দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের অধীনে ১৫টি চিনিকল রয়েছে। তার মধ্যে ২০২০ সাল থেকে ৬টি চিনিকল বন্ধ রয়েছে। কবে নাগাদ এই সব চিনিকলগুলো চালু করা হবে তাও অনিশ্চিত।
আর ব্রিটিশ আমলেরসহ পুরনো ৯টি চিনিকলই জোড়াতালি দিয়ে এখনো চালু আছে। তবে সেখানে আখ সংকট থেকে শুরু জনবল সংকট রয়েছে। নড়বড়ে মেশিনের কারণে মাড়াইতে রস কম বের হয়।
চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের (চিনি ভবন) একজন কর্মকর্তা বন্ধ ৬টি চিনিকলের বিষয়ে সংবাদকে বলেন, বন্ধ চিনিকলগুলো পুনরায় চালু করার জন্য এবং চিনিকলগুলো লাভজনক ভাবে চালানোর জন্য এবং সুনিদিষ্ট প্রস্তাবনা প্রণয়নের জন্য ১১ সদস্যের একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। গত ৩০সে সেপ্টম্বর এই কমিটি গঠন করা হয়।
কমিটির কার্যবিধির মধ্যে রয়েছে, মাড়াই স্থগিতকৃত চিনিকল সমূহ পূণরায় চালু করার জন্য সুপারিশ প্রণয়ণ করা। প্রস্তাবিত চিনিকল গুলো লাভজনক ভাবে পরিচালনার জন্য প্রস্তাব প্রণয়ন। চিনির বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য গৃহীত পদক্ষেপের বিষয় সুপারিশ প্রদান করাসহ বিভিন্ন কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার আহবান জানান।
চিনিশিল্প ভবনের একাধিক কর্মকর্তা জানান, ২০২০ সাল থেকে রংপুর চিনিকল, রংপুরের শ্যামপুর চিনিকল. দিনাজপুরের সেতাবগঞ্জ চিনিকল,.পঞ্চগড় চিনিকল, কুষ্টিয়া চিনিকল ও পাবনা চিনিকল বন্ধ রয়েছে।
৬টি চিনিকল বন্ধের কারণ হিসাবে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চিনিকলগুলোতে ক্রমাগত লোকসান হচ্ছে। আখের চাষ কমে গেছে। আখের তীব্র সংকট চলছে।
আখচাষিরা এখন ফল কম পায় ও আখচাষে লাভ কম হওয়ায় অনেকেই ধানসহ অন্যান্য ফসল উৎপাদনের দিকে যাচেছন। আবার অনেকই আখ চাষ পুরো বন্ধ করে দিয়েছেন।
একজন সিনিয়র কর্মকর্তা সংবাদকে জানান, আখ উৎপাদন মৌসুমে ১২০ দিন আখ চিনিকলে নেয়া হয়। আগামী ১৫ নভেম্বর থেকে আখ মাড়াই করা শুরু হবে। প্রথমে নর্থ বেঙ্গল চিনিকলে আখ মাড়াই শুরু। পর্যায়ক্রমে আগামী ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত চিনিকলে আখ মাড়াই করা হবে। এই বছর টার্গেট দেয়া হয়েছে ৭০ হাজার টন আখ মাড়াই করার।
আগামী বছর ৭০ হাজার একর জমিনে আখের চাষ করার টার্গেট নেয়া হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ৫২ হাজার টন চিনি উৎপাদনের জন্য এখন থেকে কাজ শুরু হয়েছে।
আখ থেকে চিনি, ছিটাগুড়, গোখাদ্য, আখের চাবড়া, আগে চাবড়া কাগজ তৈরির কাজে ব্যবহার করা হতো। এখন তা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
বন্ধ চিনিকলের শ্রমিকদের অন্য চিনিকলে বদলি করা হয়েছে। এখনো প্রায় ৩ হাজার জনবল ঘাটতি আছে।
চিনি ভবনের একজন কর্মকর্তা বলেন, আখচাষীদের কারিগরি সহায়তা, সার ও কীটনাশক এবং টাকা কর্জ হিসেবে দেয়া হয়। এরপরও আখ চাষ কমে গেছে।
চিনি ভবনের একাধিক কর্মকতা ও ষ্টাফদের সঙ্গে আলোচনা করে জানা গেছে, দেশে চিনির যে পরিমাণ চাহিদা আছে, তার বেশির ভাগই এখন আমদানি করা হয়। নানা অনিয়মের কারণে চিনিকল গুলো একে একে বন্ধ হয়ে গেছে। চিনির কলে বা মিলগেটে আখ কেনাকাটায় অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। সেখানে হিসেবের গরমিল দেখিয়ে অতিরিক্ত টাকা নেয়া হত। এতে করে লোকসানের বোঝা বইতে হয়েছে। অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয় কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।
দিনাজপুরে সেতাবগঞ্জ চিনিকলে আখ কেনাকাটায় দূনীতির অভিযোগ রয়েছে। আখ কেনার দূর্নীতিসহ বিভিন্ন সেক্টরে অনিয়ম আছে।
এই বিষয়ে ১২ নভেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে চিনি শিল্প ভবনের পরিচালক (উৎপাদন ও প্রকৌশলী) আতাউর রহমানের সঙ্গে তার কার্যালয় গিয়ে কথা বলতে চাইলে তিনি সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। দ্বিতীয় দফায় অনুরোধ করার পরও তিনি কথা বলতে রাজি হয়নি।
এই প্রতিবেদক ক্রেতা সেজে চিনি শিল্প ভবনের প্রদর্শনী ও বিক্রয় কেন্দ্রে গিয়ে যোগাযোগ করলে সেখানে দুই জন বিক্রেতা কথা বলতেই চাচ্ছিলেন না। এই প্রতিবেদক ছাড়াও ওই সময় আরও কয়েকজন প্রদশর্নী ও বিক্রয় কেন্দ্রে ছিলেন। আবার অনেকেই আগেই চিনি কিনে সামনে রাস্তায় বসে বিক্রি করছেন। সেখানে ১৪০ টাকা কেজির চিনি ১৬০ টাকায় বিক্রি করা হয়। আবার সেখান থেকে চিনির প্যাকেট পল্টনে আসলে দোকানে তা ১৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
চিনিকলের লাল চিনির দাম আরও বেশী। বাজারে চিনি শিল্প ভবনের নিয়ন্ত্রিত চিনিকলের চিনি পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।
জানা গেছে, আখ চাষের (ইক্ষু) উন্নত প্রযুক্তি ও কলা কৌশল শিখানোর জন্য পাবনার ইশ্বরদীতে বাংলাদেশ ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউট রয়েছে। অথচ কৃষকদের আখচাষে এখন তেমন উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ
বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের অধীনে ১৫টি চিনিকল রয়েছে। তার মধ্যে ২০২০ সাল থেকে ৬টি চিনিকল বন্ধ রয়েছে। কবে নাগাদ এই সব চিনিকলগুলো চালু করা হবে তাও অনিশ্চিত।
আর ব্রিটিশ আমলেরসহ পুরনো ৯টি চিনিকলই জোড়াতালি দিয়ে এখনো চালু আছে। তবে সেখানে আখ সংকট থেকে শুরু জনবল সংকট রয়েছে। নড়বড়ে মেশিনের কারণে মাড়াইতে রস কম বের হয়।
চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের (চিনি ভবন) একজন কর্মকর্তা বন্ধ ৬টি চিনিকলের বিষয়ে সংবাদকে বলেন, বন্ধ চিনিকলগুলো পুনরায় চালু করার জন্য এবং চিনিকলগুলো লাভজনক ভাবে চালানোর জন্য এবং সুনিদিষ্ট প্রস্তাবনা প্রণয়নের জন্য ১১ সদস্যের একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। গত ৩০সে সেপ্টম্বর এই কমিটি গঠন করা হয়।
কমিটির কার্যবিধির মধ্যে রয়েছে, মাড়াই স্থগিতকৃত চিনিকল সমূহ পূণরায় চালু করার জন্য সুপারিশ প্রণয়ণ করা। প্রস্তাবিত চিনিকল গুলো লাভজনক ভাবে পরিচালনার জন্য প্রস্তাব প্রণয়ন। চিনির বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য গৃহীত পদক্ষেপের বিষয় সুপারিশ প্রদান করাসহ বিভিন্ন কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার আহবান জানান।
চিনিশিল্প ভবনের একাধিক কর্মকর্তা জানান, ২০২০ সাল থেকে রংপুর চিনিকল, রংপুরের শ্যামপুর চিনিকল. দিনাজপুরের সেতাবগঞ্জ চিনিকল,.পঞ্চগড় চিনিকল, কুষ্টিয়া চিনিকল ও পাবনা চিনিকল বন্ধ রয়েছে।
৬টি চিনিকল বন্ধের কারণ হিসাবে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চিনিকলগুলোতে ক্রমাগত লোকসান হচ্ছে। আখের চাষ কমে গেছে। আখের তীব্র সংকট চলছে।
আখচাষিরা এখন ফল কম পায় ও আখচাষে লাভ কম হওয়ায় অনেকেই ধানসহ অন্যান্য ফসল উৎপাদনের দিকে যাচেছন। আবার অনেকই আখ চাষ পুরো বন্ধ করে দিয়েছেন।
একজন সিনিয়র কর্মকর্তা সংবাদকে জানান, আখ উৎপাদন মৌসুমে ১২০ দিন আখ চিনিকলে নেয়া হয়। আগামী ১৫ নভেম্বর থেকে আখ মাড়াই করা শুরু হবে। প্রথমে নর্থ বেঙ্গল চিনিকলে আখ মাড়াই শুরু। পর্যায়ক্রমে আগামী ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত চিনিকলে আখ মাড়াই করা হবে। এই বছর টার্গেট দেয়া হয়েছে ৭০ হাজার টন আখ মাড়াই করার।
আগামী বছর ৭০ হাজার একর জমিনে আখের চাষ করার টার্গেট নেয়া হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ৫২ হাজার টন চিনি উৎপাদনের জন্য এখন থেকে কাজ শুরু হয়েছে।
আখ থেকে চিনি, ছিটাগুড়, গোখাদ্য, আখের চাবড়া, আগে চাবড়া কাগজ তৈরির কাজে ব্যবহার করা হতো। এখন তা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
বন্ধ চিনিকলের শ্রমিকদের অন্য চিনিকলে বদলি করা হয়েছে। এখনো প্রায় ৩ হাজার জনবল ঘাটতি আছে।
চিনি ভবনের একজন কর্মকর্তা বলেন, আখচাষীদের কারিগরি সহায়তা, সার ও কীটনাশক এবং টাকা কর্জ হিসেবে দেয়া হয়। এরপরও আখ চাষ কমে গেছে।
চিনি ভবনের একাধিক কর্মকতা ও ষ্টাফদের সঙ্গে আলোচনা করে জানা গেছে, দেশে চিনির যে পরিমাণ চাহিদা আছে, তার বেশির ভাগই এখন আমদানি করা হয়। নানা অনিয়মের কারণে চিনিকল গুলো একে একে বন্ধ হয়ে গেছে। চিনির কলে বা মিলগেটে আখ কেনাকাটায় অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। সেখানে হিসেবের গরমিল দেখিয়ে অতিরিক্ত টাকা নেয়া হত। এতে করে লোকসানের বোঝা বইতে হয়েছে। অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয় কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।
দিনাজপুরে সেতাবগঞ্জ চিনিকলে আখ কেনাকাটায় দূনীতির অভিযোগ রয়েছে। আখ কেনার দূর্নীতিসহ বিভিন্ন সেক্টরে অনিয়ম আছে।
এই বিষয়ে ১২ নভেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে চিনি শিল্প ভবনের পরিচালক (উৎপাদন ও প্রকৌশলী) আতাউর রহমানের সঙ্গে তার কার্যালয় গিয়ে কথা বলতে চাইলে তিনি সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। দ্বিতীয় দফায় অনুরোধ করার পরও তিনি কথা বলতে রাজি হয়নি।
এই প্রতিবেদক ক্রেতা সেজে চিনি শিল্প ভবনের প্রদর্শনী ও বিক্রয় কেন্দ্রে গিয়ে যোগাযোগ করলে সেখানে দুই জন বিক্রেতা কথা বলতেই চাচ্ছিলেন না। এই প্রতিবেদক ছাড়াও ওই সময় আরও কয়েকজন প্রদশর্নী ও বিক্রয় কেন্দ্রে ছিলেন। আবার অনেকেই আগেই চিনি কিনে সামনে রাস্তায় বসে বিক্রি করছেন। সেখানে ১৪০ টাকা কেজির চিনি ১৬০ টাকায় বিক্রি করা হয়। আবার সেখান থেকে চিনির প্যাকেট পল্টনে আসলে দোকানে তা ১৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
চিনিকলের লাল চিনির দাম আরও বেশী। বাজারে চিনি শিল্প ভবনের নিয়ন্ত্রিত চিনিকলের চিনি পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।
জানা গেছে, আখ চাষের (ইক্ষু) উন্নত প্রযুক্তি ও কলা কৌশল শিখানোর জন্য পাবনার ইশ্বরদীতে বাংলাদেশ ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউট রয়েছে। অথচ কৃষকদের আখচাষে এখন তেমন উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ