alt

সারাদেশ

দিনাজপুর কৃষি অঞ্চলে নতুন সংযোজন ‘স্কোয়াশ’, প্রথমবারেই সফল চাষিরা

শাফিউল আল ইমরান : মঙ্গলবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৪

দিনাজপুর সদরের কৃষক এখলেছুর রহমান। দিনাজপুর সরকারি কলেজ থেকে সমাজবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর শেষ করার পর চাকরিতে না গিয়ে নিজেই কিছু করার চেষ্টা করেন। শেষে তার পৈত্রিক কৃষি জমি ও আশপাশের কৃষকের জমি লিজ নিয়ে শুরু করেন ‘আধুনিক’ কৃষি কাজ। এবার তিনি নতুন ফসল স্কোয়াশ চাষ করে এলাকায় তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। ফসলটি চাষ করে বেশ লাভবানও হয়েছেন তিনি।

এখলেছুর রহমান সংবাদকে বলেন, ‘আমি ১৫ হাজার টাকা খরচ করে ২০ শতক জমিতে স্কোয়াশ চাষ করেছি। ৬০ হাজার টাকা বিক্রি করছি। আশা করছি আরও ১৫-২০ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারবো।’

চাষবাদের মধ্যে ভালো লাভের জন্য এই সবজিটাই তার কাছে বেশি লাভজনক মনে হয়েছে। তিনি বলেন, ‘গতবছর এই সিজনে এই জমিতে টমোটো ছিল, বর্তমানে টমেটো থেকে স্কোয়াশে বেশি লাভ হয়েছে।’

আগামীতে আরও বেশি জমিতে চাষ করার ইচ্ছে আছে তার। ‘কৃষিতে যেসব ফসল আছে সবকিছুই আবাদ করি। কৃষিতেই আমার ধ্যানজ্ঞান। কৃষি কাজই আমার পেশা, সঙ্গে সার কীটনাশকের দোকান আছে। সেটা সন্ধার পর বসি’ বলেন তিনি।

তবে ধান বা অন্য ফসলে তেমন লাভ থাকে না বলেও জানান তিনি। এখলেছুর বলেন, ‘ধানের আবাদও করি। তবে ধানে তো আমাদের তেমন কিছু থাকে না। ধান আবাদ করা লাগে তাই করি। ধান হিসেব করতে গেলে লস। ধানে লাভ হয় না।’

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার আলাদীপুর ইউনিয়নের ভিমলপুর গ্রামের কৃষক মো. হামিদুল ইসলাম এবার প্রথম স্কোয়াশ আবাদ করেছেন। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘এখানকার উপকৃষি সহকারী জাকারিয়া ভাইয়ের পরামর্শে এবার প্রথম স্কোয়াশ আবাদ করেছি। এই জমি থেকে প্রায় ১ হাজার পিস স্কোয়াশ বিক্রি করেছি। এখনও বিক্রির জন্য অনেক আছে জমিতে।’

অন্য ফসল হলে কেমন বিক্রি করতে পারতেন, বলেন তিনি, ‘৫-৭ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে পারতাম।’ স্কোয়াশের জমিতে খরচ কেমন হইছে জানতে চাইলে বলেন, ‘দুই থেকে আড়াই হাজার টাকার মালচিং পেপার লাগাইছিলাম আর সার একবারে দিছি ওই মালচিং দিয়া। পরে সার লাগে নাই হালকা-পাতলা স্প্রে লাগছিল (করতে হয়েছে)।’

তিনি স্কোয়াশ স্থানীয় বাজারে বিক্রি করেছেন। বলেন, ‘আমি যখন নতুন জিনিস প্রথম বিক্রি করতে গেছিলাম তখন মানুষজন কইতো কীভাবে খায়, কীভাবে আন্দে (রান্না করে) এগুলো বলা লাগতো। বর্তমানে এখন বলা লাগে না। এটা মিষ্টি কদুর (মিষ্টি কুমড়া) মতো আন্দে (রান্না করে) খায়।’

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গুণগত মানসম্পন্ন ভালো ফলন পেতে হলে সামার স্কোয়াশ চাষের জমিতে যতটুকু সম্ভব জৈব সার প্রয়োগ করতে হয়। মাটি পরীক্ষা করে মাটির ধরন অনুযায়ী সার প্রয়োগ করতে পারলে মাটির গুণাগুণ ও পরিবেশ উভয়ই ভালো থাকে।

এছাড়া ভালো ফলন পেতে কেঁচো সার বা ভার্মি কম্পোস্ট ব্যবহার করা যেতে পারে। অবশ্যই মনে রাখতে হবে জমিতে প্রয়োজনের তুলনায় কোনোভাবেই যেন বেশি জৈব সার বা গোবর সার না দেয়া হয়। আর কীটনাশক ও ইউরিয়ার সার প্রয়োগ নেই বললেই চলে। আর এজন্য ফসলটি নিরাপদ ফসল হিসেবেও মানুষের কাছে প্রিয় হয়ে উঠছে।

ফসল সংগ্রহের ক্ষেত্রে ফল পরাগায়নের ১৫-২০ দিনের মধ্যে সংগ্রহ করা যায়। সংগ্রহের সময় ফলে সবুজ রঙ থাকবে এবং ফল মসৃণ ও উজ্জ্বল দেখাবে। নখ দিয়ে ফলের গায়ে চাপ দিলে নখ সহজেই ভেতরে ঢুকে যাবে।

শুধু এখলেছুর রহমান বা মো হামিদুল ইসলামই নয়। দিনাজপুর কৃষি অঞ্চলের হাজার হাজার কৃষক কম সার ও কীটনাশক ব্যবহার করে অল্প খরচে লাভজনক কৃষিতে সম্পৃক্ত হয়েছেন। পরিবেশবান্ধব উৎপাদন প্রযুক্তি ব্যবহার করে গড়ে তুলছেন নিরাপদ ও লাভজনক কৃষি পণ্যের ভা-ার। যা ভবিষ্যতের খাদ্য সংকট মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

স্কোয়াশ মূলত উত্তর আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে চাষ হয়ে থাকে। দেখতে অনেকটা শসা আকৃতির এই সবজি লম্বা হলেও রং মিষ্টি কুমড়ার মতো। শীতকালীন উচ্চ ফলনশীল ও স্বল্পমেয়াদি জাতের এ সবজি ভাজি, মাছ ও মাংসের সঙ্গে রান্নার উপযোগী। বিশেষ করে চাইনিজ রেস্টুরেন্টে সবজি এবং সালাদ হিসেবে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

পুষ্টি বিশেষজ্ঞদের অভিমত, স্কোয়াশ কুমড়ার একটি ইউরোপীয় জাত, যা খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু এবং অতি পুষ্টিকর। সবজিটি ডায়াবেটিস, ক্যানসার ও হার্টের রোগীদের জন্যও বেশ উপকারী।

দিনাজপুর অঞ্চলে টেকসই কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) আবু রেজা মো. আসাদুজ্জামান সংবাদকে বলেন, ‘এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রযুক্তির উন্নয়ন ঘটাতে পারলে একদিকে যেমন কৃষিভিত্তিক পণ্যের আমদানি কমে যাবে তেমনি ভালোভাবে প্রয়োগ ঘটলে রপ্তানি সম্ভব হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির প্রয়োগ, নতুন ফসল অন্তর্ভুক্তিকরণ, উচ্চমূল্যের ফসল চাষসহ জলবায়ুর ঝুঁকি এড়াতে সক্ষম লাগসই কৃষি প্রযুক্তি গ্রহণ, আন্তঃফসলের আবাদের মাধ্যমে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি ও নিবিড়তা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। স্বল্প জীবনকালীন ফসলের উৎপাদন ও শস্য নিবিড়তা বাড়ানোর মাধ্যমে দেশের সামগ্রিক কৃষিতে আরও বেশি অবদান রাখার সুযোগ রয়েছে।’

কৃষি মন্ত্রণালয়ে সচিব ওয়াহিদা আক্তার সংবাদকে বলেন, ‘দেশের দিনাজপুর কৃষি অঞ্চলে স্কোয়াশের চাষ হচ্ছে। এই ফসলটি একটি হাই ভেল্যু বিদেশি ফসল। কিন্ত এবার আমাদের দেশে নতুন। কৃষকরা চাষ করে ভালো ফলন পাচ্ছে ও লাভবান হচ্ছে।’

‘আমাদের কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে যে প্রকল্প নেয়া হয়েছে। আমি আশা করি এই প্রকল্পের মাধ্যমে এই স্কোয়াশ জাতটি সবজি হিসেবে আমাদের খাদ্য তালিকায় নতুন করে জায়গা নিবে’ বলেন সচিব।

‘দিনাজপুর অঞ্চলে টেকসই কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প’ সূত্রে জানা গেছে, দিনাজপুর কৃষি অঞ্চলে স্কোয়াশ চাষে কৃষকদের সার-বীজসহ সব ধরনের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। লাভজনক এই ফসটির উৎপাদন বাড়াতে আগামীতে এই অঞ্চলের সব উপজেলায় ব্যাপকভাবে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করার কাজ চলমান আছে।

ভারতে কারাভোগ শেষে দেশে ফিরল বাংলাদেশি ৭ যুবক

বগুড়ায় স্কুলছাত্রী ধর্ষিত

রামুতে যুবকের আত্মহত্যা

ছবি

নবীনগরে ঘোড়া দিয়ে হালচাষ করে সংসার চালায় সত্তার

সাদা পাথর লুটের ঘটনায় ৯ জনের জেল

গোবিপ্রবিতে বিষধর সাপের আতঙ্ক, নেই এন্টিভেনম

চাঁপাইনবাবগঞ্জের প্রত্যন্ত চরে চিনাবাদাম চাষ

কাপাসিয়ায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যা

ছবি

কুষ্টিয়ায় কলা-পেঁপে গাছ কেটে শত্রুতা উদ্ধার

লালমনিরহাটে বজ্রপাতে আহত ৭

বোরো ধানের বাম্পার ফলন, দূষিত পানিতে শ্রমিক সংকট

ছবি

সীতাকুণ্ডে জাহাজ ভাঙা শিল্পের রমরমা সময় এখন আর নেই

হাটহাজারীতে চায়না-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালের সম্ভাব্য স্থান পরিদর্শন

দোয়ারাবাজার সীমান্তে ১১ ভারতীয় গরু উদ্ধার

সৌদি প্রবাসী রুহুল আমিনের লাশ গ্রামের বাড়িতে দাফন

চাটমোহরে ট্রেনে কাটা পড়ে বৃদ্ধের মৃত্যু

শাহজাদপুরে এসএসসি পরীক্ষার্থীকে পিটিয়ে হত্যা করেছে সহপাঠীরা

ছবি

অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনার হাতছানি দিচ্ছে তালের গুড়

ছবি

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের রঙিন ফুলের সৌন্দর্যে বিমোহিত যাত্রীরা

টেকসই উন্নয়নে গবেষণা ও উদ্ভাবনের মেধাস্বত্ব নিশ্চিত করতে হবে সিকৃবি ভিসি

ছবি

তারাপাশার দৃষ্টিনন্দন বিষ্ণুপদধাম মন্দির

ছবি

শহীদ জুলাই আন্দোলনকারীর কন্যা ধর্ষণের শিকার হয়ে আত্মহত্যা

ছবি

সাবেক এমপি জাফর আলম গ্রেপ্তার

ছবি

চাঁপাইনবাবগঞ্জে সুধীসমাবেশে মুক্তিযোদ্ধার বক্তব্যে জামায়াত নেতার বাধা

ছবি

দক্ষিণাঞ্চলের ১০ জেলায় বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক, কিছু এলাকায় এখনো লোডশেডিং

ছবি

‘ভিসিকে কেন নামাইছিস’ বলেই কুয়েটের ৪ শিক্ষার্থীর ওপর হামলা

ছবি

পিএসসি সংস্কারের দাবিতে রেললাইন অবরোধ, ময়মনসিংহে ট্রেন চলাচল এক ঘণ্টা বন্ধ

ছবি

ধনবাড়ীতে পাঠাগার থেকে চার শতাধিক বই লুটের অভিযোগ, তদন্তে প্রশাসন

ছবি

ধনবাড়ীতে পাঠাগার থেকে পাঁচ শতাধিক বই নিয়ে উপজেলা প্রশাসনে জমা

ছবি

রাঙামাটিতে পিকআপ-অটোরিকশা সংঘর্ষে নিহত ৬

ছবি

হবিগঞ্জে মাঠে-বাগানে কাঁঠালের মুচি, পাইকারদের আগাম চাহিদা

ছবি

মৌলভীবাজারের মাছ ও পাখির অভয়াশ্রম বাইক্কা বিল

মাছ চাষে প্যাডেল হুইল অ্যারেটরের ব্যবহার : উন্নতির পথে নতুন দিগন্ত

হাটহাজারীতে লাঠির আঘাতে কৃষকের মৃত্যু

খাস জমিতে মাটি কাটার দায়ে ৬ মাসের কারাদণ্ড

ছবি

পবিপ্রবিতে অর্থ সংকটে সম্ভব হচ্ছে না লাল ও নীল কমল লেকের সংস্কার

tab

সারাদেশ

দিনাজপুর কৃষি অঞ্চলে নতুন সংযোজন ‘স্কোয়াশ’, প্রথমবারেই সফল চাষিরা

শাফিউল আল ইমরান

মঙ্গলবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৪

দিনাজপুর সদরের কৃষক এখলেছুর রহমান। দিনাজপুর সরকারি কলেজ থেকে সমাজবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর শেষ করার পর চাকরিতে না গিয়ে নিজেই কিছু করার চেষ্টা করেন। শেষে তার পৈত্রিক কৃষি জমি ও আশপাশের কৃষকের জমি লিজ নিয়ে শুরু করেন ‘আধুনিক’ কৃষি কাজ। এবার তিনি নতুন ফসল স্কোয়াশ চাষ করে এলাকায় তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। ফসলটি চাষ করে বেশ লাভবানও হয়েছেন তিনি।

এখলেছুর রহমান সংবাদকে বলেন, ‘আমি ১৫ হাজার টাকা খরচ করে ২০ শতক জমিতে স্কোয়াশ চাষ করেছি। ৬০ হাজার টাকা বিক্রি করছি। আশা করছি আরও ১৫-২০ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারবো।’

চাষবাদের মধ্যে ভালো লাভের জন্য এই সবজিটাই তার কাছে বেশি লাভজনক মনে হয়েছে। তিনি বলেন, ‘গতবছর এই সিজনে এই জমিতে টমোটো ছিল, বর্তমানে টমেটো থেকে স্কোয়াশে বেশি লাভ হয়েছে।’

আগামীতে আরও বেশি জমিতে চাষ করার ইচ্ছে আছে তার। ‘কৃষিতে যেসব ফসল আছে সবকিছুই আবাদ করি। কৃষিতেই আমার ধ্যানজ্ঞান। কৃষি কাজই আমার পেশা, সঙ্গে সার কীটনাশকের দোকান আছে। সেটা সন্ধার পর বসি’ বলেন তিনি।

তবে ধান বা অন্য ফসলে তেমন লাভ থাকে না বলেও জানান তিনি। এখলেছুর বলেন, ‘ধানের আবাদও করি। তবে ধানে তো আমাদের তেমন কিছু থাকে না। ধান আবাদ করা লাগে তাই করি। ধান হিসেব করতে গেলে লস। ধানে লাভ হয় না।’

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার আলাদীপুর ইউনিয়নের ভিমলপুর গ্রামের কৃষক মো. হামিদুল ইসলাম এবার প্রথম স্কোয়াশ আবাদ করেছেন। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘এখানকার উপকৃষি সহকারী জাকারিয়া ভাইয়ের পরামর্শে এবার প্রথম স্কোয়াশ আবাদ করেছি। এই জমি থেকে প্রায় ১ হাজার পিস স্কোয়াশ বিক্রি করেছি। এখনও বিক্রির জন্য অনেক আছে জমিতে।’

অন্য ফসল হলে কেমন বিক্রি করতে পারতেন, বলেন তিনি, ‘৫-৭ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে পারতাম।’ স্কোয়াশের জমিতে খরচ কেমন হইছে জানতে চাইলে বলেন, ‘দুই থেকে আড়াই হাজার টাকার মালচিং পেপার লাগাইছিলাম আর সার একবারে দিছি ওই মালচিং দিয়া। পরে সার লাগে নাই হালকা-পাতলা স্প্রে লাগছিল (করতে হয়েছে)।’

তিনি স্কোয়াশ স্থানীয় বাজারে বিক্রি করেছেন। বলেন, ‘আমি যখন নতুন জিনিস প্রথম বিক্রি করতে গেছিলাম তখন মানুষজন কইতো কীভাবে খায়, কীভাবে আন্দে (রান্না করে) এগুলো বলা লাগতো। বর্তমানে এখন বলা লাগে না। এটা মিষ্টি কদুর (মিষ্টি কুমড়া) মতো আন্দে (রান্না করে) খায়।’

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গুণগত মানসম্পন্ন ভালো ফলন পেতে হলে সামার স্কোয়াশ চাষের জমিতে যতটুকু সম্ভব জৈব সার প্রয়োগ করতে হয়। মাটি পরীক্ষা করে মাটির ধরন অনুযায়ী সার প্রয়োগ করতে পারলে মাটির গুণাগুণ ও পরিবেশ উভয়ই ভালো থাকে।

এছাড়া ভালো ফলন পেতে কেঁচো সার বা ভার্মি কম্পোস্ট ব্যবহার করা যেতে পারে। অবশ্যই মনে রাখতে হবে জমিতে প্রয়োজনের তুলনায় কোনোভাবেই যেন বেশি জৈব সার বা গোবর সার না দেয়া হয়। আর কীটনাশক ও ইউরিয়ার সার প্রয়োগ নেই বললেই চলে। আর এজন্য ফসলটি নিরাপদ ফসল হিসেবেও মানুষের কাছে প্রিয় হয়ে উঠছে।

ফসল সংগ্রহের ক্ষেত্রে ফল পরাগায়নের ১৫-২০ দিনের মধ্যে সংগ্রহ করা যায়। সংগ্রহের সময় ফলে সবুজ রঙ থাকবে এবং ফল মসৃণ ও উজ্জ্বল দেখাবে। নখ দিয়ে ফলের গায়ে চাপ দিলে নখ সহজেই ভেতরে ঢুকে যাবে।

শুধু এখলেছুর রহমান বা মো হামিদুল ইসলামই নয়। দিনাজপুর কৃষি অঞ্চলের হাজার হাজার কৃষক কম সার ও কীটনাশক ব্যবহার করে অল্প খরচে লাভজনক কৃষিতে সম্পৃক্ত হয়েছেন। পরিবেশবান্ধব উৎপাদন প্রযুক্তি ব্যবহার করে গড়ে তুলছেন নিরাপদ ও লাভজনক কৃষি পণ্যের ভা-ার। যা ভবিষ্যতের খাদ্য সংকট মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

স্কোয়াশ মূলত উত্তর আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে চাষ হয়ে থাকে। দেখতে অনেকটা শসা আকৃতির এই সবজি লম্বা হলেও রং মিষ্টি কুমড়ার মতো। শীতকালীন উচ্চ ফলনশীল ও স্বল্পমেয়াদি জাতের এ সবজি ভাজি, মাছ ও মাংসের সঙ্গে রান্নার উপযোগী। বিশেষ করে চাইনিজ রেস্টুরেন্টে সবজি এবং সালাদ হিসেবে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

পুষ্টি বিশেষজ্ঞদের অভিমত, স্কোয়াশ কুমড়ার একটি ইউরোপীয় জাত, যা খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু এবং অতি পুষ্টিকর। সবজিটি ডায়াবেটিস, ক্যানসার ও হার্টের রোগীদের জন্যও বেশ উপকারী।

দিনাজপুর অঞ্চলে টেকসই কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) আবু রেজা মো. আসাদুজ্জামান সংবাদকে বলেন, ‘এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রযুক্তির উন্নয়ন ঘটাতে পারলে একদিকে যেমন কৃষিভিত্তিক পণ্যের আমদানি কমে যাবে তেমনি ভালোভাবে প্রয়োগ ঘটলে রপ্তানি সম্ভব হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির প্রয়োগ, নতুন ফসল অন্তর্ভুক্তিকরণ, উচ্চমূল্যের ফসল চাষসহ জলবায়ুর ঝুঁকি এড়াতে সক্ষম লাগসই কৃষি প্রযুক্তি গ্রহণ, আন্তঃফসলের আবাদের মাধ্যমে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি ও নিবিড়তা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। স্বল্প জীবনকালীন ফসলের উৎপাদন ও শস্য নিবিড়তা বাড়ানোর মাধ্যমে দেশের সামগ্রিক কৃষিতে আরও বেশি অবদান রাখার সুযোগ রয়েছে।’

কৃষি মন্ত্রণালয়ে সচিব ওয়াহিদা আক্তার সংবাদকে বলেন, ‘দেশের দিনাজপুর কৃষি অঞ্চলে স্কোয়াশের চাষ হচ্ছে। এই ফসলটি একটি হাই ভেল্যু বিদেশি ফসল। কিন্ত এবার আমাদের দেশে নতুন। কৃষকরা চাষ করে ভালো ফলন পাচ্ছে ও লাভবান হচ্ছে।’

‘আমাদের কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে যে প্রকল্প নেয়া হয়েছে। আমি আশা করি এই প্রকল্পের মাধ্যমে এই স্কোয়াশ জাতটি সবজি হিসেবে আমাদের খাদ্য তালিকায় নতুন করে জায়গা নিবে’ বলেন সচিব।

‘দিনাজপুর অঞ্চলে টেকসই কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প’ সূত্রে জানা গেছে, দিনাজপুর কৃষি অঞ্চলে স্কোয়াশ চাষে কৃষকদের সার-বীজসহ সব ধরনের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। লাভজনক এই ফসটির উৎপাদন বাড়াতে আগামীতে এই অঞ্চলের সব উপজেলায় ব্যাপকভাবে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করার কাজ চলমান আছে।

back to top