স্ত্রীকে গরম তেল ঢেলে হত্যা
যৌতুকের জন্য নিয়মিত চলত নির্যাতন। সেই সঙ্গে স্বামীর পরকীয়া সম্পর্ক ও ভরণপোষণের টাকা না দেয়ায় পারিবারিক কলহ লেগেই থাকত। স্বামীর নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে দুই সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে যান স্বর্ণা। একপর্যায়ে সাভারের জিরানিতে একটি গার্মেন্টসে চাকরি নেন। কিন্তু স্বামী মজনু মিয়ার তৎপরতা থামেনি। ঠিকানা জোগাড় করে স্বর্ণার কাছে গিয়ে আবার যৌতুক দাবি করেন। কিন্তু টাকা দিতে অপারগতা জানালে, ঘুমন্ত স্বর্ণার ওপর গরম তেল ঢেলে পালিয়ে যায় মজনু মিয়া। ঘাতক স্বামী মজনু মিয়াকে গ্রেপ্তারের পর এ তথ্য জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) রাতে জামালপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করেছেন।
বুধবার (১৩ অক্টোবর) রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর জানান, ২০০৭ সালে পারিবারিকভাবে মজনু মিয়া এবং স্বর্ণার তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তারা মজনু মিয়ার গ্রামের বাড়ি জামালপুরের সরিষাবাড়ীর পিংনা গ্রামে বসবাস করতেন। মজনু মিয়া স্থানীয় বাজারে রেডিমেড গার্মেন্টসের দোকানদারি করত। তাদের ওমর ফারুক সিফাত নামের ১১ বছরের একটি ছেলে ও খাদিজা নামের দুই বছরের একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে।
মুক্তাধর জানান, স্বামীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে বাধা দেয়ায় এবং যৌতুকের দাবিতে প্রায়শই স্বর্ণাকে নির্যাতন করা হতো। এমনকি মজনু মিয়া সংসারের ভরণপোষণও সঠিকভাবে করত না। এর আগেও যৌতুকের দাবিতে মারপিট করে গুরুতর জখম করায় মৃত স্বর্ণার দুলাভাই মো. ময়নুল ইসলাম বাদী হয়ে আসামি মজনু মিয়ার বিরুদ্ধে সরিষাবাড়ী থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলায় মজনু মিয়া দুই মাস ১৯ দিন জেল হাজতে থাকেন। পরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মধ্যস্ততায় বাদী তার মামলাটি প্রত্যাহার করে নেন।
কিন্তু কিছুদিন পরে আবারও স্বর্ণার ওপরে নির্যাতন শুরু হয়। মজনু মিয়ার নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে স্বর্ণা ছয়মাস আগে তার সন্তান নিয়ে বাবা-মার বাড়িতে সিরাজগঞ্জে চলে যান। কিন্তু অভাব অনাটনের কারণে তার ছেলেমেয়েদের মায়ের কাছে রেখে ঢাকার আশুলিয়ায় এসে ডরিন গার্মেন্টেসে পোশাকশ্রমিকের কাজ নেন। কিন্তু মজনু কৌশলে তার স্ত্রীর ঠিকানা জোগাড় করে ঢাকায় এসে অশান্তি শুরু করেন। যৌতুকের টাকা দিতে অস্বীকার করা হলে গত ২৫ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত ২টার দিকে স্বর্ণার শরীরে গরম তেল ঢেলে পালিয়ে যান মজনু মিয়া।
রাতেই সহকর্মীরা তাকে সাভার থেকে জামালপুরের মজনু মিয়ার নিজের বাড়িতে নিয়ে যান। পরদিন সকালে তাকে জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে ফেলে রেখে শ্বশুরবাড়ির লোকজন পালিয়ে যায়। অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের স্থানান্তর করা হয়। সেখানে ১৩ দিন চিকিৎসার পর মৃত্যু হয় ৫২ শতাংশ দগ্ধ হওয়া স্বর্ণার।
স্ত্রীকে গরম তেল ঢেলে হত্যা
বুধবার, ১৩ অক্টোবর ২০২১
যৌতুকের জন্য নিয়মিত চলত নির্যাতন। সেই সঙ্গে স্বামীর পরকীয়া সম্পর্ক ও ভরণপোষণের টাকা না দেয়ায় পারিবারিক কলহ লেগেই থাকত। স্বামীর নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে দুই সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে যান স্বর্ণা। একপর্যায়ে সাভারের জিরানিতে একটি গার্মেন্টসে চাকরি নেন। কিন্তু স্বামী মজনু মিয়ার তৎপরতা থামেনি। ঠিকানা জোগাড় করে স্বর্ণার কাছে গিয়ে আবার যৌতুক দাবি করেন। কিন্তু টাকা দিতে অপারগতা জানালে, ঘুমন্ত স্বর্ণার ওপর গরম তেল ঢেলে পালিয়ে যায় মজনু মিয়া। ঘাতক স্বামী মজনু মিয়াকে গ্রেপ্তারের পর এ তথ্য জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) রাতে জামালপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করেছেন।
বুধবার (১৩ অক্টোবর) রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর জানান, ২০০৭ সালে পারিবারিকভাবে মজনু মিয়া এবং স্বর্ণার তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তারা মজনু মিয়ার গ্রামের বাড়ি জামালপুরের সরিষাবাড়ীর পিংনা গ্রামে বসবাস করতেন। মজনু মিয়া স্থানীয় বাজারে রেডিমেড গার্মেন্টসের দোকানদারি করত। তাদের ওমর ফারুক সিফাত নামের ১১ বছরের একটি ছেলে ও খাদিজা নামের দুই বছরের একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে।
মুক্তাধর জানান, স্বামীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে বাধা দেয়ায় এবং যৌতুকের দাবিতে প্রায়শই স্বর্ণাকে নির্যাতন করা হতো। এমনকি মজনু মিয়া সংসারের ভরণপোষণও সঠিকভাবে করত না। এর আগেও যৌতুকের দাবিতে মারপিট করে গুরুতর জখম করায় মৃত স্বর্ণার দুলাভাই মো. ময়নুল ইসলাম বাদী হয়ে আসামি মজনু মিয়ার বিরুদ্ধে সরিষাবাড়ী থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলায় মজনু মিয়া দুই মাস ১৯ দিন জেল হাজতে থাকেন। পরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মধ্যস্ততায় বাদী তার মামলাটি প্রত্যাহার করে নেন।
কিন্তু কিছুদিন পরে আবারও স্বর্ণার ওপরে নির্যাতন শুরু হয়। মজনু মিয়ার নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে স্বর্ণা ছয়মাস আগে তার সন্তান নিয়ে বাবা-মার বাড়িতে সিরাজগঞ্জে চলে যান। কিন্তু অভাব অনাটনের কারণে তার ছেলেমেয়েদের মায়ের কাছে রেখে ঢাকার আশুলিয়ায় এসে ডরিন গার্মেন্টেসে পোশাকশ্রমিকের কাজ নেন। কিন্তু মজনু কৌশলে তার স্ত্রীর ঠিকানা জোগাড় করে ঢাকায় এসে অশান্তি শুরু করেন। যৌতুকের টাকা দিতে অস্বীকার করা হলে গত ২৫ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত ২টার দিকে স্বর্ণার শরীরে গরম তেল ঢেলে পালিয়ে যান মজনু মিয়া।
রাতেই সহকর্মীরা তাকে সাভার থেকে জামালপুরের মজনু মিয়ার নিজের বাড়িতে নিয়ে যান। পরদিন সকালে তাকে জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে ফেলে রেখে শ্বশুরবাড়ির লোকজন পালিয়ে যায়। অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের স্থানান্তর করা হয়। সেখানে ১৩ দিন চিকিৎসার পর মৃত্যু হয় ৫২ শতাংশ দগ্ধ হওয়া স্বর্ণার।