বৈষম্যবিরোধী মামলায়ৃ গাজীপুর জেলার কতটি ইউনিয়ন পরিষদের কয়জন চেয়ারম্যান অভিযুক্ত হয়ে কারাগারে বা পলাতক রয়েছেন, তার কোন তথ্য নেই জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার শাখায়। ফলে পালিয়ে থেকেও তাদের দায়িত্ব পালনের খবর নিয়ে নানা আলোচনা, সমালোচনা শুরু হয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, গাজীপুর জেলার ৫টি উপজেলার ৩৯টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে প্রশাসক নিয়োগ করা হয়েছে ৬টিতে, ১৫টিতে প্যানেল চেয়ারম্যানরা দায়িত্ব পালন করছেন। বাকী ১৮টিতে পূর্বের চেয়ারম্যানরাই দায়িত্ব পালন করছেন। সরকারি প্রজ্ঞাপন দিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন আদেশ জারি করলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। গাজীপুর জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগ, ইউনিয়ন পরিষদের দেখভাল করার কথা থাকলেও তারা সঠিক তথ্য পাচ্ছে না। চেয়ারম্যানদের আস্থাভাজন গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে উপস্থিতির খবর সংগ্রহ করায় স্থানীয় সরকার বিভাগ প্রকৃত তথ্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এতে জনগণ সেবার নামে ভোগান্তি ও হয়রানীর শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত।
জানা যায়, জেলার গাজীপুর সদরে ৪টি, কালিগঞ্জে ৭টি, কাপাসিয়া ১১টি, শ্রীপুরে ৮টি ও কালিয়াকৈর ৭টি ইউনিয়নসহ মোট ৩৯টি ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে। ৫ আগষ্টের পর এসব ইউপির চেয়ারম্যানরা সকলেই গা ঢাকা দেয়। এরপর থেকে বেশ কিছু পরিষদে প্যানেল চেয়ারম্যান দিলেও কয়েকটিতে স্থানীয় বিএনপির আন্দোলনের মুখে প্রশাসক নিয়োগ দেয় সরকার। বর্তমানে ৩৩টি ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান ও প্যানেল চেয়ারম্যানরা দায়িত্ব পালন করলেও কেউ স্বশরীরে পরিষদে বসেন না। সপ্তাহে সুবিধাজনক সময়ে চেয়ারে বসে ছবি তোলে স্থানীয় সরকারকে জানিয়ে দেন যে তারা দায়িত্ব পালন করছেন। তাছাড়া পরিষদের সচিবরা অজ্ঞাত স্থান থেকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনকরা চেয়ারম্যান ও প্যানেল চেয়ারম্যানদের বাসায় গিয়ে গোপনে স্বাক্ষর এনে কাজ চালিয়ে দিচ্ছেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, গাজীপুর সদর উপজেলার বাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী মামলায় কারাভোগ করেন। মুক্তি পেয়ে তিনি বাড়িতে বসে চেয়ারম্যান পদে বহাল থেকে দায়িত্ব পালন করছেন সচিবের মাধ্যমে। কাপাসিয়া উপজেলার সকল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের নামে বৈষম্যবিরোধী মামলা আছে ও তারা পলাতক, তারা কেউ আদালত থেকে জামিন নেননি। জামিন না নিয়ে পলাতক অবস্থায় কিভাবে এসব চেয়ারম্যান দায়িত্ব পালন করছেন, তার কোন উত্তর গাজীপুর স্থানীয় সরকার বিভাগের কাছে নেই।
গাজীপুর স্থানীয় সরকার বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, কাপাসিয়া উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে ১টিতে প্রশাসক, ৬টিতে প্যানেল চেয়ারম্যান দায়িত্ব পালন করছেন। বাকী সিংহ্শ্রী, সনমানিয়া, চাঁদপুর ও দূর্গাপুর এ ৪টিতে পূর্বের চেয়ারম্যানগণরাই নিয়মিত অফিস করছেন বলে জানায় ঝেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার শাখা।
কিন্তু, অনুন্ধানকালে কাপাসিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাহমুদুল হাসান জানান, কাপাসিয়ার সকল ইউপি চেয়ারম্যানের নামে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলার অভিযোগে মামলা হয়েছে। তাদের মধ্যে রায়েদ, টোক, বারিষাব, তরগাঁও ও চাদপুর ইউপি চেয়ারম্যান জামিনে আছেন, সিংহশ্রীর চেয়ারম্যান গ্রেফতার হয়েছেন, বাকিরা পলাতক। এ তথ্য অনুযায়ী, দায়িত্বপালনকারী ৪ চেয়ারম্যানের মধ্যে একজন গ্রেফতার অবস্থায়, একজন জামিনে থেকে ও বাকী দুইজন পলাতক থেকে দায়িত্ব পালন করছেন। এলাকাবাসীর প্রশ্ন- গ্রেফতার হয়ে বা পলাতক থেকে কিভাবে তারা দায়িত্ব পালন করছেন? একই ধরণের অভিযোগ জেলার আরো কয়েকটি ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্ব পালনকারী চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধেও রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কাপাসিয়া উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়ন পরিষদের এক সদস্য সংবাদকে বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের জন্মনিবন্ধন, মৃত্যু সনদ, নাগরিক সনদ, ওয়ারিশ সনদ, প্রত্যয়নপত্র, ট্রেড লাইসেন্সসহ বিভিন্ন নাগরিক সেবা পেতে নানা ধরনের ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। মাঝে মধ্যে অফিসের বাহিরে চেয়ারম্যানের দেখা পাওয়া গেলেও দপ্তরে পাওয়া যায় না। পরিষদটির সাধারণ সেবা পেতে আগের থেকে এখন কয়েকগুণ সময় বেশি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ জনগণকে। তাঁর প্রশ্ন- ইউনিয়ন পরিষদের এই ভোগান্তি কি দূর হবে না? দেখার কি কেউ নেই?
এ বিষয়ে গাজীপুর জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাসিবুর রহমান সংবাদকে বলেন, চেয়ারম্যানদের বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলার কোন তথ্য নেই আমাদের কাছে। চেয়ারম্যানরা অনুপস্থিত থাকলে আমরা প্যানেল চেয়ারম্যান বা প্রশাসক দিচ্ছি।
গাজীপুর জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ওয়াহিদ হোসেন সংবাদকে বলেন, “এগুলি নিয়ে আমারা কাজ করছি। এটা চলমান প্রক্রিয়া। আপনি এই তথ্যটা যেটা দিলেন এটা আমরা ভেরিফাই করে দেখব, ডিসি স্যার কে জানাবো উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রতিবেদন এনে সেটার আলোকে ব্যবস্থা নিব।”
সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫
বৈষম্যবিরোধী মামলায়ৃ গাজীপুর জেলার কতটি ইউনিয়ন পরিষদের কয়জন চেয়ারম্যান অভিযুক্ত হয়ে কারাগারে বা পলাতক রয়েছেন, তার কোন তথ্য নেই জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার শাখায়। ফলে পালিয়ে থেকেও তাদের দায়িত্ব পালনের খবর নিয়ে নানা আলোচনা, সমালোচনা শুরু হয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, গাজীপুর জেলার ৫টি উপজেলার ৩৯টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে প্রশাসক নিয়োগ করা হয়েছে ৬টিতে, ১৫টিতে প্যানেল চেয়ারম্যানরা দায়িত্ব পালন করছেন। বাকী ১৮টিতে পূর্বের চেয়ারম্যানরাই দায়িত্ব পালন করছেন। সরকারি প্রজ্ঞাপন দিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন আদেশ জারি করলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। গাজীপুর জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগ, ইউনিয়ন পরিষদের দেখভাল করার কথা থাকলেও তারা সঠিক তথ্য পাচ্ছে না। চেয়ারম্যানদের আস্থাভাজন গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে উপস্থিতির খবর সংগ্রহ করায় স্থানীয় সরকার বিভাগ প্রকৃত তথ্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এতে জনগণ সেবার নামে ভোগান্তি ও হয়রানীর শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত।
জানা যায়, জেলার গাজীপুর সদরে ৪টি, কালিগঞ্জে ৭টি, কাপাসিয়া ১১টি, শ্রীপুরে ৮টি ও কালিয়াকৈর ৭টি ইউনিয়নসহ মোট ৩৯টি ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে। ৫ আগষ্টের পর এসব ইউপির চেয়ারম্যানরা সকলেই গা ঢাকা দেয়। এরপর থেকে বেশ কিছু পরিষদে প্যানেল চেয়ারম্যান দিলেও কয়েকটিতে স্থানীয় বিএনপির আন্দোলনের মুখে প্রশাসক নিয়োগ দেয় সরকার। বর্তমানে ৩৩টি ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান ও প্যানেল চেয়ারম্যানরা দায়িত্ব পালন করলেও কেউ স্বশরীরে পরিষদে বসেন না। সপ্তাহে সুবিধাজনক সময়ে চেয়ারে বসে ছবি তোলে স্থানীয় সরকারকে জানিয়ে দেন যে তারা দায়িত্ব পালন করছেন। তাছাড়া পরিষদের সচিবরা অজ্ঞাত স্থান থেকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনকরা চেয়ারম্যান ও প্যানেল চেয়ারম্যানদের বাসায় গিয়ে গোপনে স্বাক্ষর এনে কাজ চালিয়ে দিচ্ছেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, গাজীপুর সদর উপজেলার বাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী মামলায় কারাভোগ করেন। মুক্তি পেয়ে তিনি বাড়িতে বসে চেয়ারম্যান পদে বহাল থেকে দায়িত্ব পালন করছেন সচিবের মাধ্যমে। কাপাসিয়া উপজেলার সকল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের নামে বৈষম্যবিরোধী মামলা আছে ও তারা পলাতক, তারা কেউ আদালত থেকে জামিন নেননি। জামিন না নিয়ে পলাতক অবস্থায় কিভাবে এসব চেয়ারম্যান দায়িত্ব পালন করছেন, তার কোন উত্তর গাজীপুর স্থানীয় সরকার বিভাগের কাছে নেই।
গাজীপুর স্থানীয় সরকার বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, কাপাসিয়া উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে ১টিতে প্রশাসক, ৬টিতে প্যানেল চেয়ারম্যান দায়িত্ব পালন করছেন। বাকী সিংহ্শ্রী, সনমানিয়া, চাঁদপুর ও দূর্গাপুর এ ৪টিতে পূর্বের চেয়ারম্যানগণরাই নিয়মিত অফিস করছেন বলে জানায় ঝেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার শাখা।
কিন্তু, অনুন্ধানকালে কাপাসিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাহমুদুল হাসান জানান, কাপাসিয়ার সকল ইউপি চেয়ারম্যানের নামে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলার অভিযোগে মামলা হয়েছে। তাদের মধ্যে রায়েদ, টোক, বারিষাব, তরগাঁও ও চাদপুর ইউপি চেয়ারম্যান জামিনে আছেন, সিংহশ্রীর চেয়ারম্যান গ্রেফতার হয়েছেন, বাকিরা পলাতক। এ তথ্য অনুযায়ী, দায়িত্বপালনকারী ৪ চেয়ারম্যানের মধ্যে একজন গ্রেফতার অবস্থায়, একজন জামিনে থেকে ও বাকী দুইজন পলাতক থেকে দায়িত্ব পালন করছেন। এলাকাবাসীর প্রশ্ন- গ্রেফতার হয়ে বা পলাতক থেকে কিভাবে তারা দায়িত্ব পালন করছেন? একই ধরণের অভিযোগ জেলার আরো কয়েকটি ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্ব পালনকারী চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধেও রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কাপাসিয়া উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়ন পরিষদের এক সদস্য সংবাদকে বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের জন্মনিবন্ধন, মৃত্যু সনদ, নাগরিক সনদ, ওয়ারিশ সনদ, প্রত্যয়নপত্র, ট্রেড লাইসেন্সসহ বিভিন্ন নাগরিক সেবা পেতে নানা ধরনের ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। মাঝে মধ্যে অফিসের বাহিরে চেয়ারম্যানের দেখা পাওয়া গেলেও দপ্তরে পাওয়া যায় না। পরিষদটির সাধারণ সেবা পেতে আগের থেকে এখন কয়েকগুণ সময় বেশি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ জনগণকে। তাঁর প্রশ্ন- ইউনিয়ন পরিষদের এই ভোগান্তি কি দূর হবে না? দেখার কি কেউ নেই?
এ বিষয়ে গাজীপুর জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাসিবুর রহমান সংবাদকে বলেন, চেয়ারম্যানদের বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলার কোন তথ্য নেই আমাদের কাছে। চেয়ারম্যানরা অনুপস্থিত থাকলে আমরা প্যানেল চেয়ারম্যান বা প্রশাসক দিচ্ছি।
গাজীপুর জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ওয়াহিদ হোসেন সংবাদকে বলেন, “এগুলি নিয়ে আমারা কাজ করছি। এটা চলমান প্রক্রিয়া। আপনি এই তথ্যটা যেটা দিলেন এটা আমরা ভেরিফাই করে দেখব, ডিসি স্যার কে জানাবো উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রতিবেদন এনে সেটার আলোকে ব্যবস্থা নিব।”