ইলাস্ট্রেশন: বেন জেনিংস / দ্য গার্ডিয়ান
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত এবং কংগ্রেসে সদ্য পাস হওয়া ‘ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল’-এ রয়েছে ব্যাপক করছাড়, বিপুল ব্যয়, এবং সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে ছাঁটাই। প্রতিনিধি পরিষদে ২১৮-২১৪ ভোটে বিলটি পাস হয়, আর এর আগে সিনেটে মাত্র এক ভোটের ব্যবধানে বিলটি অনুমোদন পায়। রিপাবলিকান সিনেটরদের মধ্যে মতবিরোধ থাকলেও শেষ মুহূর্তে বেশিরভাগ সদস্য ট্রাম্পের পক্ষে ভোট দেন। বিলটি এখন প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষরের অপেক্ষায়।
বিলের মাধ্যমে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ২০১৭ সালে চালু হওয়া ‘ট্যাক্স কাটস অ্যান্ড জবস অ্যাক্ট’–এর করছাড় স্থায়ী করা হয়েছে। স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশনও বাড়ানো হচ্ছে, যা ব্যক্তি করদাতার জন্য ১ হাজার ডলার, পরিবারপ্রধানদের জন্য ১ হাজার ৫০০ এবং দম্পতিদের জন্য ২ হাজার ডলার। ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য অতিরিক্ত ছয় হাজার ডলার ছাড় থাকছে, তবে এর জন্য আয়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে।
নতুন করে করছাড় দেওয়া হচ্ছে ওভারটাইম, টিপস এবং যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি গাড়ি কেনার ক্ষেত্রে নেওয়া ঋণের সুদের ওপর। তবে এসব সুবিধা কেবল ট্রাম্পের মেয়াদকাল পর্যন্তই বহাল থাকবে। অপরদিকে, ‘স্টেট অ্যান্ড লোকাল ট্যাক্স’-এ ছাড়ের সীমা বাড়িয়ে ৪০ হাজার ডলার করা হয়েছে, তবে তা ২০২৮ সাল পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
বিলের সবচেয়ে বিতর্কিত অংশগুলোর একটি হলো সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে বাজেট ছাঁটাই। দরিদ্র ও প্রতিবন্ধীদের জন্য ‘মেডিকেইড’ এবং খাদ্য সহায়তার ‘স্ন্যাপ’ কর্মসূচিতে বাজেট কমানোর পাশাপাশি নতুন কাজের শর্ত যোগ করা হয়েছে।
গবেষণা বলছে, এতে প্রায় ১ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন নাগরিক স্বাস্থ্যসেবা হারাতে পারেন এবং প্রায় ৮০ লাখ মানুষ খাদ্য সহায়তা থেকে বঞ্চিত হবেন।
পরিবেশবান্ধব নীতিতে বড় আঘাত এসেছে এই বিলে। বাইডেন প্রশাসনের সময় দেওয়া বৈদ্যুতিক গাড়ি ও শক্তি-সাশ্রয়ী যন্ত্রপাতিতে করছাড় ও ভর্তুকি বাতিল করা হয়েছে। যদিও বাতাস ও সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পে প্রস্তাবিত অতিরিক্ত কর শেষ মুহূর্তে বাদ দেওয়া হয়।
অভিবাসন নীতিতে ট্রাম্পের কঠোর অবস্থান এই বিলেও প্রতিফলিত হয়েছে। ‘ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট’ -কে ৪৫ বিলিয়ন ডলার দেওয়া হয়েছে বন্দিশিবির পরিচালনার জন্য। অবৈধ অভিবাসী বহিষ্কারে ১৪ বিলিয়ন ডলার ও নতুন ১০ হাজার এজেন্ট নিয়োগেও বরাদ্দ রাখা হয়েছে। পাশাপাশি মেক্সিকো সীমান্তে প্রতিরক্ষা অবকাঠামো নির্মাণে বরাদ্দ রাখা হয়েছে আরও ৫০ বিলিয়ন ডলার।
সরকারি ঋণের সীমা পাঁচ ট্রিলিয়ন ডলার বাড়ানো হচ্ছে। অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, সময়মতো ব্যবস্থা না নিলে যুক্তরাষ্ট্র ঋণ খেলাপিতে পড়তে পারে, যার ফলে বড় অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিতে পারে। কংগ্রেশনাল বাজেট অফিসের হিসেবে, এই বিল কার্যকর হলে ২০৩৪ সালের মধ্যে বাজেট ঘাটতি বেড়ে দাঁড়াবে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি ডলারে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই বিল ধনীদের জন্য সুবিধাজনক হলেও নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির জন্য তা আর্থিক চাপ বাড়াবে। ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট ল্যাবের তথ্য বলছে, ধনীদের আয় গড়ে ২.৪ শতাংশ বাড়বে, আর নিম্ন আয়ের মানুষের আয় কমবে গড়ে ২.৫ শতাংশ।
ইলাস্ট্রেশন: বেন জেনিংস / দ্য গার্ডিয়ান
শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত এবং কংগ্রেসে সদ্য পাস হওয়া ‘ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল’-এ রয়েছে ব্যাপক করছাড়, বিপুল ব্যয়, এবং সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে ছাঁটাই। প্রতিনিধি পরিষদে ২১৮-২১৪ ভোটে বিলটি পাস হয়, আর এর আগে সিনেটে মাত্র এক ভোটের ব্যবধানে বিলটি অনুমোদন পায়। রিপাবলিকান সিনেটরদের মধ্যে মতবিরোধ থাকলেও শেষ মুহূর্তে বেশিরভাগ সদস্য ট্রাম্পের পক্ষে ভোট দেন। বিলটি এখন প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষরের অপেক্ষায়।
বিলের মাধ্যমে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ২০১৭ সালে চালু হওয়া ‘ট্যাক্স কাটস অ্যান্ড জবস অ্যাক্ট’–এর করছাড় স্থায়ী করা হয়েছে। স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশনও বাড়ানো হচ্ছে, যা ব্যক্তি করদাতার জন্য ১ হাজার ডলার, পরিবারপ্রধানদের জন্য ১ হাজার ৫০০ এবং দম্পতিদের জন্য ২ হাজার ডলার। ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য অতিরিক্ত ছয় হাজার ডলার ছাড় থাকছে, তবে এর জন্য আয়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে।
নতুন করে করছাড় দেওয়া হচ্ছে ওভারটাইম, টিপস এবং যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি গাড়ি কেনার ক্ষেত্রে নেওয়া ঋণের সুদের ওপর। তবে এসব সুবিধা কেবল ট্রাম্পের মেয়াদকাল পর্যন্তই বহাল থাকবে। অপরদিকে, ‘স্টেট অ্যান্ড লোকাল ট্যাক্স’-এ ছাড়ের সীমা বাড়িয়ে ৪০ হাজার ডলার করা হয়েছে, তবে তা ২০২৮ সাল পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
বিলের সবচেয়ে বিতর্কিত অংশগুলোর একটি হলো সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে বাজেট ছাঁটাই। দরিদ্র ও প্রতিবন্ধীদের জন্য ‘মেডিকেইড’ এবং খাদ্য সহায়তার ‘স্ন্যাপ’ কর্মসূচিতে বাজেট কমানোর পাশাপাশি নতুন কাজের শর্ত যোগ করা হয়েছে।
গবেষণা বলছে, এতে প্রায় ১ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন নাগরিক স্বাস্থ্যসেবা হারাতে পারেন এবং প্রায় ৮০ লাখ মানুষ খাদ্য সহায়তা থেকে বঞ্চিত হবেন।
পরিবেশবান্ধব নীতিতে বড় আঘাত এসেছে এই বিলে। বাইডেন প্রশাসনের সময় দেওয়া বৈদ্যুতিক গাড়ি ও শক্তি-সাশ্রয়ী যন্ত্রপাতিতে করছাড় ও ভর্তুকি বাতিল করা হয়েছে। যদিও বাতাস ও সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পে প্রস্তাবিত অতিরিক্ত কর শেষ মুহূর্তে বাদ দেওয়া হয়।
অভিবাসন নীতিতে ট্রাম্পের কঠোর অবস্থান এই বিলেও প্রতিফলিত হয়েছে। ‘ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট’ -কে ৪৫ বিলিয়ন ডলার দেওয়া হয়েছে বন্দিশিবির পরিচালনার জন্য। অবৈধ অভিবাসী বহিষ্কারে ১৪ বিলিয়ন ডলার ও নতুন ১০ হাজার এজেন্ট নিয়োগেও বরাদ্দ রাখা হয়েছে। পাশাপাশি মেক্সিকো সীমান্তে প্রতিরক্ষা অবকাঠামো নির্মাণে বরাদ্দ রাখা হয়েছে আরও ৫০ বিলিয়ন ডলার।
সরকারি ঋণের সীমা পাঁচ ট্রিলিয়ন ডলার বাড়ানো হচ্ছে। অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, সময়মতো ব্যবস্থা না নিলে যুক্তরাষ্ট্র ঋণ খেলাপিতে পড়তে পারে, যার ফলে বড় অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিতে পারে। কংগ্রেশনাল বাজেট অফিসের হিসেবে, এই বিল কার্যকর হলে ২০৩৪ সালের মধ্যে বাজেট ঘাটতি বেড়ে দাঁড়াবে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি ডলারে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই বিল ধনীদের জন্য সুবিধাজনক হলেও নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির জন্য তা আর্থিক চাপ বাড়াবে। ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট ল্যাবের তথ্য বলছে, ধনীদের আয় গড়ে ২.৪ শতাংশ বাড়বে, আর নিম্ন আয়ের মানুষের আয় কমবে গড়ে ২.৫ শতাংশ।