অমুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দিতে ভারতে বহুল আলোচিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (সিবিএ) ৯ ডিসেম্বর সোমবার সংসদে পাস হয়েছে। এদিন সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভায় বিতর্কিত এ বিলটি উত্থাপনের পর পাস হয়। বিলটি পাস হলে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ভারতে গিয়ে কমপক্ষে পাঁচ বছর বসবাসকারী অমুসলিমরা দেশটির নাগরিকত্ব লাভ করবেন। আল-জাজিরা।
লোকসভায় ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় এটি সহজেই এদিন পাস হয়। এর আগে গত ৪ ডিসেম্বর বুধবার বিলটি ভারতীয় সংসদে তোলার বিষয়ে সবুজ সংকেত দেয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। লোকসভার পর বিলটি আইন হিসেবে পাস করাতে উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় যাবার অপেক্ষায় রয়েছে। তবে বিজেপির সঙ্গে সংঘাত চললেও এ বিলের পক্ষেই ভোট দেয় দেশটির উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবদী বাদী দল শিবসেনা। পাশাপাশি বিজেডি, টিআরএস, এআইএডিএমকে-এর মতো দলগুলোর সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছে বিজেপি। এ বিলের আওতায় ভারতে ৫ বছর থাকলেই নাগরিকত্ব পাবে অমুসলিমরা। এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রী প্রকাশ জাভরেকর বলেন, ‘আশা করি বিলটি পেশ করা হলে এ নিয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর আর কোন আপত্তি থাকবে না।’ তবে ইতোমধ্যেই এ বিলের প্রতিবাদে মঙ্গলবার ১১ ঘণ্টার বন্ধ ডেকেছে নর্থ ইস্ট স্টুডেন্টস ইউনিয়ন। বিলটি ১৯৮৫ সালের আসাম চুক্তির বিরোধী বলে দাবি করেছে তারা। ওই চুক্তিতে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চ পর্যন্ত ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান থেকে যারা ভারতে শরণার্থী হিসেবে গেছেন (মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্যদেও বাদ দিয়ে হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, খ্রিস্টান, শিখ এবং পার্সিয়ানরা) তারা নাগরিকত্ব পাবেন।
এ ছাড়াও এ বিলের বিরোধিতায় রাজপথে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছে আসামের আরও কয়েকটি ছাত্র সংগঠন। তৃণমূল কংগ্রেস, কংগ্রেস, সিপিএম-ও এ বিলের বিরোধিতায় সোচ্চার রয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেছেন, ‘স্বাধীনতার ৭২ বছর পর হঠাৎ নাগরিকত্ব নির্ধারণ করা যায় না। এ এনআরসি আমি মানি না। নাগরিক তালিকায় যদি জানা যায়, নাগরিকরা ভুয়া, তাহলে তো তাদের ভোটে জেতা সরকারও ভুয়া। তাহলে মোদিও ভুয়া, তার সরকারও ভুয়া।’ মমতা আরও বলেন, ‘তৃণমূল কংগ্রেস আরেকটি স্বাধীনতা আন্দোলন করবে। আপনারা তৈরি থাকুন।’ এনআরসি আতঙ্কে ইতোমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গে ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানান মমতা। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, আসামে কতজন মারা গেছেন? আমদের তো রেকর্ড থাকে, ওখানে তো রেকর্ডও নেই। এদিকে ভারতের অন্যতম বিরোধী দল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস নেতা শশী থারুর বলেন, ‘সব ধর্মের মানুষকে নাগরিকত্ব দেয়া হলে তা মেনে নেব। কিন্তু ধর্মের ভিত্তিতে কাউকে নাগরিকত্ব দেয়া হলে তার বিরোধিতা করব। এ বিল একেবারেই অসাংবিধানিক।’ লোকসভায় কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী বলেন, ‘আমরা এ বিলের পুরোপুরি বিরোধিতা করব। কেননা, এ বিলের মাধ্যমে আমাদের সংবিধান, ধর্মনিরপেক্ষ ঐতিহ্য, সংস্কৃতি লঙ্ঘিত হবে।’ কংগ্রেস দলীয় এমপি গৌরব গগৈ উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় গণতান্ত্রিক জোটের দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, বিজেপির সঙ্গে না গিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াতে। তবে আসামের অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার দাবি, ধর্মের কারণে বিভিন্ন দেশে যারা নিপীড়ণের শিকার হয়েছে, তাদের রক্ষার জন্য বিলটি আনা হয়েছে। ফলে এটি ধর্মনিরপেক্ষ হবে- এমনটা আশা করা হচ্ছে কীভাবে!
সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০১৯
অমুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দিতে ভারতে বহুল আলোচিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (সিবিএ) ৯ ডিসেম্বর সোমবার সংসদে পাস হয়েছে। এদিন সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভায় বিতর্কিত এ বিলটি উত্থাপনের পর পাস হয়। বিলটি পাস হলে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ভারতে গিয়ে কমপক্ষে পাঁচ বছর বসবাসকারী অমুসলিমরা দেশটির নাগরিকত্ব লাভ করবেন। আল-জাজিরা।
লোকসভায় ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় এটি সহজেই এদিন পাস হয়। এর আগে গত ৪ ডিসেম্বর বুধবার বিলটি ভারতীয় সংসদে তোলার বিষয়ে সবুজ সংকেত দেয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। লোকসভার পর বিলটি আইন হিসেবে পাস করাতে উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় যাবার অপেক্ষায় রয়েছে। তবে বিজেপির সঙ্গে সংঘাত চললেও এ বিলের পক্ষেই ভোট দেয় দেশটির উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবদী বাদী দল শিবসেনা। পাশাপাশি বিজেডি, টিআরএস, এআইএডিএমকে-এর মতো দলগুলোর সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছে বিজেপি। এ বিলের আওতায় ভারতে ৫ বছর থাকলেই নাগরিকত্ব পাবে অমুসলিমরা। এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রী প্রকাশ জাভরেকর বলেন, ‘আশা করি বিলটি পেশ করা হলে এ নিয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর আর কোন আপত্তি থাকবে না।’ তবে ইতোমধ্যেই এ বিলের প্রতিবাদে মঙ্গলবার ১১ ঘণ্টার বন্ধ ডেকেছে নর্থ ইস্ট স্টুডেন্টস ইউনিয়ন। বিলটি ১৯৮৫ সালের আসাম চুক্তির বিরোধী বলে দাবি করেছে তারা। ওই চুক্তিতে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চ পর্যন্ত ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান থেকে যারা ভারতে শরণার্থী হিসেবে গেছেন (মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্যদেও বাদ দিয়ে হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, খ্রিস্টান, শিখ এবং পার্সিয়ানরা) তারা নাগরিকত্ব পাবেন।
এ ছাড়াও এ বিলের বিরোধিতায় রাজপথে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছে আসামের আরও কয়েকটি ছাত্র সংগঠন। তৃণমূল কংগ্রেস, কংগ্রেস, সিপিএম-ও এ বিলের বিরোধিতায় সোচ্চার রয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেছেন, ‘স্বাধীনতার ৭২ বছর পর হঠাৎ নাগরিকত্ব নির্ধারণ করা যায় না। এ এনআরসি আমি মানি না। নাগরিক তালিকায় যদি জানা যায়, নাগরিকরা ভুয়া, তাহলে তো তাদের ভোটে জেতা সরকারও ভুয়া। তাহলে মোদিও ভুয়া, তার সরকারও ভুয়া।’ মমতা আরও বলেন, ‘তৃণমূল কংগ্রেস আরেকটি স্বাধীনতা আন্দোলন করবে। আপনারা তৈরি থাকুন।’ এনআরসি আতঙ্কে ইতোমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গে ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানান মমতা। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, আসামে কতজন মারা গেছেন? আমদের তো রেকর্ড থাকে, ওখানে তো রেকর্ডও নেই। এদিকে ভারতের অন্যতম বিরোধী দল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস নেতা শশী থারুর বলেন, ‘সব ধর্মের মানুষকে নাগরিকত্ব দেয়া হলে তা মেনে নেব। কিন্তু ধর্মের ভিত্তিতে কাউকে নাগরিকত্ব দেয়া হলে তার বিরোধিতা করব। এ বিল একেবারেই অসাংবিধানিক।’ লোকসভায় কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী বলেন, ‘আমরা এ বিলের পুরোপুরি বিরোধিতা করব। কেননা, এ বিলের মাধ্যমে আমাদের সংবিধান, ধর্মনিরপেক্ষ ঐতিহ্য, সংস্কৃতি লঙ্ঘিত হবে।’ কংগ্রেস দলীয় এমপি গৌরব গগৈ উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় গণতান্ত্রিক জোটের দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, বিজেপির সঙ্গে না গিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াতে। তবে আসামের অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার দাবি, ধর্মের কারণে বিভিন্ন দেশে যারা নিপীড়ণের শিকার হয়েছে, তাদের রক্ষার জন্য বিলটি আনা হয়েছে। ফলে এটি ধর্মনিরপেক্ষ হবে- এমনটা আশা করা হচ্ছে কীভাবে!