alt

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

দেশে আর্থিক নিরাপত্তায় বিস্তৃত হচ্ছে ই-কেওয়াইসি

মোহাম্মদ কাওছার উদ্দীন : মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২০

দেশের ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা ব্যবস্থাপনায় অগ্রগতি আনতে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট, বাংলাদেশ ব্যাংক ইলেক্ট্রনিক গ্রাহক তথ্য সংগ্রহ সংক্রান্ত বিশেষ একটি আদেশ জারি করেছে। ২০২০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে ইলেক্ট্রনিক নো ইয়োর কাস্টমার (ই-কেওয়াইসি) দেশের সব ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠানে চালুর পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরামের হিসেবে প্রতিবছর অ্যান্টি মানি লন্ডারিংয়ে ৮.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করছে বিশ্বের ব্যাংকগুলো। ইউএন অফিস অন ড্রাগস অ্যান্ড ক্রাইমের হিসেবে মানি লন্ডারিং অপরাধের কারণে বিশ্বব্যাপি প্রতি বছর ক্ষতি হচ্ছে ২.৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা কিনা বিশ্বের সব দেশের জিডিপির ৫ শতাংশের সমান। বৈশ্বিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কেপিএমজির তথ্য জানাচ্ছে, বিশ্বজুড়ে ৬০ভাগ ব্যাংক আর্থিক সেবা ব্যবস্থাপনায় ঝুঁকিতে আছে। কেপিএমজি ইন্টারন্যাশনালের গ্লোবাল ফ্রড লিড ন্যাটালিয়া ফকনারের ভাষ্যে, বিশ্বজুড়ে ডিজিটাল প্রযুক্তি নির্ভর ব্যাংকিংখাতে নানান ঝুঁকি দেখা দিচ্ছে। ব্যাংকগুলোকে কার্যকর ও দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। ২০১৫ সাল থেকে ২০১৯ সালে বিশ্বজুড়ে আর্থিক প্রতারণা বেড়েছে ৬১ শতাংশ। ম্যাকেঞ্জির হিসেবে আর্থিক অপরাধের জন্য বিশ্বজুড়ে ব্যাংকগুলোর ক্ষতি হচ্ছে ১২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী ব্যাংক ও আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোও সাইবার অপরাধ ও অ্যান্ট মানি লন্ডারিংয়ের মত বিভিন্ন বিষয়ে ঝুঁকির মুখে আছে। প্রযুক্তি অগ্রগতির কল্যানে ঝুঁকি বাড়ছে। ব্যাংকিংক্ষেত্রে মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের ঝুঁকি কমাতে ও ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে গ্রাহকদের তথ্য আদান-প্রদান ও বিনিময়ের জন্য ই-কেওয়াইসি চালু করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ সরকার।

মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ ও সন্ত্রাস বিরোধী আইন ২০০৯-কে গুরুত্ব দিয়ে বাংলাদেশ ফাইন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট ই-কেওয়াইসি চালু করতে আদেশ দেয়। ২০১৯ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশ ফাইন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট, বাংলাদেশ ব্যাংক ‘গিগা ই-কেওয়াইসি’ এর মাধ্যমে ১০টি ব্যাংকে ই-কেওয়াইসি প্রকল্প চালু করে। ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠানে ই-কেওয়াইসি প্রাথমিকভাবে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএর শিক্ষক ডা. রিদওয়ানুল হক জানান, ‘আমাদের দেশের ব্যাংকগুলো অন্যান্য দেশের ব্যাংকের মতই সাইবার ঝুঁকিতে আছে। সাইবার ঝুঁকি সব সময়ই থাকবে। সেই ঝুঁকিকে মোকাবেলা করতে বিশ্বজুড়েই ই-কেওয়াইসি চালু করেছে ব্যাংক ও আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। আমাদের দেশের রেমিট্যান্স চ্যানেল এখন বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী ব্যাংক। মুঠোফোনে ব্যাংকিং সেবার জগত বড় হচ্ছে। সব প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্বশীল ভূমিকা ও আর্থিক নিরাপত্তার জন্য ই-কেওয়াইসি চালু করা প্রয়োজন।’ সরকার খুব দ্রুতই সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ই-কেওয়াইসি চালু করার বিষয়ে বেশ সচেষ্ট। ২০২০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের সব ব্যাংককে কেওয়াইসি অটোমেটেড বা ই-কেওয়াইসি চালুর জন্য বলা হয়েছে।

অর্থ পাচার প্রতিরোধে ‘গিগা ই-কেওয়াইসি’ বেশ কার্যকর। অ্যানালিটিক্স ও সাইবার সিকিরিউটিকে গুরুত্ব দিয়ে তৈরি করা হয়েছে গিগা ই-কেওয়াইসি। গিগা ই-কেওয়াইসির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান গিগাটেক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামিরা জুবেরী হিমিকা জানান, ‘আমাদের দেশের ব্যাংকিংখাত প্রতিনিয়তই সাইবার ঝুঁকিতে আছে। সেই ঝুঁকির কারণে আমাদের ব্যাংকিংখাত মানি লন্ডারিং ও আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদে ব্যবহারের ঝুঁকি বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে সারা বিশ্বের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহকদের তথ্য সংরক্ষণ ও পর্যবেক্ষণে গুরুত্ব দিচ্ছে। বাংলাদেশে তৈরি গিগা ই-কেওয়াইসি সফটওয়্যার ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সরকারের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে অ্যান্টি মানি লন্ডারিং কার্যক্রমে সহায়তা করছে।’ ফেসিয়াল রিকগনিশন সিস্টেম, গ্রাহকদের তথ্য সংরক্ষরণ, জাতীয় ডাটা সেন্টারের সঙ্গে তথ্য সনাক্তকরণ, আঙ্গুলের ছাপ সংরক্ষণসহ বিভিন্ন তথ্যের সর্বোচ্চ গোপনীয় ও নিরাপত্তা দিচ্ছে গিগা ই-কেওয়াইসি। গিগাটেক লিমিটেড বেক্সিমকো গ্রুপের একটি প্রযুক্তি সেবা ও উদ্ভাবনী প্রতিষ্ঠান।

ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবাকে সবার কাছে আরও সক্রিয় ও কার্যকর করে তুলতে ই-কেওয়াসি ব্যবহার শুরুর চেষ্টা করেছে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। ওয়ান ব্যাংকের মোবাইল ফাইন্যানশিয়াল সার্ভিসের প্রধান আ জ ম ফয়েজ উল্লাহ চৌধুরী জানান, ‘আমরা গ্রাহকের আর্থিক তথ্যের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিতে চাই। গ্রাহকরা এখন সহজ উপায়ে ব্যাংকিং সেবা খোঁজেন। ই-কেওয়াইসির মাধ্যমে গ্রাহকদের আরও বেশি সুবিধাজনক উপায়ে পেপারলেস সেবা প্রদান করা যাবে।’ বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট দেশের ৩৩ জেলার ৫০টি এলাকায় বিভিন্ন ব্যাংকের শাখায় ই-কেওয়াইসির মাধ্যমে গ্রাহক সেবা ও তথ্য সংগ্রহের কাজ পরীক্ষামূলকভাবে চালু করে। ই-কেওয়াইসির মাধ্যমে ব্যাংকগুলো আরও বেশি পেপারলেস ও সক্রিয় গ্রাহক সেবা প্রদানের সুযোগ পাবে বলে আর্থিক সেবা বিষয়ক প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ও গবেষকদের ধারণা।

ছবি

আইএসপিএবি ও বিপিসির যৌথ আয়োজনে রাজশাহীতে প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত.

ছবি

ডেলিভারি পার্টনারদের জন্য ফুডপ্যান্ডার বিনামূল্যে হেলথ ক্যাম্প

ছবি

স্থানীয়ভাবে হোস্টকৃত টিয়ার-৪ ক্লাউড প্ল্যাটফর্ম চালু করল এক্সেনটেক

ছবি

চট্টগ্রাম ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি ও বিডিওএসএন এর মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত

ছবি

বাক্কো ও আকিজ টেলিকমের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত

ছবি

যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশে চালু হলো ক্রাউডশিপিং সেবা ‘ডিমহাম’

ছবি

বাংলাদেশের বাজারে সিটিজেন ব্র্যান্ডের পস, বারকোড ও লেভেল প্রিন্টার

ছবি

২০২৫-২৭ মেয়াদের বিসিএস সভাপতি জহিরুল ইসলাম এবং মহাসচিব মনিরুল ইসলাম

ভুয়া ইমেইল এবং ভয়েস মেসেজ দিয়ে হামলা করছে র‌্যানসমওয়্যার গ্রুপ : সফোস

ছবি

২৪-২৬ জুন ভিভো সার্ভিস ডে

ছবি

গেমিংয়ের জন্য ইনফিনিক্সের নতুন ফিচার

ছবি

নাগরিক সেবা কার্যক্রম অবহিতকরণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত

ছবি

ইউআইটিএস ও বাক্কোর মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত

ছবি

শেষ হলো জাতীয় হাইস্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার জাতীয় পর্ব

ছবি

বিকাশ অ্যাপে জামানতবিহীন ডিজিটাল লোনের সীমা বাড়ল

ছবি

রেডিংটন ও গুগল ক্লাউড : বাংলাদেশের প্রযুক্তি বিপ্লবের সঙ্গী

ছবি

শেষ হলো দুই দিনের ‘ড্রয়েডকন বাংলাদেশ’ সম্মেলন

ছবি

আনোয়ার গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ এবং ড্যাফোডিল কম্পিউটার্স লিমিটেডের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর

ছবি

অ্যান্ড্রয়েড ডেভলপারদের নিয়ে ঢাকায় ‘ড্রয়েডকন বাংলাদেশ ২০২৫’ সম্মেলন

ছবি

জিপিএইচ ইস্পাতের কর্মীদের জন্য ফুডপ্যান্ডার বিশেষ সুবিধা

ছবি

গ্রামীণফোন ও ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের পার্টনারশিপ

ছবি

টাইমস হায়ার এডুকেশন ইমপ্যাক্ট র‌্যাংকিং ২০২৫ : শীর্ষ ২০০’র মধ্যে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি

ছবি

মালয়েশিয়ায় রেইনফরেস্ট ওয়ার্ল্ড মিউজিক ফেস্টিভ্যালে যাচ্ছেন রাইজ ক্যাম্পেইনের বিজয়ীরা

ছবি

বাজারে লেনোভোর নতুন ল্যাপটপ আইডিয়াপ্যাড স্লিম থ্রিআই

ছবি

ভিসিপিয়াবের বাজেট প্রতিক্রিয়া

ছবি

বাজারে টেকনোর নতুন স্মার্টফোন স্পার্ক গো ২

ছবি

ঢাকায় হতে যাচ্ছে অ্যান্ড্রয়েডবিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন ‘ড্রয়েডকন বাংলাদেশ’

ছবি

বাবার জন্য ওষুধ, মেডিকেল টেস্ট, হেলথ চেকআপে বিকাশ পেমেন্টে ডিসকাউন্ট ও ক্যাশব্যাক

ছবি

এসিডি স্টুডেন্ট লিডারশিপ ক্যাম্প ২০২৫ : ড্যাফোডিল বিশ^বিদ্যালয়ের ৪ শিক্ষার্থী বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছে

ছবি

ইনফিনিক্স নোট ৫০-এর দাম কমলো

ছবি

ওপেন এপিআই ব্যাংকিং সেবা চালু করল ইউসিবি

ছবি

বাবা দিবসে ভিভোর ‘বাবার সাথে মুহূর্ত’ ক্যাম্পেইন

ছবি

ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫ এর খসড়া চূড়ান্ত

ছবি

ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটিতে ‘হুবেই-বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনী সহযোগিতা বিনিময় সম্মেলন ২০২৫’ অনুষ্ঠিত

ছবি

অরেঞ্জ ক্লাব সদস্যদের জন্য বাংলালিংকের বিশেষ অফার

ছবি

বিকাশ পেমেন্টে কেএফসিতে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ অফার

tab

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

দেশে আর্থিক নিরাপত্তায় বিস্তৃত হচ্ছে ই-কেওয়াইসি

মোহাম্মদ কাওছার উদ্দীন

মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২০

দেশের ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা ব্যবস্থাপনায় অগ্রগতি আনতে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট, বাংলাদেশ ব্যাংক ইলেক্ট্রনিক গ্রাহক তথ্য সংগ্রহ সংক্রান্ত বিশেষ একটি আদেশ জারি করেছে। ২০২০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে ইলেক্ট্রনিক নো ইয়োর কাস্টমার (ই-কেওয়াইসি) দেশের সব ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠানে চালুর পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরামের হিসেবে প্রতিবছর অ্যান্টি মানি লন্ডারিংয়ে ৮.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করছে বিশ্বের ব্যাংকগুলো। ইউএন অফিস অন ড্রাগস অ্যান্ড ক্রাইমের হিসেবে মানি লন্ডারিং অপরাধের কারণে বিশ্বব্যাপি প্রতি বছর ক্ষতি হচ্ছে ২.৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা কিনা বিশ্বের সব দেশের জিডিপির ৫ শতাংশের সমান। বৈশ্বিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কেপিএমজির তথ্য জানাচ্ছে, বিশ্বজুড়ে ৬০ভাগ ব্যাংক আর্থিক সেবা ব্যবস্থাপনায় ঝুঁকিতে আছে। কেপিএমজি ইন্টারন্যাশনালের গ্লোবাল ফ্রড লিড ন্যাটালিয়া ফকনারের ভাষ্যে, বিশ্বজুড়ে ডিজিটাল প্রযুক্তি নির্ভর ব্যাংকিংখাতে নানান ঝুঁকি দেখা দিচ্ছে। ব্যাংকগুলোকে কার্যকর ও দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। ২০১৫ সাল থেকে ২০১৯ সালে বিশ্বজুড়ে আর্থিক প্রতারণা বেড়েছে ৬১ শতাংশ। ম্যাকেঞ্জির হিসেবে আর্থিক অপরাধের জন্য বিশ্বজুড়ে ব্যাংকগুলোর ক্ষতি হচ্ছে ১২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী ব্যাংক ও আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোও সাইবার অপরাধ ও অ্যান্ট মানি লন্ডারিংয়ের মত বিভিন্ন বিষয়ে ঝুঁকির মুখে আছে। প্রযুক্তি অগ্রগতির কল্যানে ঝুঁকি বাড়ছে। ব্যাংকিংক্ষেত্রে মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের ঝুঁকি কমাতে ও ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে গ্রাহকদের তথ্য আদান-প্রদান ও বিনিময়ের জন্য ই-কেওয়াইসি চালু করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ সরকার।

মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ ও সন্ত্রাস বিরোধী আইন ২০০৯-কে গুরুত্ব দিয়ে বাংলাদেশ ফাইন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট ই-কেওয়াইসি চালু করতে আদেশ দেয়। ২০১৯ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশ ফাইন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট, বাংলাদেশ ব্যাংক ‘গিগা ই-কেওয়াইসি’ এর মাধ্যমে ১০টি ব্যাংকে ই-কেওয়াইসি প্রকল্প চালু করে। ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠানে ই-কেওয়াইসি প্রাথমিকভাবে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএর শিক্ষক ডা. রিদওয়ানুল হক জানান, ‘আমাদের দেশের ব্যাংকগুলো অন্যান্য দেশের ব্যাংকের মতই সাইবার ঝুঁকিতে আছে। সাইবার ঝুঁকি সব সময়ই থাকবে। সেই ঝুঁকিকে মোকাবেলা করতে বিশ্বজুড়েই ই-কেওয়াইসি চালু করেছে ব্যাংক ও আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। আমাদের দেশের রেমিট্যান্স চ্যানেল এখন বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী ব্যাংক। মুঠোফোনে ব্যাংকিং সেবার জগত বড় হচ্ছে। সব প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্বশীল ভূমিকা ও আর্থিক নিরাপত্তার জন্য ই-কেওয়াইসি চালু করা প্রয়োজন।’ সরকার খুব দ্রুতই সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ই-কেওয়াইসি চালু করার বিষয়ে বেশ সচেষ্ট। ২০২০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের সব ব্যাংককে কেওয়াইসি অটোমেটেড বা ই-কেওয়াইসি চালুর জন্য বলা হয়েছে।

অর্থ পাচার প্রতিরোধে ‘গিগা ই-কেওয়াইসি’ বেশ কার্যকর। অ্যানালিটিক্স ও সাইবার সিকিরিউটিকে গুরুত্ব দিয়ে তৈরি করা হয়েছে গিগা ই-কেওয়াইসি। গিগা ই-কেওয়াইসির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান গিগাটেক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামিরা জুবেরী হিমিকা জানান, ‘আমাদের দেশের ব্যাংকিংখাত প্রতিনিয়তই সাইবার ঝুঁকিতে আছে। সেই ঝুঁকির কারণে আমাদের ব্যাংকিংখাত মানি লন্ডারিং ও আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদে ব্যবহারের ঝুঁকি বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে সারা বিশ্বের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহকদের তথ্য সংরক্ষণ ও পর্যবেক্ষণে গুরুত্ব দিচ্ছে। বাংলাদেশে তৈরি গিগা ই-কেওয়াইসি সফটওয়্যার ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সরকারের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে অ্যান্টি মানি লন্ডারিং কার্যক্রমে সহায়তা করছে।’ ফেসিয়াল রিকগনিশন সিস্টেম, গ্রাহকদের তথ্য সংরক্ষরণ, জাতীয় ডাটা সেন্টারের সঙ্গে তথ্য সনাক্তকরণ, আঙ্গুলের ছাপ সংরক্ষণসহ বিভিন্ন তথ্যের সর্বোচ্চ গোপনীয় ও নিরাপত্তা দিচ্ছে গিগা ই-কেওয়াইসি। গিগাটেক লিমিটেড বেক্সিমকো গ্রুপের একটি প্রযুক্তি সেবা ও উদ্ভাবনী প্রতিষ্ঠান।

ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবাকে সবার কাছে আরও সক্রিয় ও কার্যকর করে তুলতে ই-কেওয়াসি ব্যবহার শুরুর চেষ্টা করেছে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। ওয়ান ব্যাংকের মোবাইল ফাইন্যানশিয়াল সার্ভিসের প্রধান আ জ ম ফয়েজ উল্লাহ চৌধুরী জানান, ‘আমরা গ্রাহকের আর্থিক তথ্যের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিতে চাই। গ্রাহকরা এখন সহজ উপায়ে ব্যাংকিং সেবা খোঁজেন। ই-কেওয়াইসির মাধ্যমে গ্রাহকদের আরও বেশি সুবিধাজনক উপায়ে পেপারলেস সেবা প্রদান করা যাবে।’ বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট দেশের ৩৩ জেলার ৫০টি এলাকায় বিভিন্ন ব্যাংকের শাখায় ই-কেওয়াইসির মাধ্যমে গ্রাহক সেবা ও তথ্য সংগ্রহের কাজ পরীক্ষামূলকভাবে চালু করে। ই-কেওয়াইসির মাধ্যমে ব্যাংকগুলো আরও বেশি পেপারলেস ও সক্রিয় গ্রাহক সেবা প্রদানের সুযোগ পাবে বলে আর্থিক সেবা বিষয়ক প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ও গবেষকদের ধারণা।

back to top