দেখা দিলে কালবিলম্ব না করে দ্রুততার সাথে নিকটস্থ সরকারি হসপিটালে নিয়ে যেতে হবে এবং রোগীতে সাহস দিতে হবে। আসুন, আমরা আতঙ্কিত না হয়ে সর্তক ও সচেতন হই তবেই মরণব্যাধি নিপাহ ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।

হাসান মাহমুদ শুভ

শিক্ষার্থী

ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ, গাজীপুর।

শিক্ষকদের বেতন-ভাতার বৈষম্য দূর করতে হবে

বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সংবাদ প্রসঙ্গে

মাটি কেটে নষ্ট হচ্ছে ফসলি জমি

পিঠা উৎসব : ঐতিহ্যের পুনরুত্থান ও জনপ্রিয়তা

পরিবেশ সুরক্ষায় সবুজ অর্থনীতি

পানির অপচয় রোধে সচেতনতা

নিরাপত্তায় মনোযোগ বাড়ানো জরুরি

ছবি

প্লাস্টিক দূষণ : সমাধানের পথ কী?

ছাত্রত্বহীন আদুভাইদের রাজনীতি বন্ধ হোক

অগ্নিকা- থেকে মুক্তির উপায় কী?

ছবি

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কাঁকড়া শিকার

ছবি

টিসিবির ট্রাকে চাল নেই কেন?

মেট্রোরেলে মশা

ছবি

গণপরিবহনে নারী আসনের অপ্রতুলতা

ছবি

অভিযান যেন একতরফা না হয়

পরিবহন ভাড়া কমান

ইন্টারনেট প্রযুক্তির গুরুত্ব

ছবি

বই নির্বাচন, বন্ধু নির্বাচনের মতো গুরুত্বপূর্ণ

অব্যবস্থাপনার দিকে মেট্রোরেল

সাহিত্যের সঙ্গে সাংবাদিকতার সম্পর্ক : বিশ্লেষণ

কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের সংস্কার চাই

খাল খনন করুন

ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

মুন্সীগঞ্জের মিরকাদিম পৌরসভার খাল ভরাটের কারণে বেহাল দশা

ছবি

রেলক্রসিং যেন মরণ ফাঁদ

ছবি

অবৈধ পথে ইউরোপ যাত্রা : স্বপ্ন নাকি মৃত্যুর ফাঁদ?

ছাতারপাইয়ায় রাস্তা সংস্কার জরুরি

বইয়ের আলোয় দূর হোক অন্ধকার

পোস্তগোলা রাস্তার শোচনীয় অবস্থা

কৃষক কাঁদে, ভোক্তাও কাঁদে

হতাশার আরেক নাম ভর্তি পরীক্ষা

চট্টগ্রামের পাঁচলাইশে ক্ষতিগ্রস্তদের লিজ দলিল দিন

ছবি

সাতার শেখা জরুরি

গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়া : শিক্ষার্থীদের জন্য স্বস্তি নাকি ভোগান্তি?

ছবি

বন্ধ করা হোক ফিটনেসবিহীন যানবাহন

ছবি

অমর একুশে বইমেলা

tab

পাঠকের চিঠি

নিপাহ ভাইরাস : আতঙ্ক নয়, প্রয়োজন সচেতনতা

বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

নিপাহ ভাইরাস হচ্ছে একটি ভাইরাসজনিত জুনোটিক ডিজিজ অর্থাৎ প্রাণীদের দেহ থেকে মানবশরীরে সংক্রমিত হওয়া ডিজিজ। যদিও নানা প্রাণী থেকে এ রোগ হতে পারে কিন্তু এদের মধ্যে সবার আগে বাদুড়ের নামটা চলে আসে। আক্রান্ত মানুষ থেকে মানুষেও ছড়াতে পারে এই রোগ। এ রোগের মৃত্যুর হার অনেক বেশি(৪০-৭৫%)।

শীতের আগমন মানেই যেন খেজুরের কাঁচা রস খাওয়ার এক বিলাসী প্রতিযোগিতা শুরু হয়। আমরা জানি, খেজুরের কাঁচা রসের সাথে নিপা ভাইরাস সংক্রমণের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। আর এই বিলাসী প্রতিযোগিতা আমাদের জন্য মরণব্যাধি হয়ে উঠে। চলতি বছর এখন পর্যন্ত পাঁচজন নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এবং পাঁচজনই মারা গেছেন।

নিপাহর যেহেতু কার্যকর কোন চিকিৎসা নেই কাজেই বাঁচতে হলে মানতে হবে সচেতনতা ও সাবধানতা। নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণ হলে কেউ কেউ উপসর্গহীন থাকতে পারে, কারো আবার শুধু সাধারণ জ্বর-কাশি দেখা দিতে পারে। তবে সবচেয়ে জটিল অবস্থা হলো, যখন মস্তিষ্কে সংক্রমণ বা এনকাফালাইটিস দেখা দেয়। নিপাহ ভাইরাস শরীরে প্রবেশের পাঁচ থেকে ১৪ দিন পর রোগের লক্ষণ প্রকাশিত হয়। তবে লক্ষণ প্রকাশ ছাড়াও ৪৫ দিন পর্যন্ত সুপ্ত অবস্থায় ভাইরাসটি শরীরের মধ্যে থাকতে পারে। শুরুতে প্রচ- জ্বর, মাথা ও পেশিতে ব্যথা, খিঁচুনি, শ্বাসকষ্ট, কাশি, পেটে ব্যথা, বমিভাব, দুর্বলতা ইত্যাদি দেখা দিতে পারে।

এই রোগে মস্তিষ্কে এনসেফালাইটিস-জাতীয় ভয়াবহ প্রদাহ দেখা দেয় এবং একপর্যায়ে রোগী প্রলাপ বকতে শুরু করে; ঘুমঘুম ভাব, মানসিক ভারসাম্যহীন এবং অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে। সময়মতো চিকিৎসা না হলে রোগী মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। আর যারা বেঁচে যায়, তারা অনেকেই স্মৃতি হারিয়ে ফেলে এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে না, এমনকি পঙ্গু হয়ে যেতে পারে চিরতরে।এমন পরিস্থিতিতে স্পষ্ট দৃশ্যমান যে,সচেতনতা ও সাবধানতার বিকল্প নেই। খেজুরের কাঁচা রস কোনভাবেই পান করা যাবে না। খেজুরের গুড়, রান্না করা খেজুর রসের পায়েস, পিঠা খাওয়া নিরাপদ।

গাছ থেকে খেজুর রস সংগ্রহের হাঁড়ি জাল বা পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। মেরু অঞ্চল আর মরুভূমি বাদ দিয়ে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে প্রায় ১৪০০ প্রজাতির বাদুড়। কোনভাবেই যেন বাদুড়ের লালা, মল, মূত্র খেজুর রসের সাথে মিশে না যায় সেদিকে সর্বোচ্চ সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে পাশাপাশি খেজুর রস সংগ্রহকারী গাছিয়া কে সতর্কতার সঙ্গে রস সংগ্রহ করতে হবে সেফটি মেনে। বাদুড়ে বা পাখি আংশিক খাওয়া ফলমূল খাওয়া যাবে না। বাজার থেকে ক্রয়কৃত ফল ভালোভাবে ধুয়ে খেতে হবে। নিপাহ ভাইরাসে আক্রমণ ব্যক্তির কাছে বিনা প্রয়োজনে কেউ যাবেন না। রোগীর সেবার জন্য মেডিকেল সেফটি মেনে সেবা করতে হবে। এক্ষেত্রে রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

নিপাহ ভাইরাস রোগের লক্ষ্মণ দেখা দিলে কালবিলম্ব না করে দ্রুততার সাথে নিকটস্থ সরকারি হসপিটালে নিয়ে যেতে হবে এবং রোগীতে সাহস দিতে হবে। আসুন, আমরা আতঙ্কিত না হয়ে সর্তক ও সচেতন হই তবেই মরণব্যাধি নিপাহ ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।

হাসান মাহমুদ শুভ

শিক্ষার্থী

ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ, গাজীপুর।

back to top