নদীবেষ্টিত জেলা চাঁদপুরে ঘন কুয়াশা ও হিমেল বাতাসে জেঁকে বসেছে শীত। গত দু’দিন ধরে সূর্যের দেখা মিলছে না। খেটে-খাওয়া ও ছিন্নমূল মানুষ পড়েছে চরম বিপাকে। হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে শীতজনিত রোগীর ভিড়। শীতবস্ত্রের অভাবে কষ্টে পড়েছে মেঘনা ধনাগোদা ও ডাকাতিয়া নদী পাড়ের হতদরিদ্র, ছিন্নমূল এবং স্বল্প আয়ের মৎস কৃষি ও শ্রমজীবী মানুষ। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া লোকজন বাইরে বের হচ্ছেন না। শীতের দাপটে শহরের অলিগলি পাড়া মহল্লার এবং গ্রামাঞ্চলের অনেকেই আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে।
দিনে রাতে ঘন কুয়াশা এবং হিমেল হাওয়ায় জনজীবন কাহিল হয়ে পড়েছে। কুয়াশা ও পশ্চিমা বাতাসের কারণে বোরো বীজতলা ও আলুর আবাদ নিয়ে কৃষকরা চিন্তিত হয়ে পড়েছে। সেই সাথে কনকনে ঠাণ্ডার কারণে দরিদ্র শীতার্ত মানুষের অবস্থা কাহিল হয়ে পড়েছে ।
চাঁদপুর আবাহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, ডিসেম্বরে চাঁদপুরে শীতের দাপট খুব একটা দেখা না গেলেও গত তিন দিনে আবহাওয়ার ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। তাপমাত্রা এখন ১৫ থেকে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে উঠানামা করছে। গত দুইদিন থেকে সূর্যের মুখ দেখা যাচ্ছে না। কোথাও দেখা গেলে তাও ছিল খুব অল্প সময়ের জন্য। শুক্রবার সকালে (৩ জানুয়ারি) চাঁদপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কাছাকাছি চলে আসায় তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। বিরূপ আবহাওয়ায় ফসলের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
শাহমাহমুদপুর আলুমোড়া গ্রামের কৃষক শরিফ হোসেন জানান, কুয়াশায় আলুর কিছুটা উপকার হলেও পশ্চিমা বাতাসে আলুর ক্ষতি হচ্ছে। এ অবস্থা আরও কয়েকদিন চললে আলু লেট ব্লাইটসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া, শীত ও কুয়াশার কারণে বোরোর বীজতলা ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
জানা গেছে, চাঁদপুরে দুই থেকে আড়াই লাখ হতদরিদ্র মানুষ রয়েছে। এসব মানুষ প্রতিবছর শীত বস্ত্রের অভাবে কষ্টে থাকেন। সরকারি বরাদ্দ এসেছে প্রয়োজনের তুলনায় কম। এসব শীতার্ত মানুষের পাশে এখন পর্যন্ত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সেভাবে এগিয়ে আসেনি। সচেতন মহলের দাবি শীতার্ত মানুষের পাশে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলো এখনই এগিয়ে না এলে চরম দুর্ভোগে পড়বে শীতার্ত মানুষগুলো।
চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঘুরে দেখা যায়, শীতজনিত কারণে আগের চেয়ে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি শিশু ও বৃদ্ধ। বৃদ্ধরা শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে এবং শিশুরা নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে।
চাঁদপুর আড়াইশ শয্যা সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ আসিবুল ইসলাম আসিব জানান,শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় রোগীর চাপ বেড়েছে। বয়স্ক এবং শিশু রোগী বেশি আসতেছে। আমরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দিচ্ছি।
শীতের কারণে নিম্ন আয়ের খেটে-খাওয়া মানুষগুলোর কাজের অভাব দেখা দিয়েছে। খেটে-খাওয়া মানুষেরা ঠিকমত নিজেদের শ্রম বিক্রি করতে না পেরে বেশ বেকায়দায় রয়েছেন। ঘন কুয়াশা ও কনকনে ঠাণ্ডার কারণে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগম কমে গেছে। তবে গতকাল বৃহস্পতিবার চাঁদপুর জেলা শহরের পুরান বাজারের পাইকারি নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার এলাকা বেশ সরগরম দেখা গেছে।
রাস্তাঘাটে যানবাহন চলাচল করছে নিয়ন্ত্রিত গতিতে। দূরপাল্লার যানবাহনগুলো দিনের বেলা হেড লাইট জ্বালিয়ে চলতে হচ্ছে দুর্ঘটনার আশংকা নিয়ে। বিআইডব্লিউটিসি চাঁদপুর হরিনা ফেরিঘাট ব্যবস্থাপক ফয়সাল চৌধুরী জানান,মেঘনা নদীতে ঘন কুয়াশার আবরণ থাকায় ফ্রি চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। রাতের বেলায় এমনকি দিনের সকালে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখতে হচ্ছে।
চাঁদপুর লঞ্চ ঘাট সূত্রে জানা যায়, নদীতে ঘণকুয়াশার কারণে রাতের এবং সকালের লঞ্চগুলোর ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। সাবধানতার সহিত নির্ধারিত লঞ্চগুলো ছেড়ে গেলেও গন্তব্যে বিলম্বে পৌঁছাতে হচ্ছে।
শুক্রবার, ০৩ জানুয়ারী ২০২৫
নদীবেষ্টিত জেলা চাঁদপুরে ঘন কুয়াশা ও হিমেল বাতাসে জেঁকে বসেছে শীত। গত দু’দিন ধরে সূর্যের দেখা মিলছে না। খেটে-খাওয়া ও ছিন্নমূল মানুষ পড়েছে চরম বিপাকে। হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে শীতজনিত রোগীর ভিড়। শীতবস্ত্রের অভাবে কষ্টে পড়েছে মেঘনা ধনাগোদা ও ডাকাতিয়া নদী পাড়ের হতদরিদ্র, ছিন্নমূল এবং স্বল্প আয়ের মৎস কৃষি ও শ্রমজীবী মানুষ। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া লোকজন বাইরে বের হচ্ছেন না। শীতের দাপটে শহরের অলিগলি পাড়া মহল্লার এবং গ্রামাঞ্চলের অনেকেই আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে।
দিনে রাতে ঘন কুয়াশা এবং হিমেল হাওয়ায় জনজীবন কাহিল হয়ে পড়েছে। কুয়াশা ও পশ্চিমা বাতাসের কারণে বোরো বীজতলা ও আলুর আবাদ নিয়ে কৃষকরা চিন্তিত হয়ে পড়েছে। সেই সাথে কনকনে ঠাণ্ডার কারণে দরিদ্র শীতার্ত মানুষের অবস্থা কাহিল হয়ে পড়েছে ।
চাঁদপুর আবাহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, ডিসেম্বরে চাঁদপুরে শীতের দাপট খুব একটা দেখা না গেলেও গত তিন দিনে আবহাওয়ার ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। তাপমাত্রা এখন ১৫ থেকে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে উঠানামা করছে। গত দুইদিন থেকে সূর্যের মুখ দেখা যাচ্ছে না। কোথাও দেখা গেলে তাও ছিল খুব অল্প সময়ের জন্য। শুক্রবার সকালে (৩ জানুয়ারি) চাঁদপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কাছাকাছি চলে আসায় তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। বিরূপ আবহাওয়ায় ফসলের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
শাহমাহমুদপুর আলুমোড়া গ্রামের কৃষক শরিফ হোসেন জানান, কুয়াশায় আলুর কিছুটা উপকার হলেও পশ্চিমা বাতাসে আলুর ক্ষতি হচ্ছে। এ অবস্থা আরও কয়েকদিন চললে আলু লেট ব্লাইটসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া, শীত ও কুয়াশার কারণে বোরোর বীজতলা ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
জানা গেছে, চাঁদপুরে দুই থেকে আড়াই লাখ হতদরিদ্র মানুষ রয়েছে। এসব মানুষ প্রতিবছর শীত বস্ত্রের অভাবে কষ্টে থাকেন। সরকারি বরাদ্দ এসেছে প্রয়োজনের তুলনায় কম। এসব শীতার্ত মানুষের পাশে এখন পর্যন্ত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সেভাবে এগিয়ে আসেনি। সচেতন মহলের দাবি শীতার্ত মানুষের পাশে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলো এখনই এগিয়ে না এলে চরম দুর্ভোগে পড়বে শীতার্ত মানুষগুলো।
চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঘুরে দেখা যায়, শীতজনিত কারণে আগের চেয়ে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি শিশু ও বৃদ্ধ। বৃদ্ধরা শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে এবং শিশুরা নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে।
চাঁদপুর আড়াইশ শয্যা সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ আসিবুল ইসলাম আসিব জানান,শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় রোগীর চাপ বেড়েছে। বয়স্ক এবং শিশু রোগী বেশি আসতেছে। আমরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দিচ্ছি।
শীতের কারণে নিম্ন আয়ের খেটে-খাওয়া মানুষগুলোর কাজের অভাব দেখা দিয়েছে। খেটে-খাওয়া মানুষেরা ঠিকমত নিজেদের শ্রম বিক্রি করতে না পেরে বেশ বেকায়দায় রয়েছেন। ঘন কুয়াশা ও কনকনে ঠাণ্ডার কারণে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগম কমে গেছে। তবে গতকাল বৃহস্পতিবার চাঁদপুর জেলা শহরের পুরান বাজারের পাইকারি নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার এলাকা বেশ সরগরম দেখা গেছে।
রাস্তাঘাটে যানবাহন চলাচল করছে নিয়ন্ত্রিত গতিতে। দূরপাল্লার যানবাহনগুলো দিনের বেলা হেড লাইট জ্বালিয়ে চলতে হচ্ছে দুর্ঘটনার আশংকা নিয়ে। বিআইডব্লিউটিসি চাঁদপুর হরিনা ফেরিঘাট ব্যবস্থাপক ফয়সাল চৌধুরী জানান,মেঘনা নদীতে ঘন কুয়াশার আবরণ থাকায় ফ্রি চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। রাতের বেলায় এমনকি দিনের সকালে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখতে হচ্ছে।
চাঁদপুর লঞ্চ ঘাট সূত্রে জানা যায়, নদীতে ঘণকুয়াশার কারণে রাতের এবং সকালের লঞ্চগুলোর ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। সাবধানতার সহিত নির্ধারিত লঞ্চগুলো ছেড়ে গেলেও গন্তব্যে বিলম্বে পৌঁছাতে হচ্ছে।