বাংলা চলচ্চিত্রের সোনালি দিনের নায়ক ওয়াসিম আর নেই। শনিবার দিবাগত রাত (১৮ এপ্রিল) সাড়ে ১২টার দিকে তিনি মারা গেছেন। তার মরদেহ ফ্রিজিং গাড়িতে রাখা আছে। আজ ১৮ এপ্রিল জোহর নামাজের পরে গুলশান আজাদ মসজিদে তার প্রথম নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর বনানী কবরস্থানে দ্বিতীয় জানাযা শেষে সেখানেই দাফন করা হবে। এ খবর গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান।
তিনি বলেন, ‘অনেক দিন ধরেই ওয়াসিম ভাই বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন। তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন রাজধানীর শাহাবউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। আমরা তার রুহের মাগফিরাত কামনা করছি।’
একসময়ের দর্শকপ্রিয় এই নায়ক বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ হয়ে বাসাতেই ছিলেন। হাঁটতে পারতেন না বলে বিছানাতে শুয়ে-বসে দিন কেটেছে তাঁর। সম্প্রতি ভর্তি করা হয় উক্ত হাসপাতালে। জায়েদ খান জানান, ওয়াসিম করোনায় আক্রান্ত ছিলেন না।
চলচ্চিত্রে ওয়াসিমের শুরুটা হয় ১৯৭২ সালে শফী পরিচালিত ‘ছন্দ হারিয়ে গেলো’ চলচ্চিত্রের সহকারী পরিচালক হিসেবে। মোহসিন পরিচালিত ‘রাতের পর দিন’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে প্রথম নায়ক হিসেবে রূপালি পর্দায় আসেন তিনি। সিনেমাটি ব্যবসাসফল হলে সুপারস্টার হয়ে উঠেন তিনি। এরপর ১৯৭৬ সালে মুক্তি পাওয়া এস এম শফী পরিচালিত ‘দি রেইন’ সিনেমা তাকে ব্যাপক পরিচিতি এনে দেয়।
১৯৭৩ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত চলচ্চিত্রে শীর্ষ নায়কদের একজন ছিলেন তিনি। ফোক ফ্যান্টাসি আর অ্যাকশন ছবির অপ্রতিদ্বন্দ্বী অভিনেতা ছিলেন তিনি। অভিনয় জীবনে ১৫২টির মতো ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। নানা রোগ-ভোগে ২০১০ সাল থেকে চলচ্চিত্র থেকে দূরে সরে যান ওয়াসিম।
তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলো হলো- দ্য রেইন, ডাকু মনসুর, জিঘাংসা, কে আসল কে নকল, বাহাদুর, দোস্ত দুশমন, মানসী, দুই রাজকুমার, সওদাগর, নরম গরম, ইমান, রাতের পর দিন, আসামি হাজির, মিস লোলিতা, রাজ দুলারী, চন্দন দ্বীপের রাজকন্যা, লুটেরা, লাল মেম সাহেব, বেদ্বীন, জীবন সাথী, রাজনন্দিনী, রাজমহল, বিনি সুতার মালা, বানজারান।
তিনি অলিভিয়া, অঞ্জু ঘোষ ও শাবানার সঙ্গে বেশি সংখ্যক সিনেমায় অভিনয় করেছেন। ‘দি রেইন’ সিনেমায় নায়িকা ছিলেন অলিভিয়া। এরপর ‘বাহাদুর’, ‘লুটেরা’, ‘লাল মেম সাহেব’, ‘বেদ্বীন’ সিনেমায় অলিভিয়ার সঙ্গে অভিনয় করেন। ‘রাজ দুলালী’ ছবিতে শাবানার সঙ্গে অভিনয় দর্শকদের মুগ্ধ করেছিলে। অঞ্জু ঘোষের সঙ্গে অভিনয় করেছেন- ‘সওদাগর’, ‘নরম গরম’, ‘আবেহায়াত’, ‘চন্দন দ্বীপের রাজকন্যা’, ‘পদ্মাবতী’, ‘রসের বাইদানী’সহ বেশকিছু সিনেমায়।
১৯৫০ সালের ২৩ মার্চ চাঁদপুর জেলার আমিরাবাদে জন্মগ্রহণ করেন ওয়াসিম। তার পারিবারিক নাম মেজবাহ উদ্দীন আহমেদ।। তিনি ইতিহাস বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। কলেজের ছাত্রাবস্থায় তিনি বডি বিল্ডার হিসেবে নাম করেছিলেন। ১৯৬৪ সালে তিনি বডি বিল্ডিং-এর জন্য ইস্ট পাকিস্তান খেতাব অর্জন করেছিলেন।
ওয়াসিম বিয়ে করেছিলেন চিত্রনায়িকা রোজীর ছোট বোনকে। তাদের দুটি সন্তান হয়– পুত্র দেওয়ান ফারদিন এবং কন্যা বুশরা আহমেদ। ২০০০ সালে তার স্ত্রীর অকালমৃত্যু ঘটে। ২০০৬ সালে ওয়াসিমের কন্যা বুশরা আহমেদ ১৪ বছর বয়সে মানারাত ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের পাঁচতলা থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেন। পরীক্ষা চলাকালীন নকলের অভিযোগ তার পরিবারকে জানাবার প্রাক্কালে বাথরুমে যাওয়ার কথা বলে বুশরা লাফ দেন। অন্যদিকে পুত্র ফারদিন লন্ডনের কারডিফ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলএম পরীক্ষায় কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়ে ব্যারিস্টার হিসেবে আইন পেশায় নিয়োজিত।
রোববার, ১৮ এপ্রিল ২০২১
বাংলা চলচ্চিত্রের সোনালি দিনের নায়ক ওয়াসিম আর নেই। শনিবার দিবাগত রাত (১৮ এপ্রিল) সাড়ে ১২টার দিকে তিনি মারা গেছেন। তার মরদেহ ফ্রিজিং গাড়িতে রাখা আছে। আজ ১৮ এপ্রিল জোহর নামাজের পরে গুলশান আজাদ মসজিদে তার প্রথম নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর বনানী কবরস্থানে দ্বিতীয় জানাযা শেষে সেখানেই দাফন করা হবে। এ খবর গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান।
তিনি বলেন, ‘অনেক দিন ধরেই ওয়াসিম ভাই বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন। তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন রাজধানীর শাহাবউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। আমরা তার রুহের মাগফিরাত কামনা করছি।’
একসময়ের দর্শকপ্রিয় এই নায়ক বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ হয়ে বাসাতেই ছিলেন। হাঁটতে পারতেন না বলে বিছানাতে শুয়ে-বসে দিন কেটেছে তাঁর। সম্প্রতি ভর্তি করা হয় উক্ত হাসপাতালে। জায়েদ খান জানান, ওয়াসিম করোনায় আক্রান্ত ছিলেন না।
চলচ্চিত্রে ওয়াসিমের শুরুটা হয় ১৯৭২ সালে শফী পরিচালিত ‘ছন্দ হারিয়ে গেলো’ চলচ্চিত্রের সহকারী পরিচালক হিসেবে। মোহসিন পরিচালিত ‘রাতের পর দিন’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে প্রথম নায়ক হিসেবে রূপালি পর্দায় আসেন তিনি। সিনেমাটি ব্যবসাসফল হলে সুপারস্টার হয়ে উঠেন তিনি। এরপর ১৯৭৬ সালে মুক্তি পাওয়া এস এম শফী পরিচালিত ‘দি রেইন’ সিনেমা তাকে ব্যাপক পরিচিতি এনে দেয়।
১৯৭৩ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত চলচ্চিত্রে শীর্ষ নায়কদের একজন ছিলেন তিনি। ফোক ফ্যান্টাসি আর অ্যাকশন ছবির অপ্রতিদ্বন্দ্বী অভিনেতা ছিলেন তিনি। অভিনয় জীবনে ১৫২টির মতো ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। নানা রোগ-ভোগে ২০১০ সাল থেকে চলচ্চিত্র থেকে দূরে সরে যান ওয়াসিম।
তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলো হলো- দ্য রেইন, ডাকু মনসুর, জিঘাংসা, কে আসল কে নকল, বাহাদুর, দোস্ত দুশমন, মানসী, দুই রাজকুমার, সওদাগর, নরম গরম, ইমান, রাতের পর দিন, আসামি হাজির, মিস লোলিতা, রাজ দুলারী, চন্দন দ্বীপের রাজকন্যা, লুটেরা, লাল মেম সাহেব, বেদ্বীন, জীবন সাথী, রাজনন্দিনী, রাজমহল, বিনি সুতার মালা, বানজারান।
তিনি অলিভিয়া, অঞ্জু ঘোষ ও শাবানার সঙ্গে বেশি সংখ্যক সিনেমায় অভিনয় করেছেন। ‘দি রেইন’ সিনেমায় নায়িকা ছিলেন অলিভিয়া। এরপর ‘বাহাদুর’, ‘লুটেরা’, ‘লাল মেম সাহেব’, ‘বেদ্বীন’ সিনেমায় অলিভিয়ার সঙ্গে অভিনয় করেন। ‘রাজ দুলালী’ ছবিতে শাবানার সঙ্গে অভিনয় দর্শকদের মুগ্ধ করেছিলে। অঞ্জু ঘোষের সঙ্গে অভিনয় করেছেন- ‘সওদাগর’, ‘নরম গরম’, ‘আবেহায়াত’, ‘চন্দন দ্বীপের রাজকন্যা’, ‘পদ্মাবতী’, ‘রসের বাইদানী’সহ বেশকিছু সিনেমায়।
১৯৫০ সালের ২৩ মার্চ চাঁদপুর জেলার আমিরাবাদে জন্মগ্রহণ করেন ওয়াসিম। তার পারিবারিক নাম মেজবাহ উদ্দীন আহমেদ।। তিনি ইতিহাস বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। কলেজের ছাত্রাবস্থায় তিনি বডি বিল্ডার হিসেবে নাম করেছিলেন। ১৯৬৪ সালে তিনি বডি বিল্ডিং-এর জন্য ইস্ট পাকিস্তান খেতাব অর্জন করেছিলেন।
ওয়াসিম বিয়ে করেছিলেন চিত্রনায়িকা রোজীর ছোট বোনকে। তাদের দুটি সন্তান হয়– পুত্র দেওয়ান ফারদিন এবং কন্যা বুশরা আহমেদ। ২০০০ সালে তার স্ত্রীর অকালমৃত্যু ঘটে। ২০০৬ সালে ওয়াসিমের কন্যা বুশরা আহমেদ ১৪ বছর বয়সে মানারাত ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের পাঁচতলা থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেন। পরীক্ষা চলাকালীন নকলের অভিযোগ তার পরিবারকে জানাবার প্রাক্কালে বাথরুমে যাওয়ার কথা বলে বুশরা লাফ দেন। অন্যদিকে পুত্র ফারদিন লন্ডনের কারডিফ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলএম পরীক্ষায় কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়ে ব্যারিস্টার হিসেবে আইন পেশায় নিয়োজিত।