alt

পাঠকের চিঠি

সড়কে বিশৃঙ্খলার দায় কার

এসএএইচ ওয়ালিউল্লাহ

: মঙ্গলবার, ১৭ নভেম্বর ২০২০

নিরাপদ সড়কসহ নয় দফা দাবি নিয়ে শিক্ষার্থীদের দেশ কাঁপানো আন্দোলনের দুটি বছর পেরিয়ে গেলেও সড়কে ফেরেনি শৃঙ্খলা। আন্দোলনের মুখে সরকার দাবি তখন মেনে নিলেও সেসব বাস্তবায়নে কোন উদ্যোগই দৃষ্টিগোচর হয়নি দেশবাসীর। এখন পর্যন্ত উপেক্ষিত রয়েছে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ২০১৮ সালে দেয়া প্রধানমন্ত্রীর পাঁচ দফা নির্দেশনা। প্রতিনিয়ত রাজধানীসহ সারা দেশেই ঘটছে ভয়ঙ্কর সব সড়ক দুর্ঘটনা। সড়কে ঝরে পড়ছে অসংখ্য তাজা প্রাণ, পঙ্গুত্ব বরণ করছে আরও অগণিত মানুষ। করোনাকালেও থেমে নেই সড়ক দুর্ঘটনা; বরং বিগত কয়েকমাসের তুলনায় তা বেড়েছে কয়েকগুণ। রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্যমতে, গত অক্টোবরে সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৩১৪টি। আর এই ৩১৪টি দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে ৩৮৩ জনের এবং আহত হয়েছেন আরও ৬৯৪ জন। যেখানে সেপ্টেম্বরে ২৭৩টি দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ছিল ৩০৪, যা সেপ্টেম্বরের তুলনায় অক্টোবরে দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ শতাংশ এবং নিহতের ক্ষেত্রে বেড়ে ২৬ শতাংশ। আগস্টে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩৭৯ জন এবং জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সড়কে ঝরেছে ২ হাজার ৪৮২টি তাজা প্রাণ।

তবুও সড়কে ফিরছে না শৃঙ্খলা। লকডাউনের কবলে পড়ে দীর্ঘ বেকারত্বের পর রাস্তায় ফিরেও পরিবহন শ্রমিকদের আচার-অভ্যাসে ন্যূনতম পরিবর্তন আসেনি। ভাটা পড়েনি চালক-হেলপারদের স্বেচ্ছাচারী মনোবৃত্তিতে। গাড়ির মালিক-শ্রমিক থেকে শুরু করে যাত্রী কিংবা পথচারী কেউ মানছে না স্বাস্থ্যবিধি। ফলস্বরূপ সড়কে বিশৃঙ্খলার ষোলকলা যেন পূর্ণ হচ্ছে! মূলত সুশৃঙ্খল পরিবহন ও সড়ক ব্যবস্থাপনার অভাব, দুর্ঘটনা প্রতিরোধে টেকসই ও বিকল্প ব্যবস্থা না নেওয়া, আইনের যথাযথ প্রয়োগ না ঘটানো, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের গাফিলতি, নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের সমন্বয়হীনতার পাশাপাশি সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে ব্যর্থতা এবং যাত্রীদের সচেতনতার অভাবেই সড়কে ফেরানো যাচ্ছে না শৃঙ্খলা।

এসব কারণ আমাদের সবারই কমবেশি জানা। তাহলে কারণ জানা থাকার পরেও সড়কে কেন শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে না? উল্টো প্রতি বছরে আনুপাতিক হারে সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে চালকদের সঠিক প্রশিক্ষণ, পুলিশি মনিটরিং জোরদার, আইনের কঠোর প্রয়োগ, এ খাতের চাঁদা বাণিজ্য বন্ধ, বেসরকারি খাতের দৌরাত্ম্য কমাতে সরকারি আধুনিক গণপরিবহন চালুর পরামর্শসহ চালক-যাত্রী-হেলপার-পথচারী সবাইকে সচেতন করার বিষয়গুলো বারবারই সামনে আসে। কিন্তু প্রশ্ন হলো- কে কাকে সচেতন করবে? জনসাধারণকে সচেতন করার দায়িত্ব কার? বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধার দায়িত্বটা কে পালন করবে? সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী সড়ক পরিচালনার দায়িত্ব ট্রাফিক বিভাগের। আবার চালক কিংবা যাত্রী সড়কে যে-ই অনিয়ম করুক তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দায়িত্ব পুলিশের। এখন পুলিশ এবং ট্রাফিক যদি অনিয়মকারীদের সঙ্গে জোট বেঁধে তাদের বিরুদ্ধে আইন বাস্তবায়ন না করে তাহলে দায়টা কার? সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার পরিবর্তে একে অপরের ওপর দায় চাপিয়ে নিজে পরিচ্ছন্ন থাকার এক ধরনের প্রতিযোগিতা চালু হয়েছে এ সংশ্লিষ্ট প্রতিটা বিভাগে। দায় চাপিয়ে দেয়ার সংস্কৃতি থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। চালক, হেলপার, পথচারী, যাত্রী, পরিবহন সংস্থা, মালিক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সবাইকে সবার দায়িত্বটুকু পালন করতে হবে। সঠিকভাবে যার যার দায়িত্ব পালনই সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে তথা দুর্ঘটনা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

শিক্ষকদের বেতন-ভাতার বৈষম্য দূর করতে হবে

বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সংবাদ প্রসঙ্গে

মাটি কেটে নষ্ট হচ্ছে ফসলি জমি

পিঠা উৎসব : ঐতিহ্যের পুনরুত্থান ও জনপ্রিয়তা

পরিবেশ সুরক্ষায় সবুজ অর্থনীতি

পানির অপচয় রোধে সচেতনতা

নিরাপত্তায় মনোযোগ বাড়ানো জরুরি

ছবি

প্লাস্টিক দূষণ : সমাধানের পথ কী?

ছাত্রত্বহীন আদুভাইদের রাজনীতি বন্ধ হোক

অগ্নিকা- থেকে মুক্তির উপায় কী?

ছবি

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কাঁকড়া শিকার

ছবি

টিসিবির ট্রাকে চাল নেই কেন?

মেট্রোরেলে মশা

ছবি

গণপরিবহনে নারী আসনের অপ্রতুলতা

ছবি

অভিযান যেন একতরফা না হয়

পরিবহন ভাড়া কমান

ইন্টারনেট প্রযুক্তির গুরুত্ব

ছবি

বই নির্বাচন, বন্ধু নির্বাচনের মতো গুরুত্বপূর্ণ

অব্যবস্থাপনার দিকে মেট্রোরেল

সাহিত্যের সঙ্গে সাংবাদিকতার সম্পর্ক : বিশ্লেষণ

কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের সংস্কার চাই

খাল খনন করুন

ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

মুন্সীগঞ্জের মিরকাদিম পৌরসভার খাল ভরাটের কারণে বেহাল দশা

ছবি

রেলক্রসিং যেন মরণ ফাঁদ

ছবি

অবৈধ পথে ইউরোপ যাত্রা : স্বপ্ন নাকি মৃত্যুর ফাঁদ?

ছাতারপাইয়ায় রাস্তা সংস্কার জরুরি

বইয়ের আলোয় দূর হোক অন্ধকার

পোস্তগোলা রাস্তার শোচনীয় অবস্থা

কৃষক কাঁদে, ভোক্তাও কাঁদে

হতাশার আরেক নাম ভর্তি পরীক্ষা

চট্টগ্রামের পাঁচলাইশে ক্ষতিগ্রস্তদের লিজ দলিল দিন

ছবি

সাতার শেখা জরুরি

গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়া : শিক্ষার্থীদের জন্য স্বস্তি নাকি ভোগান্তি?

ছবি

বন্ধ করা হোক ফিটনেসবিহীন যানবাহন

ছবি

অমর একুশে বইমেলা

tab

পাঠকের চিঠি

সড়কে বিশৃঙ্খলার দায় কার

এসএএইচ ওয়ালিউল্লাহ

মঙ্গলবার, ১৭ নভেম্বর ২০২০

নিরাপদ সড়কসহ নয় দফা দাবি নিয়ে শিক্ষার্থীদের দেশ কাঁপানো আন্দোলনের দুটি বছর পেরিয়ে গেলেও সড়কে ফেরেনি শৃঙ্খলা। আন্দোলনের মুখে সরকার দাবি তখন মেনে নিলেও সেসব বাস্তবায়নে কোন উদ্যোগই দৃষ্টিগোচর হয়নি দেশবাসীর। এখন পর্যন্ত উপেক্ষিত রয়েছে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ২০১৮ সালে দেয়া প্রধানমন্ত্রীর পাঁচ দফা নির্দেশনা। প্রতিনিয়ত রাজধানীসহ সারা দেশেই ঘটছে ভয়ঙ্কর সব সড়ক দুর্ঘটনা। সড়কে ঝরে পড়ছে অসংখ্য তাজা প্রাণ, পঙ্গুত্ব বরণ করছে আরও অগণিত মানুষ। করোনাকালেও থেমে নেই সড়ক দুর্ঘটনা; বরং বিগত কয়েকমাসের তুলনায় তা বেড়েছে কয়েকগুণ। রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্যমতে, গত অক্টোবরে সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৩১৪টি। আর এই ৩১৪টি দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে ৩৮৩ জনের এবং আহত হয়েছেন আরও ৬৯৪ জন। যেখানে সেপ্টেম্বরে ২৭৩টি দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ছিল ৩০৪, যা সেপ্টেম্বরের তুলনায় অক্টোবরে দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ শতাংশ এবং নিহতের ক্ষেত্রে বেড়ে ২৬ শতাংশ। আগস্টে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩৭৯ জন এবং জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সড়কে ঝরেছে ২ হাজার ৪৮২টি তাজা প্রাণ।

তবুও সড়কে ফিরছে না শৃঙ্খলা। লকডাউনের কবলে পড়ে দীর্ঘ বেকারত্বের পর রাস্তায় ফিরেও পরিবহন শ্রমিকদের আচার-অভ্যাসে ন্যূনতম পরিবর্তন আসেনি। ভাটা পড়েনি চালক-হেলপারদের স্বেচ্ছাচারী মনোবৃত্তিতে। গাড়ির মালিক-শ্রমিক থেকে শুরু করে যাত্রী কিংবা পথচারী কেউ মানছে না স্বাস্থ্যবিধি। ফলস্বরূপ সড়কে বিশৃঙ্খলার ষোলকলা যেন পূর্ণ হচ্ছে! মূলত সুশৃঙ্খল পরিবহন ও সড়ক ব্যবস্থাপনার অভাব, দুর্ঘটনা প্রতিরোধে টেকসই ও বিকল্প ব্যবস্থা না নেওয়া, আইনের যথাযথ প্রয়োগ না ঘটানো, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের গাফিলতি, নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের সমন্বয়হীনতার পাশাপাশি সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে ব্যর্থতা এবং যাত্রীদের সচেতনতার অভাবেই সড়কে ফেরানো যাচ্ছে না শৃঙ্খলা।

এসব কারণ আমাদের সবারই কমবেশি জানা। তাহলে কারণ জানা থাকার পরেও সড়কে কেন শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে না? উল্টো প্রতি বছরে আনুপাতিক হারে সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে চালকদের সঠিক প্রশিক্ষণ, পুলিশি মনিটরিং জোরদার, আইনের কঠোর প্রয়োগ, এ খাতের চাঁদা বাণিজ্য বন্ধ, বেসরকারি খাতের দৌরাত্ম্য কমাতে সরকারি আধুনিক গণপরিবহন চালুর পরামর্শসহ চালক-যাত্রী-হেলপার-পথচারী সবাইকে সচেতন করার বিষয়গুলো বারবারই সামনে আসে। কিন্তু প্রশ্ন হলো- কে কাকে সচেতন করবে? জনসাধারণকে সচেতন করার দায়িত্ব কার? বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধার দায়িত্বটা কে পালন করবে? সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী সড়ক পরিচালনার দায়িত্ব ট্রাফিক বিভাগের। আবার চালক কিংবা যাত্রী সড়কে যে-ই অনিয়ম করুক তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দায়িত্ব পুলিশের। এখন পুলিশ এবং ট্রাফিক যদি অনিয়মকারীদের সঙ্গে জোট বেঁধে তাদের বিরুদ্ধে আইন বাস্তবায়ন না করে তাহলে দায়টা কার? সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার পরিবর্তে একে অপরের ওপর দায় চাপিয়ে নিজে পরিচ্ছন্ন থাকার এক ধরনের প্রতিযোগিতা চালু হয়েছে এ সংশ্লিষ্ট প্রতিটা বিভাগে। দায় চাপিয়ে দেয়ার সংস্কৃতি থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। চালক, হেলপার, পথচারী, যাত্রী, পরিবহন সংস্থা, মালিক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সবাইকে সবার দায়িত্বটুকু পালন করতে হবে। সঠিকভাবে যার যার দায়িত্ব পালনই সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে তথা দুর্ঘটনা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

back to top