আওয়ামী লীগকে মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার দায়ে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে হেফজতে ইসলাম ও বিএনপি। তবে বিএনপি সকল সংস্কার ও বিচার গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে করতে চায় বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আমরা যেমন সংস্কার চাই, বিচার চাই আওয়ামী লীগের, তেমনি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় উত্তরণের বিষয়টি সর্বাগ্রে বিবেচনা করতে চাই।’ ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের রোডম্যাপ ঘোষণার বিষয়ে হেফাজতে ইসলাম ও বিএনপি একমত হয়েছে বলেও জানান তিনি।
শনিবার রাতে হেফাজতে ইসলামের নেতৃবৃন্দের সাথে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বৈঠকে এইসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে এবং তারা ঐক্যমত হয়েছেন বলে জানান সালাহউদ্দিন আহমেদ। গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকটি রাত আটটার দিকে শুরু হয় এবং শেষ হয় রাত দশটার দিকে।
বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে বিচারের আওতায় আনার দাবি আমরা প্রকাশ্যে করেছি, লিখিতভাবে করেছি, সরকারকে জানিয়েছি। জনগণের সামনে প্রস্তাব আকারে আমরা তুলে ধরেছি। জুলাই আন্দোলনে যে হত্যাকান্ড ঘটানো হয়েছে সেই অপরাধে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতা বিরোধী অপরাধের দায়ে তাদেরকে বিচারের আওতায় আনা হোক।’ বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যদি আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ভাগ্য নির্ধারিত হয় তাহলে এদেশের জনগণ তা মেনে নিবে এমন দাবি সালাহউদ্দিনের।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকার ও তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলোর দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই এমন অভিযোগ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যাদের বিরুদ্ধে গনহত্যা ও মানবতার বিরোধী অপরাধে মামলা করা হয়েছে, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সহ তার মন্ত্রী এমপি ও তার দোসরদের বিরুদ্ধে; সেই মামলাগুলোর দৃশ্যমান অগ্রগতি আমাদের সামনে নেই। জাতি অত্যন্ত প্রত্যাশা করে এই মামলাগুলো যেন দ্রুত নিষ্পত্তি হয়। সেজন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা ও লোকবল বৃদ্ধি করা হোক। প্রয়োজনে বিভাগীয় পর্যায়ে ট্রাইবুনাল স্থাপন করা যায় কিনা, তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা যেতে পারে।’ সংবিধানের ৪৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আইন করা যায় এবং আইন সংশোধন করা যায় বলেও সুপারিশ তার।
বিভিন্ন মহল থেকে নির্বাচন বিলম্বিত করার বিভিন্ন রকম পায়তারা করা হচ্ছে এমন শঙ্কার কথা উল্লেখ করে বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের এই নেতা বলেন, ‘ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছিলেন। জাতির সামনে অনেকবার তিনি বলেছেন। কিন্তু প্রায় সময় দেখা যাচ্ছে কিছুদিন পরপর বলা হচ্ছে নির্বাচন ডিসেম্বর থেকে জুনে; আবার জুনে থেকে ডিসেম্বরে এরকম একটা শিফটিং দেখা যাচ্ছে। বিভিন্ন মহল থেকে নির্বাচন বিলম্বিত করারও বিভিন্ন রকম পায়তারা আমরা লক্ষ্য করছি। আমাদের জোরালো দাবি মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা অতি অবশ্যই খুব দ্রুত নির্বাচনের রোড ম্যাপ দিবেন, যাতে ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা যায়। এই দাবির সাথে হেফাজত ইসলাম একমত হয়েছে।’
বৈঠকে আলোচ্য বিষয় নিয়ে তিনি আরও জানান, ‘২০১৩ সালে মতিঝিলে হেফাজতে ইসলামের উপর যে নির্মম নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার, তার সঠিক সংখ্যা এখন পর্যন্ত নিরূপণ করা হয়নি। সেই হত্যাযজ্ঞের বিচার চেয়ে আদালতে মামলা করা হয়েছে। হেফাজতে ইসলামের পক্ষ থেকে দ্রুত এই মামলার নিষ্পত্তি ও বিচার চাওয়া হয়েছে। আমরাও তাদের সঙ্গে একমত।’
সালাহউদ্দিন আরও বলেন, ‘২০২১ সালে একইভাবে আলেম সমাজের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছে তাতে ২৪ জন আলেম এবং মাদ্রাসা শিক্ষার্থী শহীদ হয়েছিলেন চট্টগ্রাম ও ব্রাক্ষনবাড়ীয়ায়। সেই হত্যাকান্ডের মামলা দায়ের করা হয়েছে হেফাজতে ইসলামের পক্ষ থেকে তারা এই হত্যাকান্ডের বিচার ও দ্রুত নিষ্পত্তি চায় আমরা এর সাথে একমত পোষণ করি।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে আলেম-ওলামাদের উপরে অসংখ্য মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। জেলে ভরা হয়েছে এবং সীমাহীন নির্যাতন করা হয়েছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে দায়ীকৃত সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার চাই।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে হেফাজতে ইসলামের পক্ষে নেতৃত্ব দেন সংগঠনটির মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমান। হেফাজতের অন্যান্য নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আহমদ আবদুল কাদের, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা মহিউদ্দিন রব্বানী, মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া, নায়েবে আমির মাওলানা জুনাইদ আল হাবিব, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী ও মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী।
রোববার, ০৬ এপ্রিল ২০২৫
আওয়ামী লীগকে মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার দায়ে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে হেফজতে ইসলাম ও বিএনপি। তবে বিএনপি সকল সংস্কার ও বিচার গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে করতে চায় বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আমরা যেমন সংস্কার চাই, বিচার চাই আওয়ামী লীগের, তেমনি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় উত্তরণের বিষয়টি সর্বাগ্রে বিবেচনা করতে চাই।’ ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের রোডম্যাপ ঘোষণার বিষয়ে হেফাজতে ইসলাম ও বিএনপি একমত হয়েছে বলেও জানান তিনি।
শনিবার রাতে হেফাজতে ইসলামের নেতৃবৃন্দের সাথে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বৈঠকে এইসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে এবং তারা ঐক্যমত হয়েছেন বলে জানান সালাহউদ্দিন আহমেদ। গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকটি রাত আটটার দিকে শুরু হয় এবং শেষ হয় রাত দশটার দিকে।
বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে বিচারের আওতায় আনার দাবি আমরা প্রকাশ্যে করেছি, লিখিতভাবে করেছি, সরকারকে জানিয়েছি। জনগণের সামনে প্রস্তাব আকারে আমরা তুলে ধরেছি। জুলাই আন্দোলনে যে হত্যাকান্ড ঘটানো হয়েছে সেই অপরাধে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতা বিরোধী অপরাধের দায়ে তাদেরকে বিচারের আওতায় আনা হোক।’ বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যদি আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ভাগ্য নির্ধারিত হয় তাহলে এদেশের জনগণ তা মেনে নিবে এমন দাবি সালাহউদ্দিনের।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকার ও তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলোর দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই এমন অভিযোগ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যাদের বিরুদ্ধে গনহত্যা ও মানবতার বিরোধী অপরাধে মামলা করা হয়েছে, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সহ তার মন্ত্রী এমপি ও তার দোসরদের বিরুদ্ধে; সেই মামলাগুলোর দৃশ্যমান অগ্রগতি আমাদের সামনে নেই। জাতি অত্যন্ত প্রত্যাশা করে এই মামলাগুলো যেন দ্রুত নিষ্পত্তি হয়। সেজন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা ও লোকবল বৃদ্ধি করা হোক। প্রয়োজনে বিভাগীয় পর্যায়ে ট্রাইবুনাল স্থাপন করা যায় কিনা, তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা যেতে পারে।’ সংবিধানের ৪৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আইন করা যায় এবং আইন সংশোধন করা যায় বলেও সুপারিশ তার।
বিভিন্ন মহল থেকে নির্বাচন বিলম্বিত করার বিভিন্ন রকম পায়তারা করা হচ্ছে এমন শঙ্কার কথা উল্লেখ করে বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের এই নেতা বলেন, ‘ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছিলেন। জাতির সামনে অনেকবার তিনি বলেছেন। কিন্তু প্রায় সময় দেখা যাচ্ছে কিছুদিন পরপর বলা হচ্ছে নির্বাচন ডিসেম্বর থেকে জুনে; আবার জুনে থেকে ডিসেম্বরে এরকম একটা শিফটিং দেখা যাচ্ছে। বিভিন্ন মহল থেকে নির্বাচন বিলম্বিত করারও বিভিন্ন রকম পায়তারা আমরা লক্ষ্য করছি। আমাদের জোরালো দাবি মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা অতি অবশ্যই খুব দ্রুত নির্বাচনের রোড ম্যাপ দিবেন, যাতে ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা যায়। এই দাবির সাথে হেফাজত ইসলাম একমত হয়েছে।’
বৈঠকে আলোচ্য বিষয় নিয়ে তিনি আরও জানান, ‘২০১৩ সালে মতিঝিলে হেফাজতে ইসলামের উপর যে নির্মম নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার, তার সঠিক সংখ্যা এখন পর্যন্ত নিরূপণ করা হয়নি। সেই হত্যাযজ্ঞের বিচার চেয়ে আদালতে মামলা করা হয়েছে। হেফাজতে ইসলামের পক্ষ থেকে দ্রুত এই মামলার নিষ্পত্তি ও বিচার চাওয়া হয়েছে। আমরাও তাদের সঙ্গে একমত।’
সালাহউদ্দিন আরও বলেন, ‘২০২১ সালে একইভাবে আলেম সমাজের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছে তাতে ২৪ জন আলেম এবং মাদ্রাসা শিক্ষার্থী শহীদ হয়েছিলেন চট্টগ্রাম ও ব্রাক্ষনবাড়ীয়ায়। সেই হত্যাকান্ডের মামলা দায়ের করা হয়েছে হেফাজতে ইসলামের পক্ষ থেকে তারা এই হত্যাকান্ডের বিচার ও দ্রুত নিষ্পত্তি চায় আমরা এর সাথে একমত পোষণ করি।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে আলেম-ওলামাদের উপরে অসংখ্য মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। জেলে ভরা হয়েছে এবং সীমাহীন নির্যাতন করা হয়েছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে দায়ীকৃত সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার চাই।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে হেফাজতে ইসলামের পক্ষে নেতৃত্ব দেন সংগঠনটির মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমান। হেফাজতের অন্যান্য নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আহমদ আবদুল কাদের, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা মহিউদ্দিন রব্বানী, মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া, নায়েবে আমির মাওলানা জুনাইদ আল হাবিব, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী ও মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী।