alt

পাঠকের চিঠি

পরিবেশ রক্ষায় জলাভূমির গুরুত্ব

: মঙ্গলবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২০

একসময় বলা হতো, গোয়াল ভরা গরু, পুকুর ভরা মাছ। কিন্তু ধীরে ধীরে জলাশয় ভরাট হওয়ায় আমরা মাছে-ভাতে বাঙালির পুরনো গৌরব হারিয়ে ফেলেছি। জীবন-জীবিকা ও পরিবেশের সুরক্ষা হুমকির সম্মুখীন। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা নদ-নদী, খাল-বিল, পুকুর-ডোবা, হাওর-বাঁওড়সহ প্রাকৃতিক জলাধারগুলো ব্যাপক ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়াও পরিবেশকে শীতল রাখা, বর্ষা মৌসুমে বন্যা প্রতিরোধ, শহরে জলাবদ্ধতা নিরসন, পানির চাহিদা পূরণ ও আবর্জনা পরিশোধনে জলাভূমিগুলোর গুরুত্ব অপরিসীম।

কিন্তু দুঃখের বিষয় সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শহরে-গ্রামে এখন জলাভূমি হারিয়ে যাচ্ছে। মানুষ নিজেদের ইচ্ছেমতো জলাভূমিগুলো ভরাট করছেন। অথচ জলাভূমিগুলো পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা, উদ্ভিদ ও প্রাণিকুলের টিকে থাকার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এদেশে নদী-নালা, খাল-বিল, পুকুর-ডোবা, হাওর-বাঁওড়ের অভাব নেই, শুধু সংরক্ষণ করার অভাব! গ্রাম, ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা ও শহর পর্যায়ে একের পর এক জলাভূমিগুলো ভরাট করা হচ্ছে।

‘প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন-২০০০’ অনুযায়ী কোনো পুকুর-জলাশয়, নদী-খাল ভরাট করা সম্পূর্ণ বেআইনি। আবার বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন-২০১০ অনুযায়ী জাতীয় অপরিহার্য স্বার্থ ছাড়া কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সরকারি বা আধা সরকারি, এমনকি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের বা ব্যক্তিমালিকানাধীন পুকুর বা জলাধার ভরাট করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কিন্তু পরিতাপের বিষয় বর্তমানে আইন অমান্য করে বহু প্রভাবশালী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান প্রাকৃতিক জলাভূমিগুলো ধ্বংস করে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করছেন। এর ফলে জলাভূমির ওপর নির্ভরশীল মানুষ ও জীববৈচিত্র্যের ওপর দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

শহরাঞ্চলে সুষ্ঠুভাবে বসবাসের জন্য জলাভূমির ব্যাপক প্রয়োজন রয়েছে। কেননা জলাভূমিগুলো নগরের তাৎক্ষণিক পানি সরবরাহের সবচেয়ে বড় উৎস। ২০১০ সালে যখন ঢাকার ‘ড্যাপ’ (ঢাকার বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা) বাস্তবায়নের ওপর জোর দেয়া হয়েছিল, তখন ভাবা হয়েছিল ঢাকার চারপাশের জলাভূমিগুলো রক্ষা পাবে। কিন্তু অপরিকল্পিত নগরায়ণ, ভূমিদস্যুতা ও প্রভাবশালীদের চাপে একের পর এক জলাভূমি হারিয়ে গেছে এবং যাচ্ছে। রাজধানী ঢাকা শহরে এক সময় প্রায় ২ হাজার পুকুর, ৫২টি খাল ও অসংখ্য ঝিল ছিল। কিন্তু এর বেশিরভাগই এখন আবাসনের চাহিদা মেটাতে নিচু জায়গা ভরাট করতে গিয়ে ধ্বংস করে ফেলা হচ্ছে। শুধু ঢাকা সিটি করপোরেশন এলাকা থেকে বছরে প্রায় ৫ হাজার একর জলাভূমি হারিয়ে যাচ্ছে। আর এভাবে সারা দেশে প্রতিবছর গড়ে প্রায় ৪২ হাজার একর জলাধার ভরাট করা হচ্ছে। রাজধানী ঢাকা শহরে জলাভূমি ভরাটের বিরূপ প্রভাব পড়েছে। বেশিরভাগ খাল ও নিচু জায়গা ভরাট করে ফেলার ফলে এখন একটু বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতায় পড়তে হয় নগরবাসীকে।

‘নদ-নদীর দেশ’ হিসেবে খ্যাত বাংলাদেশ থেকে একের পর এক জলাভূমি হারিয়ে যাওয়া মানে জেনে-বুঝে দেশের ক্ষতি ডেকে আনা। জলাভূমিগুলো হারিয়ে যাওয়ার ফলে জলাভূমিনির্ভর প্রান্তিক মানুষের জীবন-জীবিকার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। জলাভূমিগুলো আমাদের সম্পদ, জীববৈচিত্র্যের আধার। জলবায়ু পরিবর্তনের এ পরিবর্তনশীল বাস্তবতায় জলাধারগুলো রক্ষা করা এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

মো. জিল্লুর রহমান

শিক্ষকদের বেতন-ভাতার বৈষম্য দূর করতে হবে

বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সংবাদ প্রসঙ্গে

মাটি কেটে নষ্ট হচ্ছে ফসলি জমি

পিঠা উৎসব : ঐতিহ্যের পুনরুত্থান ও জনপ্রিয়তা

পরিবেশ সুরক্ষায় সবুজ অর্থনীতি

পানির অপচয় রোধে সচেতনতা

নিরাপত্তায় মনোযোগ বাড়ানো জরুরি

ছবি

প্লাস্টিক দূষণ : সমাধানের পথ কী?

ছাত্রত্বহীন আদুভাইদের রাজনীতি বন্ধ হোক

অগ্নিকা- থেকে মুক্তির উপায় কী?

ছবি

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কাঁকড়া শিকার

ছবি

টিসিবির ট্রাকে চাল নেই কেন?

মেট্রোরেলে মশা

ছবি

গণপরিবহনে নারী আসনের অপ্রতুলতা

ছবি

অভিযান যেন একতরফা না হয়

পরিবহন ভাড়া কমান

ইন্টারনেট প্রযুক্তির গুরুত্ব

ছবি

বই নির্বাচন, বন্ধু নির্বাচনের মতো গুরুত্বপূর্ণ

অব্যবস্থাপনার দিকে মেট্রোরেল

সাহিত্যের সঙ্গে সাংবাদিকতার সম্পর্ক : বিশ্লেষণ

কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের সংস্কার চাই

খাল খনন করুন

ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

মুন্সীগঞ্জের মিরকাদিম পৌরসভার খাল ভরাটের কারণে বেহাল দশা

ছবি

রেলক্রসিং যেন মরণ ফাঁদ

ছবি

অবৈধ পথে ইউরোপ যাত্রা : স্বপ্ন নাকি মৃত্যুর ফাঁদ?

ছাতারপাইয়ায় রাস্তা সংস্কার জরুরি

বইয়ের আলোয় দূর হোক অন্ধকার

পোস্তগোলা রাস্তার শোচনীয় অবস্থা

কৃষক কাঁদে, ভোক্তাও কাঁদে

হতাশার আরেক নাম ভর্তি পরীক্ষা

চট্টগ্রামের পাঁচলাইশে ক্ষতিগ্রস্তদের লিজ দলিল দিন

ছবি

সাতার শেখা জরুরি

গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়া : শিক্ষার্থীদের জন্য স্বস্তি নাকি ভোগান্তি?

ছবি

বন্ধ করা হোক ফিটনেসবিহীন যানবাহন

ছবি

অমর একুশে বইমেলা

tab

পাঠকের চিঠি

পরিবেশ রক্ষায় জলাভূমির গুরুত্ব

মঙ্গলবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২০

একসময় বলা হতো, গোয়াল ভরা গরু, পুকুর ভরা মাছ। কিন্তু ধীরে ধীরে জলাশয় ভরাট হওয়ায় আমরা মাছে-ভাতে বাঙালির পুরনো গৌরব হারিয়ে ফেলেছি। জীবন-জীবিকা ও পরিবেশের সুরক্ষা হুমকির সম্মুখীন। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা নদ-নদী, খাল-বিল, পুকুর-ডোবা, হাওর-বাঁওড়সহ প্রাকৃতিক জলাধারগুলো ব্যাপক ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়াও পরিবেশকে শীতল রাখা, বর্ষা মৌসুমে বন্যা প্রতিরোধ, শহরে জলাবদ্ধতা নিরসন, পানির চাহিদা পূরণ ও আবর্জনা পরিশোধনে জলাভূমিগুলোর গুরুত্ব অপরিসীম।

কিন্তু দুঃখের বিষয় সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শহরে-গ্রামে এখন জলাভূমি হারিয়ে যাচ্ছে। মানুষ নিজেদের ইচ্ছেমতো জলাভূমিগুলো ভরাট করছেন। অথচ জলাভূমিগুলো পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা, উদ্ভিদ ও প্রাণিকুলের টিকে থাকার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এদেশে নদী-নালা, খাল-বিল, পুকুর-ডোবা, হাওর-বাঁওড়ের অভাব নেই, শুধু সংরক্ষণ করার অভাব! গ্রাম, ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা ও শহর পর্যায়ে একের পর এক জলাভূমিগুলো ভরাট করা হচ্ছে।

‘প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন-২০০০’ অনুযায়ী কোনো পুকুর-জলাশয়, নদী-খাল ভরাট করা সম্পূর্ণ বেআইনি। আবার বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন-২০১০ অনুযায়ী জাতীয় অপরিহার্য স্বার্থ ছাড়া কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সরকারি বা আধা সরকারি, এমনকি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের বা ব্যক্তিমালিকানাধীন পুকুর বা জলাধার ভরাট করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কিন্তু পরিতাপের বিষয় বর্তমানে আইন অমান্য করে বহু প্রভাবশালী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান প্রাকৃতিক জলাভূমিগুলো ধ্বংস করে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করছেন। এর ফলে জলাভূমির ওপর নির্ভরশীল মানুষ ও জীববৈচিত্র্যের ওপর দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

শহরাঞ্চলে সুষ্ঠুভাবে বসবাসের জন্য জলাভূমির ব্যাপক প্রয়োজন রয়েছে। কেননা জলাভূমিগুলো নগরের তাৎক্ষণিক পানি সরবরাহের সবচেয়ে বড় উৎস। ২০১০ সালে যখন ঢাকার ‘ড্যাপ’ (ঢাকার বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা) বাস্তবায়নের ওপর জোর দেয়া হয়েছিল, তখন ভাবা হয়েছিল ঢাকার চারপাশের জলাভূমিগুলো রক্ষা পাবে। কিন্তু অপরিকল্পিত নগরায়ণ, ভূমিদস্যুতা ও প্রভাবশালীদের চাপে একের পর এক জলাভূমি হারিয়ে গেছে এবং যাচ্ছে। রাজধানী ঢাকা শহরে এক সময় প্রায় ২ হাজার পুকুর, ৫২টি খাল ও অসংখ্য ঝিল ছিল। কিন্তু এর বেশিরভাগই এখন আবাসনের চাহিদা মেটাতে নিচু জায়গা ভরাট করতে গিয়ে ধ্বংস করে ফেলা হচ্ছে। শুধু ঢাকা সিটি করপোরেশন এলাকা থেকে বছরে প্রায় ৫ হাজার একর জলাভূমি হারিয়ে যাচ্ছে। আর এভাবে সারা দেশে প্রতিবছর গড়ে প্রায় ৪২ হাজার একর জলাধার ভরাট করা হচ্ছে। রাজধানী ঢাকা শহরে জলাভূমি ভরাটের বিরূপ প্রভাব পড়েছে। বেশিরভাগ খাল ও নিচু জায়গা ভরাট করে ফেলার ফলে এখন একটু বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতায় পড়তে হয় নগরবাসীকে।

‘নদ-নদীর দেশ’ হিসেবে খ্যাত বাংলাদেশ থেকে একের পর এক জলাভূমি হারিয়ে যাওয়া মানে জেনে-বুঝে দেশের ক্ষতি ডেকে আনা। জলাভূমিগুলো হারিয়ে যাওয়ার ফলে জলাভূমিনির্ভর প্রান্তিক মানুষের জীবন-জীবিকার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। জলাভূমিগুলো আমাদের সম্পদ, জীববৈচিত্র্যের আধার। জলবায়ু পরিবর্তনের এ পরিবর্তনশীল বাস্তবতায় জলাধারগুলো রক্ষা করা এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

মো. জিল্লুর রহমান

back to top