alt

সারাদেশ

সিলেটে ধর্ষণকাণ্ডে প্রকাশ পেল আওয়ামী লীগ নেতার অপহরণ রহস্য

প্রতিনিধি, সিলেট : বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫

আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের অপরাহ রহস্য বেরিয়ে এসেছে। সিলেট নগরে এক নারীকে ধর্ষণের ভিডিও ও স্থিরচিত্র ধারণের ঘটনায় থানায় মামলা হলে এই রহস্য বেরিয়ে আসে। সেই ছবি ও ভিডিও দিয়ে ওই নারী ও তাঁর স্বামীকে ‘ব্ল্যাকমেল’ করার চেষ্টা করে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা। এ অবস্থায় ভুক্তভোগী নারীর স্বামী জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল দিয়ে পুলিশকে বিস্তারিত জানান। পরে পুলিশ গিয়ে ওই নারীকে উদ্ধারের পাশাপাশি অভিযুক্ত দুজনকে আটক করে।

এ ঘটনা গত সোমবার বিকেলের। ভুক্তভোগী নারী পরের দিন মঙ্গলবার সিলেট মহানগরের কোতোয়ালি মডেল থানায় অভিযুক্ত দুজনকে আসামি করে মামলা করেন। এই দুজন হলেন মো. সামরান হোসেন চৌধুরী (রাজু) ও মো. মাহফুজুর রহমান।

তবে ওই নারীর স্বামী দাবি করেন, কিছুদিন আগে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ অপহৃত হয়েছিলেন। এ ঘটনার ভিডিও তাঁর কাছে সংরক্ষিত আছে। মূলত তাঁর মুখ বন্ধ রাখতেই তাঁর স্ত্রীকে ধর্ষণ করেছেন অপহরণকারী ব্যক্তিরা। পুলিশকে পুরো ঘটনা জানালেও প্রকৃত তথ্য আড়াল করে মনগড়াভাবে এজাহার সাজিয়েছে।

এদিকে পুলিশ বলছে, ভুক্তভোগী নারীর (২৮) বাড়ি সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায়। তাঁর স্বামী সিলেট নগরের বাস্তবায়নাধীন একটি প্রকল্প দেখাশোনার কাজ করতেন। সে কারণে ওই প্রকল্প এলাকার ভেতরের একটি বাসায় পরিবারটি থাকত।

মামলার এজাহার অনুযায়ী, প্রকল্পে মো. সামরান হোসেন চৌধুরী নামের একজনের শেয়ার আছে। তিনি ওই নারীর স্বামীকে প্রকল্পে কাজ দেন। এ ছাড়া সিলেট সদরের মো. মাহফুজুর রহমান (৪২) নামের একজনকে প্রকল্প এলাকার ভেতরে খালি থাকা জমিতে কৃষিকাজের জন্য ইজারা দেন।

এজাহারে বলা হয়, জমি ইজারা নেওয়ার সূত্রে মাহফুজুর প্রায়ই ওই নারীর বাসায় যাওয়া-আসা করতেন। গত ২৭ ডিসেম্বর মাহফুজুর ওই নারীকে সামরানের সহযোগিতায় ধর্ষণ করেন। এরপরও একাধিকবার ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ধর্ষণের ভিডিও সামরান মুঠোফোনে ধারণ করেন। পরে ছবি ও ভিডিও দেখিয়ে সামরান ওই নারীকে শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেন। ওই নারী এতে রাজি না হলে তাঁকে ও তাঁর স্বামীকে ভয় দেখান।

সবশেষ ৬ জানুয়ারি বেলা তিনটার দিকে ওই নারীকে একা পেয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা শারীরিকভাবে নির্যাতনের চেষ্টা করেন বলে এজাহারে অভিযোগ করা হয়। এতে বলা হয়, বিষয়টি ওই নারী বাসার বাইরে থাকা তাঁর স্বামীকে মুঠোফোনে জানান। এরপর তাঁর স্বামী ৯৯৯-এ কল করে বিষয়টি পুলিশকে জানান। পুলিশ গিয়ে ওই নারীকে উদ্ধারের পাশাপাশি অভিযুক্ত ব্যক্তিদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

এদিকে ভুক্তভোগী নারীর স্বামীর অভিযোগ, ১৩ ডিসেম্বর মধ্যরাতে আওয়ামী লীগ নেতা মিসবাহ উদ্দিন সিরাজকে কয়েকজন অপহরণ করেন। অপহরণকারী ব্যক্তিরা মিসবাহর পরিবারের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ নিয়ে তাঁকে নগরের সাগরদীঘির পাড় এলাকায় আহত অবস্থায় ফেলে রেখে যান। সেখান থেকে মিসবাহকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে তাঁর পরিবার। যাঁরা তাঁর স্ত্রীকে ধর্ষণ করেছেন, তাঁরাই মিসবাহর অপহরণের সঙ্গে জড়িত। তাঁরা মিসবাহকে যেখানে আটকে রেখেছিলেন, সেই স্থানের পাশেই তাঁর বাসা। সেখানকার সিসিটিভির অ্যাকসেস তাঁর ছিল। তিনি সিসিটিভিতে অপহরণের দৃশ্য দেখেন। সেগুলো নিজের মুঠোফোন ও কম্পিউটারে রেখে দেন। অপহরণকারী ব্যক্তিরা সে তথ্য জেনে যাওয়ায় পরিবার নিয়ে ওই বাসা ছেড়ে যান বলে তিনি দাবি করেন।

ভুক্তভোগী নারীর স্বামীর অভিযোগ, তাঁকে বাসায় না পেয়ে স্ত্রীকে ধর্ষণ করে ভিডিও করেন অভিযুক্ত ব্যক্তিরা। যদি মিসবাহর ঘটনার ভিডিওর কথা তিনি কাউকে জানান, তাহলে স্ত্রীকে ধর্ষণের ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয় তাঁকে।

সিলেট কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জিয়াউল হক বলেন, প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় মামলা নেওয়া হয়েছে। ওই নারী যেমন অভিযোগ করেছেন, সেভাবেই মামলা নেওয়া হয়েছে। বাদীর স্বামীর অভিযোগের বিষয়টি জানা নেই। তবে পুলিশ পুরো বিষয়টি তদন্ত করে সত্যতা যাচাইয়ে কাজ করবে।

এর আগে ১৩ ডিসেম্বর দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে মিসবাহ উদ্দিনকে নগরের সাগরদীঘির পাড় এলাকা থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে পরিবারের লোকজন একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। রাতেই তাঁর অস্ত্রোপচার হয়। পরদিন তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে চলে যান।

আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলেন, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে মিসবাহ উদ্দিন আত্মগোপনে আছেন। জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে। তাই পুলিশের চোখ এড়িয়ে রাতের বেলা তিনি মাঝেমধ্যে আত্মগোপনে থাকা বাসাটি থেকে বের হতেন। ওই সময় তিনি অপহৃত হন। পুলিশ এ ঘটনা নিশ্চিত করলেও এখন পর্যন্ত মিসবাহ কিংবা তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি।

ছবি

অরক্ষিত রেলক্রসিংয়, ফরিদপুরে প্রতিনিয়তই মৃত্যুঝুঁকি

ছবি

পদ্মায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, ২ জন গ্রেপ্তারসহ ড্রেজার জব্দ

ছবি

রোহিঙ্গা যুবকের ভুয়া এনআইডি বানানোর ঘটনা ফাঁস

ছবি

কক্সবাজার সৈকতের সীগাল পয়েন্ট থেকে গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার।

ছবি

কক্সবাজার কণ্ঠ এখন গণমানুষের কন্ঠ

ছবি

ময়মনসিংহে ২০০ বছরের পুরোনো মাজার ভাঙচুর, আতঙ্ক ও প্রতিবাদ

চট্টগ্রামে বিদেশি মদসহ দুই কারবারি গ্রেপ্তার

ছবি

উখিয়ায় ট্রাক চাপায় প্রাণ গেল এনজিও কর্মীর, আহত স্ত্রী ও সন্তান

ছবি

কক্সবাজারে বাড়ছে কলেরা : ভ্যাকসিন পাবে ১৩ লাখের বেশি মানুষ

ছবি

গাজীপুরে প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদনকারী কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা

ছবি

জাজিরা থানায় ওসির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

ছবি

মেহেরপুরে ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট শাখার ভল্ট ভেঙে ৬ লাখ টাকা চুরি

ছবি

৩ দিনের রিমান্ডে সাবেক এমপি শফিউল

ছবি

চট্টগ্রাম আদালতের হারানো ১,৯১১ মামলার নথি উদ্ধার, আটক ১

ছবি

অ্যাম্বুলেন্সের সঙ্গে সংঘর্ষ, পুড়ল বাসের লকারে থাকা ৫০টি ছাগল

ছবি

৫ ডিগ্রি তাপমাত্রা কমে শৈত্যপ্রবাহের কবলে চুয়াডাঙ্গা

ছবি

কম্বলডা পায়া শান্তিতে ঘুমামু

ছবি

কক্সবাজারে শিশু অপহরণ করে হত্যা, দেহ উদ্ধার

শিক্ষা অফিসারের বিদায়ের নামে ‘চাঁদাবাজির’ অভিযোগ

ছবি

বগুড়ায় সাবেক প্যানেল মেয়র আলহাজ শেখ গ্রেপ্তার

ছবি

নোয়াখালী বেসরকারি হাসপাতালে রাজনৈতিক উত্তেজনা, ভাঙচুর ও লুটপাট

ছবি

ফরিদপুরে মাইক্রোবাসে ট্রেনের ধাক্কায় নিহত ৫

ছবি

সিন্ডিকেটের হাতবদল হয়েছে বলার জন্য আপনি সরকার হন নাই: হাসনাত আবদুল্লাহ

ছবি

চট্টগ্রাম আদালতের ১ হাজার ৯১১ মামলার নথি গায়েব

ছবি

রাজশাহীতে বিদ্যালয়ের সভাপতি পদ নিয়ে বিএনপির দুপক্ষে সংঘর্ষ

ছবি

অব্যাহতি দেয়া সাব-ইন্সপেক্টররা চাকরি ফিরে পেতে আন্দোলনে নেমেছেন

ছবি

জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন নিয়ে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা হবে

ছবি

সিরাজগঞ্জে সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ বিশ্বাস আটক

ছবি

বাংলাদেশ ৯০ ও ভারতে ৯৫ আটকে থাকা জেলে দেশে ফিরেছেন

ছবি

গাজীপুরে ইজতেমা ময়দানের নিয়ন্ত্রণে সংঘর্ষে মাওলানা সাদপন্থি গ্রেপ্তার

যশোরে আজহারীর মাহফিলে শত শত ফোন ও স্বর্ণলংকার খোয়া, থানায় তিনশ’ জিডি!

ছবি

৮ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর আরিচা-কাজিরহাট নৌপথে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক

ময়মনসিংহে ডিআইজির কক্ষে ঢুকে ‘হুমকি’

নরসিংদীতে ১ মাসে জনপ্রতিনিধিসহ ১০ খুন, জনমনে আতঙ্ক

সিলেটে আ.লীগ নেতা উপজেলা চেয়ারম্যান গ্রেফতার

ছবি

কাবু চাঁদপুরের জনজীবন, ঘন কুয়াশায় সূর্যের দেখা নেই,হাড় কাঁপানো শীত

tab

সারাদেশ

সিলেটে ধর্ষণকাণ্ডে প্রকাশ পেল আওয়ামী লীগ নেতার অপহরণ রহস্য

প্রতিনিধি, সিলেট

বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫

আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের অপরাহ রহস্য বেরিয়ে এসেছে। সিলেট নগরে এক নারীকে ধর্ষণের ভিডিও ও স্থিরচিত্র ধারণের ঘটনায় থানায় মামলা হলে এই রহস্য বেরিয়ে আসে। সেই ছবি ও ভিডিও দিয়ে ওই নারী ও তাঁর স্বামীকে ‘ব্ল্যাকমেল’ করার চেষ্টা করে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা। এ অবস্থায় ভুক্তভোগী নারীর স্বামী জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল দিয়ে পুলিশকে বিস্তারিত জানান। পরে পুলিশ গিয়ে ওই নারীকে উদ্ধারের পাশাপাশি অভিযুক্ত দুজনকে আটক করে।

এ ঘটনা গত সোমবার বিকেলের। ভুক্তভোগী নারী পরের দিন মঙ্গলবার সিলেট মহানগরের কোতোয়ালি মডেল থানায় অভিযুক্ত দুজনকে আসামি করে মামলা করেন। এই দুজন হলেন মো. সামরান হোসেন চৌধুরী (রাজু) ও মো. মাহফুজুর রহমান।

তবে ওই নারীর স্বামী দাবি করেন, কিছুদিন আগে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ অপহৃত হয়েছিলেন। এ ঘটনার ভিডিও তাঁর কাছে সংরক্ষিত আছে। মূলত তাঁর মুখ বন্ধ রাখতেই তাঁর স্ত্রীকে ধর্ষণ করেছেন অপহরণকারী ব্যক্তিরা। পুলিশকে পুরো ঘটনা জানালেও প্রকৃত তথ্য আড়াল করে মনগড়াভাবে এজাহার সাজিয়েছে।

এদিকে পুলিশ বলছে, ভুক্তভোগী নারীর (২৮) বাড়ি সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায়। তাঁর স্বামী সিলেট নগরের বাস্তবায়নাধীন একটি প্রকল্প দেখাশোনার কাজ করতেন। সে কারণে ওই প্রকল্প এলাকার ভেতরের একটি বাসায় পরিবারটি থাকত।

মামলার এজাহার অনুযায়ী, প্রকল্পে মো. সামরান হোসেন চৌধুরী নামের একজনের শেয়ার আছে। তিনি ওই নারীর স্বামীকে প্রকল্পে কাজ দেন। এ ছাড়া সিলেট সদরের মো. মাহফুজুর রহমান (৪২) নামের একজনকে প্রকল্প এলাকার ভেতরে খালি থাকা জমিতে কৃষিকাজের জন্য ইজারা দেন।

এজাহারে বলা হয়, জমি ইজারা নেওয়ার সূত্রে মাহফুজুর প্রায়ই ওই নারীর বাসায় যাওয়া-আসা করতেন। গত ২৭ ডিসেম্বর মাহফুজুর ওই নারীকে সামরানের সহযোগিতায় ধর্ষণ করেন। এরপরও একাধিকবার ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ধর্ষণের ভিডিও সামরান মুঠোফোনে ধারণ করেন। পরে ছবি ও ভিডিও দেখিয়ে সামরান ওই নারীকে শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেন। ওই নারী এতে রাজি না হলে তাঁকে ও তাঁর স্বামীকে ভয় দেখান।

সবশেষ ৬ জানুয়ারি বেলা তিনটার দিকে ওই নারীকে একা পেয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা শারীরিকভাবে নির্যাতনের চেষ্টা করেন বলে এজাহারে অভিযোগ করা হয়। এতে বলা হয়, বিষয়টি ওই নারী বাসার বাইরে থাকা তাঁর স্বামীকে মুঠোফোনে জানান। এরপর তাঁর স্বামী ৯৯৯-এ কল করে বিষয়টি পুলিশকে জানান। পুলিশ গিয়ে ওই নারীকে উদ্ধারের পাশাপাশি অভিযুক্ত ব্যক্তিদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

এদিকে ভুক্তভোগী নারীর স্বামীর অভিযোগ, ১৩ ডিসেম্বর মধ্যরাতে আওয়ামী লীগ নেতা মিসবাহ উদ্দিন সিরাজকে কয়েকজন অপহরণ করেন। অপহরণকারী ব্যক্তিরা মিসবাহর পরিবারের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ নিয়ে তাঁকে নগরের সাগরদীঘির পাড় এলাকায় আহত অবস্থায় ফেলে রেখে যান। সেখান থেকে মিসবাহকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে তাঁর পরিবার। যাঁরা তাঁর স্ত্রীকে ধর্ষণ করেছেন, তাঁরাই মিসবাহর অপহরণের সঙ্গে জড়িত। তাঁরা মিসবাহকে যেখানে আটকে রেখেছিলেন, সেই স্থানের পাশেই তাঁর বাসা। সেখানকার সিসিটিভির অ্যাকসেস তাঁর ছিল। তিনি সিসিটিভিতে অপহরণের দৃশ্য দেখেন। সেগুলো নিজের মুঠোফোন ও কম্পিউটারে রেখে দেন। অপহরণকারী ব্যক্তিরা সে তথ্য জেনে যাওয়ায় পরিবার নিয়ে ওই বাসা ছেড়ে যান বলে তিনি দাবি করেন।

ভুক্তভোগী নারীর স্বামীর অভিযোগ, তাঁকে বাসায় না পেয়ে স্ত্রীকে ধর্ষণ করে ভিডিও করেন অভিযুক্ত ব্যক্তিরা। যদি মিসবাহর ঘটনার ভিডিওর কথা তিনি কাউকে জানান, তাহলে স্ত্রীকে ধর্ষণের ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয় তাঁকে।

সিলেট কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জিয়াউল হক বলেন, প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় মামলা নেওয়া হয়েছে। ওই নারী যেমন অভিযোগ করেছেন, সেভাবেই মামলা নেওয়া হয়েছে। বাদীর স্বামীর অভিযোগের বিষয়টি জানা নেই। তবে পুলিশ পুরো বিষয়টি তদন্ত করে সত্যতা যাচাইয়ে কাজ করবে।

এর আগে ১৩ ডিসেম্বর দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে মিসবাহ উদ্দিনকে নগরের সাগরদীঘির পাড় এলাকা থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে পরিবারের লোকজন একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। রাতেই তাঁর অস্ত্রোপচার হয়। পরদিন তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে চলে যান।

আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলেন, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে মিসবাহ উদ্দিন আত্মগোপনে আছেন। জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে। তাই পুলিশের চোখ এড়িয়ে রাতের বেলা তিনি মাঝেমধ্যে আত্মগোপনে থাকা বাসাটি থেকে বের হতেন। ওই সময় তিনি অপহৃত হন। পুলিশ এ ঘটনা নিশ্চিত করলেও এখন পর্যন্ত মিসবাহ কিংবা তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি।

back to top