বেড়া পৌর নির্বাচন
পাবনার বেড়া পৌরসভা নির্বাচনের প্রচারণার শেষ মুহূর্তে সাবেক স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী ও পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকু পরিবারের বিরোধ সংঘাতে রূপ নিয়েছে। পুলিশি নিরাপত্তা বেষ্টনীর মাঝেই স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী সংসদ সদস্য টুকুর ছোট ভাই আবদুল বাতেনের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে বেড়া সিএন্ডবি বাজার এলাকার এ ঘটনায় আবদুল বাতেনসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হবার খবর পাওয়া গেছে। হামলার জন্য সাংসদপুত্র ও নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী আসিফ শামস রঞ্জনের সমর্থকদের দায়ী করেছেন বাতেন। ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজও আবদুল বাতেন গণমাধ্যমে পাঠিয়েছেন।
নারিকেল গাছ প্রতীকের স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী আবদুল বাতেন অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচনে জনসমর্থন না পেয়ে পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকু তার নিজ পুত্র রঞ্জনকে বিজয়ী করতে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে নির্বাচনী এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। নির্বাচন থেকে আমাকে সরিয়ে দিতে প্রচারণায় বাধা দেয়ার পাশাপাশি একাধিকবার আমাকে হত্যার চেষ্টা হয়েছে। এমনকি আমার বাড়ির সামনে রঞ্জনের উপস্থিতিতে সন্ত্রাসীরা স্বশস্ত্র মহড়া দিয়ে হত্যার হুমকি দিয়েছে।
এ সব ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ ও প্রমাণাদি নজরে আনা হলে মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশে আমাকে পুলিশি নিরাপত্তা দেয়া হয়। সংসদ সদস্য টুকুর সন্ত্রাসীরা এতোটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে, তারা এখন পুলিশের উপস্থিতিতেই আমাকে জবাই করতে চাইছেন। ধারাবাহিক হামলার প্রেক্ষিতেই বৃহস্পতিবার সংসদ সদস্য টুকুর নির্দেশে তার অনুসারী সন্ত্রাসী ময়ছার, রমজান, হাকিম বস, আল আমিন, ইমরান, হান্নান, বরকত, রাসুর নেতৃত্বে আমার প্রচারণায় হামলা হয়েছে। আবদুল বাতেন আরও বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হওয়ায় সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে দিচ্ছেন না। তার নির্দেশেই বহিরাগত সন্ত্রাসীরা এলাকায় অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির অপচেষ্টা করছে। সুষ্ঠু নির্বাচন ও ভোটারদের নিরাপত্তার স্বার্থে নির্বাচনকালীন সময়ে বেড়া পৌর এলাকায় সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি জানাচ্ছি।
আবদুল বাতেনের পাঠানো ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, সাদা শার্ট পরিহিত রমজান ও ময়ছারের নেতৃত্বে নৌকার সমর্থক ৩০/৩৫ জনের একটি দল অকথ্য গালিগালাজ করে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী আবদুল বাতেনকে এলাকা ছাড়তে হুমকি দিচ্ছে। এ সময় আবদুল বাতেনের নিরাপত্তায় থাকা পুলিশ সদস্যরা তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করলেও তা উপেক্ষা করে তারা মারপিট করার চেষ্টা করছেন। প্রাণ বাঁচাতে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল বাতেন ও তার সমর্থকরা বাজারের প্রবীর দত্তের মুদি দোকানে আশ্রয় নিলে সেখানেও সন্ত্রাসীরা উপস্থিত হয়ে ‘একটা একটা বাতেন ধর, ধরে ধরে জবাই কর’ সেøাগান দিয়ে তাদের মারপিটের চেষ্টা করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চাচা ভাতিজার সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনায় বাজারের ব্যবসায়ী ও জনসাধারণের মাঝে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। মুহূর্তেই প্রাণভয়ে দোকান মালিকরা দোকান বন্ধ করে দিগি¦দিক ছুটাছুটি শুরু করেন, এ সময় সন্ত্রাসীদের হামলায় বাতেনসহ প্রায় ১০ জন আহত হয়। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিরপত্তার দায়িত্বে থাকা এক পুলিশ সদস্য জানান, ফজরের নামাজের পর থেকে পৌর এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রচারণায় আমরা আবদুল বাতেনকে নিরপত্তা দিয়ে আসছিলাম। দুপুর একটার দিকে হঠাৎ করেই সিএন্ডবি মোড়ে আবদুল বাতেনের উপর হামলার চেষ্টা করা হয়। আমরা তাৎক্ষণিক তাকে একটি দোকানে নিয়ে হামলা থেকে রক্ষা করেছি।
বেড়া থানার ওসি অরবিন্দ সরকার জানান, নৌকা ও নারিকেল গাছ প্রতীকের সমর্থকরা সিএন্ডবি বাজারে মুখোমুখি হলে সামান্য একটু উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। তাৎক্ষণিকভাবে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যববস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে কথা বলতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও এমপি টুকুপুত্র আসিফ শামস রঞ্জনকে ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।
নৌকার পক্ষে বেড়ায় প্রচারণায় আসা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন বলেন, হামলার কোন ঘটনা আমার জানা নেই। স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজেই হামলার নাটক সাজিয়ে ভোটারদের সহানুভূতি পাওয়ার চেষ্টা করছেন।
জেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, বেড়া পৌর মেয়র পদে লড়ছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য টুকু পরিবারেই তিন প্রার্থী। নৌকা প্রতীক নিয়ে টুকুর ছেলে আসিফ শামস রঞ্জন, নারিকেল গাছ প্রতীক নিয়ে টুকুর ছোট ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান মেয়র আবদুল বাতেন এবং মোবাইল ফোন প্রতীক নিয়ে টুকুর ভাতিজি এস এম সাদিয়া আলম। এছাড়া রেল ইঞ্জিন প্রতীক নিয়ে মেয়র পদে লড়ছেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এ এইচ এম ফজলুর রহমান মাসুদ, জগ প্রতীক নিয়ে প্রার্থিতায় রয়েছেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা কে এম আবদুল্লাহ। আগামী ২৮ নভেম্বর পৌরসভাটিতে ভোট গ্রহণ হবে।
বেড়া পৌর নির্বাচন
বৃহস্পতিবার, ২৫ নভেম্বর ২০২১
পাবনার বেড়া পৌরসভা নির্বাচনের প্রচারণার শেষ মুহূর্তে সাবেক স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী ও পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকু পরিবারের বিরোধ সংঘাতে রূপ নিয়েছে। পুলিশি নিরাপত্তা বেষ্টনীর মাঝেই স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী সংসদ সদস্য টুকুর ছোট ভাই আবদুল বাতেনের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে বেড়া সিএন্ডবি বাজার এলাকার এ ঘটনায় আবদুল বাতেনসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হবার খবর পাওয়া গেছে। হামলার জন্য সাংসদপুত্র ও নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী আসিফ শামস রঞ্জনের সমর্থকদের দায়ী করেছেন বাতেন। ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজও আবদুল বাতেন গণমাধ্যমে পাঠিয়েছেন।
নারিকেল গাছ প্রতীকের স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী আবদুল বাতেন অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচনে জনসমর্থন না পেয়ে পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকু তার নিজ পুত্র রঞ্জনকে বিজয়ী করতে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে নির্বাচনী এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। নির্বাচন থেকে আমাকে সরিয়ে দিতে প্রচারণায় বাধা দেয়ার পাশাপাশি একাধিকবার আমাকে হত্যার চেষ্টা হয়েছে। এমনকি আমার বাড়ির সামনে রঞ্জনের উপস্থিতিতে সন্ত্রাসীরা স্বশস্ত্র মহড়া দিয়ে হত্যার হুমকি দিয়েছে।
এ সব ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ ও প্রমাণাদি নজরে আনা হলে মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশে আমাকে পুলিশি নিরাপত্তা দেয়া হয়। সংসদ সদস্য টুকুর সন্ত্রাসীরা এতোটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে, তারা এখন পুলিশের উপস্থিতিতেই আমাকে জবাই করতে চাইছেন। ধারাবাহিক হামলার প্রেক্ষিতেই বৃহস্পতিবার সংসদ সদস্য টুকুর নির্দেশে তার অনুসারী সন্ত্রাসী ময়ছার, রমজান, হাকিম বস, আল আমিন, ইমরান, হান্নান, বরকত, রাসুর নেতৃত্বে আমার প্রচারণায় হামলা হয়েছে। আবদুল বাতেন আরও বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হওয়ায় সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে দিচ্ছেন না। তার নির্দেশেই বহিরাগত সন্ত্রাসীরা এলাকায় অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির অপচেষ্টা করছে। সুষ্ঠু নির্বাচন ও ভোটারদের নিরাপত্তার স্বার্থে নির্বাচনকালীন সময়ে বেড়া পৌর এলাকায় সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি জানাচ্ছি।
আবদুল বাতেনের পাঠানো ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, সাদা শার্ট পরিহিত রমজান ও ময়ছারের নেতৃত্বে নৌকার সমর্থক ৩০/৩৫ জনের একটি দল অকথ্য গালিগালাজ করে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী আবদুল বাতেনকে এলাকা ছাড়তে হুমকি দিচ্ছে। এ সময় আবদুল বাতেনের নিরাপত্তায় থাকা পুলিশ সদস্যরা তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করলেও তা উপেক্ষা করে তারা মারপিট করার চেষ্টা করছেন। প্রাণ বাঁচাতে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল বাতেন ও তার সমর্থকরা বাজারের প্রবীর দত্তের মুদি দোকানে আশ্রয় নিলে সেখানেও সন্ত্রাসীরা উপস্থিত হয়ে ‘একটা একটা বাতেন ধর, ধরে ধরে জবাই কর’ সেøাগান দিয়ে তাদের মারপিটের চেষ্টা করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চাচা ভাতিজার সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনায় বাজারের ব্যবসায়ী ও জনসাধারণের মাঝে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। মুহূর্তেই প্রাণভয়ে দোকান মালিকরা দোকান বন্ধ করে দিগি¦দিক ছুটাছুটি শুরু করেন, এ সময় সন্ত্রাসীদের হামলায় বাতেনসহ প্রায় ১০ জন আহত হয়। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিরপত্তার দায়িত্বে থাকা এক পুলিশ সদস্য জানান, ফজরের নামাজের পর থেকে পৌর এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রচারণায় আমরা আবদুল বাতেনকে নিরপত্তা দিয়ে আসছিলাম। দুপুর একটার দিকে হঠাৎ করেই সিএন্ডবি মোড়ে আবদুল বাতেনের উপর হামলার চেষ্টা করা হয়। আমরা তাৎক্ষণিক তাকে একটি দোকানে নিয়ে হামলা থেকে রক্ষা করেছি।
বেড়া থানার ওসি অরবিন্দ সরকার জানান, নৌকা ও নারিকেল গাছ প্রতীকের সমর্থকরা সিএন্ডবি বাজারে মুখোমুখি হলে সামান্য একটু উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। তাৎক্ষণিকভাবে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যববস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে কথা বলতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও এমপি টুকুপুত্র আসিফ শামস রঞ্জনকে ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।
নৌকার পক্ষে বেড়ায় প্রচারণায় আসা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন বলেন, হামলার কোন ঘটনা আমার জানা নেই। স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজেই হামলার নাটক সাজিয়ে ভোটারদের সহানুভূতি পাওয়ার চেষ্টা করছেন।
জেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, বেড়া পৌর মেয়র পদে লড়ছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য টুকু পরিবারেই তিন প্রার্থী। নৌকা প্রতীক নিয়ে টুকুর ছেলে আসিফ শামস রঞ্জন, নারিকেল গাছ প্রতীক নিয়ে টুকুর ছোট ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান মেয়র আবদুল বাতেন এবং মোবাইল ফোন প্রতীক নিয়ে টুকুর ভাতিজি এস এম সাদিয়া আলম। এছাড়া রেল ইঞ্জিন প্রতীক নিয়ে মেয়র পদে লড়ছেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এ এইচ এম ফজলুর রহমান মাসুদ, জগ প্রতীক নিয়ে প্রার্থিতায় রয়েছেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা কে এম আবদুল্লাহ। আগামী ২৮ নভেম্বর পৌরসভাটিতে ভোট গ্রহণ হবে।