শেরপুর : কফি খেত পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষক -সংবাদ
শেরপুরের সমতল অঞ্চলে প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে কফি চাষ। এতে করে কফি চাষ কৃষি অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনার মাত্রা যোগ করেছে। আর তাতে মিলছে ভালো ফল। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, চাষের পরিধি বাড়লে কৃষকদের প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করা হবে। শেরপুরে প্রথম বারের মত এই কফি চাষ করছেন কৃষি উদ্দোক্তা কৃষিবিদ সাজ্জাদ হোসাইন তুলিপ।
কফি চারা রোপণের ২ বছর পর ফল দিতে শুরু করে এবং এটি টিকে থাকে ৩০ বছর পর্যন্ত। ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারিতে চেরি ফল সংগ্রহের পর পালপিং, রোদে শুকিয়ে পার্চমেন্ট করে বাদামের মতো অংশ বের করে এবং রোস্টিংয়ের মাধ্যমে তৈরি হয় রোস্টেড কফি বিন
তিনি ইতিমধ্যে চীনা জাতের ঋ১ বোরো হাইব্রীড বীজ ধান নিয়েও কাজ করছেন। কৃষিবিদ তুলিপ জানান, ২০২১ সালে আমি বান্দরবানে চাকরির সুবাদে কফি চাষের অভিজ্ঞতা অর্জণ করেছি। এরপর শেরপুরের নিজ এলাকা নালিতাবাড়ী উপজেলার নিজ গ্রামে ২৫০টি কফির চারা নিয়ে পরীক্ষামূলক চাষ শুরু করেন। সফলতা পাওয়ায় ২০২২ সালে রোপণ করেন ১ হাজার কফির চারা। এখন তার ৩ বিঘা জমিতে রয়েছে ৮০০টি কফি গাছ। তারই ধারাবাহিকতায় ‘তুলিপ কফি ফার্মিং এন্ড রোস্টারিং’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন উদ্যোক্তা কৃষিবিদ সাজ্জাদ হোসেন তুলিপ। কফি চাষি তুলিপ আরো বলেন, আমার খামারে ‘৬ থেকে ৭শ’ গাছ রয়েছে যেগুলো থেকে ইতিমধ্যে ফল সংগ্রহ করে আমি বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করে দিয়েছি।
তার প্রতিষ্ঠান কফির চারা উৎপাদন, চাষ সম্প্রসারণ, রোস্টিং ও বাজারজাত করে সফলতা পাওয়ায় স্থানীয়ভাবে কফি চাষে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। বর্তমানে তার এই খামারে এখনও ২০ হাজারের অধিক চারা আছে। এছাড়া শেরপুরের ৫ উপজেলা ছাড়াও আশপাশের কয়েকটি জেলার কৃষকদের মাঝে প্রায় ৫০ হাজার কফি চারা বিনামূল্যে বিতরন করেছেন তিনি। কফি চারা রোপণের ২ বছর পর ফল দিতে শুরু করে এবং এটি টিকে থাকে ৩০ বছর পর্যন্ত। ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারিতে চেরি ফল সংগ্রহের পর পালপিং, রোদে শুকিয়ে পার্চমেন্ট করে বাদামের মত অংশ বের করে এবং রোস্টিংয়ের মাধ্যমে তৈরি হয় রোস্টেড কফি বিন।
একটি পরিপক্ব গাছ থেকে বছরে ৫ থেকে ৬ কেজি চেরি ফল পাওয়া যায়। যা থেকে ১ কেজি রোস্টেড বিন তৈরি হয়। যার বাজার মূল্য প্রায় ২ হাজার টাকা। বাড়ির পতিত জমি বা ছায়াযুক্ত স্থানে কফি গাছ রোপণ করা যায়।বাংলাদেশে বছরে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার কফি আমদানি করা হয়। দেশে বাণিজ্যিকভাবে কফি চাষ সফল হলে আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে দেশের অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারবে এই ফসল।
শেরপুরের কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, কফি চাষের উপযোগী মাটি ও আবহাওয়া এখানে রয়েছে। সেই অনুযায়ী কৃষকদের কফি চাষের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
ইতোমধ্যে প্রায় ৬০ হাজার চারা আগ্রহী কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে এবং শতাধিক কৃষককে কফি চাষের বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও উপকরণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। শেরপুরের শ্রীবরদি, ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার পাহাড়ি এলাকার সমতল ভূমিতেও কফি চাষে ব্যাপক সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। তাছাড়া গারো পাহাড়ের অব্যবহৃত জমিকে কফি চাষের আওতায় আনতে আগামী দুই বছরে প্রায় দুই লাখ চারা বিনামুল্যে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। তাই কফি চাষে আগ্রহী কৃষকদের পরামর্শ ও সহযোগিতা আশ্বাস দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
শেরপুর : কফি খেত পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষক -সংবাদ
বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫
শেরপুরের সমতল অঞ্চলে প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে কফি চাষ। এতে করে কফি চাষ কৃষি অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনার মাত্রা যোগ করেছে। আর তাতে মিলছে ভালো ফল। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, চাষের পরিধি বাড়লে কৃষকদের প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করা হবে। শেরপুরে প্রথম বারের মত এই কফি চাষ করছেন কৃষি উদ্দোক্তা কৃষিবিদ সাজ্জাদ হোসাইন তুলিপ।
কফি চারা রোপণের ২ বছর পর ফল দিতে শুরু করে এবং এটি টিকে থাকে ৩০ বছর পর্যন্ত। ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারিতে চেরি ফল সংগ্রহের পর পালপিং, রোদে শুকিয়ে পার্চমেন্ট করে বাদামের মতো অংশ বের করে এবং রোস্টিংয়ের মাধ্যমে তৈরি হয় রোস্টেড কফি বিন
তিনি ইতিমধ্যে চীনা জাতের ঋ১ বোরো হাইব্রীড বীজ ধান নিয়েও কাজ করছেন। কৃষিবিদ তুলিপ জানান, ২০২১ সালে আমি বান্দরবানে চাকরির সুবাদে কফি চাষের অভিজ্ঞতা অর্জণ করেছি। এরপর শেরপুরের নিজ এলাকা নালিতাবাড়ী উপজেলার নিজ গ্রামে ২৫০টি কফির চারা নিয়ে পরীক্ষামূলক চাষ শুরু করেন। সফলতা পাওয়ায় ২০২২ সালে রোপণ করেন ১ হাজার কফির চারা। এখন তার ৩ বিঘা জমিতে রয়েছে ৮০০টি কফি গাছ। তারই ধারাবাহিকতায় ‘তুলিপ কফি ফার্মিং এন্ড রোস্টারিং’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন উদ্যোক্তা কৃষিবিদ সাজ্জাদ হোসেন তুলিপ। কফি চাষি তুলিপ আরো বলেন, আমার খামারে ‘৬ থেকে ৭শ’ গাছ রয়েছে যেগুলো থেকে ইতিমধ্যে ফল সংগ্রহ করে আমি বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করে দিয়েছি।
তার প্রতিষ্ঠান কফির চারা উৎপাদন, চাষ সম্প্রসারণ, রোস্টিং ও বাজারজাত করে সফলতা পাওয়ায় স্থানীয়ভাবে কফি চাষে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। বর্তমানে তার এই খামারে এখনও ২০ হাজারের অধিক চারা আছে। এছাড়া শেরপুরের ৫ উপজেলা ছাড়াও আশপাশের কয়েকটি জেলার কৃষকদের মাঝে প্রায় ৫০ হাজার কফি চারা বিনামূল্যে বিতরন করেছেন তিনি। কফি চারা রোপণের ২ বছর পর ফল দিতে শুরু করে এবং এটি টিকে থাকে ৩০ বছর পর্যন্ত। ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারিতে চেরি ফল সংগ্রহের পর পালপিং, রোদে শুকিয়ে পার্চমেন্ট করে বাদামের মত অংশ বের করে এবং রোস্টিংয়ের মাধ্যমে তৈরি হয় রোস্টেড কফি বিন।
একটি পরিপক্ব গাছ থেকে বছরে ৫ থেকে ৬ কেজি চেরি ফল পাওয়া যায়। যা থেকে ১ কেজি রোস্টেড বিন তৈরি হয়। যার বাজার মূল্য প্রায় ২ হাজার টাকা। বাড়ির পতিত জমি বা ছায়াযুক্ত স্থানে কফি গাছ রোপণ করা যায়।বাংলাদেশে বছরে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার কফি আমদানি করা হয়। দেশে বাণিজ্যিকভাবে কফি চাষ সফল হলে আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে দেশের অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারবে এই ফসল।
শেরপুরের কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, কফি চাষের উপযোগী মাটি ও আবহাওয়া এখানে রয়েছে। সেই অনুযায়ী কৃষকদের কফি চাষের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
ইতোমধ্যে প্রায় ৬০ হাজার চারা আগ্রহী কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে এবং শতাধিক কৃষককে কফি চাষের বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও উপকরণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। শেরপুরের শ্রীবরদি, ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার পাহাড়ি এলাকার সমতল ভূমিতেও কফি চাষে ব্যাপক সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। তাছাড়া গারো পাহাড়ের অব্যবহৃত জমিকে কফি চাষের আওতায় আনতে আগামী দুই বছরে প্রায় দুই লাখ চারা বিনামুল্যে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। তাই কফি চাষে আগ্রহী কৃষকদের পরামর্শ ও সহযোগিতা আশ্বাস দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।