প্রতিবেশী মেয়ের সঙ্গে প্রেম। বিষয়টি মানতে পারেনি প্রেমিকার বাবা। ফলে উভয় পরিবারে চলছিল দ্বন্দ্ব। এর জেরে গত শনিবার গ্রাম্য পুলিশ (চৌকিদার) দিয়ে রাজুকে (১৭) ধরে নিয়ে যায় প্রেমিকার পরিবারের লোকজন। অপবাদ দেয়া হয় চুরির। এরপর চলে মধ্যযুগীয় কায়দায় বর্বর নির্যাতন। ঘটনাটি রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেরার দূর্গাপুর ইউনিয়নের দূর্গামতি গ্রামে।
পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে কিশোর রাজুকে উদ্ধার করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মিঠাপুকুর থানার ওসি ফেরদৌস ওয়াহিদ। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তাতে দেখা যায়, রাজুকে বাড়ির আঙিনায় একটি আম গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছে। আর মধ্যযুগীয় কায়দায় কিছু লোক তাকে বেধড়ক পেটাচ্ছেন। তার হাত ও ঘাড় রশি দিয়ে বাঁধা। ভিডিওতে দু’জন গ্রাম্য পুলিশকে দেখা গেলেও তারা এতে বাধা দিচ্ছেন না, উল্টো কিশোরটিকে মারধরে সহায়তা করতে দেখা গেছে।
একপর্যায়ে এলাকার বাসিন্দা আবদুল খালেক, করিম মিয়া, রবিউল, সেহেরুল, মোস্তফা, আনোয়ারুল, রউফ, তালেব, কুদ্দুস, মিজানসহ ১৫-২০ জন লাঠি দিয়ে ও হাত দিয়ে কিল ঘুষি লাথি মারতে থাকে। কিশোর রাজু একপর্যায়ে জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লেও তাকে নির্যাতন অব্যাহত রাখেন তারা।
পরে অবস্থা বেগতিক দেখে মিঠাপুকুর থানা ও ৯৯৯-এ ফোন করে জানায় তারা এক চোরকে হাতেনাতে আটক করেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুরুতর আহত রাজুকে উদ্ধার করে।
রাজু ওই এলাকার সাহেব আলীর ছেলে। পড়ালেখা বাদ দিয়ে বাবার সঙ্গে কৃষি কাজ করতো বলে এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে। তারা জানান, কিছুদিন আগেই ওই মেয়ের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্কেও বিষয়টি জানাজানি হয়। বিষয়টি মানতে পারেনি মেয়ের পরিবার। তাই রাজুর ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে অপবাদ দিয়ে তাকে নির্মমভাবে নির্যাতন করেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক নারী জানান, ছেলেটার কোনো দোষ নেই। তিনি শুনেছেন মেয়েটির সঙ্গে কিশোরের ভালোবাসার সর্ম্পক ছিল। এ অপরাধে তাকে ধরে নিয়ে মারধর করেছে। স্থানীয়রা জানান, মেয়েটির বাবা গায়ের জোরে লোকজন ভাড়া করে ছেলেটিকে ধরে খুব মারপিট করেছে। তারা গাছের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে অমানবিক নির্যাতন চালিয়েছে।
ভুক্তভোগী রাজুর বাবা সাহেব আলী জানান, তার ছেলের কোনো দোষ নেই। মেয়ে পক্ষের লোকজন অন্যায়ভাবে তার ছেলেকে খুব মেরেছে। তিনি এ ঘটনার ন্যায্য বিচার দাবি করেছেন। রাজুর ৮০ বছর বয়সী দাদি রেজিয়া বেগম জানান তার নাতীকে হাত পা বেঁধে অমানুষিক নির্যাতন করেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মেয়েটির বাবা হাফিজুর রহমান জানান, তার মেয়েকে বারবার বিরক্ত করে আসছিল ছেলেটি। তাই তাকে ধরে শাসন করেছেন তিনি। অপরাধ করে থাকলে আইনের সহযোগিতা না নিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধরের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি কোনো জবাব দেননি।
মিঠাপুকুর থানার ওসি ফেরদৌস ওয়াহিদ সোমবার (২১ অক্টোবর) জানান, থানায় ও জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করে বলা হয়েছে চুরি করার অপরাধে একজনকে আটকে রাখা হয়েছে। পুলিশ সেখান থেকে কিশোর রাজুকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। প্রথমে তাকে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, এ ব্যাপারে নির্যাতনকারীরা কোনো মামলা করবে না জানালে রাজুকে ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৫১ ধারায় আদালতে চালান দেয়া হয়। তবে কিশোর রাজুকে এভাবে নির্যাতন করা ঠিক হয়নি, এটা বেআইনি। এ ব্যাপারে তার স্বজনরা লিখিত অভিযোগ দিলে আইনি ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান এই ওসি।
মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪
প্রতিবেশী মেয়ের সঙ্গে প্রেম। বিষয়টি মানতে পারেনি প্রেমিকার বাবা। ফলে উভয় পরিবারে চলছিল দ্বন্দ্ব। এর জেরে গত শনিবার গ্রাম্য পুলিশ (চৌকিদার) দিয়ে রাজুকে (১৭) ধরে নিয়ে যায় প্রেমিকার পরিবারের লোকজন। অপবাদ দেয়া হয় চুরির। এরপর চলে মধ্যযুগীয় কায়দায় বর্বর নির্যাতন। ঘটনাটি রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেরার দূর্গাপুর ইউনিয়নের দূর্গামতি গ্রামে।
পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে কিশোর রাজুকে উদ্ধার করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মিঠাপুকুর থানার ওসি ফেরদৌস ওয়াহিদ। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তাতে দেখা যায়, রাজুকে বাড়ির আঙিনায় একটি আম গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছে। আর মধ্যযুগীয় কায়দায় কিছু লোক তাকে বেধড়ক পেটাচ্ছেন। তার হাত ও ঘাড় রশি দিয়ে বাঁধা। ভিডিওতে দু’জন গ্রাম্য পুলিশকে দেখা গেলেও তারা এতে বাধা দিচ্ছেন না, উল্টো কিশোরটিকে মারধরে সহায়তা করতে দেখা গেছে।
একপর্যায়ে এলাকার বাসিন্দা আবদুল খালেক, করিম মিয়া, রবিউল, সেহেরুল, মোস্তফা, আনোয়ারুল, রউফ, তালেব, কুদ্দুস, মিজানসহ ১৫-২০ জন লাঠি দিয়ে ও হাত দিয়ে কিল ঘুষি লাথি মারতে থাকে। কিশোর রাজু একপর্যায়ে জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লেও তাকে নির্যাতন অব্যাহত রাখেন তারা।
পরে অবস্থা বেগতিক দেখে মিঠাপুকুর থানা ও ৯৯৯-এ ফোন করে জানায় তারা এক চোরকে হাতেনাতে আটক করেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুরুতর আহত রাজুকে উদ্ধার করে।
রাজু ওই এলাকার সাহেব আলীর ছেলে। পড়ালেখা বাদ দিয়ে বাবার সঙ্গে কৃষি কাজ করতো বলে এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে। তারা জানান, কিছুদিন আগেই ওই মেয়ের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্কেও বিষয়টি জানাজানি হয়। বিষয়টি মানতে পারেনি মেয়ের পরিবার। তাই রাজুর ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে অপবাদ দিয়ে তাকে নির্মমভাবে নির্যাতন করেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক নারী জানান, ছেলেটার কোনো দোষ নেই। তিনি শুনেছেন মেয়েটির সঙ্গে কিশোরের ভালোবাসার সর্ম্পক ছিল। এ অপরাধে তাকে ধরে নিয়ে মারধর করেছে। স্থানীয়রা জানান, মেয়েটির বাবা গায়ের জোরে লোকজন ভাড়া করে ছেলেটিকে ধরে খুব মারপিট করেছে। তারা গাছের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে অমানবিক নির্যাতন চালিয়েছে।
ভুক্তভোগী রাজুর বাবা সাহেব আলী জানান, তার ছেলের কোনো দোষ নেই। মেয়ে পক্ষের লোকজন অন্যায়ভাবে তার ছেলেকে খুব মেরেছে। তিনি এ ঘটনার ন্যায্য বিচার দাবি করেছেন। রাজুর ৮০ বছর বয়সী দাদি রেজিয়া বেগম জানান তার নাতীকে হাত পা বেঁধে অমানুষিক নির্যাতন করেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মেয়েটির বাবা হাফিজুর রহমান জানান, তার মেয়েকে বারবার বিরক্ত করে আসছিল ছেলেটি। তাই তাকে ধরে শাসন করেছেন তিনি। অপরাধ করে থাকলে আইনের সহযোগিতা না নিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধরের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি কোনো জবাব দেননি।
মিঠাপুকুর থানার ওসি ফেরদৌস ওয়াহিদ সোমবার (২১ অক্টোবর) জানান, থানায় ও জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করে বলা হয়েছে চুরি করার অপরাধে একজনকে আটকে রাখা হয়েছে। পুলিশ সেখান থেকে কিশোর রাজুকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। প্রথমে তাকে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, এ ব্যাপারে নির্যাতনকারীরা কোনো মামলা করবে না জানালে রাজুকে ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৫১ ধারায় আদালতে চালান দেয়া হয়। তবে কিশোর রাজুকে এভাবে নির্যাতন করা ঠিক হয়নি, এটা বেআইনি। এ ব্যাপারে তার স্বজনরা লিখিত অভিযোগ দিলে আইনি ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান এই ওসি।