alt

সারাদেশ

কক্সবাজারে টানা ভারী বর্ষণে পাহাড় ধসের আশঙ্কা

জেলা বার্তা পরিবেশক, কক্সবাজার : বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪

https://sangbad.net.bd/images/2024/July/03Jul24/news/IMG-20240703-WA0035.jpg

কক্সবাজারে টানা বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় পাহাড় ধসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। যার কারণে ঝুঁকিতে থাকা বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে মাইকিং করেছে জেলা প্রশাসন। এক সপ্তাহ ধরে কক্সবাজারে থেমে থেমে মাঝারি ও ভারী বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। টানা এক সপ্তাহের বৃষ্টিতে পাহাড় ধসের আশঙ্কা বেড়েছে, এমনটাই বলছে প্রশাসন। স্থানীয়দের সচেতন ও সতর্ক করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শাহীন ইমরান।

তিনি বলেন, জেলার বিভিন্ন এলাকায় অতিবৃষ্টি হচ্ছে। ওই সময় পাহাড়ি ঢল ও বন্যার আশঙ্কায় মাইকিং করা হয়েছে। স্থানীয় ও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ক্ষয়ক্ষতি ও জানমাল রক্ষায় সচেতন বিভিন্ন এনজিওদের মাধ্যমে রোহিঙ্গা ক্যাম্পেও মাইকিং করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের মাধ্যমেও মাইকিং করে নিরাপদ স্থানে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। কক্সবাজার এলাকায় পাহাড়ের পাদদেশে ও নিম্নাঞ্চলে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে সতর্ক করা হয়েছে।

https://sangbad.net.bd/images/2024/July/03Jul24/news/IMG-20240703-WA0037.jpg

এদিকে কক্সবাজারের ৯ উপজেলার পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে যায় খাল তীরবর্তী গ্রাম ও ঘরবাড়ি। প্রতিবছরই বর্ষার মৌসুমে পাহাড় ধসের আশঙ্কা থাকে। ফলে সে সময়টায় নিচু জায়গায় বসবাসরত লোকজনের জীবনের ঝুঁকি বেড়ে যায়। অনেককে পানির স্রোতে ভেসে গিয়ে জীবন দিতে হয়েছে।

সম্প্রতি টানা বৃষ্টিতে শহরের অন্তত ২০ পয়েন্টে পাহাড় ধস হয়েছে। এতে বরাবরই ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থানরতদের। প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, কক্সবাজারে পাহাড়খেকোরা পাহাড় কাটার উপযুক্ত সময় হিসেবে বেছে নিয়েছে বর্ষা মৌসুমকে। বৃষ্টির পানির সঙ্গে নামিয়ে দিচ্ছে পাহাড়ের মাটি। শহরের পাহাড়তলী, বৈদ্যঘোনা, ঘোনারপাড়া, বাদশাঘোনা, খাঁজামঞ্জিল, লাইটহাউস, কলাতলী এবং বাস টার্মিনালসহ ১০ টির বেশি পয়েন্টে চলছে গণহারে পাহাড় কাটা। পাহাড় কেটে সমতল করে বের করা হচ্ছে বসতভিটার জায়গা। নির্মাণ করা হচ্ছে ঘরবাড়িসহ বহুতল ভবন। এতে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে ৫ হাজারেরও বেশি বসতবাড়ি। যার ফলে প্রতিবছর পাহাড় ধসে হতাহতের ঘটনা যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে।

https://sangbad.net.bd/images/2024/July/03Jul24/news/IMG-20240703-WA0034.jpg

শহরের বাদশাঘোনা এলাকায় অভিযান পরিচালনাকালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এনামুল হক জানান, জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকা লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরাতে মাইকিংয়ের পাশাপাশি সচেতন করা হচ্ছে। বেশি ঝুঁকিতে থাকা লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি পাহাড় দখলবাজদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এই প্রচারণা অব্যাহত থাকবে।

উখিয়া বালুখালী এলাকার মোস্তাক আহমেদ ও জয়নাল আবেদীন বলেন, কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের পশ্চিমপাশে বালুখালী ছরা নামক স্থানে পাহাড়ের মাটি সরে গিয়ে বিশাল একটি গাছ চরম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

https://sangbad.net.bd/images/2024/July/03Jul24/news/IMG-20240703-WA0036.jpg

১১ নম্বর ক্যাম্পের রোহিঙ্গা মোহাম্মদ রফিক বলেন, ভারী বর্ষণে ক্যাম্পে ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। অধিকাংশ ঘরে পানি ঢুকছে। আমাদের কষ্টের শেষ নেই। দমন-পীড়নের মুখে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে আসা ১৩ লাখ রোহিঙ্গার অধিকাংশই রয়েছে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ শরণার্থী শিবিরে। সেখানে বিভিন্ন পাহাড় কেটে বসতি স্থাপন করেছে রোহিঙ্গারা।

এদিকে, বর্ষার শুরুতেই পৃথক পাহাড় ধসে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ১২ জন এবং শহরে ২ জনসহ মোট ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তারমধ্যে ২০ জুন উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড় ধসের ঘটনায় দুই বাংলাদেশীসহ ১০ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে দু’জন স্থানীয়। এর মধ্যে একজন থাইংখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র শাহ আলমের ছেলে আব্দুল করিম (১২)। অন্যজন চট্টগ্রামের সাতকানিয়া এলাকার হোসেন আহমেদ। দু’জনের বাড়ি ১৪ নম্বর ক্যাম্পের পাশে। বাকিরা সব রোহিঙ্গা। গেল শুক্রবার (২২ জুন) ভোরে কক্সবাজার শহরের বাদশা ঘোনায় অতিবৃষ্টির কারণে পাহাড় ধসে গর্ভবতী স্ত্রীসহ স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলেন স্থানীয় ওমর ফারুক জামে মসজিদের মুয়াজ্জিম আনোয়ার হোসেন (২৬) ও তার স্ত্রী মাইমুনা আক্তার (২০)। বুধবার (৩ জুলাই) রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড় ধসের ঘটনায় আরও ১ বাংলাদেশীসহ ২ জন নিহত হয়েছে।

https://sangbad.net.bd/images/2024/July/03Jul24/news/IMG-20240703-WA0034.jpg

এদিকে গেল মঙ্গলবার রাত থেকে টানা ভারী বৃষ্টিতে উখিয়া-টেকনাফে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। চিংড়ি ঘের তলিয়ে গেছে। বৃষ্টির পানি আর পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল। ডুবে গেছে ঘরবাড়িসহ মৎস্যঘের, লবণের গোলা। ভেঙে গেছে রাস্তাঘাট। অতিরিক্ত পানির কারণে কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কের কিছু কিছু জায়গায় যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। অনেক গাড়ি গ্রামের ছোট ছোট রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে।

এদিকে, কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ আব্দুল হান্নান জানান, এই বৃষ্টিপাত আরও কয়েকদিন থাকবে। বুধবার (৩ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

https://sangbad.net.bd/images/2024/July/03Jul24/news/IMG-20240703-WA0037.jpg

সচেতন মহল বলছেন, বর্ষা মৌসুমে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা তৈরি হলেই প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। বাকি সময় নীরব থাকে। পাহাড়খেকোদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। অবৈধভাবে পাহাড়ে দখল করে অবস্থানকারীদের পানি-বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেওয়া দরকার। এতে অবশিষ্ট পাহাড় যেমন রক্ষা পাবে তেমননি মৃত্যুর ঝুঁকিও কমবে। রক্ষা পাবে জীবন পরিবেশ প্রকৃতি।

ছবি

ফুলবাড়ীতে ট্রাক-ন‌সিমন সংঘর্ষে চালকসহ নিহত ২

ছবি

টেকনাফের ৬ দলিল লেখকের সনদ বাতিল

ছবি

সেন্টমার্টিনে আসা রোহিঙ্গা বোঝাই ট্রলারটি মায়ানমারে ফিরে গেছে

সৌদিতে আগুনে নওগাঁর ৩জন নিহত; শোকে স্তব্ধ পরিবার

ছবি

সিলেটে কয়েকটি উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি

সিলেটে সাজাসহ ৩০ মামলার পরোয়াভুক্ত আসামি ৮ বছর পর স্ত্রীসহ চট্টগ্রাম থেকে গ্রেফতার

১৭ বছর পর, ফরিদপুরে পৈত্রিক জমি ফিরে পেতে চান আলী খান

ছবি

কক্সবাজারে বন্য হাতির আক্রমণে মৎস্য ব্যবসায়ীর মৃত্যু

ছবি

সেন্টমার্টিনে আটকে পড়া মায়ানমারের নাগরিকদের পুশব্যাক করা হচ্ছে

ছবি

দুই রোহিঙ্গা যুবকের দেহ তল্লাশিতে মিললো অস্ত্র গুলি

ছবি

সেন্টমার্টিনে ভিড়ল মিয়ানমারের রোহিঙ্গা বোঝাই ট্রলার

ছবি

নাইক্ষংছড়ি থেকে ইয়াবাসহ দুই মাদক কারবারিকে আটক করেছে র‌্যাব,

ছবি

ঠাকুরগাঁওয়ের সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশী যুবকর মৃত্যু

ছবি

উত্তরবঙ্গে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী

ছবি

নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বিদ্যুতের খুঁটিতে ধাক্কা, প্রাইভেট কারের ৫ যাত্রীর মৃত্যু

ছবি

সেন্টমার্টিনে মায়ানমারের দুই সেনা ও ৩১ রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ

ছবি

সাতক্ষীরায় কৃষক লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

ছবি

ঠাকুরগাঁও সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে যুবক নিহত

ছবি

একজনের মরদেহ উদ্ধার, এখনো নিখোঁজ ২

ছবি

দিনাজপুরে বাস-ট্রাক সংঘর্ষে শিশুসহ ৪ জন নিহত

সৌদি আরবের পুড়ে মারা যাওয়া ৪জনের ৩জন নওগাঁর, পরিবারে চলছে শোকের মাতম

শরীয়তপুরে সরকারি ঘর ও গভীর নলকূপ দেওয়ার নামে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে

ছবি

কক্সবাজারে পৃথক ঘটনায় ৩ জনের মৃত্যু

ছবি

ঠাকুরগাঁওয়ের ভূয়া নিয়োগের অভিযোগে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও ৬ শিক্ষকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা

ছবি

ঋণ না পেয়ে দেনার ভয়ে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা

সোনারগাঁয়ে শিশুর মরদেহ ও আহত মাকে উদ্ধার

ছবি

সব ধর্মে মানুষের কথা বলা হয়েছে, মানুষকে ভালোবাসলে সৃষ্টিকর্তাকে পাওয়া যায় : মেয়র আইভী

ছবি

আবারো রাখাইন রাজ্যের বিস্ফোরণের শব্দে কাঁপল সীমান্ত

ছবি

ভারত থেকে উপহার পাওয়া অ্যাম্বুলেন্সটি পড়ে আছে মর্গের পাশে

ছবি

রংপুরে সেপটিক ট্যাংকে পড়ে মা-ছেলেসহ নিহত ৩

ছবি

"কোটা বিরোধী আন্দোলনে আবারও শাহবাগ অবরোধ, সৃষ্টি হয়েছে যানজট"

ছবি

"বিদ্যুৎস্পৃষ্টে প্রাণ হারালেন বরিশালের দুই যুবক"

ছবি

বারিতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশে কৃষি উৎপাদন টেকসই করার লক্ষে কর্মশালা অনুষ্ঠিত

ছবি

আরসার কিলিং গ্রুপ কমান্ডার দুই সহযোগীসহ গ্রেফতার : জি-৩ রাইফেল ও দেশীয় অস্ত্র-গুলি উদ্ধার

ছবি

রোহিঙ্গা শিবিরে যুবককে গলা কেটে হত্যা

ছবি

মির্জাপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নারীসহ নিহত ২

tab

সারাদেশ

কক্সবাজারে টানা ভারী বর্ষণে পাহাড় ধসের আশঙ্কা

জেলা বার্তা পরিবেশক, কক্সবাজার

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪

https://sangbad.net.bd/images/2024/July/03Jul24/news/IMG-20240703-WA0035.jpg

কক্সবাজারে টানা বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় পাহাড় ধসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। যার কারণে ঝুঁকিতে থাকা বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে মাইকিং করেছে জেলা প্রশাসন। এক সপ্তাহ ধরে কক্সবাজারে থেমে থেমে মাঝারি ও ভারী বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। টানা এক সপ্তাহের বৃষ্টিতে পাহাড় ধসের আশঙ্কা বেড়েছে, এমনটাই বলছে প্রশাসন। স্থানীয়দের সচেতন ও সতর্ক করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শাহীন ইমরান।

তিনি বলেন, জেলার বিভিন্ন এলাকায় অতিবৃষ্টি হচ্ছে। ওই সময় পাহাড়ি ঢল ও বন্যার আশঙ্কায় মাইকিং করা হয়েছে। স্থানীয় ও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ক্ষয়ক্ষতি ও জানমাল রক্ষায় সচেতন বিভিন্ন এনজিওদের মাধ্যমে রোহিঙ্গা ক্যাম্পেও মাইকিং করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের মাধ্যমেও মাইকিং করে নিরাপদ স্থানে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। কক্সবাজার এলাকায় পাহাড়ের পাদদেশে ও নিম্নাঞ্চলে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে সতর্ক করা হয়েছে।

https://sangbad.net.bd/images/2024/July/03Jul24/news/IMG-20240703-WA0037.jpg

এদিকে কক্সবাজারের ৯ উপজেলার পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে যায় খাল তীরবর্তী গ্রাম ও ঘরবাড়ি। প্রতিবছরই বর্ষার মৌসুমে পাহাড় ধসের আশঙ্কা থাকে। ফলে সে সময়টায় নিচু জায়গায় বসবাসরত লোকজনের জীবনের ঝুঁকি বেড়ে যায়। অনেককে পানির স্রোতে ভেসে গিয়ে জীবন দিতে হয়েছে।

সম্প্রতি টানা বৃষ্টিতে শহরের অন্তত ২০ পয়েন্টে পাহাড় ধস হয়েছে। এতে বরাবরই ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থানরতদের। প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, কক্সবাজারে পাহাড়খেকোরা পাহাড় কাটার উপযুক্ত সময় হিসেবে বেছে নিয়েছে বর্ষা মৌসুমকে। বৃষ্টির পানির সঙ্গে নামিয়ে দিচ্ছে পাহাড়ের মাটি। শহরের পাহাড়তলী, বৈদ্যঘোনা, ঘোনারপাড়া, বাদশাঘোনা, খাঁজামঞ্জিল, লাইটহাউস, কলাতলী এবং বাস টার্মিনালসহ ১০ টির বেশি পয়েন্টে চলছে গণহারে পাহাড় কাটা। পাহাড় কেটে সমতল করে বের করা হচ্ছে বসতভিটার জায়গা। নির্মাণ করা হচ্ছে ঘরবাড়িসহ বহুতল ভবন। এতে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে ৫ হাজারেরও বেশি বসতবাড়ি। যার ফলে প্রতিবছর পাহাড় ধসে হতাহতের ঘটনা যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে।

https://sangbad.net.bd/images/2024/July/03Jul24/news/IMG-20240703-WA0034.jpg

শহরের বাদশাঘোনা এলাকায় অভিযান পরিচালনাকালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এনামুল হক জানান, জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকা লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরাতে মাইকিংয়ের পাশাপাশি সচেতন করা হচ্ছে। বেশি ঝুঁকিতে থাকা লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি পাহাড় দখলবাজদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এই প্রচারণা অব্যাহত থাকবে।

উখিয়া বালুখালী এলাকার মোস্তাক আহমেদ ও জয়নাল আবেদীন বলেন, কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের পশ্চিমপাশে বালুখালী ছরা নামক স্থানে পাহাড়ের মাটি সরে গিয়ে বিশাল একটি গাছ চরম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

https://sangbad.net.bd/images/2024/July/03Jul24/news/IMG-20240703-WA0036.jpg

১১ নম্বর ক্যাম্পের রোহিঙ্গা মোহাম্মদ রফিক বলেন, ভারী বর্ষণে ক্যাম্পে ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। অধিকাংশ ঘরে পানি ঢুকছে। আমাদের কষ্টের শেষ নেই। দমন-পীড়নের মুখে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে আসা ১৩ লাখ রোহিঙ্গার অধিকাংশই রয়েছে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ শরণার্থী শিবিরে। সেখানে বিভিন্ন পাহাড় কেটে বসতি স্থাপন করেছে রোহিঙ্গারা।

এদিকে, বর্ষার শুরুতেই পৃথক পাহাড় ধসে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ১২ জন এবং শহরে ২ জনসহ মোট ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তারমধ্যে ২০ জুন উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড় ধসের ঘটনায় দুই বাংলাদেশীসহ ১০ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে দু’জন স্থানীয়। এর মধ্যে একজন থাইংখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র শাহ আলমের ছেলে আব্দুল করিম (১২)। অন্যজন চট্টগ্রামের সাতকানিয়া এলাকার হোসেন আহমেদ। দু’জনের বাড়ি ১৪ নম্বর ক্যাম্পের পাশে। বাকিরা সব রোহিঙ্গা। গেল শুক্রবার (২২ জুন) ভোরে কক্সবাজার শহরের বাদশা ঘোনায় অতিবৃষ্টির কারণে পাহাড় ধসে গর্ভবতী স্ত্রীসহ স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলেন স্থানীয় ওমর ফারুক জামে মসজিদের মুয়াজ্জিম আনোয়ার হোসেন (২৬) ও তার স্ত্রী মাইমুনা আক্তার (২০)। বুধবার (৩ জুলাই) রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড় ধসের ঘটনায় আরও ১ বাংলাদেশীসহ ২ জন নিহত হয়েছে।

https://sangbad.net.bd/images/2024/July/03Jul24/news/IMG-20240703-WA0034.jpg

এদিকে গেল মঙ্গলবার রাত থেকে টানা ভারী বৃষ্টিতে উখিয়া-টেকনাফে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। চিংড়ি ঘের তলিয়ে গেছে। বৃষ্টির পানি আর পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল। ডুবে গেছে ঘরবাড়িসহ মৎস্যঘের, লবণের গোলা। ভেঙে গেছে রাস্তাঘাট। অতিরিক্ত পানির কারণে কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কের কিছু কিছু জায়গায় যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। অনেক গাড়ি গ্রামের ছোট ছোট রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে।

এদিকে, কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ আব্দুল হান্নান জানান, এই বৃষ্টিপাত আরও কয়েকদিন থাকবে। বুধবার (৩ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

https://sangbad.net.bd/images/2024/July/03Jul24/news/IMG-20240703-WA0037.jpg

সচেতন মহল বলছেন, বর্ষা মৌসুমে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা তৈরি হলেই প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। বাকি সময় নীরব থাকে। পাহাড়খেকোদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। অবৈধভাবে পাহাড়ে দখল করে অবস্থানকারীদের পানি-বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেওয়া দরকার। এতে অবশিষ্ট পাহাড় যেমন রক্ষা পাবে তেমননি মৃত্যুর ঝুঁকিও কমবে। রক্ষা পাবে জীবন পরিবেশ প্রকৃতি।

back to top