লিচুর জন্য বিখ্যাত দিনাজপুরের এক সময়ের নাম থাকলেও এখন তা দখল করে নিচ্ছে ঈশ্বরদী। পিছিয়ে নেই রাজশাহীও রাজশাহী সাহেব বাজার , রেল ষ্টেশন বিন্দুর মোড় শাল বাগান এলাকায় লিচুর বাজারে গিয়ে দেখা গেছে দাম বেজায় চড়া। ১০০টি লিচুর দাম চাওয়া হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০টাকা। ফলে সাধ্যের বাইরে হওয়ায় সাধ থাকলেও আগাম লিচু কিনতে পারছেন না অনেকেই।
তবে, তীব্র তাপপ্রবাহ ও প্রচন্ড খরায় বেশির ভাগ গাছের লিচু ঝরে পড়ায় ও ফেটে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় চলতি মৌসুমে দাম বেশিই থাকবে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, চলতি মৌসুমে গাছে গাছে লিচুর প্রচুর মুকুল এসেছিল। কিন্তু হঠাৎ মার্চ মাসের ২০ ও ২১ তারিখে বৃষ্টি হয়ে অধিকাংশ মুকুল ঝরে যায়। অবশিষ্ট মুকুল থেকে গুটি ও লিচু হয়ে গেলেও বৃষ্টির কোনো দেখা মেলেনি। বরং প্রচন্ড তাপপ্রবাহ ও খরায় ৬০ শতাংশ লিচু ফেটে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে ব্যাপক লোকসানের শঙ্কায় রয়েছেন বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, চলতি মৌসুমে রাজশাহীতে ৫৩০ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ১৮ হেক্টর বেশি। এ বছর লিচু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৮০০ টন। তবে, তীব্র তাপপ্রবাহ, প্রচন্ড খরায় বেশির ভাগ গাছের লিচু ঝরে পড়ছে। যেগুলোতে লিচু ছিল, সেগুলোতেও অনেক লিচু শুকিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।
রাজশাহী মহানগরীর রায়পাড়া, বড়বনগ্রাম, পবা এবং মোহনপুর উপজেলার কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা গেছে, এ বছর বোম্বাই, মাদ্রাজি, কাদমি, মোজাফফরপুরী, বেদানা, কালীবাড়ি, মঙ্গলবাড়ী, চায়না-৩, বারি-১, বারি-২ ও বারি-৩ জাতের লিচু বেশি চাষ হয়েছে। তবে ঝরে পড়ায় ফলন খুব কম রয়েছে। যেগুলো রয়েছে সেগুলোর মধ্যে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ লিচু রোদের খরতাপে ফেটে নষ্ট হয়ে গেছে।
রাজশাহী নগরীর মেহেরচন্ডির এলাকার লিচুচাষি মুক্তার ভান্ডারি বলেন, তীব্র খরার কারণে গাছে ফেটে নষ্ট হচ্ছে লিচু। এমন ক্ষতি থেকে রক্ষার জন্য আগাম গাছ থেকে লিচু নামিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে।
নগরীর বড়বনগ্রাম এলাকার খলিল সরকারের মোড় এলাকার লিচু চাষি লিয়াকত হোসে বলেন, তবে বৈরী আবহাওয়ায় শুরু থেকেই ফলন কম ছিল। পরে প্রচন্ড দাবদাহ ও অনাবৃষ্টিতে লিচু ফেটে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে একদিকে লিচুর সংখ্যা কমে গেছে, অন্যদিকে লিচু বাছাই করতে করতেই দিন শেষ হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে শ্রমিকও বেশি লাগায় খরচ বেড়ে যাচ্ছে। যে টাকায় বাগান কিনেছিলাম ১০০ লিচু ৩০০ টাকা করে বিক্রি করলেও লাভ হবে না। কিন্তু আমরা ১ হাজার লিচু খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে ২ হাজার ৫০০ টাকা দরে বিক্রি করেছি। তারা বেশি দামে বিক্রি করবে।’
ভরা মৌসুমে রাজশাহী মহানগরীর সাহেববাজার, বিন্দুরমোড়, লক্ষ্মীপুর, কোর্ট স্টেশন ও শালবাগান বাজার, কাজলা বাজার, বিনোদপুর বাজার, কাটাখালী বাজার, ছাড়াও শিরোইল বাস টার্মিনাল সংলগ্ন বিভিন্ন সড়কের দুই পাশে বাহারি এ ফলের পসরা সাজিয়ে বসেন ব্যবসায়ীরা। তবে কেবল সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে কয়েকটি দোকানে কিছু লিচু রয়েছে। এই লিচু বছরের প্রথম ফল হিসেবে শখ করে বেশি দাম দিয়েই কিনছেন কেউ কেউ। ফল ব্যবসায়ীরা জানান, জানান, লিচুকে অতিথি ফল বলা হয়। কারণ এই ফল বাজারে মাত্র এক থেকে দেড় মাসে থাকে। এ কারণে লিচুর দাম বেশি। বাজারে দিনাজপুর ও রাজশাহীর লিচু এলেই দাম সাধারণ মানুষের হাতের নাগালে চলে আসবে। তখন সবাই লিচুর স্বাদ নিতে পারবেন।
রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোছা. উম্মে ছালমা বলেন, ‘চলতি মৌসুমে গাছে গাছে প্রচুর লিচুর মুকুল এলেও বৈরী আবহাওয়ার কারণে অনেক ঝরে গেছে। তবে কৃষি অধিদপ্তরের পরামর্শে গাছের ও মুকুলের যতœ নেওয়ায় এখনো পর্যাপ্ত লিচু আছে। ফলে বাজারে লিচুর কোনো সংকট হবে না।
বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০২৪
লিচুর জন্য বিখ্যাত দিনাজপুরের এক সময়ের নাম থাকলেও এখন তা দখল করে নিচ্ছে ঈশ্বরদী। পিছিয়ে নেই রাজশাহীও রাজশাহী সাহেব বাজার , রেল ষ্টেশন বিন্দুর মোড় শাল বাগান এলাকায় লিচুর বাজারে গিয়ে দেখা গেছে দাম বেজায় চড়া। ১০০টি লিচুর দাম চাওয়া হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০টাকা। ফলে সাধ্যের বাইরে হওয়ায় সাধ থাকলেও আগাম লিচু কিনতে পারছেন না অনেকেই।
তবে, তীব্র তাপপ্রবাহ ও প্রচন্ড খরায় বেশির ভাগ গাছের লিচু ঝরে পড়ায় ও ফেটে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় চলতি মৌসুমে দাম বেশিই থাকবে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, চলতি মৌসুমে গাছে গাছে লিচুর প্রচুর মুকুল এসেছিল। কিন্তু হঠাৎ মার্চ মাসের ২০ ও ২১ তারিখে বৃষ্টি হয়ে অধিকাংশ মুকুল ঝরে যায়। অবশিষ্ট মুকুল থেকে গুটি ও লিচু হয়ে গেলেও বৃষ্টির কোনো দেখা মেলেনি। বরং প্রচন্ড তাপপ্রবাহ ও খরায় ৬০ শতাংশ লিচু ফেটে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে ব্যাপক লোকসানের শঙ্কায় রয়েছেন বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, চলতি মৌসুমে রাজশাহীতে ৫৩০ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ১৮ হেক্টর বেশি। এ বছর লিচু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৮০০ টন। তবে, তীব্র তাপপ্রবাহ, প্রচন্ড খরায় বেশির ভাগ গাছের লিচু ঝরে পড়ছে। যেগুলোতে লিচু ছিল, সেগুলোতেও অনেক লিচু শুকিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।
রাজশাহী মহানগরীর রায়পাড়া, বড়বনগ্রাম, পবা এবং মোহনপুর উপজেলার কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা গেছে, এ বছর বোম্বাই, মাদ্রাজি, কাদমি, মোজাফফরপুরী, বেদানা, কালীবাড়ি, মঙ্গলবাড়ী, চায়না-৩, বারি-১, বারি-২ ও বারি-৩ জাতের লিচু বেশি চাষ হয়েছে। তবে ঝরে পড়ায় ফলন খুব কম রয়েছে। যেগুলো রয়েছে সেগুলোর মধ্যে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ লিচু রোদের খরতাপে ফেটে নষ্ট হয়ে গেছে।
রাজশাহী নগরীর মেহেরচন্ডির এলাকার লিচুচাষি মুক্তার ভান্ডারি বলেন, তীব্র খরার কারণে গাছে ফেটে নষ্ট হচ্ছে লিচু। এমন ক্ষতি থেকে রক্ষার জন্য আগাম গাছ থেকে লিচু নামিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে।
নগরীর বড়বনগ্রাম এলাকার খলিল সরকারের মোড় এলাকার লিচু চাষি লিয়াকত হোসে বলেন, তবে বৈরী আবহাওয়ায় শুরু থেকেই ফলন কম ছিল। পরে প্রচন্ড দাবদাহ ও অনাবৃষ্টিতে লিচু ফেটে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে একদিকে লিচুর সংখ্যা কমে গেছে, অন্যদিকে লিচু বাছাই করতে করতেই দিন শেষ হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে শ্রমিকও বেশি লাগায় খরচ বেড়ে যাচ্ছে। যে টাকায় বাগান কিনেছিলাম ১০০ লিচু ৩০০ টাকা করে বিক্রি করলেও লাভ হবে না। কিন্তু আমরা ১ হাজার লিচু খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে ২ হাজার ৫০০ টাকা দরে বিক্রি করেছি। তারা বেশি দামে বিক্রি করবে।’
ভরা মৌসুমে রাজশাহী মহানগরীর সাহেববাজার, বিন্দুরমোড়, লক্ষ্মীপুর, কোর্ট স্টেশন ও শালবাগান বাজার, কাজলা বাজার, বিনোদপুর বাজার, কাটাখালী বাজার, ছাড়াও শিরোইল বাস টার্মিনাল সংলগ্ন বিভিন্ন সড়কের দুই পাশে বাহারি এ ফলের পসরা সাজিয়ে বসেন ব্যবসায়ীরা। তবে কেবল সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে কয়েকটি দোকানে কিছু লিচু রয়েছে। এই লিচু বছরের প্রথম ফল হিসেবে শখ করে বেশি দাম দিয়েই কিনছেন কেউ কেউ। ফল ব্যবসায়ীরা জানান, জানান, লিচুকে অতিথি ফল বলা হয়। কারণ এই ফল বাজারে মাত্র এক থেকে দেড় মাসে থাকে। এ কারণে লিচুর দাম বেশি। বাজারে দিনাজপুর ও রাজশাহীর লিচু এলেই দাম সাধারণ মানুষের হাতের নাগালে চলে আসবে। তখন সবাই লিচুর স্বাদ নিতে পারবেন।
রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোছা. উম্মে ছালমা বলেন, ‘চলতি মৌসুমে গাছে গাছে প্রচুর লিচুর মুকুল এলেও বৈরী আবহাওয়ার কারণে অনেক ঝরে গেছে। তবে কৃষি অধিদপ্তরের পরামর্শে গাছের ও মুকুলের যতœ নেওয়ায় এখনো পর্যাপ্ত লিচু আছে। ফলে বাজারে লিচুর কোনো সংকট হবে না।