যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনতে আসন্ন বাজেটে অন্তত ১০০ ধরনের আমদানি পণ্যের শুল্ক কমাতে যাচ্ছে সরকার।
সোমবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এই প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দেন।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ, এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানসহ আয়কর, ভ্যাট ও শুল্ক অনুবিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
বৈঠকে জানানো হয়, শুল্ক ছাড়ের প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি মাথায় রেখে করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে এক কর্মকর্তা জানান, “১০০টি ট্যারিফ লাইনের পণ্যে শুল্ক শূন্য করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এতে মূলত যুক্তরাষ্ট্রই উপকৃত হবে।”
বাংলাদেশসহ অনেক দেশই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য বৈষম্য কমাতে শুল্ক হ্রাসে আলোচনা শুরু করে। কয়েকটি দেশ ইতোমধ্যে মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্কহার শূন্যে নামিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছে।
বাংলাদেশও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ভারসাম্য আনার লক্ষ্যে আগে থেকেই ১৯০টি পণ্যের শুল্কহার শূন্য রেখেছে। এবার অতিরিক্ত ১০০ ধরনের পণ্য সেই তালিকায় যুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
এই ১০০ পণ্যের মধ্যে রয়েছে তেল, গ্যাস, অস্ত্র, যুদ্ধবিমান ও মিসাইলের মতো পণ্য, যা কেবল সরকারের পক্ষ থেকেই কেনা হয়। ফলে এসব পণ্যে শুল্ক ছাড় দিলেও রাজস্ব ক্ষতির সম্ভাবনা কম থাকবে।
বর্তমানে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে বছরে প্রায় ৮.৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করে, বিপরীতে আমদানি হয় প্রায় ২ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। এই ঘাটতি কমাতে যুক্তরাষ্ট্র গত এপ্রিল থেকে বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপ করে, যার মধ্যে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকও রয়েছে।
বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে আগে থেকেই ১৫ শতাংশ শুল্ক থাকলেও, নতুন করে ৩৭ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করায় মোট শুল্ক দাঁড়ায় ৫২ শতাংশে। এতে করে পোশাক খাত বড় ধাক্কার মুখে পড়ে।
এ প্রেক্ষিতে প্রধান উপদেষ্টা ডনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি পাঠিয়ে শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানান এবং অন্তত তিন মাসের জন্য শুল্ক স্থগিত রাখার অনুরোধ করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাম্প প্রশাসন তিন মাসের জন্য অতিরিক্ত শুল্ক স্থগিত করে এবং এই সময় পণ্যগুলোর ওপর সর্বনিম্ন ১০ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত জানায়।
বাজেটে আরও কিছু সিদ্ধান্ত:
* ব্যক্তি শ্রেণির করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানোর প্রস্তাব অনুমোদন।
* করপোরেট করহার অপরিবর্তিত থাকলেও শর্ত শিথিলের সম্ভাবনা।
* মাছ, ডেইরি ও পোলট্রি খাতে করছাড়ের সুবিধা বাতিলের সিদ্ধান্ত।
* ফ্ল্যাট ও অ্যাপার্টমেন্টে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ বহাল।
* টার্নওভার কর দ্বিগুণ করার নীতিগত সিদ্ধান্ত।
* ব্যক্তিশ্রেণির সর্বনিম্ন কর ৫ হাজার এবং সর্বোচ্চ করহার ৩০ শতাংশ নির্ধারণের সিদ্ধান্ত।
আগামী ২ জুন অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব টেলিভিশনে উপস্থাপন করবেন। বাজেট কার্যকর হবে অধ্যাদেশের মাধ্যমে। সংসদ না থাকায় আলোচনার পরিবর্তে বাজেট প্রতিক্রিয়া ও টক শোর মাধ্যমে মতামত নিয়ে প্রয়োজন হলে সংশোধন করে তা আইন আকারে কার্যকর করা হবে।
---
মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনতে আসন্ন বাজেটে অন্তত ১০০ ধরনের আমদানি পণ্যের শুল্ক কমাতে যাচ্ছে সরকার।
সোমবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এই প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দেন।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ, এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানসহ আয়কর, ভ্যাট ও শুল্ক অনুবিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
বৈঠকে জানানো হয়, শুল্ক ছাড়ের প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি মাথায় রেখে করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে এক কর্মকর্তা জানান, “১০০টি ট্যারিফ লাইনের পণ্যে শুল্ক শূন্য করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এতে মূলত যুক্তরাষ্ট্রই উপকৃত হবে।”
বাংলাদেশসহ অনেক দেশই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য বৈষম্য কমাতে শুল্ক হ্রাসে আলোচনা শুরু করে। কয়েকটি দেশ ইতোমধ্যে মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্কহার শূন্যে নামিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছে।
বাংলাদেশও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ভারসাম্য আনার লক্ষ্যে আগে থেকেই ১৯০টি পণ্যের শুল্কহার শূন্য রেখেছে। এবার অতিরিক্ত ১০০ ধরনের পণ্য সেই তালিকায় যুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
এই ১০০ পণ্যের মধ্যে রয়েছে তেল, গ্যাস, অস্ত্র, যুদ্ধবিমান ও মিসাইলের মতো পণ্য, যা কেবল সরকারের পক্ষ থেকেই কেনা হয়। ফলে এসব পণ্যে শুল্ক ছাড় দিলেও রাজস্ব ক্ষতির সম্ভাবনা কম থাকবে।
বর্তমানে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে বছরে প্রায় ৮.৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করে, বিপরীতে আমদানি হয় প্রায় ২ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। এই ঘাটতি কমাতে যুক্তরাষ্ট্র গত এপ্রিল থেকে বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপ করে, যার মধ্যে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকও রয়েছে।
বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে আগে থেকেই ১৫ শতাংশ শুল্ক থাকলেও, নতুন করে ৩৭ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করায় মোট শুল্ক দাঁড়ায় ৫২ শতাংশে। এতে করে পোশাক খাত বড় ধাক্কার মুখে পড়ে।
এ প্রেক্ষিতে প্রধান উপদেষ্টা ডনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি পাঠিয়ে শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানান এবং অন্তত তিন মাসের জন্য শুল্ক স্থগিত রাখার অনুরোধ করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাম্প প্রশাসন তিন মাসের জন্য অতিরিক্ত শুল্ক স্থগিত করে এবং এই সময় পণ্যগুলোর ওপর সর্বনিম্ন ১০ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত জানায়।
বাজেটে আরও কিছু সিদ্ধান্ত:
* ব্যক্তি শ্রেণির করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানোর প্রস্তাব অনুমোদন।
* করপোরেট করহার অপরিবর্তিত থাকলেও শর্ত শিথিলের সম্ভাবনা।
* মাছ, ডেইরি ও পোলট্রি খাতে করছাড়ের সুবিধা বাতিলের সিদ্ধান্ত।
* ফ্ল্যাট ও অ্যাপার্টমেন্টে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ বহাল।
* টার্নওভার কর দ্বিগুণ করার নীতিগত সিদ্ধান্ত।
* ব্যক্তিশ্রেণির সর্বনিম্ন কর ৫ হাজার এবং সর্বোচ্চ করহার ৩০ শতাংশ নির্ধারণের সিদ্ধান্ত।
আগামী ২ জুন অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব টেলিভিশনে উপস্থাপন করবেন। বাজেট কার্যকর হবে অধ্যাদেশের মাধ্যমে। সংসদ না থাকায় আলোচনার পরিবর্তে বাজেট প্রতিক্রিয়া ও টক শোর মাধ্যমে মতামত নিয়ে প্রয়োজন হলে সংশোধন করে তা আইন আকারে কার্যকর করা হবে।
---