বিএনপি নেতা স্লিপ অব টাং বলে দুঃখ প্রকাশ, ঘটনায় তদন্তের দাবি
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও নবনিযুক্ত সিরাজগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি সাইদুর রহমান ওরফে বাচ্চু সম্প্রতি সিরাজগঞ্জে পুলিশের হত্যাকাণ্ড সম্পর্কিত যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি দাবি করেন, "যদি ১৫ জন পুলিশ নিহত না হতো, তাহলে বাংলাদেশের পুলিশের মেরুদণ্ড ভাঙত না। সিরাজগঞ্জে আন্দোলন করে পুলিশ বাহিনীর মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছি এবং ২০২৪ সালের আন্দোলন ত্বরান্বিত করেছি।" এর পরই তার বক্তব্যটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে এবং এতে তীব্র সমালোচনার ঝড় ওঠে।
ঘটনা হলো, গত ৪ আগস্ট সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দাবিতে এক দফা আন্দোলন চলাকালে একটি ভয়াবহ হামলা হয়। ওই হামলায় থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রাজ্জাকসহ ১৩ পুলিশ সদস্যকে হত্যা করা হয় এবং তাদের কাছ থেকে অস্ত্র লুট করা হয়। থানা ভবনেও অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় আরও দুই পুলিশ সদস্য মারা যান।
এ ঘটনায় সাইদুর রহমান ৮ আগস্ট শাহজাদপুর উপজেলার বাঘাবাড়িতে মিল্ক ভিটার উদ্যোগে প্রাথমিক সমবায় সমিতির সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন। তিনি এই হামলার কৃতিত্ব দাবি করে বলেন, "সিরাজগঞ্জে পুলিশের মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়ে আমরা আন্দোলন ত্বরান্বিত করেছি।" সাইদুর রহমানের ওই বক্তব্যের ভিডিও তিনি নিজের ফেসবুকেও পোস্ট করেছিলেন, যা পরে ভাইরাল হয়ে যায়।
ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর জনমনে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয় এবং নিন্দা প্রকাশ করা হয়। অনেকেই মন্তব্য করেন, "কারা পুলিশ হত্যা করেছিল, সেটা সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমানের মুখেই শুনুন।" উল্লেখযোগ্য যে, এ ঘটনায় সাবেক মন্ত্রী এবং প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল লতিফ বিশ্বাস বর্তমানে জেলহাজতে আছেন।
এই বিতর্কের পর সাইদুর রহমান তার ফেসবুকে এক ভিডিও বার্তায় বলেন, "আমার বক্তব্য বিকৃত করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। আমি যদি কোন ভুল করে থাকি, তাহলে স্লিপ অব টাং বা হঠাৎ মুখ ফসকে অতিরিক্ত কিছু বের হয়ে থাকে, সে জন্য আমি গভীর দুঃখ প্রকাশ করছি।" তিনি আরও বলেন, "ওই বক্তব্যে আমি বলেছিলাম, সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে ১৫ জন পুলিশ নিহত হয়েছেন এবং পুলিশের মেরুদণ্ড ভেঙে গেছে, যা সারা দেশের আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করেছে। দুঃখের সঙ্গে বলছি, এই বক্তব্য বিকৃতভাবে প্রচার করা হয়েছে এবং এর মাধ্যমে হীন উদ্দেশ্য সফল করার চেষ্টা করা হয়েছে।"
এছাড়াও সাইদুর রহমান বিএনপির নেতা-কর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, "বিএনপির বিরুদ্ধে নানা ধরনের অশুভ এবং উদ্দেশ্যমূলক যড়যন্ত্র হচ্ছে।"
এনায়েতপুর থানায় হামলা, ১৫ পুলিশ সদস্যকে হত্যা, অস্ত্র লুট এবং থানার ভবনে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ২১ দিন পর ২৫ আগস্ট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল মালেক বাদী হয়ে আওয়ামী লীগের চার নেতাকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ৬ হাজার আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে এবং ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৪ কোটি টাকা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
এই মামলায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী এবং সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি-চৌহালী) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল লতিফ বিশ্বাসকে ৫ জানুয়ারি গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাকে বর্তমানে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বিএনপি নেতা স্লিপ অব টাং বলে দুঃখ প্রকাশ, ঘটনায় তদন্তের দাবি
রোববার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও নবনিযুক্ত সিরাজগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি সাইদুর রহমান ওরফে বাচ্চু সম্প্রতি সিরাজগঞ্জে পুলিশের হত্যাকাণ্ড সম্পর্কিত যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি দাবি করেন, "যদি ১৫ জন পুলিশ নিহত না হতো, তাহলে বাংলাদেশের পুলিশের মেরুদণ্ড ভাঙত না। সিরাজগঞ্জে আন্দোলন করে পুলিশ বাহিনীর মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছি এবং ২০২৪ সালের আন্দোলন ত্বরান্বিত করেছি।" এর পরই তার বক্তব্যটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে এবং এতে তীব্র সমালোচনার ঝড় ওঠে।
ঘটনা হলো, গত ৪ আগস্ট সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দাবিতে এক দফা আন্দোলন চলাকালে একটি ভয়াবহ হামলা হয়। ওই হামলায় থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রাজ্জাকসহ ১৩ পুলিশ সদস্যকে হত্যা করা হয় এবং তাদের কাছ থেকে অস্ত্র লুট করা হয়। থানা ভবনেও অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় আরও দুই পুলিশ সদস্য মারা যান।
এ ঘটনায় সাইদুর রহমান ৮ আগস্ট শাহজাদপুর উপজেলার বাঘাবাড়িতে মিল্ক ভিটার উদ্যোগে প্রাথমিক সমবায় সমিতির সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন। তিনি এই হামলার কৃতিত্ব দাবি করে বলেন, "সিরাজগঞ্জে পুলিশের মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়ে আমরা আন্দোলন ত্বরান্বিত করেছি।" সাইদুর রহমানের ওই বক্তব্যের ভিডিও তিনি নিজের ফেসবুকেও পোস্ট করেছিলেন, যা পরে ভাইরাল হয়ে যায়।
ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর জনমনে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয় এবং নিন্দা প্রকাশ করা হয়। অনেকেই মন্তব্য করেন, "কারা পুলিশ হত্যা করেছিল, সেটা সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমানের মুখেই শুনুন।" উল্লেখযোগ্য যে, এ ঘটনায় সাবেক মন্ত্রী এবং প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল লতিফ বিশ্বাস বর্তমানে জেলহাজতে আছেন।
এই বিতর্কের পর সাইদুর রহমান তার ফেসবুকে এক ভিডিও বার্তায় বলেন, "আমার বক্তব্য বিকৃত করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। আমি যদি কোন ভুল করে থাকি, তাহলে স্লিপ অব টাং বা হঠাৎ মুখ ফসকে অতিরিক্ত কিছু বের হয়ে থাকে, সে জন্য আমি গভীর দুঃখ প্রকাশ করছি।" তিনি আরও বলেন, "ওই বক্তব্যে আমি বলেছিলাম, সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে ১৫ জন পুলিশ নিহত হয়েছেন এবং পুলিশের মেরুদণ্ড ভেঙে গেছে, যা সারা দেশের আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করেছে। দুঃখের সঙ্গে বলছি, এই বক্তব্য বিকৃতভাবে প্রচার করা হয়েছে এবং এর মাধ্যমে হীন উদ্দেশ্য সফল করার চেষ্টা করা হয়েছে।"
এছাড়াও সাইদুর রহমান বিএনপির নেতা-কর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, "বিএনপির বিরুদ্ধে নানা ধরনের অশুভ এবং উদ্দেশ্যমূলক যড়যন্ত্র হচ্ছে।"
এনায়েতপুর থানায় হামলা, ১৫ পুলিশ সদস্যকে হত্যা, অস্ত্র লুট এবং থানার ভবনে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ২১ দিন পর ২৫ আগস্ট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল মালেক বাদী হয়ে আওয়ামী লীগের চার নেতাকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ৬ হাজার আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে এবং ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৪ কোটি টাকা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
এই মামলায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী এবং সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি-চৌহালী) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল লতিফ বিশ্বাসকে ৫ জানুয়ারি গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাকে বর্তমানে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।