alt

সারাদেশ

লোহাগাড়ায় চেয়ারম্যানের লোভের শিকার জলদাশপাড়ার অর্ধশত পরিবার

প্রতিনিধি, লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) : মঙ্গলবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩

চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান জিয়াউল হক চৌধুরী বাবুলের লোভের বলি হয়েছে জলদাশপাড়ার অর্ধশত পরিবার। সাম্প্রতিক বন্যায় পাড়ার সবকটি ঘর ভেঙে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। সবাই প্রায় খোলা আকাশের নিচে বাস করছে। মূলত খালের গতি পরিবর্তন করে আশাপাশের জমি ভরাট করে প্রাচীর নির্মাণ করায় বন্যার পানি জলদাশপাড়ায় উপচে পড়ে। ফলে পুরো পাড়া এখন ডোবায় পরিণত হয়েছে। এদিকে পাড়ার চতুর্দিকে উঁচু দেয়াল দিয়ে ঘের দিয়ে দিয়েছেন জিয়াউল হক বাবুল। ফলে পাড়ার মানুষদের যাতায়াতের কোন রাস্তা রাখা হয়নি। অন্যের বাড়ির উঠান, ধানী জমি বা পুকুরপাড় দিয়ে অনুমতি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। চলাচল রাস্তা না থাকায় তাদের পাড়ায় ত্রাণ নিয়ে যাওয়া ও অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

সরেজমিন দেখা যায়, বন্যার পানিতে পাড়ার অর্ধশত ঘরের সবকটি মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। পুরো পাড়াটি ডোবায় পরিণত হয়েছে। দুই একটি ঘর এখনও অর্ধেক রযে গেছে। পাড়ার সবাই মিলে সেগুলোতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কোনমতে দিনযাপন করছেন। যেকোন মুহূর্তে সেগুলোর চাপায় পড়ে প্রাণহানির ঘটনা ঘটে যেতে পারে। ৫-৬ পরিবার মিলে একচুলাতে আগুন জ্বালিয়ে আলু সিদ্ধ করে খাচ্ছে। বাইরে থেকে যেসব ত্রাণ আসছে তাতে তাদের কিছুই হচ্ছে না।

ইউপি সদস্য (মো. নুরুন্নবী) সারাক্ষণ তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে। তার সামর্থ্যে যা পারছে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে বলে তারা জানিয়েছেন। মো. নুরুন্নবী বলেন, জলদাশপাড়ায় ঘর মেরামতের জিনিসপত্র আনা-নেয়া বা ত্রাণ আনা-নেয়ার কোন সুযোগ নেই। তাই সবার আগে তাদের জন্য একটি রাস্তা জরুরি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দীর্ঘ ৮০ বছর ধরে জলদাশপাড়ায় জেলেদের বসবাস। বর্তমানে সেখানে প্রায় অর্ধশত পরিবার রয়েছে। তাদের চলাচলের জন্য রাস্তাঘাট সবছিল। বিগত ২০ বছর আগে স্থানীয় চেয়ারম্যান বাবুল তাদের পাড়ার পাশ দিয়ে চলমান বোয়ালিয়া খালের গতি পরিবর্তন করে খালপাড়ের বেশ কিছু জায়গা নিজের আয়ত্বে নিয়ে নেন। সেই থেকে বর্ষার পানি এই পাড়ার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। প্রতিবছর বর্ষা আসলে তাদের ঘুম হারাম হয়ে যায়। এ বছর বন্যার পানি বেশি হওয়ায় খালের সব পানি এই পাড়ার উপর উপচে পড়ে। যার কারণে সবকটি ঘর পানিতে ভেসে যায়।

জলদাশপাড়ার তারাপতি জ্বলদাস (৭০), সন্তোষ জলদাস (৪৬), পাবেল জ্বলদাস (৩০), প্রপাস জ্বলদাসসহ (৪৫) পাড়ার লোকদের সঙ্গে কথা বললে তারা বলেন, ৬ মাস আগে চেয়ারম্যান বাবুল পাড়ার চতুর্দিকে দেয়াল দিতে থাকে। এ সময় তারা রাস্তার জন্য বাধা দিতে গেলে বাবুল তাদের ওপর চড়াও হয়। এমনকি তাদের দিয়ে তাদের নির্মাণ করা দুইটি মন্দির ভাঙানো হয়। বাবুলের ভয়ে তারা নিজেরা নিজেদের মন্দির ভেঙে ফেলতে বাধ্য হয়। মন্দিরের জায়গাগুলোও বাবুল দেয়াল দিয়ে ঘিরে তার আয়ত্তে নিয়ে নেন। তারা আরা বলেন, আমাদের পাড়ার মাত্র ১ হাজার গজ সামনে পেছনে কয়েকটি হাসপাতাল রয়েছে। অথচ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে কোলে করে মানুষের ধানি জমির মাঝখান দিয়ে বা অন্যকারো বাগান বা অন্যের বাড়ির ভিতর দিয়ে অনুমতি নিয়ে যেতে হয়। কারণ চলাচলের রাস্তাটি দেয়াল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে। শুধু তাই নয় পাড়ার কেউ মারা গেলে শ্মশানে নিয়ে যাবার কোন সুযোগ নেই। বাধ্য হয়ে আমাদের ঘরেই পুঁতে দিতে হবে।

জানা গেছে, বাবুল জায়গাটি বিশাল পাকা দেয়াল দিয়ে ঘের দিয়ে শিল্প প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপ এর কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। তাই জলদাশপাড়ার লোকেরা রাস্তার আশা ছেড়েই দিয়েছেন। বর্তমানে তারা হাঁটুর উপর পানির মাঝখান দিয়ে অন্যের জমির উপর দিয়ে চলাচল করছে। আর ঘরে বউ বাচ্চারা অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটাচ্ছে।

এ ব্যাপারে জিয়াউল হক চৌধুরী বলেন, এসব আমাদের নিজেদের জমি। জমির কাগজপত্র সবকিছু ঠিকঠাক আছে।

ছবি

ডেঙ্গুতে মৃত্যু ৯০০ ছাড়ালো, মোট আক্রান্ত ১,০৬,৬১৪

ছবি

জামালপুরে ১৫ জুয়ারু গ্রেফতার

নারায়ণগঞ্জে পৃথক স্থানে তিন মরদেহ উদ্ধার

কক্সবাজারে ২ ইয়াবা কারবারির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

ছবি

‘শয়তানের নিশ্বাস’ বলে পরিচিত মাদক ‘স্কোপোলামিন’ বিক্রি হচ্ছে অনলাইনে, গ্রেপ্তার ২

খোকসায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ছাত্রের মৃত্যু

কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগ কমিটি বাতিলের দাবি

রামেক হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডে অব্যাহতভাবে চাপ বাড়ছে

ছবি

ফেলনা চুলে জীবিকা নির্বাহ

পঞ্চগড়ে স্বস্তির বৃষ্টি, কৃষকের মুখে হাসি

সাংবাদিক সাদ্দামের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন

ছবি

সংসদ সদস্যের অগ্নিমূর্তিতে জীবন ঝুঁকিতে মেয়র, নির্যাতনে পিষ্ট নেতা-কর্মীরাও

সৈয়দপুরে স্বাচিপের অভিষেক ও স্বাস্থ্যবিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত

শিলাইদহের কুঠিবাড়িতে ‘ছিন্নপত্র’ চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী

পোরশায় বজ্রপাতে জেলের মৃত্যু 

ছবি

ভেড়ামারায় গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্পের পাম্প বন্ধ, বিপাকে কৃষক

খুলনায় ধর্ষণের পর গৃহবধূ হত্যা ,স্বামীসহ গ্রেপ্তার তিন

ছবি

কোটালীপাড়ায় মাছ চাষে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক-স্থাপনা

লালমনিরহাটে বজ্রপাতে যুবকের মৃত্যু

ছবি

দিল্লিতে চুরি হওয়া ৫ কোটি টাকার মোবাইল ঢুকেছে বাংলাদেশে

ছবি

রামপুরা থেকে নিখোঁজ তাওসিফ যশোরে উদ্ধার

ছবি

লাগেজে পাওয়া দেহাংশ বাঁশখালীর হাসানের

ছবি

ডেঙ্গুতে মৃত্যু ৯০০ ছুঁই ছুঁই, ভর্তি ২,৮৬৫ জন

রংপুরের তারাগজ্ঞ থানার ওসি ডিআইজির আদেশ অমান্য করে এখনও স্বপদে ১৩ দিন ধরে বহাল

ছবি

যুবলীগের সভা সঞ্চালনা করলেন নাদিম হত্যা মামলার আসামী

ছবি

কক্সবাজার রেললাইন : ট্রায়ালের জন্য প্রস্তুত লাল-সবুজ ট্রেন

মোহাম্মদপুরে ট্রাক-সিএনজি সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৫

ছবি

যারা মানবতার কথা বলে বঙ্গবন্ধু হত্যার সময় তাদের মানবতা কোথায় ছিলো প্রশ্ন মুক্তিযুক্ত বিষয়ক মন্ত্রীর

রাউজানে বসতঘর থেকে অজগর উদ্ধার

রাঙ্গাবালীতে গাঁজা ব্যবসায়ী আটক

ছবি

চায়না দুয়ারি জাল ব্যবহারে মাছশূন্য জলাশয়

মহাদেবপুরে জুয়েলারি ব্যবসার আড়ালে অবৈধ সুদের কারবার

বাঁশখালীতে একাধিক মামলার আসামি গ্রেপ্তার

কিশোরগঞ্জে আ’লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীর উঠান বৈঠক

মাদারীপুরে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতিকে কুপিয়ে জখম

দশমিনায় প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে সনদ বিতরণ

tab

সারাদেশ

লোহাগাড়ায় চেয়ারম্যানের লোভের শিকার জলদাশপাড়ার অর্ধশত পরিবার

প্রতিনিধি, লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম)

মঙ্গলবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩

চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান জিয়াউল হক চৌধুরী বাবুলের লোভের বলি হয়েছে জলদাশপাড়ার অর্ধশত পরিবার। সাম্প্রতিক বন্যায় পাড়ার সবকটি ঘর ভেঙে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। সবাই প্রায় খোলা আকাশের নিচে বাস করছে। মূলত খালের গতি পরিবর্তন করে আশাপাশের জমি ভরাট করে প্রাচীর নির্মাণ করায় বন্যার পানি জলদাশপাড়ায় উপচে পড়ে। ফলে পুরো পাড়া এখন ডোবায় পরিণত হয়েছে। এদিকে পাড়ার চতুর্দিকে উঁচু দেয়াল দিয়ে ঘের দিয়ে দিয়েছেন জিয়াউল হক বাবুল। ফলে পাড়ার মানুষদের যাতায়াতের কোন রাস্তা রাখা হয়নি। অন্যের বাড়ির উঠান, ধানী জমি বা পুকুরপাড় দিয়ে অনুমতি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। চলাচল রাস্তা না থাকায় তাদের পাড়ায় ত্রাণ নিয়ে যাওয়া ও অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

সরেজমিন দেখা যায়, বন্যার পানিতে পাড়ার অর্ধশত ঘরের সবকটি মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। পুরো পাড়াটি ডোবায় পরিণত হয়েছে। দুই একটি ঘর এখনও অর্ধেক রযে গেছে। পাড়ার সবাই মিলে সেগুলোতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কোনমতে দিনযাপন করছেন। যেকোন মুহূর্তে সেগুলোর চাপায় পড়ে প্রাণহানির ঘটনা ঘটে যেতে পারে। ৫-৬ পরিবার মিলে একচুলাতে আগুন জ্বালিয়ে আলু সিদ্ধ করে খাচ্ছে। বাইরে থেকে যেসব ত্রাণ আসছে তাতে তাদের কিছুই হচ্ছে না।

ইউপি সদস্য (মো. নুরুন্নবী) সারাক্ষণ তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে। তার সামর্থ্যে যা পারছে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে বলে তারা জানিয়েছেন। মো. নুরুন্নবী বলেন, জলদাশপাড়ায় ঘর মেরামতের জিনিসপত্র আনা-নেয়া বা ত্রাণ আনা-নেয়ার কোন সুযোগ নেই। তাই সবার আগে তাদের জন্য একটি রাস্তা জরুরি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দীর্ঘ ৮০ বছর ধরে জলদাশপাড়ায় জেলেদের বসবাস। বর্তমানে সেখানে প্রায় অর্ধশত পরিবার রয়েছে। তাদের চলাচলের জন্য রাস্তাঘাট সবছিল। বিগত ২০ বছর আগে স্থানীয় চেয়ারম্যান বাবুল তাদের পাড়ার পাশ দিয়ে চলমান বোয়ালিয়া খালের গতি পরিবর্তন করে খালপাড়ের বেশ কিছু জায়গা নিজের আয়ত্বে নিয়ে নেন। সেই থেকে বর্ষার পানি এই পাড়ার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। প্রতিবছর বর্ষা আসলে তাদের ঘুম হারাম হয়ে যায়। এ বছর বন্যার পানি বেশি হওয়ায় খালের সব পানি এই পাড়ার উপর উপচে পড়ে। যার কারণে সবকটি ঘর পানিতে ভেসে যায়।

জলদাশপাড়ার তারাপতি জ্বলদাস (৭০), সন্তোষ জলদাস (৪৬), পাবেল জ্বলদাস (৩০), প্রপাস জ্বলদাসসহ (৪৫) পাড়ার লোকদের সঙ্গে কথা বললে তারা বলেন, ৬ মাস আগে চেয়ারম্যান বাবুল পাড়ার চতুর্দিকে দেয়াল দিতে থাকে। এ সময় তারা রাস্তার জন্য বাধা দিতে গেলে বাবুল তাদের ওপর চড়াও হয়। এমনকি তাদের দিয়ে তাদের নির্মাণ করা দুইটি মন্দির ভাঙানো হয়। বাবুলের ভয়ে তারা নিজেরা নিজেদের মন্দির ভেঙে ফেলতে বাধ্য হয়। মন্দিরের জায়গাগুলোও বাবুল দেয়াল দিয়ে ঘিরে তার আয়ত্তে নিয়ে নেন। তারা আরা বলেন, আমাদের পাড়ার মাত্র ১ হাজার গজ সামনে পেছনে কয়েকটি হাসপাতাল রয়েছে। অথচ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে কোলে করে মানুষের ধানি জমির মাঝখান দিয়ে বা অন্যকারো বাগান বা অন্যের বাড়ির ভিতর দিয়ে অনুমতি নিয়ে যেতে হয়। কারণ চলাচলের রাস্তাটি দেয়াল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে। শুধু তাই নয় পাড়ার কেউ মারা গেলে শ্মশানে নিয়ে যাবার কোন সুযোগ নেই। বাধ্য হয়ে আমাদের ঘরেই পুঁতে দিতে হবে।

জানা গেছে, বাবুল জায়গাটি বিশাল পাকা দেয়াল দিয়ে ঘের দিয়ে শিল্প প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপ এর কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। তাই জলদাশপাড়ার লোকেরা রাস্তার আশা ছেড়েই দিয়েছেন। বর্তমানে তারা হাঁটুর উপর পানির মাঝখান দিয়ে অন্যের জমির উপর দিয়ে চলাচল করছে। আর ঘরে বউ বাচ্চারা অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটাচ্ছে।

এ ব্যাপারে জিয়াউল হক চৌধুরী বলেন, এসব আমাদের নিজেদের জমি। জমির কাগজপত্র সবকিছু ঠিকঠাক আছে।

back to top