সিকদার পরিবারের নিয়ন্ত্রণে থাকা আলোচিত ন্যাশনাল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শাহ সৈয়দ আবদুল বারী পদত্যাগ করেছেন। বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) সকালে ব্যাংকে গিয়ে অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতির শিকার হয়ে তিনি পদত্যাগপত্র দেন। ব্যাংক সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র এ তথ্য নি?শ্চিত ক?রে?ছে।
এম?ডির পদত্যাগের পর ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি) হিসাবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সৈয়দ রইস উদ্দিনকে। তিনি ব্যাংকের ডিএমডি পদে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালক রন হক সিকদারের সঙ্গে বিরোধের জের ধরে আবদুল বারী এমডি পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। ইতোপূর্বে ব্যাংকটির একাধিক এমডি অপ্রত্যাশিত ও বিব্রতকর পরিস্থিতির শিকার হয়ে পদত্যাগে বাধ্য হয়েছিলেন। আবদুল বারীর ক্ষেত্রেও তেমনটিই ঘটেছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য চেষ্টা করেও আবদুল বারীকে পাওয়া যায়নি। তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। ব্যাংকটির অন্য কর্মকর্তারাও এ বিষয়ে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।
ন্যাশনাল ব্যাংকের এমডির পদত্যাগের ঘটনা এটা প্রথম নয়। ২০১৪ সালের ২ অক্টোবর তৎকালীন এমডি এ কে এম শফিকুর রহমান হঠাৎ পদত্যাগ করেন। একাধিক সূত্র জানায়, ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের কাছে অপমান-অপদস্থ হয়ে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। এসব বিষয়ে ব্যাংকের পক্ষ থেকে কোন আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
দীর্ঘদিন ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন জয়নুল হক সিকদার। চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি তার মৃত্যুর পর নতুন চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন তার স্ত্রী মনোয়ারা সিকদার। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, জয়নুল হক সিকদারের মৃত্যুর পর ব্যাংকটি নিজেদের একক নিয়ন্ত্রণে নিতে চাইছেন পরিচালক রিক হক সিকদার ও রন হক সিকদার। তারা দুজনই জয়নুল হক সিকদারের ছেলে। তবে মেয়ে সংসদ সদস্য (এমপি) পারভীন হক সিকদারসহ অন্য পরিচালকরা চাইছেন নিয়ম অনুযায়ী পরিচালনার মাধ্যমে ঘুরে দাঁড়াতে। অনিয়ম করে ঋণ বিতরণসহ বিভিন্ন কারণে ক্ষমতার দ্বন্দ্বে ব্যাংকটির পরিচালকদের মধ্যে দুটি পক্ষ হওয়ায় পর্ষদে বিবাদ শুরু হয়।
ন্যাশনাল ব্যাংকের এসব ঘটনা নজরে এলে গত ৫ এপ্রিল বেশকিছু তথ্য চেয়ে চিঠি দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া ঋণ বিতরণ না করতে নির্দেশ দেয়া হয়। এছাড়া রংধনু বিল্ডার্স, দেশ টিভি, রূপায়ণ ও শান্তা এন্টারপ্রাইজের অনুকূলে দেয়া সব ঋণের দলিলাদি (ঋণ আবেদন থেকে বিতরণ পর্যন্ত) এবং ঋণের পূর্ণাঙ্গ হিসাব বিবরণীর কপি পাঠাতে বলা হয়। যদিও বিতরণ করা অনেক ঋণের নথি দেখাতে পারছে না ন্যাশনাল ব্যাংক।
চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে (জানুয়ারি-মার্চ) ব্যাংকটি নতুন করে ৪৫০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছে। পাশাপাশি সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে ১১৩ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে। ঋণের ওপর প্রথম প্রান্তিকে সুদ যুক্ত হয়েছে ৬৫০ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে ব্যাংকটির ঋণ বেড়েছে ১ হাজার ২১৩ কোটি টাকা। তবে তিন মাসে আমানত বেড়েছে মাত্র ৫২১ কোটি টাকা। এছাড়া ব্যাংকটির ৪০টি শাখা লোকসানে রয়েছে। ১৯৮৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ন্যাশনাল ব্যাংকের শেয়ার দীর্ঘ দিন ধরে ফেসভ্যালুর নিচে অবস্থান করছে।
বৃহস্পতিবার, ২৫ নভেম্বর ২০২১
সিকদার পরিবারের নিয়ন্ত্রণে থাকা আলোচিত ন্যাশনাল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শাহ সৈয়দ আবদুল বারী পদত্যাগ করেছেন। বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) সকালে ব্যাংকে গিয়ে অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতির শিকার হয়ে তিনি পদত্যাগপত্র দেন। ব্যাংক সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র এ তথ্য নি?শ্চিত ক?রে?ছে।
এম?ডির পদত্যাগের পর ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি) হিসাবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সৈয়দ রইস উদ্দিনকে। তিনি ব্যাংকের ডিএমডি পদে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালক রন হক সিকদারের সঙ্গে বিরোধের জের ধরে আবদুল বারী এমডি পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। ইতোপূর্বে ব্যাংকটির একাধিক এমডি অপ্রত্যাশিত ও বিব্রতকর পরিস্থিতির শিকার হয়ে পদত্যাগে বাধ্য হয়েছিলেন। আবদুল বারীর ক্ষেত্রেও তেমনটিই ঘটেছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য চেষ্টা করেও আবদুল বারীকে পাওয়া যায়নি। তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। ব্যাংকটির অন্য কর্মকর্তারাও এ বিষয়ে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।
ন্যাশনাল ব্যাংকের এমডির পদত্যাগের ঘটনা এটা প্রথম নয়। ২০১৪ সালের ২ অক্টোবর তৎকালীন এমডি এ কে এম শফিকুর রহমান হঠাৎ পদত্যাগ করেন। একাধিক সূত্র জানায়, ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের কাছে অপমান-অপদস্থ হয়ে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। এসব বিষয়ে ব্যাংকের পক্ষ থেকে কোন আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
দীর্ঘদিন ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন জয়নুল হক সিকদার। চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি তার মৃত্যুর পর নতুন চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন তার স্ত্রী মনোয়ারা সিকদার। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, জয়নুল হক সিকদারের মৃত্যুর পর ব্যাংকটি নিজেদের একক নিয়ন্ত্রণে নিতে চাইছেন পরিচালক রিক হক সিকদার ও রন হক সিকদার। তারা দুজনই জয়নুল হক সিকদারের ছেলে। তবে মেয়ে সংসদ সদস্য (এমপি) পারভীন হক সিকদারসহ অন্য পরিচালকরা চাইছেন নিয়ম অনুযায়ী পরিচালনার মাধ্যমে ঘুরে দাঁড়াতে। অনিয়ম করে ঋণ বিতরণসহ বিভিন্ন কারণে ক্ষমতার দ্বন্দ্বে ব্যাংকটির পরিচালকদের মধ্যে দুটি পক্ষ হওয়ায় পর্ষদে বিবাদ শুরু হয়।
ন্যাশনাল ব্যাংকের এসব ঘটনা নজরে এলে গত ৫ এপ্রিল বেশকিছু তথ্য চেয়ে চিঠি দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া ঋণ বিতরণ না করতে নির্দেশ দেয়া হয়। এছাড়া রংধনু বিল্ডার্স, দেশ টিভি, রূপায়ণ ও শান্তা এন্টারপ্রাইজের অনুকূলে দেয়া সব ঋণের দলিলাদি (ঋণ আবেদন থেকে বিতরণ পর্যন্ত) এবং ঋণের পূর্ণাঙ্গ হিসাব বিবরণীর কপি পাঠাতে বলা হয়। যদিও বিতরণ করা অনেক ঋণের নথি দেখাতে পারছে না ন্যাশনাল ব্যাংক।
চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে (জানুয়ারি-মার্চ) ব্যাংকটি নতুন করে ৪৫০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছে। পাশাপাশি সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে ১১৩ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে। ঋণের ওপর প্রথম প্রান্তিকে সুদ যুক্ত হয়েছে ৬৫০ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে ব্যাংকটির ঋণ বেড়েছে ১ হাজার ২১৩ কোটি টাকা। তবে তিন মাসে আমানত বেড়েছে মাত্র ৫২১ কোটি টাকা। এছাড়া ব্যাংকটির ৪০টি শাখা লোকসানে রয়েছে। ১৯৮৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ন্যাশনাল ব্যাংকের শেয়ার দীর্ঘ দিন ধরে ফেসভ্যালুর নিচে অবস্থান করছে।