গ্রেপ্তার ৫
পুরনো ইয়াবা ব্যবসায়ীরাই রোহিঙ্গাদের মাধ্যমে মায়ানমার থেকে নতুন মাদক আইস নিয়ে আসছে দেশে। এ মাদকে যুক্ত হচ্ছে বিত্তশালীরা। ধনাঢ্য পরিবারের বিদেশ থেকে এমবিএ বিবিএ করে আসা সন্তানরাও রাজধানীর অভিযাত এলাকায় করছেন মাদকের কারবার। তারা সেবনের পাশাপাশি ভয়ানক মাদক আইস কারবারের সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন।
শুক্রবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ডিএনসির ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের (উত্তর) অতিরিক্ত পরিচালক ফজলুর রহমান এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। ৫ আইস ব্যবসায়ী ও সেবনকারীকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, জাকারিয়া আহমেদ অমন, তারেক আহম্মেদ, সাদ্দাম হোসেন, শহীদুল ইসলাম খান ও জসিম উদ্দীন। বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) ও বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ধারাবাহিক অভিযানে গুলশান, বনানী, রমনা ও ভাটারা এলাকায় কয়েক দফা অভিযান চালিয়ে ওই পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে জব্দ করা হয়েছে ৫৬০ ক্রিস্টাল মেথ (আইস), ১ হাজার ২০০ পিস ইয়াবা ও দুটি প্রাইভেটকার জব্দ করা হয়েছে। জব্দকৃত আইস ও ইয়াবার বাজারমূল্য কোটি টাকার বেশি বলে জানানো হয়েছে।
ডিএনসির অতিরিক্ত পরিচালক বলেন, গত ২১ আগস্ট প্রায় আধা কেজি আইসসহ বনানী-উত্তরা থেকে ১০ সদস্যের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেটকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন গোয়েন্দা কৌশল ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে গুলশান, ভাটারা, কুড়িল, রমনা এলাকায় আইসের আরও একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক শনাক্ত করা হয়। রমনা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে জাকারিয়া আহমেদ অমনকে পাঁচ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ আইসসহ গ্রেপ্তার করা হয়। জাকারিয়ার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে গুলশান বারিধারা দূতাবাস এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তারেক আহম্মেদকে পাঁচ গ্রাম আইস ও ১০০ পিস ইয়াবা ও একটি প্রাইভেটকারসহ গ্রেপ্তার করা হয়। জাকারিয়া ও তারেকের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে সাদ্দাম হোসেনকে ৯০ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ আইচ ও ৪০০ পিস ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করা হয়।
পরবর্তীতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে শহীদুল ইসলাম খানকে একই এলাকা থেকে ২০০ গ্রাম আইস ও ৫০০ পিস ইয়াবা, একটি প্রাইভেটকারসহ গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে তাৎক্ষণিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ভাটারার জোয়ার সাহারা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে জসিম উদ্দিনকে ২৬০ গ্রাম আইস ও ২০০ পিস ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করা হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা করা হয়।
ইয়াবার রুটে আইস আনছে রোহিঙ্গারা
লাভ বেশি হওয়ায় পুরনো সব ইয়াবা ব্যবসায়ী আইস ব্যবসার দিকে ঝুঁকছে জানিয়ে ফজলুর রহমান বলেন, মায়ানমার থেকেই আইসের চালান প্রবেশ করছে। যে রুট দিয়ে যে রুট দিয়ে ইয়াবা আসে, একই রুট দিয়ে আনা হচ্ছে আইস। আইস আনতে ব্যবহার করা হচ্ছে রোহিঙ্গাদের। ইয়াবার চেয়ে আইসের দাম বেশি হওয়ায়, রোহিঙ্গাদের আইসের চালান আনতে বেশি টাকা দেয়া হচ্ছে। এতে উৎসাহী হয়ে রাতের আঁধারে আইসের চালান দেশে আনছে রোহিঙ্গারা। এ ছাড়াও নাফ নদী দিয়েও আসছে চালান। গভীর সমুদ্রে হাতবদল করে এসব চালান দেশে প্রবেশ করছে। পরে হাত বদল হয়ে ছড়িয়ে পড়ছে রাজধানীসহ সারাদেশে। রাজধানীর বিভিন্ন অভিজাত এলাকায় আইসের সিন্ডিকেট গড়ে উঠলেও ইয়াবার মতো বিস্তার ঘটেনি বলে দাবি করেছেন ফজলুর রহমান।
গ্রেপ্তার পাঁচজনই ধনাঢ্য পরিবারের
ডিএনসি কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তারকৃত পাঁচজনই ধনাঢ্য পরিবারের সন্তান। এদের মধ্যে জাকারিয়া রহমান অমন অস্ট্রেলিয়া থেকে বিবিএ করে দেশে ফেরেন। তার দুই বোন বর্তমানে বিদেশে বিবিএ পড়ালেখা করছেন। তারেক ইংল্যান্ড থেকে বিবিএ শেষ করেছেন। তার বাবা সরকারি চাকরিজীবী ছিলেন। বারিধারায় তাদের নিজস্ব বাড়ি রয়েছে। সাদ্দাম নিজে সিএনএফ ব্যবসায়ী। তার বাবাও দীর্ঘদিন ধরে সিএনএফ ব্যবসা করে আসছেন। শহীদুলের বাবা ভালো মানের একজন ব্যবসায়ী। আর জসিমের নিজের দুটি ছয় তলা বাড়ি ও একটি রেস্টুরেন্ট রয়েছে। পরিচিত এক লোকের মাধ্যমে, আইস কারবারে জড়িয়ে পড়েন জসিম। নিজের বাড়ি ও রেস্টুরেন্ট থাকলেও জসিম ভেবেছিলেন, আইসের একটি বড় চালান সাপ্লাই দিতে পারলে তিনি একটি গাড়ি কিনতে পারবেন। শুধু জসিমই নয়, গ্রেপ্তারকৃত কারও আর্থিক সংকট না থাকলেও সবাই লোভে পড়ে আইস ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। আগেও আইস সিন্ডিকেটের যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারাও ধনাঢ্য পরিবারের বলে জানিয়েছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
গ্রেপ্তার ৫
শুক্রবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১
পুরনো ইয়াবা ব্যবসায়ীরাই রোহিঙ্গাদের মাধ্যমে মায়ানমার থেকে নতুন মাদক আইস নিয়ে আসছে দেশে। এ মাদকে যুক্ত হচ্ছে বিত্তশালীরা। ধনাঢ্য পরিবারের বিদেশ থেকে এমবিএ বিবিএ করে আসা সন্তানরাও রাজধানীর অভিযাত এলাকায় করছেন মাদকের কারবার। তারা সেবনের পাশাপাশি ভয়ানক মাদক আইস কারবারের সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন।
শুক্রবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ডিএনসির ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের (উত্তর) অতিরিক্ত পরিচালক ফজলুর রহমান এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। ৫ আইস ব্যবসায়ী ও সেবনকারীকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, জাকারিয়া আহমেদ অমন, তারেক আহম্মেদ, সাদ্দাম হোসেন, শহীদুল ইসলাম খান ও জসিম উদ্দীন। বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) ও বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ধারাবাহিক অভিযানে গুলশান, বনানী, রমনা ও ভাটারা এলাকায় কয়েক দফা অভিযান চালিয়ে ওই পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে জব্দ করা হয়েছে ৫৬০ ক্রিস্টাল মেথ (আইস), ১ হাজার ২০০ পিস ইয়াবা ও দুটি প্রাইভেটকার জব্দ করা হয়েছে। জব্দকৃত আইস ও ইয়াবার বাজারমূল্য কোটি টাকার বেশি বলে জানানো হয়েছে।
ডিএনসির অতিরিক্ত পরিচালক বলেন, গত ২১ আগস্ট প্রায় আধা কেজি আইসসহ বনানী-উত্তরা থেকে ১০ সদস্যের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেটকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন গোয়েন্দা কৌশল ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে গুলশান, ভাটারা, কুড়িল, রমনা এলাকায় আইসের আরও একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক শনাক্ত করা হয়। রমনা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে জাকারিয়া আহমেদ অমনকে পাঁচ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ আইসসহ গ্রেপ্তার করা হয়। জাকারিয়ার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে গুলশান বারিধারা দূতাবাস এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তারেক আহম্মেদকে পাঁচ গ্রাম আইস ও ১০০ পিস ইয়াবা ও একটি প্রাইভেটকারসহ গ্রেপ্তার করা হয়। জাকারিয়া ও তারেকের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে সাদ্দাম হোসেনকে ৯০ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ আইচ ও ৪০০ পিস ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করা হয়।
পরবর্তীতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে শহীদুল ইসলাম খানকে একই এলাকা থেকে ২০০ গ্রাম আইস ও ৫০০ পিস ইয়াবা, একটি প্রাইভেটকারসহ গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে তাৎক্ষণিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ভাটারার জোয়ার সাহারা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে জসিম উদ্দিনকে ২৬০ গ্রাম আইস ও ২০০ পিস ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করা হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা করা হয়।
ইয়াবার রুটে আইস আনছে রোহিঙ্গারা
লাভ বেশি হওয়ায় পুরনো সব ইয়াবা ব্যবসায়ী আইস ব্যবসার দিকে ঝুঁকছে জানিয়ে ফজলুর রহমান বলেন, মায়ানমার থেকেই আইসের চালান প্রবেশ করছে। যে রুট দিয়ে যে রুট দিয়ে ইয়াবা আসে, একই রুট দিয়ে আনা হচ্ছে আইস। আইস আনতে ব্যবহার করা হচ্ছে রোহিঙ্গাদের। ইয়াবার চেয়ে আইসের দাম বেশি হওয়ায়, রোহিঙ্গাদের আইসের চালান আনতে বেশি টাকা দেয়া হচ্ছে। এতে উৎসাহী হয়ে রাতের আঁধারে আইসের চালান দেশে আনছে রোহিঙ্গারা। এ ছাড়াও নাফ নদী দিয়েও আসছে চালান। গভীর সমুদ্রে হাতবদল করে এসব চালান দেশে প্রবেশ করছে। পরে হাত বদল হয়ে ছড়িয়ে পড়ছে রাজধানীসহ সারাদেশে। রাজধানীর বিভিন্ন অভিজাত এলাকায় আইসের সিন্ডিকেট গড়ে উঠলেও ইয়াবার মতো বিস্তার ঘটেনি বলে দাবি করেছেন ফজলুর রহমান।
গ্রেপ্তার পাঁচজনই ধনাঢ্য পরিবারের
ডিএনসি কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তারকৃত পাঁচজনই ধনাঢ্য পরিবারের সন্তান। এদের মধ্যে জাকারিয়া রহমান অমন অস্ট্রেলিয়া থেকে বিবিএ করে দেশে ফেরেন। তার দুই বোন বর্তমানে বিদেশে বিবিএ পড়ালেখা করছেন। তারেক ইংল্যান্ড থেকে বিবিএ শেষ করেছেন। তার বাবা সরকারি চাকরিজীবী ছিলেন। বারিধারায় তাদের নিজস্ব বাড়ি রয়েছে। সাদ্দাম নিজে সিএনএফ ব্যবসায়ী। তার বাবাও দীর্ঘদিন ধরে সিএনএফ ব্যবসা করে আসছেন। শহীদুলের বাবা ভালো মানের একজন ব্যবসায়ী। আর জসিমের নিজের দুটি ছয় তলা বাড়ি ও একটি রেস্টুরেন্ট রয়েছে। পরিচিত এক লোকের মাধ্যমে, আইস কারবারে জড়িয়ে পড়েন জসিম। নিজের বাড়ি ও রেস্টুরেন্ট থাকলেও জসিম ভেবেছিলেন, আইসের একটি বড় চালান সাপ্লাই দিতে পারলে তিনি একটি গাড়ি কিনতে পারবেন। শুধু জসিমই নয়, গ্রেপ্তারকৃত কারও আর্থিক সংকট না থাকলেও সবাই লোভে পড়ে আইস ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। আগেও আইস সিন্ডিকেটের যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারাও ধনাঢ্য পরিবারের বলে জানিয়েছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।