ঢাকার দোহার উপজেলায় তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের আওতায় ব্রি ধান-৮৯ এর উপর মাঠ দিবস ও কারিগরি সেশনের আয়োজন করা হয়েছে।
রোববার দোহার উপজেলার বিলাশপুর ইউনিয়নের কুতুবপুর ব্লক এ প্রায় এক শত কৃষাণ-কৃষাণীর উপস্থিতিতে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের আওতায় ব্রি ধান-৮৯ এর ওপর মাঠ দিবস ও কারিগরি সেশনের এ আয়োজন করা হয়।
দোহার উপজেলা কৃষি অফিসার মো. আকতার ফারুক ফুয়াদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- দোহার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাকির হোসেন।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে আমরা সবাই বদ্ধপরিকর। বিভিন্ন ফসলের জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন, খামার যান্ত্রিকীকরণ, পরিবেশসম্মত চাষাবাদ প্রভৃতির মাধ্যমে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের মধ্যে পাট রফতানিতে প্রথম, পাট ও কাঁঠাল উৎপাদনে দ্বিতীয়, ধান, সবজি ও পেঁয়াজ উৎপাদনে তৃতীয়, আম ও আলু উৎপাদনে সপ্তম, পেয়ারা উৎপাদনে অষ্টম স্থান অধিকার করে কৃষি উন্নয়নের দৃষ্টান্ত হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দোহার উপজেলা মৎস্য অফিসার শিরিন সুলতানা মুন্নী বলেন, ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্তির লক্ষ্যে কৃষি দপ্তর এর অধীন কৃষিতে সবুজ বিপ্লব চলছে এবং বিজ্ঞানভিত্তিক চাষাবাদ কৌশল সম্প্রসারণ এর মাধ্যমে টেকসই কৃষির মাধ্যমে ২০৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশ এর যাত্রার সূচনা হবে বাংলার কৃষি দিয়েই ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দোহার উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা. মো. শামীম হোসেন বলেন, প্রতি ইঞ্চি জমি চাষের আওতায় এনে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে নিরলসভাবে দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কৃষির উন্নয়নের মহাপরিকল্পনাসহ বিভিন্ন কৃষিবান্ধব নীতি, বহুমুখী কর্মসূচির মাধ্যমে কৃষকের পাশে থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের ফলে দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। দোহারের কৃষির উন্নয়নের কর্ম পরিকল্পনার অংশ হিসেবে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে তেলজাতীয় ফসলসহ অন্যান্য ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে উফশী জাতের সম্প্রসারণ ও মৌচাষ সম্প্রসারণের বিশেষ পদক্ষেপে কৃষকরা লাভবান হয়েছেন।
দোহার উপজেলা কৃষি অফিসার মো. আকতার ফারুক ফুয়াদ বলেন, ২০১৮ সালে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল নতুন ধানের জাত হলো ব্রি ধান-৮৯, যা বোরো ধানের জাত। ব্রি ধান-৮৯ এর জীবনকাল ব্রি ধান-২৯ এর জীবনকালের চেয়ে ৩-৫ দিন কম, কিন্তু ফলন বেশি। ফলন বেশি ও জীবনকাল কম হওয়ায় যেসব এলাকায় ব্রি ধান-২৯ চাষাবাদ করা হয় সেসব এলাকাতে সহজেই ব্রি ধান-৮৯ চাষ করা যাবে। এই জাতের ধান গাছের কাণ্ড শক্ত, পাতা হালকা সবুজ ও ডিগ পাতা চওড়া। পূর্ণ বয়স্ক গাছের উচ্চতা ১০৬ সেমি হয়ে থাকে। এই জাতের ধানের ছড়া লম্বা হয়। ধান পাকার সময় কাণ্ড ও পাতা সবুজ থাকে। এই জাতের ১ হাজারটি পুষ্ট ধানের ওজন প্রায় ২৪.৪ গ্রাম। এ ধানে অ্যামাইলোজের পরিমাণ শতকরা ২৮ দশমিক ৫। এ জাতের জীবনকাল ব্রি ধান-২৯ এর চেয়ে ৩-৫ দিন আগাম। ব্রি ধান-৮৯ এর জীবনকাল ১৫৪-১৫৮ দিন। এ জাতের গড় ফলন প্রতি হেক্টরে ৮ টন। তবে উপযুক্ত পরিচর্যা পেলে হেক্টর প্রতি ৯.৭ টন পর্যন্ত ফলন হতে পারে।
তিনি আরও জানান, দোহার এ শস্য উৎপাদন বৃদ্ধির পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এলাকা উপযোগী আধুনিক উফশী জাতের সম্প্রসারণ ও হাইব্রিড জাতের এলাকা বৃদ্ধি প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হয়েছে। ফলে মানসম্পন্ন বীজের প্রাপ্যতা নিশ্চিতকরণ, কৃষক পর্যায়ে ডিএইর তত্ত্বাবধায়নে উৎপাদিত উফশী বীজ ব্যবহারে কৃষকদেরকে উদ্বুদ্ধকরণ, কৃষকদের পরামর্শ প্রদান, প্রশিক্ষণ এবং প্রদর্শনী প্রাপ্ত কৃষকদের হাতে কলমে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে।
কৃষক সমাবেশে প্রদর্শনী চাষি শহিদ মিয়া জানান, পূর্বে তিনি ব্রি ধান-২৯ আবাদ করতেন। এ মৌসুমে উপজেলা কৃষি দপ্তর থেকে এই জাতের বীজ, সার ও অন্যান্য সেবা পেয়ে তিনি এই জাত আবাদ করেন।
তিনি আরও জানান, অন্যান্য প্রচলিত জাতের চেয়ে ব্রি ধান-৮৯ এ রোগ বালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ কম হয়। নমুনা শস্য কর্তনে(২০ বর্গমিটার) কর্তিত অংশের ফলন পাওয়া গেছে প্রায় ১৬.৫ কেজি। মাঠ আর্দ্রতা শতকরা ২১ দশমিক ৮, হেক্টর প্রতি ফলন ৮.১ টন এবং চাউলে ৫.৪ টন। এই ফলনে তিনি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এবং তিনি বীজ সংরক্ষণ করবেন এবং পরের বছর এ জাত আবার চাষ করবেন ।
সোমবার, ২০ মে ২০২৪
ঢাকার দোহার উপজেলায় তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের আওতায় ব্রি ধান-৮৯ এর উপর মাঠ দিবস ও কারিগরি সেশনের আয়োজন করা হয়েছে।
রোববার দোহার উপজেলার বিলাশপুর ইউনিয়নের কুতুবপুর ব্লক এ প্রায় এক শত কৃষাণ-কৃষাণীর উপস্থিতিতে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের আওতায় ব্রি ধান-৮৯ এর ওপর মাঠ দিবস ও কারিগরি সেশনের এ আয়োজন করা হয়।
দোহার উপজেলা কৃষি অফিসার মো. আকতার ফারুক ফুয়াদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- দোহার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাকির হোসেন।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে আমরা সবাই বদ্ধপরিকর। বিভিন্ন ফসলের জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন, খামার যান্ত্রিকীকরণ, পরিবেশসম্মত চাষাবাদ প্রভৃতির মাধ্যমে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের মধ্যে পাট রফতানিতে প্রথম, পাট ও কাঁঠাল উৎপাদনে দ্বিতীয়, ধান, সবজি ও পেঁয়াজ উৎপাদনে তৃতীয়, আম ও আলু উৎপাদনে সপ্তম, পেয়ারা উৎপাদনে অষ্টম স্থান অধিকার করে কৃষি উন্নয়নের দৃষ্টান্ত হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দোহার উপজেলা মৎস্য অফিসার শিরিন সুলতানা মুন্নী বলেন, ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্তির লক্ষ্যে কৃষি দপ্তর এর অধীন কৃষিতে সবুজ বিপ্লব চলছে এবং বিজ্ঞানভিত্তিক চাষাবাদ কৌশল সম্প্রসারণ এর মাধ্যমে টেকসই কৃষির মাধ্যমে ২০৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশ এর যাত্রার সূচনা হবে বাংলার কৃষি দিয়েই ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দোহার উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা. মো. শামীম হোসেন বলেন, প্রতি ইঞ্চি জমি চাষের আওতায় এনে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে নিরলসভাবে দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কৃষির উন্নয়নের মহাপরিকল্পনাসহ বিভিন্ন কৃষিবান্ধব নীতি, বহুমুখী কর্মসূচির মাধ্যমে কৃষকের পাশে থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের ফলে দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। দোহারের কৃষির উন্নয়নের কর্ম পরিকল্পনার অংশ হিসেবে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে তেলজাতীয় ফসলসহ অন্যান্য ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে উফশী জাতের সম্প্রসারণ ও মৌচাষ সম্প্রসারণের বিশেষ পদক্ষেপে কৃষকরা লাভবান হয়েছেন।
দোহার উপজেলা কৃষি অফিসার মো. আকতার ফারুক ফুয়াদ বলেন, ২০১৮ সালে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল নতুন ধানের জাত হলো ব্রি ধান-৮৯, যা বোরো ধানের জাত। ব্রি ধান-৮৯ এর জীবনকাল ব্রি ধান-২৯ এর জীবনকালের চেয়ে ৩-৫ দিন কম, কিন্তু ফলন বেশি। ফলন বেশি ও জীবনকাল কম হওয়ায় যেসব এলাকায় ব্রি ধান-২৯ চাষাবাদ করা হয় সেসব এলাকাতে সহজেই ব্রি ধান-৮৯ চাষ করা যাবে। এই জাতের ধান গাছের কাণ্ড শক্ত, পাতা হালকা সবুজ ও ডিগ পাতা চওড়া। পূর্ণ বয়স্ক গাছের উচ্চতা ১০৬ সেমি হয়ে থাকে। এই জাতের ধানের ছড়া লম্বা হয়। ধান পাকার সময় কাণ্ড ও পাতা সবুজ থাকে। এই জাতের ১ হাজারটি পুষ্ট ধানের ওজন প্রায় ২৪.৪ গ্রাম। এ ধানে অ্যামাইলোজের পরিমাণ শতকরা ২৮ দশমিক ৫। এ জাতের জীবনকাল ব্রি ধান-২৯ এর চেয়ে ৩-৫ দিন আগাম। ব্রি ধান-৮৯ এর জীবনকাল ১৫৪-১৫৮ দিন। এ জাতের গড় ফলন প্রতি হেক্টরে ৮ টন। তবে উপযুক্ত পরিচর্যা পেলে হেক্টর প্রতি ৯.৭ টন পর্যন্ত ফলন হতে পারে।
তিনি আরও জানান, দোহার এ শস্য উৎপাদন বৃদ্ধির পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এলাকা উপযোগী আধুনিক উফশী জাতের সম্প্রসারণ ও হাইব্রিড জাতের এলাকা বৃদ্ধি প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হয়েছে। ফলে মানসম্পন্ন বীজের প্রাপ্যতা নিশ্চিতকরণ, কৃষক পর্যায়ে ডিএইর তত্ত্বাবধায়নে উৎপাদিত উফশী বীজ ব্যবহারে কৃষকদেরকে উদ্বুদ্ধকরণ, কৃষকদের পরামর্শ প্রদান, প্রশিক্ষণ এবং প্রদর্শনী প্রাপ্ত কৃষকদের হাতে কলমে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে।
কৃষক সমাবেশে প্রদর্শনী চাষি শহিদ মিয়া জানান, পূর্বে তিনি ব্রি ধান-২৯ আবাদ করতেন। এ মৌসুমে উপজেলা কৃষি দপ্তর থেকে এই জাতের বীজ, সার ও অন্যান্য সেবা পেয়ে তিনি এই জাত আবাদ করেন।
তিনি আরও জানান, অন্যান্য প্রচলিত জাতের চেয়ে ব্রি ধান-৮৯ এ রোগ বালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ কম হয়। নমুনা শস্য কর্তনে(২০ বর্গমিটার) কর্তিত অংশের ফলন পাওয়া গেছে প্রায় ১৬.৫ কেজি। মাঠ আর্দ্রতা শতকরা ২১ দশমিক ৮, হেক্টর প্রতি ফলন ৮.১ টন এবং চাউলে ৫.৪ টন। এই ফলনে তিনি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এবং তিনি বীজ সংরক্ষণ করবেন এবং পরের বছর এ জাত আবার চাষ করবেন ।