রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতির পদ নিয়ে দ্বন্দ্বে বিএনপির দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে সাতজন আহত হয়েছেন।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার আড়পাড়া উচ্চবিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে বলে বাঘা থানার ওসি আ ফ ম আশাদুজ্জামান জানান।
আহতদের বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। পরে দুজনকে গুরুতর অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বাঘার বাউসা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি অনোয়ার হোসেন পলাশ এবং বর্তমান সভাপতি রেজাউল করিমের সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। এদের মধ্যে রোজাউল করিম রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাইদ (চাঁদ) এবং অনোয়ার হোসেন পলাশ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেনের উজ্জ্বলের অনুসারী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সম্প্রতি বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটির সভাপতির জন্য আবেদনপত্র জমা দেন আনোয়ার হোসেন পলাশ। এ ছাড়া ওই পদের জন্য আরেকজন বিএনপি সমর্থক পল্লি চিকিৎসক মহসিন আলীও আবেদন করেন।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দলবল নিয়ে একই পদে আবেদন জমা দিতে আসেন রেজাউল করিমের অনুসারি বিএনপি নেতাকর্মীরা। তাদের প্রার্থী কলেজশিক্ষক ওয়ালিউর রহমান বিকুল।
বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রধান শিক্ষককে না পেয়ে তারা চেয়ার ও কম্পিউটার ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে আনোয়ার হোসেন পলাশের অনুসারীরা বিএনপির নেতাকর্মীরা এসে বাধা দিলে উভয়পক্ষ উত্তেজিত হয়ে ওঠে।
এক পর্যায়ে দুই পক্ষ হাতুড়ি-রড ও চাইনিজ কুড়াল নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এত উভয় পক্ষের লোকজন আহত হন।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন- আনোয়ার হোসেন পলাশের অনুসারী উপজেলার আড়পাড়া গ্রামের মানিক হোসেন (৪০), একই গ্রামের রুহান আলী (২৩) ও সুজন হোসেন ওরফে বাবু (৩৩)। রেজাউল করিমের অনুসারী হেদাতিপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম (৩৮), তেঁতুলিয়া গ্রামের জাফর আলী (৪০), বাউসা মাঝপাড়া গ্রামের রানা ইসলাম (১৮) ও হেদাতিপাড়া গ্রামের ইনামুল হকও (৩৫)।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মাকসুদুল হক জানান, সাতজনকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়। এদের মধ্যে গুরুতর আহত মানিক হোসেন ও রফিকুল ইসলামকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তারা মাথায় আঘাত পেয়েছেন।
বাউসা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন বলেন, তারা ওয়ালিউর রহমান বকুলের পক্ষে সভাপতির পদে আবেদনপত্র জমা দিতে যান। মোটরসাইকেল নিয়ে কিছু লোক বিদ্যালয় মাঠে নামতেই আনোয়ার হোসেন পলাশের পক্ষের লোকজন তাদের ওপর হামলা করে। তাদের সঙ্গে থাকা আরও লোকজন একত্র হয়ে পাল্টা আক্রমণ করলে সংঘর্ষ বাঁধে।
তবে বিদ্যালয়ের ভাঙচুরের অভিযোগ অস্বীকার করে নাসির উদ্দিন বলেন, “পরে আমাদের লোকজন নিয়ে চলে আসি।”
বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন পলাশ বলেন, একই দল করলেও আবু সাইদ চাঁদের অনুসারীরা রেজাউল করিম ও নাসির উদ্দিন প্রভাব বিস্তার করে এলাকার একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিজেদের লোককে সভাপতি করার জন্য আবেদনপত্র জমা দিয়েছে। একইভাবে তার বাবার প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়েও প্রভাব বিস্তার করে ওয়ালিউর রহমানকে সভাপতি করার জন্য তার পক্ষে আবেদন জমা দিতে আসে। তাদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের কারণে সংঘর্ষ বেঁধেছে।
প্রধান শিক্ষক আজিবর রহমান বলেন, তিনি উপজেলা সদরে মিটিংয়ে ছিলেন। এর কারণে বিদ্যালয়ে ছিলেন না। পরে শিক্ষকের মাধ্যমে চেয়ার ও কমিউটার ভাঙচুরের বিষয়টি জেনেছেন।
বাঘা থানার ওসি আ ফ ম আশাদুজ্জামান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেছে। এ নিয়ে রাত ৯টা পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব আশরাফ আলী মলিন বলেন, “বড় দল হিসেবে গ্রুপিং থাকবেই। তবে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা কারো জন্যই কাম্য নয়। বিষয়টি দলীয় লোকজনের সঙ্গে আলাপ করে নিরসনের চেষ্টা করছি।”
সোমবার, ০৬ জানুয়ারী ২০২৫
রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতির পদ নিয়ে দ্বন্দ্বে বিএনপির দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে সাতজন আহত হয়েছেন।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার আড়পাড়া উচ্চবিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে বলে বাঘা থানার ওসি আ ফ ম আশাদুজ্জামান জানান।
আহতদের বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। পরে দুজনকে গুরুতর অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বাঘার বাউসা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি অনোয়ার হোসেন পলাশ এবং বর্তমান সভাপতি রেজাউল করিমের সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। এদের মধ্যে রোজাউল করিম রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাইদ (চাঁদ) এবং অনোয়ার হোসেন পলাশ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেনের উজ্জ্বলের অনুসারী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সম্প্রতি বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটির সভাপতির জন্য আবেদনপত্র জমা দেন আনোয়ার হোসেন পলাশ। এ ছাড়া ওই পদের জন্য আরেকজন বিএনপি সমর্থক পল্লি চিকিৎসক মহসিন আলীও আবেদন করেন।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দলবল নিয়ে একই পদে আবেদন জমা দিতে আসেন রেজাউল করিমের অনুসারি বিএনপি নেতাকর্মীরা। তাদের প্রার্থী কলেজশিক্ষক ওয়ালিউর রহমান বিকুল।
বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রধান শিক্ষককে না পেয়ে তারা চেয়ার ও কম্পিউটার ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে আনোয়ার হোসেন পলাশের অনুসারীরা বিএনপির নেতাকর্মীরা এসে বাধা দিলে উভয়পক্ষ উত্তেজিত হয়ে ওঠে।
এক পর্যায়ে দুই পক্ষ হাতুড়ি-রড ও চাইনিজ কুড়াল নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এত উভয় পক্ষের লোকজন আহত হন।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন- আনোয়ার হোসেন পলাশের অনুসারী উপজেলার আড়পাড়া গ্রামের মানিক হোসেন (৪০), একই গ্রামের রুহান আলী (২৩) ও সুজন হোসেন ওরফে বাবু (৩৩)। রেজাউল করিমের অনুসারী হেদাতিপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম (৩৮), তেঁতুলিয়া গ্রামের জাফর আলী (৪০), বাউসা মাঝপাড়া গ্রামের রানা ইসলাম (১৮) ও হেদাতিপাড়া গ্রামের ইনামুল হকও (৩৫)।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মাকসুদুল হক জানান, সাতজনকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়। এদের মধ্যে গুরুতর আহত মানিক হোসেন ও রফিকুল ইসলামকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তারা মাথায় আঘাত পেয়েছেন।
বাউসা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন বলেন, তারা ওয়ালিউর রহমান বকুলের পক্ষে সভাপতির পদে আবেদনপত্র জমা দিতে যান। মোটরসাইকেল নিয়ে কিছু লোক বিদ্যালয় মাঠে নামতেই আনোয়ার হোসেন পলাশের পক্ষের লোকজন তাদের ওপর হামলা করে। তাদের সঙ্গে থাকা আরও লোকজন একত্র হয়ে পাল্টা আক্রমণ করলে সংঘর্ষ বাঁধে।
তবে বিদ্যালয়ের ভাঙচুরের অভিযোগ অস্বীকার করে নাসির উদ্দিন বলেন, “পরে আমাদের লোকজন নিয়ে চলে আসি।”
বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন পলাশ বলেন, একই দল করলেও আবু সাইদ চাঁদের অনুসারীরা রেজাউল করিম ও নাসির উদ্দিন প্রভাব বিস্তার করে এলাকার একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিজেদের লোককে সভাপতি করার জন্য আবেদনপত্র জমা দিয়েছে। একইভাবে তার বাবার প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়েও প্রভাব বিস্তার করে ওয়ালিউর রহমানকে সভাপতি করার জন্য তার পক্ষে আবেদন জমা দিতে আসে। তাদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের কারণে সংঘর্ষ বেঁধেছে।
প্রধান শিক্ষক আজিবর রহমান বলেন, তিনি উপজেলা সদরে মিটিংয়ে ছিলেন। এর কারণে বিদ্যালয়ে ছিলেন না। পরে শিক্ষকের মাধ্যমে চেয়ার ও কমিউটার ভাঙচুরের বিষয়টি জেনেছেন।
বাঘা থানার ওসি আ ফ ম আশাদুজ্জামান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেছে। এ নিয়ে রাত ৯টা পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব আশরাফ আলী মলিন বলেন, “বড় দল হিসেবে গ্রুপিং থাকবেই। তবে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা কারো জন্যই কাম্য নয়। বিষয়টি দলীয় লোকজনের সঙ্গে আলাপ করে নিরসনের চেষ্টা করছি।”