alt

সারাদেশ

পুলিশ মুভমেন্ট পাস ইস্যু ইতোমধ্যে ৫ লাখ

সংবাদ অনলাইন ডেস্ক : বৃহস্পতিবার, ১৫ এপ্রিল ২০২১

সরকার ঘোষিত লকডাউনে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কারও ঘর থেকে বের হওয়া নিরুৎসাহিত করা হয়েছিল পুলিশের পক্ষ থেকে। তবে ওষুধ, করোনার ভ্যাকসিন বা নমুনা দেয়া, নিত্যপণ্য কেনার প্রয়োজনসহ কেবল জরুরি প্রয়োজন হলেই ঘর থেকে বের হওয়ার অনুমতি ছিল তাও পুলিশ মুভমেন্ট পাস নিয়ে। কিন্তু গত ২ দিনে মানুষকে রাস্তায় নির্বিঘ্নে চলাফেরা করতে দেখা গেছে। এর মধ্যে মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) থেকে বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) বিকেল পর্যন্ত ২০ কোটি ব্যক্তি হিট করেছে পুলিশ মুভমেন্ট পাস অ্যাপ্লিকেশনসে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত ৫ লাখ ব্যক্তিকে পাস ইস্যু করা হয়েছে।

পুলিশের ভাষ্য, গত দুইদিনে মানুষ নানা জরুরি কাজের কথা বলে রাস্তায় বেরিয়েছে। পুলিশ প্রত্যেককে আটকানোর চেষ্টা করেছে। ঘরের বাইরে বের হওয়ার কারণ জানতে চেয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে দেখা গেছে কারও পুলিশ মুভমেন্ট পাস থাকলেও অধিকাংশের পুলিশ মুভমেন্ট পাসও ছিল না। যাত্রীবাহী বাস ছাড়া সব যানবাহনও চলেছে রাস্তায়। এসব যানবাহনের যাত্রীদের অধিকাংশের কাছে ছিল না পুলিশ মুভমেন্ট পান।

সংশ্লিষ্টদের মতে, কোন ক্ষেত্রে পুলিশ মুভমেন্ট পাস দেয়া হবে তা পুলিশের পক্ষ থেকে পরিষ্কার করে দেয়া হয়েছে। কেবল নিত্যপণ্য কেনাকাটা (মাছ-মাংসসহ খাদ্যদ্রব্য, অসুস্থ ব্যক্তিদের জন্য ওষুধ কেনা, করোনার নমুনা দেয়া অথবা ভ্যাকসিন গ্রহণের জন্য বের হওয়াসহ অতিব জরুরি প্রয়োজনে পুলিশ মুভমেন্ট পাসের জন্য আবেদন করার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু দেখা গেছে, জরুরি সেবার সঙ্গে জড়িত অনেকেই পুলিশ মুভমেন্ট পাসের জন্য আবেদন করেছেন। অর্থাৎ বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত মুভমেন্ট পাসের জন্য ২০ কোটি হিট পড়েছে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী দেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি। কিন্তু জনসংখ্যার হিসেবের বাইরে গিয়ে হিট হওয়া মানে এক ব্যক্তি একাধিক বার মুভমেন্ট পাসের জন্য আবেদনের চেষ্টা করেছেন অথবা কৌতূহল বসে প্রবেশ করেছেন।

পুলিশ সদর দপ্তরের মাল্টিমিডিয়া শাখার এআইজি কামরুজ্জামান জানান, নির্দিষ্ট সময় ও নির্দিষ্ট গন্তব্যের জন্য এই ‘মুভমেন্ট পাস’ ইস্যু করা হয়। ওই সময় অতিবাহিত হলে কিংবা নির্ধারিত গন্তব্য থেকে অন্য কোথাও যেতে হলে পুনরায় এই মুভমেন্ট পাস ইস্যু করতে হবে। এই পাস কেবল জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহার যোগ্য। ওয়েবসাইটের প্রাপ্ত ডাটাবেজ পর্যালোচনায় দেখা যায়, ১৩ এপ্রিল বেলা ১১টার সময় এটি উদ্বোধন করা হয়। বৃহস্পতিবার ১৫ এপ্রিল সকাল ৯টা পর্যন্ত ওই ওয়েবসাইটে মোট ১৫ কোটি ৯৯ লাখ ২২ হাজার ৬৫টি নক- হিট হয়েছে। সে হিসাবে প্রতি মিনিটে ৫৭ হাজার ৯৪২টি হিট নক হচ্ছে। ৪৬ ঘণ্টায় অর্থাৎ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত মোট ৪ লাখ ৯৭৭ জন ব্যক্তি মুভমেন্ট পাসের জন্য আবেদন করেছেন। তাদের প্রদত্ত তথ্যের বিশ্লেষণ করে ৩ লাখ ১৬ হাজার ৮০১ জনকে মুভমেন্ট পাস ইস্যু করা হয়েছে।

এআইজি কামরুজ্জামান জানান, আবেদনকারীদের অধিকাংশ নিত্যপণ্য কেনাকাটার জন্য বাইরে বের হওয়ার প্রয়োজনের কথা জানিয়েছেন। এছাড়া ওষুধ কেনা, কর্মস্থলে যাওয়ার প্রয়োজনের কথাও অনেকেই জানিয়েছেন। আবেদনকারীদের মধ্যে চিকিৎসক, সাংবাদিকসহ জরুরি সেবার লোকজনও ছিল। পরে সেগুলো বলে দেয়া হয়েছে জরুরি সেবার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের কোন পুলিশ মুভমেন্ট পাস লাগবে না।

পুলিশ সদর দপ্তরের হিসাব অনুযায়ী পুলিশ মুভমেন্ট পাসের জন্য মোবাইল অ্যাপ্লিলেকশনস চালুর পরই সারাদেশে একযোগে হিট করেছে পুলিশ মুফমেন্ট পাস. গভ. বিডি সাইটে। অর্থাৎ কেউ প্রয়োজনে, কেউ কৌতূহলীবশত পুলিশ মুভমেন্ট পাসের জন্য আবেদনের সাইটে প্রবেশ করেছে। যা রীতিমতো বিস্ময়ের সৃষ্টি হয়েছে। অতি প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হওয়ার প্রয়োজন হলে পুলিশ মুভমেন্ট পাস নিয়ে বের হওয়ার সুযোগ রেখে পুলিশ এ অ্যাপ্লিকেশনস অ্যাপসটি চালু করেছিল গত ১৩ এপ্রিল মঙ্গলবার। গত দুইদিনে আবেদন করেছে ৪ লাখ গত ২ দিনে ৩ লাখের বেশি মানুষ পুলিশ মুভমেন্ট পাস নিয়েছে। এত সংখ্যক আবেদন দেখে পুলিশ কর্মকর্তারাও রীতিমতো হতবাক।

পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) মীর সোহেল রানা জানান, মুভমেন্ট পাসের ওয়েবসাইটে হিট করার বিষয়টি পুলিশকে রীতিমতো ভাবিয়ে তুলেছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে ১৬ কোটি ৪১ লাখ ৫০ হাজার ২৪৩ মানুষ হিট করলেও শেষ পর্যন্ত ৫ লাখ ৯ হাজার ৪৯৪ জন রেজিস্ট্রেশন করতে সক্ষম হয়েছেন। এর মধ্যে তিন লাখ ৫৭ হাজার ১৯০টি পাস ইস্যু করা হয়। ইস্যু করা পাসের মধ্যে তিন লাখ ৫৭ হাজার ১৪৩টি পাস গ্রহণ করা হয়।

পুলিশের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পুলিশ মুভমেন্ট পাস ছাড়াও গত দুইদিনে মানুষ নানা অজুহাতে ঘর থেকে বের হয়েছিলেন। গাড়িতে গ্যাস নেই, দোকানে যেতে হবে। আত্মীয় অসুস্থ, হাসপাতালে দেখতে যাবেন এমন নানা অজুহাতে মানুষ ঘর থেকে বের হয়েছেন। পুলিশ মুভমেন্ট পাস আছে কিনা তা যাচাই করা হয়েছে। যাদের পুলিশ মুভমেন্ট পাস ছিল তাদের নির্দিষ্ট গন্তব্যে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে। অন্য ক্ষেত্রে সবাইকে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু দেখা গেছে, এক এলাকার চেকপোস্ট দিয়ে ফেরালেও অন্য এলাকা দিয়ে ওই ব্যক্তি চলাফেরা করেছেন। আইন অমান্য করে রাস্তায় বের হওয়া মানুষের স্বভাবে পরিণত হয়েছে। হয়তো কোন প্রয়োজনই নেই কেবল চলাফেরার জন্য মিথ্যা তথ্য দিয়ে পুলিশ মুভমেন্ট পাস নিয়ে রাস্তায় চলাফেরা করছে অনেকেই এমনটাও মনে করছেন।

পুলিশ জানিয়েছে, গাড়িতে গ্যাস নিতে বের হয়েছিলেন জাকির হোসেন নামের এক ব্যক্তি। রাজধানীর টেকনিক্যাল মোড়ে পুলিশের চেকপোস্টে পড়লে পুলিশ মুভমেন্ট পাস না থাকায় ৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। রনি নামের একজন মোটরসাইকেল নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ টেকপোস্টে আটকালে বলেন, মুভমেন্ট পাসের জন্য চেষ্টা করেছেন কয়েকবার। একাধিকবার সাইটে ঢুকেও আবেদন শেষ করতে পারেননি। পরে পুলিশ তাকে বাসায় ফেরত যেতে বলে। রেদওয়ান নামের এক যুবককে পুলিশ চেকপোস্টে আটকালে তিনিও একই জবাব দেন। তার বাবার মাছের আড়তে যেতে হবে বলে তিনি ঘর থেকে বের হয়েছেন বলেও পুলিশকে জানান। এভাবে রাস্তায় বের হয়ে অনেকেই জেরার মুখে পড়েছন। জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়ার কথা বললেও একাধিকবার পুলিশের পক্ষ থেকে প্রশ্ন করা হলে সঠিক কোন উত্তর দিতে পারেননি কেউ।

র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া শাখার সহকারী পরিচালক জানান, চলমান করোনা সংক্রমণ রোধে সরকারি বিধিনিষেধ কঠোরভাবে প্রতিপালনের জন্য গত ১৪ এপ্রিল থেকে র‌্যাব ফোর্সেসের চেকপোস্ট কার্যক্রম ও রোবাস্ট প্যাট্রোলিং কার্যক্রম দেশব্যাপী চলমান রয়েছে। এছাড়া মাঠপর্যায়ে পাড়া-মহল্লা, অলিগলি কিংবা চায়ের দোকানে যাতে জটলা না হয় সেজন্য সকাল থেকেই কঠোর অবস্থানে রয়েছে র‌্যাব। চেকপোস্টে বিনা প্রয়োজনে সবাইকে ঘরের বাইরে যাওয়ার বিষয়ে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। সরকারি বিধিনিষেধ চলাকালে জরুরি প্রয়োজনে ঘরের বাইরে যাওয়ার ক্ষেত্রে মুভমেন্ট পাস নিয়ে যাওয়ার প্রতি উৎসাহিত করা হচ্ছে। জরুরি প্রয়োজনে ঘরের বাইরে যাওয়ার ক্ষেত্রে মাস্ক পরিধান করা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশ প্রদান করা হচ্ছে। সচেতনতা তৈরিতে মানুষের মাঝে করোনা প্রতিরোধে জনসচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। যারা অহেতুক অকারণে বের হবেন, সরকারি নির্দেশনা প্রতিপালনে অনীহা প্রদর্শন করবেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ছবি

মুরাদনগরে ধর্ষণ-নির্যাতনের ঘটনার নিন্দা, সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি ৩৮ বিশিষ্ট নাগরিকের

ছবি

নওগাঁয় ৯০টি খামারে তৈরি হচ্ছে কেঁচো সার

বরমচাল চা বাগানের ইতি এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী

সিরাজগঞ্জে হত্যা মামলায় ৬ জনের যাবজ্জীবন

ছবি

তারাগঞ্জ প্রাণীসম্পদ অফিস চত্বরে ফুলের চারাগাছ রোপন

বটিয়াঘাটায় ব্যবসায়ীদের মাঝে পরিবেশ বান্ধব ব্যাগ বিতরণ

কলারোয়ায় আইসক্রিম ফ্যাক্টরিতে অভিযান

পীরগাছায় ছেলের অপরাধে মধ্যযুগীয় কায়দায় বাবার ওপর নির্যাতন

নোয়াখালীতে বিধবাকে গণধর্ষণ

কাজে ফিরেছেন হিলি কাস্টমস কর্মকর্তা-কর্মচারীরা

ছবি

প্লাস্টিকের বস্তায় চাল বাজারজাত করার জরিমানা

শিক্ষার্থীকে বস্তায় ভরে নির্যাতনের ঘটনায় শিক্ষক কারাগারে

সমিতির জমানো টাকা ফেরত না পেয়ে শোকে মৃত্যু

ছবি

নবীগঞ্জে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার ১৩

কুষ্টিয়ায় সেতুর টোল আদায় বন্ধে দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ, যানজট, ভোগান্তি

নড়াইলে এইচএসসিতে সেট পরিবর্তন কেন্দ্র সচিব ও ট্যাগ অফিসারকে অব্যাহতি

ছবি

ভৈরবে তুচ্ছ ঘটনায় সংঘর্ষ বাড়িঘর ভাঙচুর, আহত ১০

চিলমারী তেল ডিপো রক্ষায় কুড়িগ্রামে শ্রমিকদের মানববন্ধন

মোহনগঞ্জে হারিয়ে যাচ্ছে মৃৎশিল্পের জৌলুস

ছবি

চিলমারীতে অসময়ের বন্যা পাটচাষিরা চিন্তিত

ছবি

সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার পণ্য আটক করল সুনামগঞ্জ বিজিবি

প্রেমের টানে ভারতীয় যুবক লালমনিরহাটে

মহাদেবপুরে অতিরিক্ত ধানচাল মজুদ জেল-জরিমানা, ধান কেনা বন্ধ

ছবি

৬৭০ টাকার বীজ ধান ৭’শ ৫০ টাকা বিক্রি!

সন্তান জন্ম দিয়ে পরীক্ষা দিলেন অদম্য ইশা

জেলা আ.লীগের সভাপতি নাছির দুই দিনের রিমান্ডে

ছবি

বেনাপোল বন্দরে পানি নিষ্কাশনের অভাবে ব্যাহত হচ্ছে পণ্য খালাস

চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনে হত্যা মামলার আসামি গ্রেপ্তার

সিদ্ধিরগঞ্জে ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে ফারিহা

ছবি

বেড়িবাঁধের দুই কিলোমিটার রাস্তাটি এখন গলার কাঁটায়

কালীগঞ্জে হোল্ডিং ট্যাক্স ইস্যুতে পৌরবাসীর সঙ্গে ইউএনওর সরাসরি সংলাপ

ছবি

এনবিআরের আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেয়ায় বেনাপোল বন্দরে কার্যক্রম শুরু

নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে বিজিবির অভিযানে ৯,৬২০ পিস ইয়াবা উদ্ধার

চট্টগ্রামে জন্ম থেকে ১৫ মাস বয়সী শিশুদের জন্য নতুন প্রকল্প : কার্যক্রম চলবে ৬ জেলায়

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অভিযান আটক ৩

ছবি

নেত্রকোনায় চক্ষু চিকিৎসার নামে প্রতারণা

tab

সারাদেশ

পুলিশ মুভমেন্ট পাস ইস্যু ইতোমধ্যে ৫ লাখ

সংবাদ অনলাইন ডেস্ক

বৃহস্পতিবার, ১৫ এপ্রিল ২০২১

সরকার ঘোষিত লকডাউনে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কারও ঘর থেকে বের হওয়া নিরুৎসাহিত করা হয়েছিল পুলিশের পক্ষ থেকে। তবে ওষুধ, করোনার ভ্যাকসিন বা নমুনা দেয়া, নিত্যপণ্য কেনার প্রয়োজনসহ কেবল জরুরি প্রয়োজন হলেই ঘর থেকে বের হওয়ার অনুমতি ছিল তাও পুলিশ মুভমেন্ট পাস নিয়ে। কিন্তু গত ২ দিনে মানুষকে রাস্তায় নির্বিঘ্নে চলাফেরা করতে দেখা গেছে। এর মধ্যে মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) থেকে বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) বিকেল পর্যন্ত ২০ কোটি ব্যক্তি হিট করেছে পুলিশ মুভমেন্ট পাস অ্যাপ্লিকেশনসে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত ৫ লাখ ব্যক্তিকে পাস ইস্যু করা হয়েছে।

পুলিশের ভাষ্য, গত দুইদিনে মানুষ নানা জরুরি কাজের কথা বলে রাস্তায় বেরিয়েছে। পুলিশ প্রত্যেককে আটকানোর চেষ্টা করেছে। ঘরের বাইরে বের হওয়ার কারণ জানতে চেয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে দেখা গেছে কারও পুলিশ মুভমেন্ট পাস থাকলেও অধিকাংশের পুলিশ মুভমেন্ট পাসও ছিল না। যাত্রীবাহী বাস ছাড়া সব যানবাহনও চলেছে রাস্তায়। এসব যানবাহনের যাত্রীদের অধিকাংশের কাছে ছিল না পুলিশ মুভমেন্ট পান।

সংশ্লিষ্টদের মতে, কোন ক্ষেত্রে পুলিশ মুভমেন্ট পাস দেয়া হবে তা পুলিশের পক্ষ থেকে পরিষ্কার করে দেয়া হয়েছে। কেবল নিত্যপণ্য কেনাকাটা (মাছ-মাংসসহ খাদ্যদ্রব্য, অসুস্থ ব্যক্তিদের জন্য ওষুধ কেনা, করোনার নমুনা দেয়া অথবা ভ্যাকসিন গ্রহণের জন্য বের হওয়াসহ অতিব জরুরি প্রয়োজনে পুলিশ মুভমেন্ট পাসের জন্য আবেদন করার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু দেখা গেছে, জরুরি সেবার সঙ্গে জড়িত অনেকেই পুলিশ মুভমেন্ট পাসের জন্য আবেদন করেছেন। অর্থাৎ বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত মুভমেন্ট পাসের জন্য ২০ কোটি হিট পড়েছে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী দেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি। কিন্তু জনসংখ্যার হিসেবের বাইরে গিয়ে হিট হওয়া মানে এক ব্যক্তি একাধিক বার মুভমেন্ট পাসের জন্য আবেদনের চেষ্টা করেছেন অথবা কৌতূহল বসে প্রবেশ করেছেন।

পুলিশ সদর দপ্তরের মাল্টিমিডিয়া শাখার এআইজি কামরুজ্জামান জানান, নির্দিষ্ট সময় ও নির্দিষ্ট গন্তব্যের জন্য এই ‘মুভমেন্ট পাস’ ইস্যু করা হয়। ওই সময় অতিবাহিত হলে কিংবা নির্ধারিত গন্তব্য থেকে অন্য কোথাও যেতে হলে পুনরায় এই মুভমেন্ট পাস ইস্যু করতে হবে। এই পাস কেবল জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহার যোগ্য। ওয়েবসাইটের প্রাপ্ত ডাটাবেজ পর্যালোচনায় দেখা যায়, ১৩ এপ্রিল বেলা ১১টার সময় এটি উদ্বোধন করা হয়। বৃহস্পতিবার ১৫ এপ্রিল সকাল ৯টা পর্যন্ত ওই ওয়েবসাইটে মোট ১৫ কোটি ৯৯ লাখ ২২ হাজার ৬৫টি নক- হিট হয়েছে। সে হিসাবে প্রতি মিনিটে ৫৭ হাজার ৯৪২টি হিট নক হচ্ছে। ৪৬ ঘণ্টায় অর্থাৎ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত মোট ৪ লাখ ৯৭৭ জন ব্যক্তি মুভমেন্ট পাসের জন্য আবেদন করেছেন। তাদের প্রদত্ত তথ্যের বিশ্লেষণ করে ৩ লাখ ১৬ হাজার ৮০১ জনকে মুভমেন্ট পাস ইস্যু করা হয়েছে।

এআইজি কামরুজ্জামান জানান, আবেদনকারীদের অধিকাংশ নিত্যপণ্য কেনাকাটার জন্য বাইরে বের হওয়ার প্রয়োজনের কথা জানিয়েছেন। এছাড়া ওষুধ কেনা, কর্মস্থলে যাওয়ার প্রয়োজনের কথাও অনেকেই জানিয়েছেন। আবেদনকারীদের মধ্যে চিকিৎসক, সাংবাদিকসহ জরুরি সেবার লোকজনও ছিল। পরে সেগুলো বলে দেয়া হয়েছে জরুরি সেবার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের কোন পুলিশ মুভমেন্ট পাস লাগবে না।

পুলিশ সদর দপ্তরের হিসাব অনুযায়ী পুলিশ মুভমেন্ট পাসের জন্য মোবাইল অ্যাপ্লিলেকশনস চালুর পরই সারাদেশে একযোগে হিট করেছে পুলিশ মুফমেন্ট পাস. গভ. বিডি সাইটে। অর্থাৎ কেউ প্রয়োজনে, কেউ কৌতূহলীবশত পুলিশ মুভমেন্ট পাসের জন্য আবেদনের সাইটে প্রবেশ করেছে। যা রীতিমতো বিস্ময়ের সৃষ্টি হয়েছে। অতি প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হওয়ার প্রয়োজন হলে পুলিশ মুভমেন্ট পাস নিয়ে বের হওয়ার সুযোগ রেখে পুলিশ এ অ্যাপ্লিকেশনস অ্যাপসটি চালু করেছিল গত ১৩ এপ্রিল মঙ্গলবার। গত দুইদিনে আবেদন করেছে ৪ লাখ গত ২ দিনে ৩ লাখের বেশি মানুষ পুলিশ মুভমেন্ট পাস নিয়েছে। এত সংখ্যক আবেদন দেখে পুলিশ কর্মকর্তারাও রীতিমতো হতবাক।

পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) মীর সোহেল রানা জানান, মুভমেন্ট পাসের ওয়েবসাইটে হিট করার বিষয়টি পুলিশকে রীতিমতো ভাবিয়ে তুলেছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে ১৬ কোটি ৪১ লাখ ৫০ হাজার ২৪৩ মানুষ হিট করলেও শেষ পর্যন্ত ৫ লাখ ৯ হাজার ৪৯৪ জন রেজিস্ট্রেশন করতে সক্ষম হয়েছেন। এর মধ্যে তিন লাখ ৫৭ হাজার ১৯০টি পাস ইস্যু করা হয়। ইস্যু করা পাসের মধ্যে তিন লাখ ৫৭ হাজার ১৪৩টি পাস গ্রহণ করা হয়।

পুলিশের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পুলিশ মুভমেন্ট পাস ছাড়াও গত দুইদিনে মানুষ নানা অজুহাতে ঘর থেকে বের হয়েছিলেন। গাড়িতে গ্যাস নেই, দোকানে যেতে হবে। আত্মীয় অসুস্থ, হাসপাতালে দেখতে যাবেন এমন নানা অজুহাতে মানুষ ঘর থেকে বের হয়েছেন। পুলিশ মুভমেন্ট পাস আছে কিনা তা যাচাই করা হয়েছে। যাদের পুলিশ মুভমেন্ট পাস ছিল তাদের নির্দিষ্ট গন্তব্যে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে। অন্য ক্ষেত্রে সবাইকে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু দেখা গেছে, এক এলাকার চেকপোস্ট দিয়ে ফেরালেও অন্য এলাকা দিয়ে ওই ব্যক্তি চলাফেরা করেছেন। আইন অমান্য করে রাস্তায় বের হওয়া মানুষের স্বভাবে পরিণত হয়েছে। হয়তো কোন প্রয়োজনই নেই কেবল চলাফেরার জন্য মিথ্যা তথ্য দিয়ে পুলিশ মুভমেন্ট পাস নিয়ে রাস্তায় চলাফেরা করছে অনেকেই এমনটাও মনে করছেন।

পুলিশ জানিয়েছে, গাড়িতে গ্যাস নিতে বের হয়েছিলেন জাকির হোসেন নামের এক ব্যক্তি। রাজধানীর টেকনিক্যাল মোড়ে পুলিশের চেকপোস্টে পড়লে পুলিশ মুভমেন্ট পাস না থাকায় ৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। রনি নামের একজন মোটরসাইকেল নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ টেকপোস্টে আটকালে বলেন, মুভমেন্ট পাসের জন্য চেষ্টা করেছেন কয়েকবার। একাধিকবার সাইটে ঢুকেও আবেদন শেষ করতে পারেননি। পরে পুলিশ তাকে বাসায় ফেরত যেতে বলে। রেদওয়ান নামের এক যুবককে পুলিশ চেকপোস্টে আটকালে তিনিও একই জবাব দেন। তার বাবার মাছের আড়তে যেতে হবে বলে তিনি ঘর থেকে বের হয়েছেন বলেও পুলিশকে জানান। এভাবে রাস্তায় বের হয়ে অনেকেই জেরার মুখে পড়েছন। জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়ার কথা বললেও একাধিকবার পুলিশের পক্ষ থেকে প্রশ্ন করা হলে সঠিক কোন উত্তর দিতে পারেননি কেউ।

র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া শাখার সহকারী পরিচালক জানান, চলমান করোনা সংক্রমণ রোধে সরকারি বিধিনিষেধ কঠোরভাবে প্রতিপালনের জন্য গত ১৪ এপ্রিল থেকে র‌্যাব ফোর্সেসের চেকপোস্ট কার্যক্রম ও রোবাস্ট প্যাট্রোলিং কার্যক্রম দেশব্যাপী চলমান রয়েছে। এছাড়া মাঠপর্যায়ে পাড়া-মহল্লা, অলিগলি কিংবা চায়ের দোকানে যাতে জটলা না হয় সেজন্য সকাল থেকেই কঠোর অবস্থানে রয়েছে র‌্যাব। চেকপোস্টে বিনা প্রয়োজনে সবাইকে ঘরের বাইরে যাওয়ার বিষয়ে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। সরকারি বিধিনিষেধ চলাকালে জরুরি প্রয়োজনে ঘরের বাইরে যাওয়ার ক্ষেত্রে মুভমেন্ট পাস নিয়ে যাওয়ার প্রতি উৎসাহিত করা হচ্ছে। জরুরি প্রয়োজনে ঘরের বাইরে যাওয়ার ক্ষেত্রে মাস্ক পরিধান করা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশ প্রদান করা হচ্ছে। সচেতনতা তৈরিতে মানুষের মাঝে করোনা প্রতিরোধে জনসচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। যারা অহেতুক অকারণে বের হবেন, সরকারি নির্দেশনা প্রতিপালনে অনীহা প্রদর্শন করবেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

back to top