গাজীপুর মহানগরের অধিকাংশ সড়ক ভারী যানবাহনের চাপ সামলাতে না পেরে নাজেহাল অবস্থায় পৌঁছে গেছে। জনজীবনে সৃষ্টি হয়েছে সীমাহীন ভোগান্তি। কত লোডের গাড়ি চলতে পারবে সে ব্যাপারে সুষ্পষ্ট কোনো নির্দেশনা না থাকা, পানি নিষ্কাষণের অপ্রতুল ব্যবস্থা, মূল রাস্তার পাশে সফট শোল্ডার না থাকা, অত্যধিক ভারবাহী যানের বিপুল যাতায়াত, কোথাও কোথাও স্থানীয় কন্সট্রাকশন কর্মকান্ড রাস্তার ওপরই সম্পন্ন করার প্রবণতাসহ জনগণের কিছু কিছু অসচেতনতামূলক পদক্ষেপে সারাদেশের মতো গাজীপুর মহানগরের রাস্তাগুলো নির্মাণের ৩ থেকে ৪ বছরের মধ্যেই বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে। হচ্ছে সরকারী অর্থের বিপুল অপচয়। সরেজমিনে এমন মতামতও কেউ কেউ দিয়েছেন যে, ইচ্ছা করেই শক্তপোক্ত রাস্তা নির্মিত হয় না প্রভাবশালী ঠিকাদার এবং দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের কায়েমী স্বার্থ চালু রাখার মনোবাঞ্ছা পূরণে।
শিল্প এলাকা গাজীপুর মহানগরের অভ্যন্তরীণ সড়কে ভারী যানবাহন চলাচল করায় সড়কগুলো বিভিন্ন জায়গায় ডেবে গিয়ে ছোটখাট যনবাহনের জন্য পরিণত হচ্ছে রীতিমত মরণফাদে। খানাখন্দে ভরা সড়কে বালু ভর্তি ভারী ড্রাম ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, ট্যাংকলরীসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচলে বেহাল সড়কে মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। ভাঙাচোরা রাস্তায় এখন ছোট ছোট যানবাহন চলাচলের অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। এ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ। মহানগরের ১৭ নং ওয়ার্ড যোগীতলা এলাকার বাসিন্দা আবুল ভান্ডারী সংবাদকে জানান যোগীতলা মোড়ে দুই জায়গায় আমার দোকানের সামনে রাস্তা ডেবে গিয়ে বিশাল গর্ত তৈরি হয়ে আছে দীর্ঘদিন। এখানে কাউন্সিলর না থাকায় আমরা কার কাছে প্রতিকার চাইব? কিছুদিন সিটি কর্পোরেশনে ঘুরেও কোন কুল কিনারা না পেয়ে আমি নিজে আমার পকেটের টাকা দিয়ে ইট কিনে এনে লেবার দিয়ে রাস্তা ঠিক করে আপাতত যানচলাচল উপযোগী করে দিয়েছি।
মহানগরের ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান সংবাদকে বলেন. আসলে আমরা সেই ছোটকাল থেকে অর্থাৎ স্বাধীনতার পর থেকে এইটুকু রাস্তাই দেখে এসেছি এবং বর্তমানে সেইটুকুও নেই। সরু হয়ে গেছে। ছোট হয়ে গেছে। এই সরু রাস্তার উপরে দুই পাশ দিয়ে ভ্যান রেখে হকাররা মিনি বাজার বসিয়ে তাদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। পুলিশ কি এসব দেখছে না? দুই পাশে এই দোকানপাটের কারণে প্রতিনিয়ত এই রেললাইন থেকে ডিসি অফিস পর্যন্ত অসহনীয় যানজট লেগে থাকে। একটা জেলা শহরের রাস্তার অবস্থার চিত্র এমন থাকতে পারে না। স্বাধীনতার পর থেকে যারাই দেশ শাসন করেছে- সদ্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ বা বিএনপি- কেউই এগুলোর সমাধান করেনি। এখানে আমাদের এমপি ছিলেন, মন্ত্রী ছিলেন। আমাদের উন্নয়ন কই?
নগরের বিভিন্ন ওয়ার্ডের সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তাগুলোতে দিন-রাত ১০ চাকা ও ৬ চাকার শত শত ভারী যানবাহন চলাচলের ফলে কার্পেটিং সরে গিয়ে গর্ত হয়ে গেছে। স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ মহল্লার ভেতরের হালকা রাস্তাগুলো দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল করায় দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে সিটির অধিকাংশ আঞ্চলিক সড়ক।
সরেজমিনে দেখা যায়, নগরের গুরুত্বপূর্ণ রথখোলা-পূবাইল সড়ক, হাড়িনাল সড়ক,ধীরাশ্রম সড়ক, রেল লাইনের পাশ থেকে কলাবাজার-মার্কাস সড়ক, যোগীতলা, শিমুলতলী-সালনা সড়কসহ নগরের বিভিন্ন সড়ক খানাখন্দে ভরা। বেহাল এই সড়কগুলোতে মানুষ ও যানবাহন চলাচল যাতে বিঘœ না ঘটে সেই জন্য সিটি কর্পোরেশন কিছু জায়গায় ইট বিছিয়ে সাময়িক মেরামত করছে।
এতে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। ওইসব এলাকার সাধারণ মানুষ ভোগান্তি লাগবে সিটি প্রশাসনকে নজরদারী বাড়াতে তাগাদা দিচ্ছে।
বুধবার সরে যমিনে শহরের ধীরাশ্রম সড়কে কথা হয় কযেক জন অটোরিক্সা চালকের সাথে। তারা বলেন, রাস্তা গর্ত আর খানাখন্দে ভরা, গাড়ী চালাতে সমস্যা হয়। আবার দ্রুত চালাতে গেলে উল্টে যায়।
সালনা-শিমুলতলী সড়কে কথা হয় গাড়ী চালক চালক এনামুল হকের সাথে, তিনি সংবাদকে বলেন, এই সড়কটি চলাচলের একেবারেই অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। রেজিষ্ট্রি অফিসের কাছে রাস্তা ডেবে হিয়ে যে বিশাল গর্ত সৃষ্টি হয়েছে এখানে প্রায়ই ছোট ছোট গাড়ী উল্টে যায়। অথচ এই সড়কের কোল ঘেষে রেজিষ্ট্র অফিসে আছে, এখান থেকে সর্বোচ্চ রেভিনিও পায় সরকার। এর পরেও এইদিকে কারো নজর নেই।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো: আকবর হোসেন সংবাদকে জানান, এবার বৃষ্টি বেশি হয়েছে আর ডিজাইন অনুযায়ী নির্মিত রাস্তায় ওভারলোড গাড়ী বেশি চলাচলের কারনে রাস্তাাগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আবার কিছু রাস্তায় ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকার কারণে পানি জমে রাস্তা নষ্ট হচ্ছে। ভাঙ্গা রাস্তায় ইটা বিছিয়ে গাড়ী চলাচল স্বাভাবিক রাখছি।
সিটি কর্পোরেশনের রাস্তাগুলোর লোড ম্যানেজমেন্টের কোন স্থীরিকৃত মান রয়েছে কী না এ বিষয়ে প্রধান প্রকৌশলী জানান, এমন কিছু এখনও করা হয়নি। অতিরিক্ত লোডের যান চলাচলে রাস্তার মোড়ে মোড়ে নোটিশ লাগানো কিংবা বাধাদায়ী দ- স্থাপন করা আছে কী না জানতে চাইলেও আকবর হোসেন একই উত্তর দেন। তবে তিনি আশ^স্ত করেন ভবিষ্যতে এ ব্যবস্থাগুলো বহালের পরিকল্পনা সিটি কর্পোরেশনের রয়েছে।
বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪
গাজীপুর মহানগরের অধিকাংশ সড়ক ভারী যানবাহনের চাপ সামলাতে না পেরে নাজেহাল অবস্থায় পৌঁছে গেছে। জনজীবনে সৃষ্টি হয়েছে সীমাহীন ভোগান্তি। কত লোডের গাড়ি চলতে পারবে সে ব্যাপারে সুষ্পষ্ট কোনো নির্দেশনা না থাকা, পানি নিষ্কাষণের অপ্রতুল ব্যবস্থা, মূল রাস্তার পাশে সফট শোল্ডার না থাকা, অত্যধিক ভারবাহী যানের বিপুল যাতায়াত, কোথাও কোথাও স্থানীয় কন্সট্রাকশন কর্মকান্ড রাস্তার ওপরই সম্পন্ন করার প্রবণতাসহ জনগণের কিছু কিছু অসচেতনতামূলক পদক্ষেপে সারাদেশের মতো গাজীপুর মহানগরের রাস্তাগুলো নির্মাণের ৩ থেকে ৪ বছরের মধ্যেই বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে। হচ্ছে সরকারী অর্থের বিপুল অপচয়। সরেজমিনে এমন মতামতও কেউ কেউ দিয়েছেন যে, ইচ্ছা করেই শক্তপোক্ত রাস্তা নির্মিত হয় না প্রভাবশালী ঠিকাদার এবং দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের কায়েমী স্বার্থ চালু রাখার মনোবাঞ্ছা পূরণে।
শিল্প এলাকা গাজীপুর মহানগরের অভ্যন্তরীণ সড়কে ভারী যানবাহন চলাচল করায় সড়কগুলো বিভিন্ন জায়গায় ডেবে গিয়ে ছোটখাট যনবাহনের জন্য পরিণত হচ্ছে রীতিমত মরণফাদে। খানাখন্দে ভরা সড়কে বালু ভর্তি ভারী ড্রাম ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, ট্যাংকলরীসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচলে বেহাল সড়কে মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। ভাঙাচোরা রাস্তায় এখন ছোট ছোট যানবাহন চলাচলের অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। এ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ। মহানগরের ১৭ নং ওয়ার্ড যোগীতলা এলাকার বাসিন্দা আবুল ভান্ডারী সংবাদকে জানান যোগীতলা মোড়ে দুই জায়গায় আমার দোকানের সামনে রাস্তা ডেবে গিয়ে বিশাল গর্ত তৈরি হয়ে আছে দীর্ঘদিন। এখানে কাউন্সিলর না থাকায় আমরা কার কাছে প্রতিকার চাইব? কিছুদিন সিটি কর্পোরেশনে ঘুরেও কোন কুল কিনারা না পেয়ে আমি নিজে আমার পকেটের টাকা দিয়ে ইট কিনে এনে লেবার দিয়ে রাস্তা ঠিক করে আপাতত যানচলাচল উপযোগী করে দিয়েছি।
মহানগরের ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান সংবাদকে বলেন. আসলে আমরা সেই ছোটকাল থেকে অর্থাৎ স্বাধীনতার পর থেকে এইটুকু রাস্তাই দেখে এসেছি এবং বর্তমানে সেইটুকুও নেই। সরু হয়ে গেছে। ছোট হয়ে গেছে। এই সরু রাস্তার উপরে দুই পাশ দিয়ে ভ্যান রেখে হকাররা মিনি বাজার বসিয়ে তাদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। পুলিশ কি এসব দেখছে না? দুই পাশে এই দোকানপাটের কারণে প্রতিনিয়ত এই রেললাইন থেকে ডিসি অফিস পর্যন্ত অসহনীয় যানজট লেগে থাকে। একটা জেলা শহরের রাস্তার অবস্থার চিত্র এমন থাকতে পারে না। স্বাধীনতার পর থেকে যারাই দেশ শাসন করেছে- সদ্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ বা বিএনপি- কেউই এগুলোর সমাধান করেনি। এখানে আমাদের এমপি ছিলেন, মন্ত্রী ছিলেন। আমাদের উন্নয়ন কই?
নগরের বিভিন্ন ওয়ার্ডের সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তাগুলোতে দিন-রাত ১০ চাকা ও ৬ চাকার শত শত ভারী যানবাহন চলাচলের ফলে কার্পেটিং সরে গিয়ে গর্ত হয়ে গেছে। স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ মহল্লার ভেতরের হালকা রাস্তাগুলো দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল করায় দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে সিটির অধিকাংশ আঞ্চলিক সড়ক।
সরেজমিনে দেখা যায়, নগরের গুরুত্বপূর্ণ রথখোলা-পূবাইল সড়ক, হাড়িনাল সড়ক,ধীরাশ্রম সড়ক, রেল লাইনের পাশ থেকে কলাবাজার-মার্কাস সড়ক, যোগীতলা, শিমুলতলী-সালনা সড়কসহ নগরের বিভিন্ন সড়ক খানাখন্দে ভরা। বেহাল এই সড়কগুলোতে মানুষ ও যানবাহন চলাচল যাতে বিঘœ না ঘটে সেই জন্য সিটি কর্পোরেশন কিছু জায়গায় ইট বিছিয়ে সাময়িক মেরামত করছে।
এতে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। ওইসব এলাকার সাধারণ মানুষ ভোগান্তি লাগবে সিটি প্রশাসনকে নজরদারী বাড়াতে তাগাদা দিচ্ছে।
বুধবার সরে যমিনে শহরের ধীরাশ্রম সড়কে কথা হয় কযেক জন অটোরিক্সা চালকের সাথে। তারা বলেন, রাস্তা গর্ত আর খানাখন্দে ভরা, গাড়ী চালাতে সমস্যা হয়। আবার দ্রুত চালাতে গেলে উল্টে যায়।
সালনা-শিমুলতলী সড়কে কথা হয় গাড়ী চালক চালক এনামুল হকের সাথে, তিনি সংবাদকে বলেন, এই সড়কটি চলাচলের একেবারেই অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। রেজিষ্ট্রি অফিসের কাছে রাস্তা ডেবে হিয়ে যে বিশাল গর্ত সৃষ্টি হয়েছে এখানে প্রায়ই ছোট ছোট গাড়ী উল্টে যায়। অথচ এই সড়কের কোল ঘেষে রেজিষ্ট্র অফিসে আছে, এখান থেকে সর্বোচ্চ রেভিনিও পায় সরকার। এর পরেও এইদিকে কারো নজর নেই।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো: আকবর হোসেন সংবাদকে জানান, এবার বৃষ্টি বেশি হয়েছে আর ডিজাইন অনুযায়ী নির্মিত রাস্তায় ওভারলোড গাড়ী বেশি চলাচলের কারনে রাস্তাাগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আবার কিছু রাস্তায় ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকার কারণে পানি জমে রাস্তা নষ্ট হচ্ছে। ভাঙ্গা রাস্তায় ইটা বিছিয়ে গাড়ী চলাচল স্বাভাবিক রাখছি।
সিটি কর্পোরেশনের রাস্তাগুলোর লোড ম্যানেজমেন্টের কোন স্থীরিকৃত মান রয়েছে কী না এ বিষয়ে প্রধান প্রকৌশলী জানান, এমন কিছু এখনও করা হয়নি। অতিরিক্ত লোডের যান চলাচলে রাস্তার মোড়ে মোড়ে নোটিশ লাগানো কিংবা বাধাদায়ী দ- স্থাপন করা আছে কী না জানতে চাইলেও আকবর হোসেন একই উত্তর দেন। তবে তিনি আশ^স্ত করেন ভবিষ্যতে এ ব্যবস্থাগুলো বহালের পরিকল্পনা সিটি কর্পোরেশনের রয়েছে।