সড়ক আইন বাস্তবায়নের দাবি
ময়লার গাড়ি চাপায় নটর ডেম ছাত্র নিহতে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু ঠেকাতে বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিন শিক্ষার্থীরা রাজধানীতে বিক্ষোভ করে -সংবাদ
‘নিরাপদ সড়ক চাই’, ‘সড়ক দুর্ঘটনায় আর কোন মৃত্যু দেখতে চাই না, প্রায় সাড়ে ৩ বছর পর সেই দাবি আবারও এলো শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে। নটর ডেম কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর মেধাবী শিক্ষার্থী নাঈম হাসানের মৃতুর ঘটনায় দ্বিতীয় দিনের মতো চলা আন্দোলনে সড়ক আইন বাস্তবায়নেরও দাবি উঠে।
সিটি করপোরেশনের গাড়ির চাপায় নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী নিহতের জেরে দ্বিতীয় দিনের মতো উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে রাজধানীতে। ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ এবং সড়কে আর যেন কোন প্রাণ না ঝরে, ইউ ওয়ান জাস্টিজ এমন দাবিতে ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে নিজেদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বিক্ষোভ মিছিল করে বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ শেষে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান কার্যালয়ে অবস্থান নেয়। নটর ডেমের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একত্মতা প্রকাশ করে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেছে অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
এদিকে প্রায় সাড়ে ৩ বছর আগে সড়ক দুর্ঘটনায় ২ ছাত্র নিহত হওয়ার জেরে আন্দোলনে যেভাবে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন যানবাহনের গাড়ির কাগজ ও চালকের লাইসেন্স নিজেরা পরীক্ষা করেছে সেইভাবে বৃহস্পতিবারের আন্দোলনেও পরীক্ষা করেছে। এ সময় চালকের লাইসেন্স না থাকায় পুলিশের একটি গাড়িও আটকে রাখে। পরে গাড়িটি ছেড়ে দেয়া হয়।
সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ির চাপায় বুধবার নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী নিহতের রেশ কাটতে না কাটতে বৃহস্পতিবার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ময়লার আরেকটি গাড়ির চাপায় মারা যান আহসানুল কবির নামের এক সংবাদ কর্মী। বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় বসুন্ধরা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ দুটি দুর্ঘটনার পর কথা উঠেছে সিট্ িকরপোরেশনের ময়লার গাড়ির জন্য নিয়োগ করা গাড়ির চালকদের বেপরোয়া আচরণ নিয়েও।
দ্বিতীয় দিনের মতো উত্তাল রাজপথ
বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনের মতো রাজধানীর আরামবাগ, মতিঝিল, গুলিস্তান, ফার্মগেটসহ বিভিন্ন পয়েন্টে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে আরামবাগ, মতিঝিল, গুলিস্থান হয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয় নটর ডেম কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। অন্যান্য কলেজের শিক্ষার্থীরা নটর ডেম কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একত্মতা জানিয়ে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে। শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনকে ঘিরে বৃহস্পতিবার পুরো ঢাকায় সতর্ক অবস্থান নিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে রাস্তায় নামে শিক্ষার্থীরা। দুপুর পর্যন্ত চলে শিক্ষার্থীদের অবস্থান।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেছে, মানুষ তো দূরের কথা, কোন সড়কে একটি প্রাণী বা পাখির মৃতদেহও আমরা দেখতে চাই না। মানুষের মতো তাদেরও স্বজন আছে, অনুভূতি আছে। সড়কে গাড়িচাপা দিয়ে মানুষসহ সব প্রাণী হত্যা বন্ধসহ চার দফা দাবি জানিয়েছে নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে নটর ডেম কলেজের এক পাশের রাস্তা অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। এরপর বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মতিঝিল শাপলা চত্বরে সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। সেখান থেকে তারা বিক্ষোভ মিছিল করতে করতে গুলিস্তানে চলে আসেন, যেখানে তাদের সহপাঠী নাঈম হাসান গাড়িচাপায় নিহত হয়েছেন। এরপর সেখান থেকে জিরো পয়েন্টে তারা বসে পড়েন। এ সময় শিক্ষার্থীরা চার দফা দাবি উত্থাপন করেন। তারা বলেন, ‘আমরা রাজপথে আছি। সড়কে মৃত্যুর মিছিল বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত আমরা সড়কে থাকবো।’ তারা আরও দাবি জানান, আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যেতে চাই। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ট্রাফিক আইন আরও কঠোরভাবে বাস্তবায়নের দাবি জানান। লাইসেন্সবিহীন কোন চালক বা ত্রুটিপূর্ণ গাড়ি সড়কে থাকতে পারবে না বলেও জানান তারা। এ ছাড়া নাঈম হাসানের মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে বলে দাবি শিক্ষার্থীদের।
ছয় দফা দাবি নিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ঘেরাও শিক্ষার্থীদের
শিক্ষার্থী নাঈম হাসানের (১৭) মৃত্যুর ঘটনায় দ্বিতীয় দিনের মতো আন্দোলনে মিছিল নিয়ে ছাত্ররা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) কার্যালয়ের (নগর ভবন) ঘেরাও করে। সেখানে সিটি করপোরেশনের সামনে অবস্থান নেয় তারা। নগর ভবনের প্রধান ফটক বন্ধ করে দেয়ায় শিক্ষার্থীরা ভেতরে প্রবেশ করতে না পেরে ফটকের সামনে সড়কে বসে পড়ে।
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, তারা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে দেখা করতে চান। কেননা এই সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ির চাপায় নাঈমের মৃত্যু হয়েছে। সিটি করপোরেশনের সামনে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগানে মুখরিত করে তোলে। তারা এও বলে স্লোগান দেয় ‘মেয়র তোমায় দেখতে চাই, ‘নাঈম হত্যার বিচার চাই’। তারা সেখানেও স্লোগান দেয়, ওই ওয়ান জাস্টিস। এ সময় শিক্ষার্থীরা নাঈম হাসানকে চাপা দেয়া ময়লার গাড়ির চালকের ফাঁসি দাবি করে।
শিক্ষার্থীরা মূলত ছয়টি দাবি নিয়ে সড়কে নেমেছে। এগুলো হলো সবার জন্য সড়ক নিরাপদ করা, ২০১৮ সালে নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের পর পাস হওয়া আইন বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেয়া, নাঈমের মৃত্যুর ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার পাশাপাশি দ্রুততম সময়ে বিচার নিশ্চিত করা, নাঈমের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেয়া, গুলিস্থানের মতো ব্যস্ততম সড়কে পদচারী-সেতু স্থাপন করা ও সব ধরনের ট্রাফিক আইন কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা।
ওই ওয়ান জাস্টিস স্লোগাল ফিরে এলো ২ বছর পর
২০১৮ সালে বিমানবন্দর সড়কে ২ শিক্ষার্থী বেপরোয়া গাড়ির চাপায় মারা যায়। ওই ঘটনার পর নিরাপদ সড়ক ও ২ ছাত্রের নিহতের ঘটনায় স্লোগান ছিল ‘ওই ওয়ান জাস্টিজ’। প্রায় সাড়ে ৩ বছর পর বুধবার নটর ডেম কলেক শিক্ষার্থী নিহতের জেরে চালকের ফাঁসি দাবি এবং নিরাপদ সড়কের দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠে রাজপথ। শিক্ষার্থীরা যখন মিছিল নিয়ে শাপলা চত্বরে যায়, তখন তাদের অন্যতম স্লোগান ছিল ‘ওই ওয়ান্ট জাস্টিস’ ও ‘আমার ভাই মরলো কেন, প্রশাসন জবাব চাই’।
২০১৮ সালের ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনে এমইএস বাসস্ট্যান্ডে জাবালে নূর পরিবহনের দুই বাসের প্রতিযোগিতায় বাসচাপায় নিহত হন শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র আবদুল করিম রাজীব এবং একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী দিয়া খানম মিম।
আন্দোলন প্রসঙ্গে নাঈমের সহপাঠী হাসিবুর রহমান বলেন, ‘আমরা নিরাপদ সড়ক চাই। আমাদের এই আন্দোলন অহিংস।’ বৃহস্পতিবারও নাঈমের মৃত্যুর প্রতিবাদে তার সহপাঠীরা গুলিস্থান মোড়ে জড়ো হয়।
চালকের লাইসেন্স না থাকায় পুলিশের গাড়িও আটকালো শিক্ষার্থীরা
সহপাঠীর মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের লাইসেন্স দেখাতে না পারায় রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় ঢাকা মহানগর পুলিশের একটি বাসকে আটকে থাকতে হয়েছে এক ঘণ্টা। শিক্ষার্থীদের দাবি, পুলিশের ওই বাসচালকের লাইসেন্স নেই। তবে বাসচালক দাবি করেছেন, তার লাইসেন্স আছে, তবে সেটা অফিসে রাখা।
বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। হলিক্রস, বিজ্ঞান কলেজ ও ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের শিক্ষার্থীরা বেলা ১১টার দিকে ফার্মগেট এলাকায় সড়ক অবরোধ করলে সেখানে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এর মধ্যে পুলিশ সদস্যদের নিয়ে একটি বাস রাজারবাগ থেকে মিরপুরে যাওয়ার পথে বেলা দেড়টার দিকে ফার্মগেটে শিক্ষার্থীদের বাধার মুখে পড়ে। শিক্ষার্থীরা বাসটির গায়ে মার্কার কলম ও স্প্রে রং দিয়ে নানা স্লোগান লিখে দেন।
আন্দোলনরত ছাত্ররা বলেছেন, লাইসেন্সবিহীন একজন চালকের কারণে তারা একজন সহপাঠীকে হারিয়েছেন। আর হারাতে চান না। পুলিশের বাসটির চালক তাদের ড্রাইভিং লাইসেন্স দেখাতে পারেননি। একজন ‘ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিকে’ তারা বাস নিয়ে রাস্তায় যেতে দিতে চান না। সে কারণে তাকে আটকে রাখা হয়েছে। অন্যদিকে বাসটির চালক পুলিশের নায়েক লাল মিয়া বলেন, তার লাইসেন্স রয়েছে। তবে সেটি অফিসে থাকায় তিনি দেখাতে পারেননি।
সতর্ক অবস্থানে ছিল পুলিশ
এদিকে নডর ডেম কলেজের ছাত্র নিহতের জেরে দুইদিন ধরে বিচারের দাবি চলা আন্দোলনে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে কোন বাধা না দিলেও পুলিশ আশপাশে সশস্ত্র অবস্থানে ছিল।
‘সেই চালককে’ গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ
এদিকে নটর ডেম কলেজের ছাত্র নাঈম হাসানকে চাপা দেয়া সিটি করপোরেশনের ময়লার ট্রাকটি ‘যে চালক চালাচ্ছিলেন’ তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে শিক্ষার্থীদের বক্তব্য পুলিশ অন্য ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে মূল চালকের পরিবর্তে। পুলিশ শিক্ষার্থীদের এ দাবি নাকচ করে বলেছে, যে গাড়ি চালিয়েছে তাকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই চালকের নাম রাসেল খান।
বিষয়টি স্পষ্ট করতে বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার আবদুল আহাদ পল্টন থানায় সংবাদ সম্মেলনে বলেন ‘বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে যে, চালককে ধরা হয়নি। এভাবে বিভ্রান্তি ছড়ানো উচিত নয়। যে গাড়ি চালাচ্ছিল তাকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
‘ওই গাড়ির প্রকৃত চালক ছিল হারুন, কিন্তু হারুন ময়লার ট্রাকটি রাসেলকে চালাতে দেয়। রাসেলেরই চালানো ময়লার ট্রাকের চাপায় নাঈম হাসান নিহত হন। রাসেল সিটি করপোরেশনের কেউ না।’ হারুনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘হারুনও এই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। সে কেন লাইসেন্সবিহীন রাসেলকে ট্রাকটি চালাতে দিল।’ হারুন তার পরিচিত রাসেলকে দিয়ে ‘বদলি ডিউটি’ করাচ্ছিলেন। রাসেলের ডিএসসিসির কোন নিয়োগপত্র নেই।
পল্টন থানার ওসি মো. সালাহ উদ্দিন জানান, সড়ক পরিবহন আইনে করা মামলায় সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে রাসেলকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে চেয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাসেলকে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম তোফাজ্জেল হোসেন মিয়ার আদালতে হাজির করে সাত দিনের জন্য রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে বিচারক তিন দিন রিমান্ডের আদেশ দেন। পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার রাসেল দাবি করেছেন যে, তারও ড্রাইভিং লাইসেন্স রয়েছে। লাইসেন্সের ফটোকপি তিনি দিয়েছেন। মূল কপি থানায় আনতে তার পরিবারকে বলা হয়েছে।
গত ২৪ নভেম্বর সকালে নটর ডেম কলেজ শিক্ষার্থী নাঈম হাসানকে গাড়ি চাপা দেয় সিটি করপোরেশনের একটি ময়লার গাড়ি। এতে ঘটনাস্থলে নিহত হয় নাঈম। ওই দিনই গাড়ির চালককে আটক করে পল্টন থানা পুলিশ। শিক্ষার্থীরা এটিকে হত্যাকান্ড বলে দাবি করেছে। তারা নাঈম হত্যার বিচারের দাবিতে দুদিন ধরেই সড়কে বিক্ষোভ করছে। দুর্ঘটনার পর পরই পুলিশ গাড়ির চালক রাসেলকে গ্রেপ্তার করে। রাসেল সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মী এবং ময়লার গাড়ি চালানোর তার কোন অনুমোদন নেই। এমনকি গাড়ি চালানোর লাইসেন্স নেই। ওই গাড়ির মূল চালককে এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
সড়ক আইন বাস্তবায়নের দাবি
ময়লার গাড়ি চাপায় নটর ডেম ছাত্র নিহতে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু ঠেকাতে বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিন শিক্ষার্থীরা রাজধানীতে বিক্ষোভ করে -সংবাদ
বৃহস্পতিবার, ২৫ নভেম্বর ২০২১
‘নিরাপদ সড়ক চাই’, ‘সড়ক দুর্ঘটনায় আর কোন মৃত্যু দেখতে চাই না, প্রায় সাড়ে ৩ বছর পর সেই দাবি আবারও এলো শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে। নটর ডেম কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর মেধাবী শিক্ষার্থী নাঈম হাসানের মৃতুর ঘটনায় দ্বিতীয় দিনের মতো চলা আন্দোলনে সড়ক আইন বাস্তবায়নেরও দাবি উঠে।
সিটি করপোরেশনের গাড়ির চাপায় নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী নিহতের জেরে দ্বিতীয় দিনের মতো উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে রাজধানীতে। ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ এবং সড়কে আর যেন কোন প্রাণ না ঝরে, ইউ ওয়ান জাস্টিজ এমন দাবিতে ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে নিজেদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বিক্ষোভ মিছিল করে বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ শেষে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান কার্যালয়ে অবস্থান নেয়। নটর ডেমের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একত্মতা প্রকাশ করে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেছে অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
এদিকে প্রায় সাড়ে ৩ বছর আগে সড়ক দুর্ঘটনায় ২ ছাত্র নিহত হওয়ার জেরে আন্দোলনে যেভাবে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন যানবাহনের গাড়ির কাগজ ও চালকের লাইসেন্স নিজেরা পরীক্ষা করেছে সেইভাবে বৃহস্পতিবারের আন্দোলনেও পরীক্ষা করেছে। এ সময় চালকের লাইসেন্স না থাকায় পুলিশের একটি গাড়িও আটকে রাখে। পরে গাড়িটি ছেড়ে দেয়া হয়।
সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ির চাপায় বুধবার নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী নিহতের রেশ কাটতে না কাটতে বৃহস্পতিবার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ময়লার আরেকটি গাড়ির চাপায় মারা যান আহসানুল কবির নামের এক সংবাদ কর্মী। বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় বসুন্ধরা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ দুটি দুর্ঘটনার পর কথা উঠেছে সিট্ িকরপোরেশনের ময়লার গাড়ির জন্য নিয়োগ করা গাড়ির চালকদের বেপরোয়া আচরণ নিয়েও।
দ্বিতীয় দিনের মতো উত্তাল রাজপথ
বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনের মতো রাজধানীর আরামবাগ, মতিঝিল, গুলিস্তান, ফার্মগেটসহ বিভিন্ন পয়েন্টে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে আরামবাগ, মতিঝিল, গুলিস্থান হয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয় নটর ডেম কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। অন্যান্য কলেজের শিক্ষার্থীরা নটর ডেম কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একত্মতা জানিয়ে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে। শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনকে ঘিরে বৃহস্পতিবার পুরো ঢাকায় সতর্ক অবস্থান নিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে রাস্তায় নামে শিক্ষার্থীরা। দুপুর পর্যন্ত চলে শিক্ষার্থীদের অবস্থান।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেছে, মানুষ তো দূরের কথা, কোন সড়কে একটি প্রাণী বা পাখির মৃতদেহও আমরা দেখতে চাই না। মানুষের মতো তাদেরও স্বজন আছে, অনুভূতি আছে। সড়কে গাড়িচাপা দিয়ে মানুষসহ সব প্রাণী হত্যা বন্ধসহ চার দফা দাবি জানিয়েছে নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে নটর ডেম কলেজের এক পাশের রাস্তা অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। এরপর বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মতিঝিল শাপলা চত্বরে সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। সেখান থেকে তারা বিক্ষোভ মিছিল করতে করতে গুলিস্তানে চলে আসেন, যেখানে তাদের সহপাঠী নাঈম হাসান গাড়িচাপায় নিহত হয়েছেন। এরপর সেখান থেকে জিরো পয়েন্টে তারা বসে পড়েন। এ সময় শিক্ষার্থীরা চার দফা দাবি উত্থাপন করেন। তারা বলেন, ‘আমরা রাজপথে আছি। সড়কে মৃত্যুর মিছিল বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত আমরা সড়কে থাকবো।’ তারা আরও দাবি জানান, আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যেতে চাই। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ট্রাফিক আইন আরও কঠোরভাবে বাস্তবায়নের দাবি জানান। লাইসেন্সবিহীন কোন চালক বা ত্রুটিপূর্ণ গাড়ি সড়কে থাকতে পারবে না বলেও জানান তারা। এ ছাড়া নাঈম হাসানের মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে বলে দাবি শিক্ষার্থীদের।
ছয় দফা দাবি নিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ঘেরাও শিক্ষার্থীদের
শিক্ষার্থী নাঈম হাসানের (১৭) মৃত্যুর ঘটনায় দ্বিতীয় দিনের মতো আন্দোলনে মিছিল নিয়ে ছাত্ররা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) কার্যালয়ের (নগর ভবন) ঘেরাও করে। সেখানে সিটি করপোরেশনের সামনে অবস্থান নেয় তারা। নগর ভবনের প্রধান ফটক বন্ধ করে দেয়ায় শিক্ষার্থীরা ভেতরে প্রবেশ করতে না পেরে ফটকের সামনে সড়কে বসে পড়ে।
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, তারা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে দেখা করতে চান। কেননা এই সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ির চাপায় নাঈমের মৃত্যু হয়েছে। সিটি করপোরেশনের সামনে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগানে মুখরিত করে তোলে। তারা এও বলে স্লোগান দেয় ‘মেয়র তোমায় দেখতে চাই, ‘নাঈম হত্যার বিচার চাই’। তারা সেখানেও স্লোগান দেয়, ওই ওয়ান জাস্টিস। এ সময় শিক্ষার্থীরা নাঈম হাসানকে চাপা দেয়া ময়লার গাড়ির চালকের ফাঁসি দাবি করে।
শিক্ষার্থীরা মূলত ছয়টি দাবি নিয়ে সড়কে নেমেছে। এগুলো হলো সবার জন্য সড়ক নিরাপদ করা, ২০১৮ সালে নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের পর পাস হওয়া আইন বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেয়া, নাঈমের মৃত্যুর ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার পাশাপাশি দ্রুততম সময়ে বিচার নিশ্চিত করা, নাঈমের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেয়া, গুলিস্থানের মতো ব্যস্ততম সড়কে পদচারী-সেতু স্থাপন করা ও সব ধরনের ট্রাফিক আইন কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা।
ওই ওয়ান জাস্টিস স্লোগাল ফিরে এলো ২ বছর পর
২০১৮ সালে বিমানবন্দর সড়কে ২ শিক্ষার্থী বেপরোয়া গাড়ির চাপায় মারা যায়। ওই ঘটনার পর নিরাপদ সড়ক ও ২ ছাত্রের নিহতের ঘটনায় স্লোগান ছিল ‘ওই ওয়ান জাস্টিজ’। প্রায় সাড়ে ৩ বছর পর বুধবার নটর ডেম কলেক শিক্ষার্থী নিহতের জেরে চালকের ফাঁসি দাবি এবং নিরাপদ সড়কের দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠে রাজপথ। শিক্ষার্থীরা যখন মিছিল নিয়ে শাপলা চত্বরে যায়, তখন তাদের অন্যতম স্লোগান ছিল ‘ওই ওয়ান্ট জাস্টিস’ ও ‘আমার ভাই মরলো কেন, প্রশাসন জবাব চাই’।
২০১৮ সালের ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনে এমইএস বাসস্ট্যান্ডে জাবালে নূর পরিবহনের দুই বাসের প্রতিযোগিতায় বাসচাপায় নিহত হন শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র আবদুল করিম রাজীব এবং একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী দিয়া খানম মিম।
আন্দোলন প্রসঙ্গে নাঈমের সহপাঠী হাসিবুর রহমান বলেন, ‘আমরা নিরাপদ সড়ক চাই। আমাদের এই আন্দোলন অহিংস।’ বৃহস্পতিবারও নাঈমের মৃত্যুর প্রতিবাদে তার সহপাঠীরা গুলিস্থান মোড়ে জড়ো হয়।
চালকের লাইসেন্স না থাকায় পুলিশের গাড়িও আটকালো শিক্ষার্থীরা
সহপাঠীর মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের লাইসেন্স দেখাতে না পারায় রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় ঢাকা মহানগর পুলিশের একটি বাসকে আটকে থাকতে হয়েছে এক ঘণ্টা। শিক্ষার্থীদের দাবি, পুলিশের ওই বাসচালকের লাইসেন্স নেই। তবে বাসচালক দাবি করেছেন, তার লাইসেন্স আছে, তবে সেটা অফিসে রাখা।
বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। হলিক্রস, বিজ্ঞান কলেজ ও ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের শিক্ষার্থীরা বেলা ১১টার দিকে ফার্মগেট এলাকায় সড়ক অবরোধ করলে সেখানে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এর মধ্যে পুলিশ সদস্যদের নিয়ে একটি বাস রাজারবাগ থেকে মিরপুরে যাওয়ার পথে বেলা দেড়টার দিকে ফার্মগেটে শিক্ষার্থীদের বাধার মুখে পড়ে। শিক্ষার্থীরা বাসটির গায়ে মার্কার কলম ও স্প্রে রং দিয়ে নানা স্লোগান লিখে দেন।
আন্দোলনরত ছাত্ররা বলেছেন, লাইসেন্সবিহীন একজন চালকের কারণে তারা একজন সহপাঠীকে হারিয়েছেন। আর হারাতে চান না। পুলিশের বাসটির চালক তাদের ড্রাইভিং লাইসেন্স দেখাতে পারেননি। একজন ‘ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিকে’ তারা বাস নিয়ে রাস্তায় যেতে দিতে চান না। সে কারণে তাকে আটকে রাখা হয়েছে। অন্যদিকে বাসটির চালক পুলিশের নায়েক লাল মিয়া বলেন, তার লাইসেন্স রয়েছে। তবে সেটি অফিসে থাকায় তিনি দেখাতে পারেননি।
সতর্ক অবস্থানে ছিল পুলিশ
এদিকে নডর ডেম কলেজের ছাত্র নিহতের জেরে দুইদিন ধরে বিচারের দাবি চলা আন্দোলনে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে কোন বাধা না দিলেও পুলিশ আশপাশে সশস্ত্র অবস্থানে ছিল।
‘সেই চালককে’ গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ
এদিকে নটর ডেম কলেজের ছাত্র নাঈম হাসানকে চাপা দেয়া সিটি করপোরেশনের ময়লার ট্রাকটি ‘যে চালক চালাচ্ছিলেন’ তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে শিক্ষার্থীদের বক্তব্য পুলিশ অন্য ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে মূল চালকের পরিবর্তে। পুলিশ শিক্ষার্থীদের এ দাবি নাকচ করে বলেছে, যে গাড়ি চালিয়েছে তাকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই চালকের নাম রাসেল খান।
বিষয়টি স্পষ্ট করতে বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার আবদুল আহাদ পল্টন থানায় সংবাদ সম্মেলনে বলেন ‘বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে যে, চালককে ধরা হয়নি। এভাবে বিভ্রান্তি ছড়ানো উচিত নয়। যে গাড়ি চালাচ্ছিল তাকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
‘ওই গাড়ির প্রকৃত চালক ছিল হারুন, কিন্তু হারুন ময়লার ট্রাকটি রাসেলকে চালাতে দেয়। রাসেলেরই চালানো ময়লার ট্রাকের চাপায় নাঈম হাসান নিহত হন। রাসেল সিটি করপোরেশনের কেউ না।’ হারুনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘হারুনও এই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। সে কেন লাইসেন্সবিহীন রাসেলকে ট্রাকটি চালাতে দিল।’ হারুন তার পরিচিত রাসেলকে দিয়ে ‘বদলি ডিউটি’ করাচ্ছিলেন। রাসেলের ডিএসসিসির কোন নিয়োগপত্র নেই।
পল্টন থানার ওসি মো. সালাহ উদ্দিন জানান, সড়ক পরিবহন আইনে করা মামলায় সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে রাসেলকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে চেয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাসেলকে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম তোফাজ্জেল হোসেন মিয়ার আদালতে হাজির করে সাত দিনের জন্য রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে বিচারক তিন দিন রিমান্ডের আদেশ দেন। পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার রাসেল দাবি করেছেন যে, তারও ড্রাইভিং লাইসেন্স রয়েছে। লাইসেন্সের ফটোকপি তিনি দিয়েছেন। মূল কপি থানায় আনতে তার পরিবারকে বলা হয়েছে।
গত ২৪ নভেম্বর সকালে নটর ডেম কলেজ শিক্ষার্থী নাঈম হাসানকে গাড়ি চাপা দেয় সিটি করপোরেশনের একটি ময়লার গাড়ি। এতে ঘটনাস্থলে নিহত হয় নাঈম। ওই দিনই গাড়ির চালককে আটক করে পল্টন থানা পুলিশ। শিক্ষার্থীরা এটিকে হত্যাকান্ড বলে দাবি করেছে। তারা নাঈম হত্যার বিচারের দাবিতে দুদিন ধরেই সড়কে বিক্ষোভ করছে। দুর্ঘটনার পর পরই পুলিশ গাড়ির চালক রাসেলকে গ্রেপ্তার করে। রাসেল সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মী এবং ময়লার গাড়ি চালানোর তার কোন অনুমোদন নেই। এমনকি গাড়ি চালানোর লাইসেন্স নেই। ওই গাড়ির মূল চালককে এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।